পৃথিবীর ইতিহাসে গণহত্যার জন্য সবচেয়ে কুখ্যাত যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হয় ভিয়েতনাম যুদ্ধকে। ১৯৫৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘায়িত এই যুদ্ধটি এশিয়ায় সংঘটিত সবচেয়ে বড় সংঘাত মানা হয়।
প্রাথমিকভাবে যুদ্ধটি ছিল দক্ষিণ ভিয়েতনাম আর উত্তর ভিয়েতনামের মধ্যে। মাঝখান থেকে আমেরিকা যুক্ত হয়। আমেরিকার হস্তক্ষেপ করার মূল কারণ ছিল- তারা সাম্রাজ্যবাদ ছাড়া সাম্যবাদী শাসন অথবা কমিউনিজমকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে দেবে না। উত্তর ভিয়েতনাম যখন কমিউনিজম প্রতিষ্ঠায় পুঁজিবাদী দক্ষিণ ভিয়েতনামের সাথে গৃহযুদ্ধে জড়ায়, দক্ষিণ ভিয়েতনামকে সমর্থন করতে আমেরিকা যুদ্ধে অংশ নেয়।
তাদের অংশগ্রহণের পরই যুদ্ধের চেহারা পাল্টে যায়, গতিপথ পরিবর্তন করে এবং ভয়াবহ রূপ নেয়। আমেরিকা দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষে ১৯৬৫ সালে সেখানে সৈন্য পাঠায়, কিন্তু এর ফলে যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের সূত্রপাত হয়, তাতে শেষপর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হতে পারে না এবং বিশ বছরের ভয়ংকর যুদ্ধে ১৯৭৫ সালে দুই ভিয়েতনাম একত্র হয়।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে প্রচুর আলোকচিত্রী ছবি তোলেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে দ্রুত এর ভয়াবহতা পৌঁছে যায় এবং মানুষ এর তাৎপর্য বুঝতে পারে।
চলুন কিছু বিখ্যাত আলোকচিত্রের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক ভিয়েতনাম যুদ্ধের ঘটনাগুলো।
১। এনগো দিনহ দিয়েম দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক থেকে মুক্ত হওয়ার পর, ডিয়েম ভিয়েতনাম শাসন করেছিলেন। পুঁজিবাদপন্থী অবস্থান তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একজন আকর্ষণীয় মিত্র হিসাবে গড়ে তুলেছিলো।
১৯৫৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যান। এই ছবিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডুইট ডি আইজেনহওয়ার, হাতে হাত মিলিয়ে মিত্র দিয়েমকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
২। ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় শহর সায়গন, ১৯৫৫-১৯৬৫ সাল অবধি দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী ছিলো। ভিয়েতনাম যুদ্ধজয়ের পর, ভিয়েতকং গেরিলারা এই শহরকে ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হো চি মিন-এর নামে নামকরণ করে।
এ যুদ্ধে আমেরিকান সেনারা ভিয়েতনামে ২,০০০ থেকে ১৬,০০০ সামরিক উপদেষ্টার ওপর বন্দুক চালিয়েছে। ছবিটি সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত সায়গন শহরের।
৩। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা জড়িত থাকার সময় ভিয়েতনামে ৩,০০,০০০ এরও বেশি আমেরিকান সেনা আহত হয়েছিল। কিন্তু তা আহত ১০,০০,০০০ দক্ষিণ ভিয়েতনামি এবং ৬,০০,০০০ উত্তর ভিয়েতনামির তুলনায় কমই ছিল।
