১
১৫৭৯ সালের মাঝামাঝির দিকে বাংলা ও বিহারে সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে মুঘল সেনাবাহিনীর অফিসাররাই একযোগে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসলেন। বিদ্রোহের বিস্ফোরণ হলো পরের বছর শুরুর দিকে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিদ্রোহ দমনে সম্রাট আকবর শুরু থেকেই বেশ তৎপর ছিলেন। প্রথমে তিনি আলোচনার মাধ্যমে সংকট কাটানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্রাটের এই চেষ্টা ব্যর্থ হলে তিনি সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলেন। সম্রাট আকবর প্রথমে বিহারের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করলেন। অন্যদিকে বাংলার সুবাদার মুজাফফর খান তুরবতী ব্যস্ত থাকলেন বাংলার বিদ্রোহীদের নিয়ে।
রাজকীয় বাহিনী বিহারে আক্রমণ শুরু করলে বিহারের বিদ্রোহীরা টিকতে না পেরে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো। বিদ্রোহীদের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ বাংলার বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিলো। এই বিদ্রোহীদের মাঝে মাসুম খান কাবুলি হচ্ছেন খুবই গুরুত্বপূর্ন একজন। সম্রাট আকবরের সৎ ভাই কাবুলের মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের দুধ ভাই ছিলেন তিনি।
বিহারের বিদ্রোহীরা বাংলার বিদ্রোহীদের সাথে একজোট হওয়ায় যুদ্ধের মোড় এবার ঘুড়ে গেলো বিদ্রোহীদের দিকে। বিদ্রোহীরা বাংলার প্রবেশপথ তেলিয়াগড় বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা করলো, যাতে সম্রাটের বাহিনী বাংলায় মুঘল সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য যেতে না পারে। মুজাফফর খান তুরবতীও বিদ্রোহীদের পরিকল্পনা আঁচ করতে পেরে অতি দ্রুত খাজা শামসউদ্দিন, তিমুর খান আর জাফর বেগের নেতৃত্বে তেলিয়াগড় দুর্গ রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী প্রেরণ করলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, দুর্গ আগেই বিদ্রোহীদের দখলে চলে গিয়েছিল।
বাংলার প্রবেশমুখ এই তেলিয়াগড়ের অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কাজেই মুঘল সেনাবাহিনীও তেলিয়াগড় হাতছাড়া করতে রাজি ছিলো না। ফলে মাঝখানে গঙ্গাকে রেখে আবার দুই পক্ষ মুখোমুখি হলো। এদিকে রাজমহলের কাছাকাছি গঙ্গার পাড়ি দিয়ে বাবা খান কাকশালও তার বাহিনী নিয়ে বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিলেন।
দীর্ঘ ১৯ দিন দুই পক্ষ যার যার অবস্থান দখল করে বসে রইল। এর ভেতরে ছোটখাট সংঘর্ষ চলতেই থাকল। দুই পক্ষেই হতাহতের পরিমাণ বাড়তে লাগল। কিন্তু, অচলাবস্থা কাটার কোনো লক্ষণই দেখা গেল না। তবে এই দীর্ঘ অচলাবস্থা কাটলো একটি গুজবের উপর ভিত্তি করে। সম্রাট আকবর বাংলায় মুঘল বাহিনীকে সহায়তা করতে নতুন সেনাবাহিনী প্রেরণ করছেন, এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিদ্রোহীরা বিপদ আঁচ করতে পেরে উড়িষ্যার দিকে পালানো শুরু করল।
মুঘল সেনাবাহিনী এদিকে মারাত্মক একটা ভুল করে ফেললো। পরিস্থিতির উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না নিয়েই নতুন বাহিনী আসার কথা শুনে রাতে টহলে ঢিল দিয়ে দিল। যার পুরো লাভ তুললেন বাবা খান কাকশাল। তিনি স্কাউটদের মাধ্যমে এই অবস্থা জানতে পেরে পূর্ন শক্তিতে মুঘল সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ চালালেন। নিশ্চিন্তে বসে থাকা মুঘল সেনাবাহিনী কিছু টের পাবার আগেই পরাজিত হয়ে গেল।
