হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট ‘লিটল বয়’ নামের এক পারমাণবিক বোমা জাপানের হিরোশিমায় নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এর ঠিক তিন দিন পর নাগাসাকি শহরে নিক্ষেপ করা হয়েছিল আরও একটি পারমাণবিক বোমা। এই দুই পারমাণবিক বোমার আঘাতে জাপানের এই দুটি শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সবাই ধরেই নিয়েছিল শহর দুটি আর কোনোদিনই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু সব ধারণাকে মিথ্যে প্রমাণ করে হিরোশিমা ও নাগাসাকি বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের স্বকীয় অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
পারমাণবিক বোমার আঘাতে প্রায় নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে পড়া হিরোশিমা শহরটি আজ বিশ্বের অন্যতম এক সমৃদ্ধ শহর। আধুনিকতার ছোঁয়ায় উদ্ভাসিত শহরটি পারমাণবিক বোমার স্মৃতি কী পুরোপুরি মুছে ফেলতে পেরেছে? উত্তর, অবশ্যই না। কারণ জাপান সরকার ও হিরোশিমার অধিবাসীরা কখনোই চাননি এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ও নিষ্ঠুর ধ্বংসলীলা ইতিহাস থেকে মুছে যাক। বিশ্বের মানুষ ভুলে যাক সেসব ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলোর কথা যেখানে মানবতার বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদেছিল। হিরোশিমা শহরের চারপাশে সেসব ভয়ঙ্কর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য একাধিক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। কীভাবে হিরোশিমা তার পারমাণবিক বোমার স্মৃতিকে ধরে রেখেছে সে গল্পই আজ পাঠকদের জানাবো।
পিস মেমোরিয়াল পার্ক
সেদিন হিরোশিমার পুরো নাকাজিমা জেলাটি একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। একসময়ের প্রাণবন্ত জেলাটিতে কোথাও এতটুকু প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সেই জেলাটিকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়। নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় পুরো অঞ্চলটি। ১৯৫৪ সালে ইতিহাসের সেই ভয়ঙ্কর কালো অধ্যায়কে পৃথিবীর মানুষকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করে দেয়ার জন্য এখানে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্বশান্তির প্রতীক ‘হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্ক’ বা ‘হিরোশিমা জাতীয় শান্তি-স্মৃতি উদ্যান’। জাপানীদের কাছে যা ‘হেইওয়া কিনেন কোয়েন’ নামে পরিচিত।
এই পার্কে এলে ৬ আগস্টের সেই যন্ত্রণাময় সকালটিকে কিছুটা হলেও অনুভব করা যায়। পিস মেমোরিয়াল পার্কের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে পারমাণবিক বোমার ধ্বংসলীলার নীরব সাক্ষী মতোইয়াসু নদী। এ নদীর এক পাড়ে রয়েছে ‘এটমিক বোম্ ডোম’ আর অন্য পাড়ে রয়েছে পিস পার্কের বাকি অংশটি। প্রায় ১,২২,১০০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে এই পার্ক বিস্তৃত। এই পার্ক ঘিরে রয়েছে পিস মেমোরিয়াল হল, পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়াম, সিনোট্যাফ’, এটমিক বোম ডোম, পিস ক্লক টাওয়ারসহ ইতিহাসের স্মৃতি বিজড়িত নানা স্থাপনা।
হিরোশিমা ন্যাশনাল পিস মেমোরিয়াল হল
