Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ড্রপা পাথর: তিব্বতের বুকে ভিনগ্রহী ধাঁধা

কোনো এক নাম না জানা গ্রহের কথা। সেখানে ড্রপা নামক এক জাতির বসবাস। বেশ সুখে শান্তিতে বাস করতো তারা। তাদের গ্রহটাও আমাদের পৃথিবীর মতো সবুজ। মাঠে ঘাটে সবুজ ফসল ফলে। সারাদিনের কাজ শেষে ড্রপারা ঘরে ফিরে ক্লান্তি দূর করতে ঠাণ্ডা জল দিয়ে স্নান করে। প্রাণের অন্যতম শর্ত পানি। সেই নাম না জানা গ্রহে পানির কোনো অভাব নেই। তাই আমাদের ছোট গ্রহ পৃথিবীর ন্যায় সেই গ্রহও প্রাণের প্রাচুর্যে ভরপুর।

ধীরে ধীরে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক দূর এগিয়ে গেলো তারা। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে গ্রহের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গড়ে উঠলো বড় বড় কল-কারখানা। গ্রহের পরিষ্কার বাতাস খুব দ্রুত বিষিয়ে উঠলো। কয়েক শতাব্দীর মধ্যে সম্পূর্ণ গ্রহ শহুরে আবর্জনায় ঠাসা হয়ে গেলো। একসময় তারা বুঝতে পারলো, বেঁচে থাকতে হলে বিকল্প বাসস্থানের সন্ধানে বের হতে হবে। খুব দ্রুত নতুন গ্রহের সন্ধান বের করতে হবে। তা সম্ভব না হলে কয়েক বছরের মাথায় সম্পূর্ণ প্রজাতি মহাবিশ্বের বুক থেকে হারিয়ে যাবে। ড্রপারা তাদের মধ্য থেকে বেশ সাহসী কয়েকজনকে বাছাই করলো। সবার শুভকামনা নিয়ে ড্রপাদের শেষ সম্বল সেই অভিযাত্রীরা এক অত্যাধুনিক মহাকাশযানে চড়ে রওয়ানা দিলো নতুন গ্রহের খোঁজে। অভিযাত্রী দলের সবাই ঘটনাপ্রবাহ লিখে রাখার উদ্দেশ্যে একটি করে ডায়েরি নিয়ে নিলো। ড্রপাদের ডায়েরিটাও বেশ অদ্ভুত। সেটা বেশ শক্ত পাথরের তৈরি একটি চাকতিমাত্র। আমাদের পৃথিবীর নরম কাগজে ঠাসা বাহারি রঙের ডায়েরির সাথে এর কোনো মিল নেই।

নতুন গ্রহের খোঁজে ড্রপারা (প্রতীকী ছবি); Source: The Sun

গ্যালাক্সির পর গ্যালাক্সি উড়ে বেড়ালো তারা। হাজার হাজার গ্রহের দেখা মিললো, কিন্তু একটি গ্রহও বাস করার উপযোগী নয়। শেষপর্যন্ত তারা আমাদের এই সৌরজগতে এসে পৌঁছালো। এখানে গ্রহের সংখ্যাও কম। তাই প্রাণের আধার সবুজ পৃথিবীকে খুঁজে পেতে বেশি কষ্ট করতে হলো না তাদের। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে সেই বিশাল মহাকাশযান এসে অবতরণ করলো এক জনমানবহীন অঞ্চলে। পৃথিবীর বুকে সেই স্থানের নাম ‘তিব্বত’। পৃথিবীর বিশুদ্ধ বাতাসে প্রাণভরে শ্বাস নিলো ড্রপারা। হাজার কোটি আলোক বর্ষব্যাপী এই সফরে শেষপর্যন্ত সফলতার মুখ দেখলো তারা। কয়েকজন ড্রপা তখন নিবিড় মনে ডায়েরি লিখে চলেছে। সেই পাথুরে চাকতির বুকে খোদাই হচ্ছে ড্রপাদের সফরনামা।

১৯৩৮ সালে একদল প্রত্নতাত্ত্বিক কর্তৃক তিব্বতের গুহা থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু অদ্ভুত পাথুরে চাকতি। বেশ কয়েক বছর গবেষণার পর এক অধ্যাপক এর বুকে খোদাই কর পাণ্ডুলিপির অর্থভেদ করতে সক্ষম হন বলে দাবি করেন। সেখানে তিনি জানতে পারেন ড্রপা নামক ভিনগ্রহীদের আগমনের কথা।

অনেকেই তার দাবি মেনে নেন। আবার অনেকেই ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভুয়া বলে উড়িয়ে দেন। কিন্তু কোনটা সত্য? ড্রপা পাথর কী আসলেই ভিনগ্রহীদের ডায়েরি? নাকি তিব্বতের গুহায় অবহেলায় পড়ে থাকা সামান্য পাথরখণ্ড?