৪। ১৯৬৭ সালে, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার সহিংসতা যখন বাড়তেই থাকে, কমার কোনো লক্ষণই দেখা যায় না- তখন নতুনভাবে যুদ্ধবিরোধী মানুষ তা রুখে দাঁড়ানোর প্রয়াস চালায়। যেমন এই ছবিটিতে প্রায় এক লক্ষ প্রতিবাদী কণ্ঠ ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউজের সামনে যুদ্ধবিরতির দাবি নিয়ে জমায়েত করে। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীরাই নয়, বিভিন্ন পেশার মানুষসহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিও যুদ্ধবিরতির দাবিতে সমবেত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন বক্সার মোহাম্মদ আলি, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. বেঞ্জামিন স্পক; এমনকি ভিয়েতনামের ভবিষ্যত সিনেটর এবং রাষ্ট্রপতি প্রার্থী জন কেরিও।
জনগণের দাবির মুখে ১৯৭৩ এর আগস্ট মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বাধ্য হন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে।
৫। ভিয়েতনাম যুদ্ধের ছবিতে, মার্কিন বিমানবাহিনী ১ম লেফটেন্যান্ট জেরাল্ড সান্টো ভেনানজি উত্তর ভিয়েতনামি এক যুবতী, সৈনিকের দ্বারা বন্দী হন। ছবিতে সেই বন্দী হবার দৃশ্যটি ধরা পরেছে। ১৯৭৩ সালে যখন প্যারিস পিস অ্যাকর্ডে সম্মতি জানানো হয়, উত্তর ভিয়েতনামিরা ৫৯১ আমেরিকান যুদ্ধবন্দীদের ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু আরও ১,৩৫০ যুদ্ধবন্দীকে কখনোই ফেরত পাঠানো হয়নি এবং প্রায় ১,২০০ আমেরিকানের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাদের মরদেহ কখনই উদ্ধার করা যায়নি। নিখোঁজ সেনারা বেশিরভাগই লেফটেন্যান্ট ভেনানজির মতো পাইলট ছিলেন। তারা উত্তর ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া বা লাওসে ভিয়েতনামিদের গুলিতে নিহত হয় এবং কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
৬। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়, দক্ষিণ ভিয়েতনামি এবং ভিয়েতকং গেরিলা শনাক্তকরণ ছাড়াই দেশব্যাপী যোদ্ধা এবং সামগ্রী পাচার করার জন্য একাধিক সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেছিল। এই ছবিতে আরোগ্যকারী মূসা গ্রিন স্টাফ সার্জেন্ট মেলভিন গেইনসের মাথার ওপর পানি ঢালছেন, যখন গেইনস একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান করে ফেরত এসেছেন। গেইনস ১৭৩ এয়ারবোন বিভাগের সদস্য ছিলেন।
আজ, সুড়ঙ্গপথটি ভিয়েতনামের পর্যটকদের একটি অন্যতম আকর্ষণ।
৭। ভিয়েতনাম যুদ্ধটি আমেরিকানদের জন্য রক্তাক্ত এক রণক্ষেত্র ছিল, যদিও ভিয়েতনামিদের চেয়ে বেশি ভয়ংকর নয়। আমেরিকার ৫৮,২০০ সৈনিক নিহত, ১৬,০৯০ জন নিখোঁজ, ৩,০৩,৬৩০ সৈনিক আহত হয়েছিলো ভিয়েতনাম যুদ্ধে। অন্যদিকে, প্রায় ২০,০০,০০০ লক্ষ অসামরিক ভিয়েতনামিসহ প্রায় ৪০,০০,০০০ লক্ষ ভিয়েতনামি শহীদ হয় টানা ২০ বছরের যুদ্ধে।
৮। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার রেইনফরেস্টে ভিয়েতনাম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এরকম পরিবেশ মার্কিন সেনাদলের কাছে অপরিচিত ছিল। তারা জঙ্গলের পথে সজোরে আঘাত করে নিজেদের রাস্তা বানানোর চেষ্টা করতো।
৯। ভিয়েতনাম যুদ্ধে ৩,৯১,০০০ মার্কিন মেরিনরা অংশগ্রহণ করে যার প্রায় ১৫,০০০ সৈন্য মারা যায়। জঙ্গলের বেগতিক অবস্থা বিভিন্ন রকম রোগের সমস্যা তৈরি করে। প্রায় ১১,০০০ সৈন্য জঙ্গলে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে।
১০। দক্ষিণ ভিয়েতনামের সাইগনে ভিয়েতকংদের যুদ্ধবন্দী করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে অস্ত্রও কেড়ে নেওয়া হয়। ছবিতে যুদ্ধবন্দীরা বসে আছে পালা করা অস্ত্রের সামনে। ১৯৬৮ ভিয়েতনাম যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল।