পিস মেমোরিয়াল পার্কের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে ‘হিরোশিমা ন্যাশনাল পিস মেমোরিয়াল হল’। দোতলা এই বাড়িটির পুরোটাই মাটির নিচে অবস্থিত। বাইরে থেকে শুধু একটি ঘড়ির প্রতীকী মনুমেন্ট দেখতে পাওয়া যায়। মনুমেন্টের ঘড়িটি থমকে গেছে ঠিক ৮টা বেজে ১৫ মিনিটে। মনুমেন্টের চারদিক জুড়ে তৈরি হয়েছে জলের ফোয়ারা। ফোয়ারাটি পরমাণু বোমায় আক্রান্ত সেসব মানুষদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে যারা সামান্য পানীয় জলের অভাবে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
হলের প্রথম তলায় রয়েছে লাইব্রেরি, এক্সিবিশন হল আর সেমিনার হল। লাইব্রেরিটি হিরোশিমার পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ সংক্রান্ত নানা তথ্যে পরিপূর্ণ। সেদিনের সকালের বিভীষিকাময় রূপ এক্সিবিশন হলের পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে দর্শকরা দেখতে পাবেন পরমাণু বোমায় আক্রান্ত মানুষের বীভৎস সব ছবি আর তার সাথে বিস্তারিত বর্ণনা। শুনতে পারেন বেঁচে যাওয়া মানুষদের স্মৃতিকথন।
মেমোরিয়াল হলের দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ‘ভিক্টিমস ইনফরমেশন এরিয়া’। এখানে প্রতিনিয়ত প্রদর্শিত হচ্ছে ২,৭০,০০০ মানুষের ছবি ও তাদের নাম- যারা সকলেই এই পরমাণু বোমার শিকার। সেদিনের ধ্বংসলীলায় ঠিক কত মানুষ মারা গিয়েছিলেন তার প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা আজও সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ‘হল অব রিমেম্বারেন্স’। মৃত মানুষের স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে এই হল। হলের দেওয়ালের উপরের অংশ জুড়ে চিত্রায়িত করা হয়েছে ধ্বংসপ্রাপ্ত হিরোশিমার ছবি। পারমাণবিক বোমায় মৃত প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার মানুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১,৪০,০০০ টাইলস দিয়ে ওই ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। পারমাণবিক বোমায় মৃত সেসব মানুষদের যন্ত্রণায় মোড়া ওই নিঃশব্দ দেয়ালগুলো যেন হিরোশিমার নির্মম ট্র্যাজেডির জীবন্ত প্রতীক।
এটমিক বোম ডোম
স্থানীয়দের কাছে স্থাপনাটি ‘গেন্ বাকু ডমু’ নামে পরিচিত। হিরোশিমার বুকে পারমাণবিক বোমার স্মৃতি বয়ে বেড়ানো এই ঐতিহাসিক ভবনটি হিরোশিমা শহরের বাণিজ্যিক পণ্যের প্রধান প্রদর্শনীস্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। হিরোশিমা ও তার আশেপাশের উৎপাদিত দ্রব্য দেশ-বিদেশের বাজারে পরিচিত করে তোলা এবং স্থানীয় পণ্যের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য ১৯১৫ সালে এই স্থাপনাটি নির্মিত হয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যেই এটি হিরোশিমার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। স্থাপনাটিকে কেন্দ্র করেই হিরোশিমার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটছিল। তবে ১৯৪৪ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে স্থাপনাটির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় ভবনটিকে ‘পাবলিক ওয়ার্কস অফিস’ এ রূপান্তরিত করা হয়। আজ এই ভবনটি শুধুমাত্র তার কঙ্কালটুকু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এই ভবনের খুব কাছেই পরমাণু বোমাটি বিস্ফোরিত হয়েছিল। ভবনটি বিস্ফোরণের হাইপো সেন্টার (গ্রাউন্ড জিরো) থেকে ৬০০ মিটার আর দক্ষিণে-পূর্বদিক থেকে ১৬০ মিটার দূরে অবস্থিত। বোমার আঘাতে তৎক্ষণাৎই বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকা সব মানুষ মারা যায়। বোমার তীব্র আঘাত সহ্য করেও শুধুমাত্র আয়রন ফ্রেমওয়ার্কের জন্য ভবনের কঙ্কালটি কোনোরকমে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে পেরেছিল।