২
সুবাদার মুজাফফর খান তুরবতী তান্ডায় বসে এই পরাজয় সংবাদ পেলেন। তখন পর্যন্ত তার অনুগত জেনারেলরা তাকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আরেকটি বাহিনী প্রেরণ করতে পরামর্শ দিলেন। তাতে অন্তত নতুন বাহিনী আসা পর্যন্ত বিদ্রোহীদের তেলিয়াগড়েই আটকে রাখা সম্ভব হবে। কিন্তু, সুবাদার তা না করে তান্ডার প্রতিরক্ষা জোরদারে মনোযোগ দিলেন। সিদ্ধান্তটি বেশ বিপজ্জনক ছিল। কারণ, তিনি যদি তান্ডা রক্ষা করতে না পারেন, তাহলে তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসার মতো কোনো পথ খোলা থাকবে না।
এদিকে বিদ্রোহীরা তেলিয়াগড়ের সফলতার পর সোজা এসে তান্ডা অবরোধ করল। মুজাফফর খান তুরবতী এবার আর রাজধানীও ধরে রাখতে পারলেন না। বিদ্রোহীরা তান্ডার প্রতিরক্ষা ভেদ করে তা শহরের ভেতরে ঢুকে গেল। শহরটি দখল করে তারা বাংলার সুবাদার মুজাফফর খান তুরবতীকে নির্মমভাবে হত্যা করলো। দিনটি ছিলো ১৫৮০ সালের ১৯ এপ্রিল।
মুজাফফর খান তুরবতীর মতো যোগ্যতাসম্পন্ন জেনারেলের এমন করুণ পরিণতি মোটেও কাম্য ছিলো না। তবে তার এমন পতনের বেশ কয়েকটি কারণ আছে। তিনি বাংলায় এসে অধীনস্থদের সাথে বেশ রুক্ষ আচরণ করতে শুরু করেছিলেন। তার ভেতরে একটা গর্বিত ভাগ চলে এসেছিল, তবে এই অঞ্চলের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে তিনি খুব বিরক্ত ছিলেন।
প্রশাসনের প্রতিটা জায়গায় দুর্নীতিবাজ আর ঘুষখোররা ঘাপটি মেরে বসে ছিলো। সুবাদার মুজাফফর খান দুর্নীতি রোধ করতে ঘোড়া দাগানো পদ্ধতি বেশ শক্তভাবে প্রয়োগ করতে চেয়েছিলেন। একইসাথে পুরোনো নথিপত্র ঘাটাঘাটি শুরু করেছিলেন, যার ফলে দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তারা আতঙ্কে ভুগছিল। তার উপর তিনি বাংলা আর বিহারের জায়গীরদারদের জায়গীরে ব্যাপক রদবদল করেছলেন তিনি, তাতে অনেক বিশ্বস্ত লোকজনই ক্ষেপে উঠছিল। এই ক্ষিপ্ত অফিসার আর জায়গীরদাররাই নিজেদের অধীনস্থ বাহিনীকে মুজাফফর খান তুরবতীর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। যার পরিণতি হলো বিদ্রোহীদের হাতে সুবাদারের করুণ মৃত্যু।
দুর্নীতিবাজদের শাস্তি অবশ্যই প্রয়োজন ছিলো, কিন্তু এমন যুদ্ধাবস্থায় ধীরে চলার নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন ছিলো। তবে তখনো তার হাতে যে পরিমাণ রাজকোষ আর সৈন্য ছিল, তা ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে তিনি একাই বিদ্রোহীদের কোমড় ভেঙে দিতে পারতেন। সম্ভবত নিজের আত্মগৌরব আর বয়সের ভারে তিনি ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে ব্যর্থ হন।
৩