১১। চীন থেকে আমদানি করা ঐতিহ্যবাহী ভিয়েতনামি কনফুসিয়ান সংস্কৃতিতে, নারীদের দুর্বল এবং সম্ভাব্য বিশ্বাসঘাতক উভয়ই বিবেচনা করা হতো, উপযুক্ত সৈনিক মনে করা হতো না। এই বিশ্বাসব্যবস্থাটি পুরানো ভিয়েতনামি ঐতিহ্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ আদতে, ট্রুং সিস্টার্সের মতো নারী যোদ্ধারা অনেক সম্মানিত ছিলেন। চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে বেশিরভাগ নারী সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা।
কমিউনিজমের অন্যতম ধারণা হলো- একজন শ্রমিক শ্রমিকই। লিঙ্গ কোনো বিষয় নয় সেখানে। উত্তর ভিয়েতনাম এবং ভিয়েতকং, উভয়েরই সেনাবাহিনীত নুগুইন থি হাইয়ের মতো নারীরা মূল ভূমিকা পালন করেছিল।
১২। যুদ্ধের সময়ে ভিয়েতনামের পূর্ব রাজধানী হিউ, কমিউনিস্ট বাহিনী কর্তৃক পরাস্ত হয়েছিল। দক্ষিণ ভিয়েতনামের উত্তরের অংশে অবস্থিত, হিউ যুদ্ধে প্রথম দখলকৃত শহরগুলির মধ্যে ছিল এবং সর্বশেষ স্বাধীন অংশ ছিল।
এই ছবিতে থাকা বেসামরিক লোকেরা সাম্যবাদবিরোধী শক্তিগুলো পুনরায় দখল করার পরে শহরে ফিরে আসছিল। হিউয়ের কুখ্যাত যুদ্ধের সময় হিউয়ের বাড়িঘর এবং অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
১৩। এই নারীকে সম্ভবত ভিয়েতকং বা উত্তর ভিয়েতনামের সহযোগী বা সহানুভূতিশীল বলে সন্দেহ করা হয়েছিলো। ভিয়েতকংরা গেরিলা যোদ্ধা ছিল এবং প্রায় সময়ি নাগরিক জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে থাকায় সাম্যবাদ বিরোধী শক্তির পক্ষে যোদ্ধাদের বেসামরিক লোকদের থেকে আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্তদের আটক, নির্যাতন বা সংক্ষিপ্তভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
উভয় পক্ষের ভিয়েতনাম যুদ্ধে কতজন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে, তা কেউ জানে না।
১৪। ১৯৭০ সালের এই ছবিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর প্রথম লেফটেন্যান্ট এল. হিউজকে উত্তর ভিয়েতনামিজ গুলি করে হত্যা করার পরে শহরের রাস্তায় প্যারেড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। আমেরিকান যুদ্ধবন্দীদের প্রায়শই এ ধরনের অবমাননার শিকার হতে হয়েছিল, বিশেষত যুদ্ধের সময়।
যুদ্ধ শেষ হলে, বিজয়ী ভিয়েতনামিরা তাদের হাতে থাকা আমেরিকান যুদ্ধ বন্দীদের প্রায় এক চতুর্থাংশ ফিরিয়ে দেয়। তেরোশো’র মতন সৈন্যকে কখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।
১৫। দীর্ঘমেয়াদী রক্তাক্ষয়ী এই যুদ্ধে আমেরিকানরা রাসায়নিক অস্ত্র, এজেন্ট অরেঞ্জ ব্যবহার করেছিলো ভিয়েতনামকে পত্রশূন্য করার জন্য। শূন্য থেকে উত্তর ভিয়েতনামিদের ক্যাম্প, সেন্য এবং তাদের কর্মকাণ্ডকে স্পষ্ট প্রত্যক্ষ করতে মার্কিনরা বন-জঙ্গলে ঘেরা ভিয়েতনামকে পত্রশূন্য করে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে। দক্ষিণ ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট গেরিলাদের জব্দ করতে ভিয়েতনাম জুড়ে গ্যালন গ্যালন রাসায়নিক পদার্থ ঢালতে শুরু করে মার্কিন সেনা। দশ বছরে ভিয়েতনামে ঢালা হয়েছিল সাতরঙা বিষের মধ্যে সব থেকে কুখ্যাত ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’। সবমিলিয়ে মোট সাড়ে চার কোটি লিটার ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’। ছবিতে সেই নিষ্ঠুর চেহারাটি ফুটে উঠেছে।