এ ভবন যেন বোমাক্রান্ত হিরোশিমার সেই সমস্ত মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে, যাদের দেহ বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন, মাংস গলে পড়া শরীর, কোটর থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসা চোখ, পুড়ে গিয়ে বীভৎস চেহারা নেয়া শরীরের নানা অংশ আবার শরীরে অসহ্য যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরানো অসহায় মুখ। নির্বাক, অসহায় সেসব মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে আজও ভবনটি ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। এ যেন হিরোশিমার ধ্বংসলীলার এক জাজ্বল্যমান সাক্ষী। বর্তমানে পিস মেমোরিয়াল পার্ক ও এ বিল্ডিংটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়াম
এই জাদুঘরে প্রবেশ করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে যন্ত্রণাময় সেই সকালটির চিত্র। পারমাণবিক বোমায় মারা যাওয়া মানুষদের নানা স্মৃতিচিহ্ন এই জাদুঘরে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। চুল, নখ, ব্যবহৃত দ্রব্যসামগ্রী আর পরিহিত আধপোড়া ছিন্ন বস্ত্র।
জাদুঘরের এককোণে রয়েছে কোনো স্কুল ছাত্রীর পুড়ে কালো ছাই হয়ে যাওয়া লাঞ্চ বক্স, তার দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ইউনিফর্ম, বোমার প্রচণ্ড উত্তাপে গেলে যাওয়া পানির বোতল। আরেক জায়গায় রয়েছে একটি ছোট্ট ট্রাইসাইকেলের কঙ্কাল ও একটি হেলমেট। এই ট্রাইসাইকেলের সাথে জড়িয়ে আছে শিনিচি নামের একটি চার বছরের ছোট বাচ্চার করুণ পরিণতির মর্মস্পর্শী কাহিনী। শিশু শিনিচি তেৎসুতানি তার এই ট্রাইসাইকেলটিকে খুব ভালোবাসতো।
সেদিনের সেই সকালেও শিনিচি প্রতিদিনের মতো এই সাইকেলটি চালিয়ে খেলা করছিল। তার বাড়িটি ছিল পারমাণবিক বোমা পড়ার স্থান থেকে ১,৫০০ মিটার দূরে। তবুও রক্ষা পায়নি শিনিচি আর তার সাইকেলটি। ১৯৮৫ সালে শিনিচির বাবা সেই ট্রাইসাইকেল ও হেলমেটটি এই মিউজিয়ামে দান করেন।
পেপার ক্রেন ক্লাব ও চিলড্রেন্স পিস মনুমেন্ট
পিস মিউজিয়ামের আলাদা একটি কক্ষে রাখা আছে বারো বছর বয়সী এক বালিকার হাতে বানানো ৬৪২টি কাগজের বক। জাপানী এক উপকথায় বর্ণিত আছে, কেউ যদি ইচ্ছাপূরণের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এক হাজার কাগজের বক বানায়, তবে তার ইচ্ছা পূরণ হয়। বোমা হামলার সময় সাসাকির বয়স ছিল মাত্র দু’বছর। বোমার আঘাত থেকে বেঁচে গেলেও এর তেজস্ক্রিয়তা থেকে নিষ্কৃতি পায়নি সে। তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে কয়েক বছর পরেই লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার আশায় হাসপাতালের বিছানায় বসে বসে সে তৈরি করতে থাকে কাগজের বক। ৬৪২টি রঙিন কাগজের বক বানানোর পরেই তার মৃত্যু হয়। সাসাকির স্মৃতির উদ্দেশ্যে তার সহপাঠীরা ‘পেপার ক্রেন ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করে।