তিব্বত সীমান্তে ইতিহাসের সন্ধানে

বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক চি পু তেই প্রায়ই তার ছাত্রদের নিয়ে ইতিহাসের সন্ধানে বের হতেন। বিভিন্ন পর্বতের গুহা, ঐতিহাসিক স্থাপনা, মন্দির প্রভৃতি স্থানে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান করতেন। তেমনি ১৯৩৮ সালের শেষের দিকে তিনি একদল ছাত্রসহ তিব্বত সীমান্তে অভিযানে বের হন। তিব্বতের বায়ান কারা উলা (বায়ান হার) পর্বতের বেশ কিছু গুহা পর্যবেক্ষণ করছিলেন তিনি। হঠাৎ কয়েকজন ছাত্র এক অদ্ভুত গুহার সন্ধান লাভ করে। গুহাটি বাইরে থেকে দেখতে বেশ অদ্ভুত লাগছিলো। গুহার দেয়াল বেশ মসৃণ ছিল। বসবাসের উপযোগী করে তুলতে কারা যেন ভারি যন্ত্রপাতি দিয়ে গুহার পাথর কেটে মসৃণ করে তুলেছে। তারা অধ্যাপককে গুহার ব্যাপারে অবগত করেন।

তিব্বত সীমান্তবর্তী বায়ান কারা উলা (বায়ান হার) পর্বত; Source: Memim

তিনি দলবল নিয়ে গুহার ভেতর প্রবেশ করেন। গুহার ভেতরটা বেশ উষ্ণ ছিল। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তারা বেশ কিছু সারিবদ্ধ কবরের সন্ধান লাভ করে। প্রায় ৪ ফুট ৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের কবরগুলো খনন করতেই বেরিয়ে এলো মৃত মানুষের হাড়গোড়। কিন্তু কংকালের মাথার খুলিসহ বিভিন্ন হাড় স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় আকারে বেশ বড় ছিল। “কার মাথার খুলি এতবড় হতে পারে?” একজন ছাত্র বলে উঠলো, “হয়তো এগুলো কোনো গরিলা কিংবা উল্লুকের কংকাল।” কিন্তু অধ্যাপক তার উত্তর পছন্দ করলেন না। “একটা উল্লুককে কারা এত যত্ন করে সমাধিস্থ করবে?”

কবরের বুকে কোনো নামফলক ছিল না। তাই এগুলো কাদের কবর হতে পারে, তা জানার কোনো সুযোগ ছিল না। অধ্যাপকের নির্দেশে ছাত্ররা গুহাটি আরও ভালো করে খুঁজে দেখতে লাগলো। একপর্যায়ে তারা এক ফুট ব্যাসার্ধের শত শত পাথুরে চাকতির সন্ধান লাভ করে। পাথরের গায়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়বস্তু, যেমন-সূর্য, চন্দ্র, পাখি, ফল, বৃক্ষ প্রভৃতি বেশ যত্ন করে খোদাই করা ছিল। অধ্যাপক চি পু তেই প্রায় কয়েকশ চাকতি নিয়ে বেইজিংয়ে ফেরত যান। তিনি অন্যান্য অধ্যাপকের নিকট এই অনুসন্ধান সম্পর্কে বিবৃতি প্রদান করেন। তার হিসাবানুযায়ী চাকতিগুলো প্রায় ১২ হাজার বছরের পুরান। ধীরে ধীরে চীন ছাড়িয়ে পুরো পৃথিবীতে এই পাথুরে চাকতির গল্প ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকগণ এই পাথুরে চাকতির নাম দেন ‘ড্রপা পাথর’ (Dropa Stone)।

বারো হাজার বছর পুরাতন পাথর এই ড্রপা পাথর; Source: ufoinsight.com

ড্রপা পাথরের গায়ের সাংকেতিক ভাষা ভেদ করার লক্ষ্যে গবেষণা শুরু হয়। আর পৃথিবীবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। সবাই জানতে চায়, পাথরের গায়ে হাজারো সংকেতের মাঝে কোন অজানা রহস্য লুকিয়ে আছে।

ড্রপা রহস্য এবং একজন ‘সুম উম নেই’

