রোম! পৃথিবীজুড়ে কালে কালে যত সাম্রাজ্যের আবির্ভাব হয়েছে, তর্কযোগ্যভাবে রোমই হয়তো ছিল সেগুলর মাঝে সবচেয়ে শক্তিশালী। এ কথা অনস্বীকার্য যে রোমের উৎকর্ষের যুগে কোনো শক্তিই এর সামনে দাঁড়াতে পারেনি। হ্যাঁ, অন্যান্য যেকোনো শক্তির মতো রোমও তাদের সময় অনেক উত্থান-পতনের মাঝে দিয়ে গিয়েছে। রোমান সেনারা অনেক যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে। কানের যুদ্ধ, অথবা তার থেকে কম পরিচিত টিউটোবার্গের যুদ্ধে রোমান সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। অন্য কোনো সাম্রাজ্য হলে এর যেকোনো একটির পরে টিকে থাকতে পারত না। কিন্তু রোম ছিল ভিন্ন ধাতুতে গড়া। এর জনগোষ্ঠীর দৃঢ়তা, অধ্যবসায়, আর অনন্য রাজনৈতিক কাঠামো একে করে তুলেছিল অপরাজেয়। কাজেই দেখা যেত, রোম খণ্ড খণ্ড যুদ্ধে পরাজিত হলেও সবকিছু শেষে বিজয়ের মালা তার গলাতেই উঠেছে।
রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস নিয়ে হয়েছে অসংখ্য গবেষণা, লিখিত হয়েছে মোটা মোটা বই। নাইজেল রজার্সের ‘এনশিয়েন্ট রোম: অ্যা কমপ্লিট হিস্টোরি অফ দ্য রাইজ এন্ড ফল অফ দ্য রোমান এম্পায়ার’ এ বিষয়ে এক যুগান্তকারী রচনা হিসেবে স্বীকৃত। তিনি ছাড়াও প্রাচীন ও আধুনিক বহু ঐতিহাসিক রোম সাম্রাজ্য নিয়ে চমকপ্রদ ইতিহাস বর্ণনা করেছেন।
এই সিরিজে আমি চেষ্টা করবো তাদের লেখার উপর ভিত্তি করে সংক্ষেপে রোমের উত্থানের ঘটনা তুলে ধরার জন্য। তবে পরিসরের স্বল্পতার কারণে খুব বিশদভাবে এই বিশাল ইতিহাস তুলে ধরা সম্ভব হবে না, তবে প্রয়াস থাকবে রোমের ঐতিহাসিক পরিক্রমার পথে মূল ঘটনাগুলোর উপর আলোকপাত করার। এই প্রেক্ষাপটে ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোম নগরী প্রতিষ্ঠার পূর্বে ইতালির তৎকালীন ভৌগলিক ও জাতিগত অবস্থার একটি সাধারণ আলোচনা আবশ্যক।
ইতালি নামের উৎপত্তি
বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে সবথেকে গ্রহণযোগ্য হলো- ইতালি (Italy) নামটি এসেছে ল্যাটিন ইতালিয়া (Italia) থেকে, কারণ গ্রীকরা দক্ষিণ-পশ্চিম ইতালি উপদ্বীপের লোকদেরকে ইতালি (Itali) বলে ডাকতো। এই ইতালির (Itali) উৎপত্তি ভিতুলাস (Vitulus) থেকে, যার শাব্দিক অর্থ গবাদিপশু। ইতালির ঐ অংশে গবাদিপশুর প্রাচুর্য দেখে সম্ভবত গ্রীকরা তাদের এই নাম দিয়েছিল।
ইতালির ভৌগলিক অবস্থান
ইউরোপ ও আফ্রিকার উত্তর উপকূল- এই দুয়ের মাঝে ইতালির অবস্থান। এর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম মহাদেশীয় অংশ আল্পস পর্বতমালা দিয়ে দক্ষিণে আর অ্যাপেনাইন পর্বতমালা দিয়ে উত্তরে ইউরোপ থেকে পৃথককৃত। আল্পসের পাহাড়ি পথ ধরেই বিভিন্ন সময় অনুকূল আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে বর্বর জাতিসমূহ ইতালিতে হানা দিয়েছে। অ্যাপেনাইন আল্পসেরই বর্ধিত অংশ দক্ষিণে ইতালি উপদ্বীপের পুরোটা জুড়ে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের উপকূল ধরে বিস্তৃত হয়েছে। ইতালি উপদ্বীপ অ্যাড্রিয়াটিক ও ভূমধ্যসাগর দিয়ে ঘেরা। মহাদেশীয় ইতালি যেখানে তুলনামূলকভাবে সমতল, সেখানে উপদ্বীপ অংশ পাহাড়-পর্বতে পরিপূর্ণ।