বাংলার যতটুকুই আকবর জয় করেছিলেন, আচমকাই তা তার হাতছাড়া হয়ে গেলো। বিপদ শুধু এটুকুই না, ইতোমধ্যেই বিদ্রোহীদের সাথে সম্রাটের সৎ ভাই মির্জা মুহাম্মদ হাকিমের যোগাযোগ হয়েছে। বিদ্রোহীরা মির্জা মুহাম্মদ হাকিমকে মুঘল সাম্রাজ্যের সম্রাট ঘোষণা করলো। বাংলায় তার নামে খুতবাও পড়া হলো। তবে নতুন সম্রাট বাংলায় উপস্থিত না থাকায় মাসুম খান কাবুলিকে বাংলায় সম্রাটের প্রতিনিধি ঘোষণা করা হলো। তিনি উপাধী নিলেন ‘দৌরান’। বাবা খান কাকশাল হলেন বাংলার সুবাদার। তিনি উপাধী নিলেন ‘খান-ই-খানান’। আরেক বিদ্রোহী নেতা জব্বারী ‘খান জাহান’ উপাধী পেলেন। এছাড়াও উজির জামিল, খালদিন, জান মুহাম্মদ বাসুদী, আবুল খোদাবন্দ খান, মুহাম্মদ বেগ বাহাদুর খানসহ প্রত্যেক বিদ্রোহী নেতা উপাধীসহ জায়গীর বরাদ্দ পেলেন। এছাড়াও প্রত্যেককে নিজস্ব পতাকা আর নাকাড়া দেয়া হয়। এভাবেই বিদ্রোহী মুঘল সেনানায়কদের নেতৃত্বে গঠিত হলো স্বাধীন বাংলা সরকার।
বিদ্রোহী নেতৃবৃন্দ অবশ্য জানতেন, সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে গিয়ে এভাবে বেশি দিন এই স্বাধীন সরকারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। তবে খানিকটা হলেও আশা ছিলো। আকবরের ভাই মির্জা মুহাম্মদ হাকিম যদি কাবুল থেকে রাজধানী অভিমুখে এগিয়ে আসে, তাহলে আকবর সাম্রাজ্যের পূর্ব আর উত্তর-পশ্চিম দুই দিক থেকেই চাপে পরে যাবেন। তাতে বেশ ভালো সম্ভাবনা আছে আকবরকে অপসারণ করার। মির্জা মুহাম্মদ হাকিম অভিযান শুরু করলে অন্তত বেশ কয়েক বছর এই সরকারের অস্তিত্ব টিকে থাকবে।
কিন্তু, তাদের এই সুখ বেশি দিন টিকলো না। আকবর পুনরায় বিহার হয়ে বাংলা অভিমুখে একটি সেনাবাহিনী প্রেরণ করলেন।
৪
প্রথম আঘাত আসলো বিহারের বিদ্রোহীদের উপর। বাহাদুর বদখশী মনোযোগ দিলেন ত্রিহুতের দিকে, রোটাস দুর্গের অধিপতি মুহিব আলী খান নজর দিলেন পাটনার প্রতি। ত্রিহুত আর পাটনা চোখের পলকেই বিদ্রোহীদের হাতছাড়া হয়ে গেলো। অন্যদিকে টোডর মল আর তরসুন খান রওয়ানা দিলেন বাংলা অভিমুখে। ১৫৮০ সালের ১৯ মে নাগাদ এই বাহিনীটি মুঙ্গের পর্যন্ত পৌঁছে যায়। বিদ্রোহীরা এই বাহিনীকে তেলিয়াগড়ের বাইরেই বাঁধা দিতে মনস্থির করলো। প্রায় ৩০,০০০ অশ্বারোহীর একটি শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে তারা তেলিয়াগড় অতিক্রম করে মুঙ্গেরের কাছাকাছি পৌঁছে গেলো। ওদিকে টোডর মল বাংলার বিদ্রোহীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে মুঙ্গেরের দুর্গে নিজের অবস্থান শক্ত করলেন।
বিদ্রোহীরা নিজেরাও মুঘল সেনাবাহিনীর যোদ্ধা ছিল, বিদ্রোহের নেতারাও বেশিরভাগই মুঘল সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। কাজেই মুঘল সেনাবাহিনী কী কৌশলে যুদ্ধ করে, তারা তা ভালোভাবেই জানতো। এই কারণে আত্মবিশ্বাসী হয়ে বিদ্রোহীরা জুন মাসের শুরুর দিকে প্রথম আক্রমণটা চালালো। ৩০,০০০ অশ্বারোহী যোদ্ধা, ৫০০ রণহস্তি, শক্তিশালী গোলন্দাজ বাহিনী আর বিপুল সংখ্যাক জলযান নিয়ে বিদ্রোহীদের এই বাহিনী মুঙ্গের দুর্গকে অবরোধ করলো।
ভেতরে আটকা পড়লেন টোডর মল। তবে তিনি একেবারে চুপচাপ বসে থাকলেন না। প্রতিদিনই এই দুই বাহিনী ছোটখাট সংঘর্ষে জড়াতে লাগল। এতে দুই পক্ষই অল্প-বিস্তর ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে লাগল। টোডর মল অবরোধ দুর্বল করার করার জন্য বিদ্রোহীদের রসদ সরবরাহের পথের উপর হামলা করার পরিকল্পনা করলেন। দুর্গের আশেপাশে থাকা জমিদারদের সাহায্যে তিনি বিদ্রোহীদের রসদ সরবহার বন্ধ করতে সক্ষম হলেন। বিদ্রোহীদের বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র আর রসদ মুঘল সেনাবাহিনীর হস্তগত হলো। রসদ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরবর্তী কয়েকদিনের মাঝেই বিদ্রোহী শিবির খাদ্য সংকটে ভুগতে শুরু করল।