পিস মেমোরিয়াল পার্কে আজও ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন কিছু কাগজের বক বানিয়ে সাসাকি ও তার মতো যেসব শিশুরা পারমাণবিক বোমার অভিশাপে মৃত্যুবরণ করেছিলেন তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে থাকে। পিস বেল টাওয়ারের খুব কাছেই একটি বক আর একটি কিশোরীর মনুমেন্ট বসানো হয়েছে, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘চিলড্রেন্স পিস মনুমেন্ট’।
জাপানি কফিনের আদলে তৈরি সিনোট্যাফ
পিস মেমোরিয়াল পার্কের ঠিক মাঝখানে সবুজ বনবিথীর মাঝে নির্মিত হয়েছে ‘সিনোট্যাফ’। অনেকটা জাপানী কফিনের আদলে তৈরি সাদা রঙের আর্চ। পারমাণবিক বোমায় নিহত হাজার হাজার মানুষকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ১৯৫২ সালের ৬ আগস্ট এই সিনোট্যাফ নিমিত হয়। এর নীচে জাপানী ভাষায় সেই ভয়ঙ্কর ভুল দ্বিতীয়বার না করার প্রতিজ্ঞা করে মৃত মানুষের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে।
প্রতি বছর ৬ আগস্ট দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানে এসে তাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। পালন করেন ‘হিরোশিমা ডে’। সিনোট্যাফের খুব কাছেই জ্বালানো হয়েছে একটি বিশাল আকারের অনির্বাণ শান্তি প্রদীপ। বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রণাকাতর সেসব মানুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯৬৪ সাল থেকে এ প্রদীপ জ্বালানো রয়েছে।
পিস ক্লক এন্ড বেল টাওয়ার
পার্কের পশ্চিমের অংশে আছে ‘পিস ক্লক টাওয়ার’। ১৯৬৭ সালের ২৮ অক্টোবর ‘হিরোশিমা রিজো লাইনস ক্লাব’ এই ‘ক্লক টাওয়ার’ প্রতিষ্ঠা করে। তারপর থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে এই টাওয়ার ঘড়িটিতে একটি প্রতীকী অ্যালার্ম বেজে ওঠে। এই সংকেত ধ্বনি সবাইকে জানিয়ে দিতে চায় আর অশান্তি নয়, সারা পৃথিবী জুড়ে শান্তির বারতা বেজে উঠুক। একই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পার্কের মধ্যে স্থাপিত হয়েছে পিস বেলও।
এই টাওয়ারের মাথার ওপরের ক্রমশ উঁচু হয়ে ওঠা ডোম আকৃতির ছাদটি আসলে ইউনিভার্স-এর প্রতীকী রূপ। ছাদ থেকে ঝুলছে ১২০০কিলোগ্রাম ওজনের একটি বেল- শান্তির ঘণ্টা। এর গায়ে আঁকা আছে সীমারেখাহীন বিশ্বের মানচিত্র, যেন প্রতিফলিত করছে এক বিশ্বের ধারণাকে। যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, শত্রুতা থাকবে না, যুদ্ধ থাকবে না, পরমাণু বোমা থাকবে না।
ঘণ্টাটির গায়ে, যেখানে আঘাত করে মানুষ ঘণ্টাটি বাজাবে, সেই জায়গাটিতে আঁকা আছে পারমাণবিক হাতিয়ারের প্রতীকী চিহ্ন। যেন পরমাণু অস্ত্রের প্রতীকের ওপর আঘাত হেনে পৃথিবী থেকে পারমাণবিক অস্ত্রকে নিশ্চিহ্ন করবে সাধারণ মানুষ।
ঘণ্টাটির গায়ে গ্রিক, জাপানি ও সংস্কৃত ভাষায় একটি বাণী লেখা আছে, যার অর্থ-‘নিজেকে জানো’। ডোমের গায়ে রয়েছে দাঁড়িয়ে আছে এক বালিকার মূর্তি, হাত দুটি তার ওপরের আকাশের দিকে তোলা। যেন সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্টের পারমাণবিক বোমার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা আর তার সাথে হাজার হাজার মৃত মানুষের স্মৃতি বিজড়িত যন্ত্রণাবিধুর দ্রষ্টব্যগুলো দেখতে দেখতে একজন বিবেকবান মানুষের চোখের জল আটকিয়ে রাখা সত্যিই কষ্টকর।