আল্পস থেকে ইতালির সর্বদক্ষিণ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৭২০ মাইল, আর ইতালির প্রশস্ততম অংশে এ দেশ ৩৩০ মাইল চওড়া। প্রায় ১,১০,০০০ বর্গ মাইল আয়তনের ইতালির প্রধান নদী পো। পো ও তার শাখা-প্রশাখা অ্যাড্রিয়াটিক সাগরকে এড়িয়ে টিরেনিয়ান (টাসকান) সাগরে প্রবাহিত হয়েছে। ইতালির পশ্চিম উপকূলের টিরেনিয়ান সাগরের উৎপত্তি ভূমধ্যসাগর থেকে।
উত্তর ইতালি
এর অপর নাম গ্যালিয়া সিস্প্লানিয়া। আল্পস ও অ্যাপেনাইনের মধ্যে অবস্থিত উত্তর ইতালি অপেক্ষাকৃত সমতল। ব্যতিক্রম ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী পার্বত্য অঞ্চল, যা লিগুরিয়া নামে পরিচিত। উত্তর ইতালির বড় অংশ জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে পো নদী, যার গুরুত্বপূর্ণ শাখা উত্তরে টিসিনাস এবং দক্ষিণে ট্রেবিয়া।
দক্ষিণ ইতালি
অ্যাড্রিয়াটিক ও টিরেনিয়ান সাগরের পাড়ে ইতালির এই অংশে গ্রীকরা কলোনি স্থাপন করেছিল। এই অংশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিসিলি দ্বীপ, যা নিয়ে পরবর্তীতে রোম ও কার্থেজের মধ্যে বিবাদ যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়। একশ বছরের মতো চলা এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কার্থেজ ধ্বংস হয়ে যায় এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে একক পরাশক্তি হিসেবে রোম আধিপত্য বিস্তার করে।
মধ্য ইতালি
ইতালিয়া প্রপার নামেও পরিচিত এই অংশ, যার অন্তর্ভুক্ত ইতালি উপদ্বীপ। প্রধান নদীগুলো হলো টিবের (যার তীরে রোমান সভ্যতার উৎপত্তি), লাইরিস, আরনাস এবং ভলটারনাস, যার সবগুলো গিয়ে ভূমধ্যসাগরে পড়েছে। মধ্য ইতালিই আমাদের আগ্রহের কেন্দ্র। কারণ এখানেই গড়ে উঠেছিল রোম নগর। মধ্য ইতালির অন্যতম অংশ টিরেনিয়ান সাগরের উপকূলবর্তী ল্যাটিয়াম (যেখানে বসবাস করত ল্যাটিন ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী), এর উত্তরে একই উপকূল ঘেঁষে এরট্রুরিয়া, এবং দক্ষিণে ক্যাম্পানিয়া। অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের কোল জুড়ে ছিল আম্ব্রিয়া, পিসেনাম ও স্যামনিয়াম।
ল্যাটিয়াম অঞ্চলের আয়তন ছিল ৭০০ বর্গ মাইল। পঞ্চাশ মাইল লম্বা সমুদ্র উপকূল, টিবের ও তার শাখা নদী এনিও এবং এবড়োথেবড়ো পাহাড়ে বেষ্টিত ছিল ল্যাটিয়াম। এখানকার মানুষেরাও তাদের নগর ও ঘরবাড়ি তৈরি করত পাহাড়ের উপর, যা তাদেরকে প্রাকৃতিকভাবে সুরক্ষিত রাখত। টিবের নদীর ধারে পরে গড়ে উঠেছিল রোম। তার খুব কাছাকাছি নদীর মুখে ছিল তাদের বন্দর অস্টিয়া।
টিবের নদী ধরে ভূমধ্যসাগর থেকে জাহাজ ইটালির এই অংশে প্রবেশ করতে এবং বের হয়ে যেতে পারত। কাজেই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এ ছিল এক আদর্শ স্থান। সেকারণে এখানে বেশ জনবসতি ছিল। রোম আনুষ্ঠানিকভাবে শহর হিসেবে তৈরি হওয়ার অনেক আগে থেকেই এখানে অন্যান্য জাতি তাদের নগর স্থাপন করেছিল। এর মধ্যে রোমের উৎপত্তিস্থল থেকে দশ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ছিল ইট্রুস্কানদের (এরট্রুরিয়ার বাসিন্দা) শহর ভেই, আর একই দূরত্বে দক্ষিণ-পূর্বে প্রাচীন শহর অ্যালবা লংগা, ট্রয়ের রাজপুরুষ ইনিয়াস যার স্থপতি বলে প্রাচীন গ্রীক ও রোমান ঐতিহাসিকগণ দাবি করতেন। পরবর্তী পর্বে এ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
জনগোষ্ঠী