এদিকে বিদ্রোহীদের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় নেতা বাবা খান কাকশাল অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার অসুস্থতা ক্রমেই বাড়তে থাকলে কাকশালরা বিদ্রোহী মনোভাব ত্যাগ করে আকবরের সাথে মিটমাট করতে আগ্রহী হয়ে উঠল। অন্যদিকে চলমান অবরোধে বিদ্রোহীদের ক্ষয়ক্ষতিই ধীরে ধীরে বাড়ছিল।
জুলাই মাসের শেষ নাগাদ টোডর মলকে সহায়তা করতে নতুন সেনাবাহিনী এসে পৌঁছালে বিদ্রোহীরা আর আশা নেই বুঝতে পেরে পিছু হটতে শুরু করলো। তবে বর্ষা চলে আসায় টোডর মল আর সামনে আগালেন না। মুঘল সীমানা মুঙ্গের পর্যন্ত এসে ঠেকলো।
৫
মুঙ্গেরে ব্যর্থতার পর মাসুম খান কাবুলি বিহারের দক্ষিণাংশের দিকে পালিয়ে গেলেন। বিদ্রোহীদের আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা আরব বাহাদুর গেলেন পাটনা পুনর্দখল করতে। টোডর মল মুঘল সেনাবাহিনীর একাংশকে এবার পাটনা রক্ষার জন্য প্রেরণ করলেন। আরব বাহাদুর এই বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে পাটনা অবরোধ তুলে নিয়ে পালিয়ে গেলেন। পাটনা উপর থেকে বিপদ কেটে যাওয়ার পর এই বাহিনী এবার দক্ষিণ বিহারের দিকে রওয়ানা হলো। ছোটখাট কিছু সংঘর্ষের পর মাসুম খান কাবুলি নিজের দুরাবস্থা উপলব্ধি করতে পারলেন। কোথাও স্থির হতে না পেরে শেষমেষ তিনি বাংলার দিকে পালিয়ে বাঁচলেন। পরবর্তী কিছুদিনের মাঝেই তিনি ভাটির রাজা ঈশার খানের সাথে জোট বাঁধবেন। এই জোট সম্রাট আকবরকে বেশ ভোগাবে। যথাসময়ে সে আলাপ হবে। তবে আপাতত বিহার নিরাপদ হলো।
মুজাফফর খান তুরবতীর মৃত্যুর পর বাংলার সুবাদার হিসাবে নিযুক্ত হলেন আকবরের দুধ ভাই মির্জা আজিজ কোকা। তিনি ছিলেন শামসুদ্দিন মুহাম্মদ আতাকা খান ও জিজি আগার পুত্র। তাকে ৫,০০০ সৈন্যের মনসবদার ঘোষণা করা হয় এবং ‘খান-ই-আযম’ খেতাব প্রদান করা হয়। যদিও বাংলায় তখন মুঘল অধিকার ছিল না বললেই চলে। তবে আজিজ কোকার দায়িত্বই হলো হারানো ভূখন্ডগুলো পুনরুদ্ধার করা। আরেক দক্ষ জেনারেল শাহবাজ খানকে নিয়োগ দেয়া হলো আজিজ কোকাকে সহায়তা করার জন্য।
৬
পূর্বের বিদ্রোহ বিহার থেকে ঠেলে বাংলার দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাতে যে বিদ্রোহ দমন হয়ে গিয়েছে বিষয়টা এমন না। বিদ্রোহীরা এবার বিহার ছেড়ে বাংলায় গিয়ে সংঘবদ্ধ হচ্ছে। সমস্যা উত্তর-পশ্চিম দিকেও হচ্ছে। খবর আসছে, সুদূর কাবুলে বসে আকবরের ভাই মির্জা মুহাম্মদ হাকিম সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবার আক্রমণ হবে একযোগে দুই দিক থেকে।
পূর্বে বাংলা থেকে বিদ্রোহী অফিসাররা আক্রমন চালাতে চালাতে রাজধানী অব্দি পৌঁছে যাবে, অন্যদিকে মির্জা হাকিম উত্তর-পশ্চিম থেকে আক্রমণ চালিয়ে রাজধানীতে এসে তাদের সাথে মিলিত হবে। আকবরকে সিংহাসনচ্যুত করার পরিকল্পনাটা বেশ বাস্তবসম্মত। ঠিকঠাকভাবে কাজে লাগাতে পারলে কিছুদিনের মাঝেই মির্জা মুহাম্মদ হাকিম মুঘল সম্রাট হিসেবে মসনদে বসতে যাচ্ছেন। আকবরের সামনে প্রশ্ন হচ্ছে, সীমান্তের কোন দিকটাতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত? বাংলায় না কাবুলে? আকবর নিজে কোন দিকে যাবেন?
[এই সিরিজের পূর্বে প্রকাশিত পর্বটি পড়ুন এখানে। সিরিজের সবগুলো লেখা পড়তে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।]