এগুলো ছিল সামান্য প্রভাব। এছাড়াও এই রাসায়নিক অস্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে এবং বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেওয়া শুরু হয়।
১৬। ছবির ফ্রেমে বাঁদিকে দাঁড়িয়ে এক সৈন্য। তার হাতে পিস্তল। ডানপাশের মানুষটির মুখ বিকৃত, কারণ ঠিক সে মুহূর্তেই বুলেটটি তার মাথায় ঢুকে গিয়েছিলো। মার্কিন জনমতকে ঘুরিয়ে দেওয়া এবং বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেওয়া ভিয়েতনাম যুদ্ধের এই ছবিটির নাম ‘সায়গন এক্সিকিউশন’। ১৯৬৮ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি সায়গনের রাস্তায় ছবিটি তোলা হয়।
ছবিতে যাকে গুলি করতে দেখা যাচ্ছে, তিনি দক্ষিণ ভিয়েতনামের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নুয়েন নক লোয়ান এবং যিনি গুলিতে বিধ্বস্ত তিনি ভিয়েতকং গেরিলা গ্রুপের নেতা নুয়েন ভ্যান লেম। ভিয়েতনাম যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা এবং নৈরাজ্য এই একটি ছবিতে যেভাবে ধরা পড়েছিলো, তার সমতুল্য আর কোনো ছবি নেই।
১৭। ১৯৭২ সালে এই ছবি তোলা হয়েছিল দক্ষিণ ভিয়েতনামের একটি গ্রামে। দূরে দেখা যাচ্ছে কুখ্যাত নাপাম বোমার ধোঁয়া। যন্ত্রণায় চিৎকার করতে করতে নগ্ন হয়ে দৌড়ুচ্ছে নয় বছরের এক বালিকা। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক চিত্রসাংবাদিকের তোলা এই ছবি সারা বিশ্বকে নাড়া দেয়, বিব্রত হয়েছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনও।
ভিয়েতনাম জুড়ে তখন ‘নাপাম বোমা’ আর কুখ্যাত রাসায়নিক বিষ ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’ ঢালছে মার্কিন সেনারা। গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে রওনা দিচ্ছিলেন মানুষেরা। বোমারু বিমান রেহাই দেয়নি তাদের। ওপর থেকে ফেলতে থাকে নাপাম বোমা এবং সেই বোমায় জ্বলে যায় তার দেহের একটা অংশ। “জ্বলে যাচ্ছে! জ্বলে যাচ্ছে!” এই চিৎকার করতে করতেই দৌড়তে থাকে শিশুটি। সেই মুহূর্তটিই লেন্সবন্দী করেছিলেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের চিত্রসাংবাদিক নিক উট।
যুদ্ধের ছবি তোলা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। এ বছরও সাংবাদিক নিহতের প্রতিবেদনে দেখা যায়, অধিকাংশ সাংবাদিক হত্যা বা নিহত হয়েছে যুদ্ধের ময়দানে। চিত্রসাংবাদিকরাও এভাবে প্রাণ হাতে নিয়ে যুদ্ধের ছবি তোলেন, কেউ নিহত হন, কেউ বাহবা পান। কিন্তু যুদ্ধের ছবি কাউকে না কাউকে তো তুলতে হবে? নাহলে পৃথিবীর একাংশে হয়ে যাওয়া ত্রাস, সংগ্রাম, বীভৎসতা, আনন্দময় চিহ্ন কীভাবে জানবে বিশ্বের আরেক প্রান্ত?
ভিয়েতনাম যুদ্ধ আমরা অধিকাংশই নিশ্চয় প্রত্যক্ষ করিনি। বিভিন্ন লেখায় উঠে এসেছে এর ভয়ংকর রূপ। কিন্তু একমাত্র ছবির মাধ্যমেই কল্পনা এবং বাস্তব যেন একসাথে ধরা দেয়। ছবি দেখলেই বিশ্বাস হয়, আসলেই এমনটা ঘটেছিলো তাহলে! যেমন আমরা নাপাম গার্ল, সায়গন এক্সিকিউশন অথবা এজেন্ট অরেঞ্জ দেখে বিশ্বাস করতে পারছি।
এই ছিল হাজারো নির্ভীক চিত্রসাংবাদিকের তোলা ভিয়েতনাম যুদ্ধের কিছু ভয়ংকর ছবি।
ইতিহাসের চমৎকার, জানা-অজানা সব বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: https://roar.media/contribute/