প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যে আদি প্রস্তর যুগ থেকে ইতালিতে মানুষের পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয়, ইতালির আদি বাসিন্দা, লিগুরিয়ানরা (লিগুরিয়ার অধিবাসী) নব্য প্রস্তর যুগে এই অঞ্চলে বসবাসকারী গোষ্ঠীর থেকে উদ্ভূত। তবে আমরা যে সময়ের কথা বলছি, রোমান সভ্যতার আবির্ভাবের পূর্বে, তখন ইতালিতে প্রধানত তিন ধরনের জাতির আধিপত্য ছিল।
ইয়াপিজিয়ান: উত্তর থেকে আসা অভিবাসী, যারা প্রথমে উত্তর ইতালিতে বসতি স্থাপন করে। পরে অন্যান্য অভিবাসীদের আগমনে তারা ইতালি উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে চলে আসে। এখানে বসবাসকারী গ্রীকদের সাথে আত্তীকৃত হয়ে ৭০০ ও ৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তারা সমুদ্র উপকূলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের পুরোটা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। গ্রীকদের সংস্পর্শে এসে তাদের সভ্যতার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়, যা তাদের শহরগুলোতে দৃশ্যমান ছিল।
ইরট্রুস্কান: পো নদীর অববাহিকার মধ্যাঞ্চলে এদের বসবাস ছিল। তবে গলদের আক্রমণে এরা সেখান থেকে দক্ষিণে টিবের নদীর দিকে চলে আসে এবং এরট্রুরিয়া নামের জায়গাতে নতুনভাবে বসতি স্থাপন করে। এখানে তারা বারোটি নগর-রাষ্ট্রের সমন্বয়ে একটি কনফেডারেশন গঠন করেছিল। ইরট্রুস্কান সভ্যতার চূড়ান্ত উৎকর্ষের সময় উত্তরে আল্পস থেকে পূর্বে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর পর্যন্ত তাদের রাজ্য বিস্তৃত হয়েছিল। ইরট্রুস্কান জাতি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে উন্নত সভ্যতা, সংস্কৃতি ও নির্মাণশৈলীর কারণে, যার অনেক কিছুই পরে রোমানরা তাদের সভ্যতার মধ্যে গ্রহণ করে নেয়। রোমের আগে তারাই সম্ভবত ছিল ইতালির সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতি। তবে রোমের শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের প্রভাব কমে যেতে থাকে এবং ভেই নগরীর পতনের মধ্য দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু ইরট্রুস্কান সভ্যতা ইতালি থেকে মুছে যায়।
ইতালিয়ান: উপদ্বীপের মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বেশ কিছু জাতির আবাস ছিল যারা মূলত ইন্দো-জার্মান বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলত। এরা কৃষিকাজ, বাড়িঘর ও অস্ত্রশস্ত্র নির্মাণ, নৌকা তৈরি, খাদ্য প্রস্তুতি ও লবনের ব্যবহার ইত্যাদিতে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছিল। স্বামী-স্ত্রী যূথবদ্ধ হয়ে পরিবার ও গোত্রভিত্তিক একটি সমাজব্যবস্থা এখানে গড়ে উঠেছিল। এদেরই একটি অংশ ল্যাটিয়াম অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে, যাদের ল্যাটিন বলা হয়। প্রথমে এখানে প্রধান নগর ছিল অ্যালবা লংগা, যার নেতৃত্বে ত্রিশটি শহরের এক জোট গড়ে ওঠে, যাকে তারা বলত ল্যাটিন কনফেডারেসি। প্রতিবছর জোটবদ্ধভাবে এরা ল্যাটিন ফেস্টিভ্যাল নামে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান পালন করত তাদের প্রধান দেবতা জুপিটারের উদ্দেশ্যে। জুপিটার ছিলেন রোমের পৃষ্ঠপোষক দেবতা। রোম প্রতিষ্ঠার পর তারাও এই জোটের সদস্য ছিল, কিন্তু পরে সে অন্যান্য সব সদস্যের থেকে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে এবং পার্শ্ববর্তী সমস্ত শহর নিজের অধিকারে নিয়ে নিলে ল্যাটিন কনফেডারেসি বিলুপ্ত হয়।