ড্রপা পাথরের ‘ড্রপা’ নামের আবিষ্কারক বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের রহস্যময় গবেষক সুম উম নেই। ড্রপা পাথর আবিষ্কারের প্রায় বিশ বছর পর তিনি গবেষণা শুরু করেন। প্রায় চার বছরের গবেষণা শেষে দুর্ভেদ্য ড্রপার রহস্য সমাধান করতে সক্ষম হন তিনি। তিনি এক জার্নালের মাধ্যমে দাবি করেন, পাথরের গায়ে হায়ারোগ্লিফিক বর্ণ দ্বারা ‘ড্রপা’ নামক এক ভিনগ্রহী জাতির সফরনামা লিখিত রয়েছে। ‘ভিনগ্রহী’ কিংবা ‘এলিয়েন’ শব্দটি শোনা মাত্রই সবার টনক নড়ে উঠে। সবাই আগ্রহী হয়ে উঠে এই পাথুরে চাকতির ব্যাপারে, “কী বলতে চায় লোকটা? এটা এলিয়েনদের কারসাজি নাকি?

সুম উম নেই এর মতে এটা ভিনগ্রহীদেরই কারসাজি। তিনি একটি চাকতি সম্পূর্ণ অনুবাদ করেন। তার অনুবাদের মর্মার্থ হচ্ছে,

“আমরা (ড্রপারা) মেঘের উপর থেকে মহাকাশযানে চড়ে মাটিতে অবতরণ করি। আমরা, আমাদের সন্তানেরা এই গুহায় প্রায় দশ সূর্যোদয় পর্যন্ত লুকিয়ে থাকি। কয়েকদিন পর যখন আমরা স্থানীয়দের দেখা পাই, তখন তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। ইশারায় যোগাযোগ করতে সক্ষম হওয়ায় আমরা গুহা থেকে বেরিয়ে আসি।”

ড্রপা পাথর কি ভিনগ্রহীদের সফরনামা?; Source: ufoinsight.com

এরপর থেকেই চাকতিগুলো ড্রপা পাথর নামে পরিচিতি লাভ করে। সুম উম নেই ১৯৬২ সালে তার গবেষণা নিয়ে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। কিন্তু তার গবেষণার ফলাফল অন্যান্যরা মেনে নেননি। সুম উম নেইয়ের অনুবাদেও যথেষ্ট অসঙ্গতি ধরা পড়ে। ইতিহাসবিদ এবং পুরাতত্ত্ববিদগণের ছুঁড়ে দেয়া বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হন তিনি। জানা যায়, তিনি ব্যর্থতার দায়ভার মাথায় নিয়ে জাপানে নির্বাসনে চলে যান। এর অল্প কিছুদিন পরেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আপাতদৃষ্টিতে সুম উম নেইয়ের করুণ পরিণতির কথা জেনে অনেকেই মর্মাহত হবেন। কিন্তু সুম উম নেই এর রহস্য এখনও শেষ হয়নি। বলতে গেলে শুরু হলো মাত্র! অল্প কিছুক্ষণ পরেই সেই রহস্যের কথায় ফিরছি।

রুশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা

১৯৬৮ সালে ড্রপা পাথর রুশ বিজ্ঞানী ভায়াস্লভ সাইজেভ এর গবেষণাগারে স্থানান্তরিত হয়। তিনি চাকতির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা চালান। তার মতে, ড্রপা পাথরের গঠন অন্যান্য পাথরের চেয়ে আলাদা। পাথরগুলো মূলত একধরনের গ্রানাইট পাথর যার মাঝে কোবাল্টের পরিমাণ অনেক বেশি। কোবাল্টের উপস্থিতি পাথরটিকে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত শক্ত করে তুলেছে। এখন প্রশ্ন থেকে যায়, তৎকালীন অধিবাসীরা ঠিক কীভাবে এই শক্ত পাথরের মাঝে সাংকেতিক চিহ্ন খোদাই করেছেন? সাংকেতিক চিহ্নগুলো আকারে ছোট হওয়ায় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সাইজেভের মতে, প্রাচীনকালে এমন কোনো পদ্ধতি ছিল না যা দিয়ে এরূপ পাথরের মাঝে খোদাই করা সম্ভব!