রোম শহরের পত্তন
প্রাচীন ইতালির ভৌগলিক সীমারেখা ও জনবসতির আলোচনা টেনে আনা এজন্য যে, কীভাবে এই অঞ্চলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে রোমান সভ্যতার উৎপত্তি ঘটলো তার একটি প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা। মনে রাখতে হবে, রোমান জাতি গড়ে উঠেছিল তৎকালীন ইতালির বিভিন্ন জাতির, বিশেষত ল্যাটিন, স্যাবিন, ইট্রুস্কান ও ইতালিয়ান জাতির সংমিশ্রণে। কাজেই তাদের সভ্যতা-সংস্কৃতিতে এর প্রতিফলন দেখা যায়।
টিবের নদীর ধারে ভূমধ্যসাগর থেকে পনের মাইল দূরে রুক্ষ পর্বতবেষ্টিত ভূমিতে বসবাস করত কিছু গোত্র। এখানেই ছিল সুবিখ্যাত সেই সাত পাহাড়ের সমষ্টি- অ্যাভেটাইন, প্যালাটাইন, ক্যাপিটোলিন, সিলিয়ান, ইসকুয়ালাইন, কুইরিনাল এবং ভিমিনাল। টিবেরের অন্য তীরে ছিল জ্যানিকুলাম পাহাড়ের অংশ, যার সাথে সেতুর মাধ্যমে পরবর্তীতে শহরের সংযোগ করা হয়। ইরট্রুস্কানদের বসতি নদীর অন্য পাড়ে থাকায় তাদের আক্রমণের বিপরীতে জ্যানিকুলাম প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করত।
প্যালাটাইন পাহাড়ে বসতি স্থাপনকারী একটি গোত্রের নাম ছিল র্যামনেস, যা পরে ধীরে ধীরে রোম নামে রূপ নেয়। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, এই র্যামনেস গোত্র এসেছিল অ্যালবা লংগা থেকে। এরা প্রথমে কুইরিনাল পাহাড়ে থাকা আরেকটি গোত্র স্যাবিনদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে এবং পরে সিলিয়ান পাহাড়ে থাকা আরও একটি গোষ্ঠীকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে।
এরা প্রথমে ছোট ছোট গ্রামে বিভক্ত হয়ে বসবাস করত এবং প্রতি বছর একসাথে সেপ্টিমোনিয়াম বা সাত পাহাড়ের উৎসব নামে এক ধর্মীয় আচার পালন করত। এসব চলে আসছিল রোম প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকেই। আস্তে আস্তে সেখান থেকে সাত পাহাড় আর তার মধ্যের নিম্নভূমি নিয়ে গড়ে ওঠে ভবিষ্যৎ ইতিহাসের পরাক্রমশালী রোম সাম্রাজ্যের প্রধান শহর রোম।
ঠিক কবে রোম প্রতিষ্ঠিত হয় সে বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে সময়টা ছিল ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। রোম প্রতিষ্ঠার পর প্রতিবছর তার অধিবাসীরা ২১ এপ্রিল ‘ফেস্টিভ্যাল অফ পেইলস’ পালন করত, যেখানে তারা রাখাল ও গবাদিপশুর দেবতাদের উদ্দেশ্য পূজো দিত। তারা মনে করত, এই তারিখেই রোম নগরীর পত্তন হয়।
রোমের অবস্থান ছিল খুবই সুবিধাজনক স্থানে। টিবের নদী ধরে ভূমধ্যসাগরে যাওয়া আসা করা যেত, এছাড়াও রোম ছিল নদীর এমন এক অংশে যেখানে দুই পাড়ের মধ্যে দূরত্ব বেশি ছিল না। ফলে সহজেই নদী পার হওয়া যেত। উপরন্তু ইতালির মধ্যভাগে থাকায় এর কৌশলগত গুরুত্বও ছিল। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে এবং রোম দ্রুত সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠতে থাকে। এবার তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তাদের রাজ্য বিস্তারের জন্য, যেখানে যোদ্ধা ও সেনাপতির প্রয়োজন অনুভূত হয়।