অসিলোগ্রাফের সাহায্যে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে; Source: Build Electronic Circuits

সোভিয়েত ম্যাগাজিন ‘স্পুটনিক‘ এর এক বিশেষ সংস্করণে এই পাথর সম্পর্কে আরও অনেক অদ্ভুত তথ্য জানা যায়। রুশ বিজ্ঞানীরা অসিলোগ্রাফ (Oscillograph) এর মাধ্যমে এই পাথর পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, কোনো একসময়ে এই পাথরকে বৈদ্যুতিক বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু কখন বা কীভাবে? এর উত্তর তারা দিতে পারেননি।

আর্নেস্ট ওয়েগারারের ছবি

পরবর্তী ঘটনার সময়কাল ১৯৭৪ সাল। অস্ট্রীয় প্রকৌশলী আর্নেস্ট ওয়েগারার সেবার চীনের বানপো জাদুঘর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ড্রপা পাথরের দুটো চাকতি দেখতে পান। তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে চাকতি দুটোকে ক্যামেরাবন্দী করেন। পরবর্তীতে তিনি অস্ট্রিয়া ফিরে যাওয়ার পরে ক্যামেরার ছবিগুলো পরীক্ষা করছিলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে ক্যামেরার ফ্ল্যাশের ঝলকের কারণে চাকতির হায়ারোগ্লিফিক লিপিগুলো পরিষ্কারভাবে ধরা পড়েনি।

বানপো জাদুঘর; Source: Trip China Guide

কিন্তু এই ঘটনার কিছুদিন পরেই তৎকালীন জাদুঘরের মহাব্যবস্থাপককে বিনা কারণে বরখাস্ত করা হয় এবং চাকতি দুটো ধ্বংস করে ফেলা হয়। ১৯৯৪ সালে জার্মান বিজ্ঞানী হার্টউইগ হসডরফ বানপো জাদুঘর পরিদর্শনকালে সেই চাকতি সম্পর্কে জানতে চান। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ তাকে এই ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি চীনা সরকারি নথিপত্র খতিয়ে দেখেন। হসডরফ চীনা সরকারের নথিপত্র ঘেঁটে কোথাও ড্রপা জাতির কোনো নামগন্ধের খোঁজ পাননি!

এই রহস্যময় ঘটনার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

‘সুম উম নেই’ বিতর্ক এবং শুভঙ্করের ফাঁকি

ড্রপা পাথর গবেষণার প্রবাদ পুরুষ ধরা হয় রহস্যময় ‘সুম উম নেই’-কে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা সুম উম নেইয়ের সাথে পরিচিত হন ১৯৬২ সালে প্রকাশিত একটি জার্নালের মাধ্যমে। তাকে জনসম্মুখে কখনও দেখা যায়নি। এমনকি ড্রপা পাথর ব্যতীত আর কোথাও সুম উম নেইয়ের নাম নেই

একটা সময় গুঞ্জন উঠলো, সুম উম নেই কোনো চীনা নাম নয়।  খুব সম্ভবত এটি একটি জাপানিজ নাম। এভাবে সুম উম নেইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ ওঠায় তার অনুবাদ নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। শুরু থেকেই রহস্যের জন্ম দেয়া সুম উম নেই শেষপর্যন্ত নিজেই এক রহস্য হিসেবে বিদায় নিলেন।

ড্রপা পাথরের রহস্য দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে; Source: Historic Mysteries

কিন্তু ধীরে ধীরে ড্রপার রহস্য আরও ঘনীভূত হতে থাকে। একটা সময় দেখা গেলো, অধ্যাপক চি পু তেই, ভায়াস্লভ সাইজেভ, আর্নেস্ট ওয়েগারার প্রমুখ ব্যক্তিত্বের গবেষণা এবং অস্তিত্ব নিয়েও পুরাতত্ত্ববিদগণ সন্দিহান হয়ে পড়েন। ড্রপা পাথর আবিষ্কারের সময় তিব্বত সীমান্তে ‘ড্রকপা’ এবং ‘হাম’ নামক দুই উপজাতির বসবাস ছিল।  কিন্তু তাদের ইতিহাসের কোথাও এরূপ ভিনগ্রহী আগ্রাসনের ঘটনা উল্লেখ করা নেই। আর ড্রকপারা নিঃসন্দেহে মানুষ, ভিনগ্রহী কোনো প্রজাতি নয়!

ড্রপা পাথর নিয়ে বহু গবেষণা হলেও নানা বিতর্কের কারণে গবেষণার অগ্রগতি একদম শূন্যই বলা যায়। ড্রপা পাথর নিয়ে রহস্যের কোনো সমাধান না হলে হয়তো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই অজানা থেকে যাবে। আর পুরো ব্যাপারটি যদি বানোয়াট হয়েও থাকে, সেক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রমাণের মাধ্যমে রহস্যের ইতি টানা হোক।

ফিচার ইমেজ: Youtube

Related Articles