দুটি দেশের পতাকার মিল থাকলেই যে তার পেছনে কোনো বিশেষ কারণ থাকতে হবে, এমন নয়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশ ও জাপানের পতাকা। পতাকা দুটির মধ্যে আশ্চর্য রকমের মিল, কিন্তু দেশ দুটির মধ্যে তেমন কোনো বিষয়েই মিল নেই বললেই চলে। অবশ্য এটা ব্যতিক্রম। কিন্তু ইউরোপের অধিকাংশ রাষ্ট্রের পতাকায় তিন রংয়ের ব্যান্ডের ব্যবহার, আরব বা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর পতাকা পতাকায় চাঁদ-তারা অথবা লাল-কালো-সবুজ-সাদা রংয়ের ব্যবহার, আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর পতাকায় সোনালী, সবুজ, লাল রংয়ের ব্যবহার- এগুলো কিন্তু মোটেও কাকতালীয় নয়।
কোনো দেশের পতাকা কীরকম হবে, তা অনেকসময়ই নির্ভর করে দেশটির যুগ যুগের ইতিহাস ও সংস্কৃতির উপর। জাতিরাষ্ট্রের ধারণা অনেকটাই নতুন এবং বর্তমানকালের অধিকাংশ স্বাধীন রাষ্ট্রই পূর্বে বৃহত্তর কোনো আঞ্চলিক জোটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাই পাশাপাশি অবস্থিত এবং একই ইতিহাস ও মূল্যবোধ ধারণকারী রাষ্ট্রগুলোর পতাকার মধ্যে মিল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আধুনিক পতাকাগুলোর অনেকগুলোই এরকম প্রতিবেশী দেশগুলোর পতাকা দ্বারা প্রভাবিত, অথবা যে বৃহত্তর দেশ থেকে ভেঙ্গে রাষ্ট্রগুলো পৃথক হয়েছে, তার দ্বারা অনুপ্রাণিত। বিভিন্ন অঞ্চলের ইতিহাস এবং বিভিন্ন প্রতীকের তাৎপর্য জানা থাকলে অনেক সময় পতাকা দেখেই বোঝা সম্ভব রাষ্ট্রটি বিশ্ব মানচিত্রের কোন স্থানে অবস্থিত।
নর্ডিক ক্রস
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রগুলোর অর্থাৎ ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ডের পতাকাগুলো দেখতে প্রায় একইরকম। এদের প্রত্যেকের পতাকা জুড়ে একটি ক্রস চিহ্ণ আছে, যা সামান্য একপাশে চাপানো থাকে। আয়তাকার ক্ষেত্রের উপর এক রং বা দুই রং বিশিষ্ট এই ক্রসের একটি নামও আছে- স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ক্রস বা নর্ডিক ক্রস। ক্রসটি একপাশে এমনভাবে চাপানো থাকে, যেন ঐ পাশের চৌকোনা ক্ষেত্র দুটি বর্গাকার হয়।
ক্রস বিশিষ্ট পতাকার প্রথম ব্যবহার শুরু হয়েছিল ক্রুসেডের সময়। পরবর্তীতে ডেনমার্কের রাজারা তাদের যুদ্ধের পতাকায় এই ক্রসের ব্যবহার শুরু করেন। আধুনিককালে নর্ডিক রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নরওয়ে ১৮২১ সালে প্রথমে এবং এরপর ১৯০৬ সালে সুইডেন এই ক্রস অনুযায়ী নিজেদের পতাকার নকশা তৈরি করে। তাদের উভয়েরই অনুপ্রেরণা ছিল নরওয়ে এবং সুইডেনের সমন্বয়ে গঠিত ইউনিয়নে ব্যবহৃত পতাকা। পরবর্তীতে গ্রীনল্যান্ড ছাড়া অন্যান্য প্রতিবেশী নর্ডিক রাষ্ট্রগুলোও তাদের ধর্ম, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সামঞ্জস্যের কারণে একই রকম পতাকা ডিজাইন করে।
ইউরোপের তিন রংয়ের ব্যান্ড
অধিকাংশ ইউরোপীয় রাষ্ট্রের, বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর পতাকায় তিন রংয়ের সমান্তরাল ব্যান্ডের ডিজাইন লক্ষ্য করা যায়। এটি হতে পারে আনুভূমিক কিংবা উল্লম্ব। আনুভূমিকের মধ্যে আছে জার্মানী, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, লুক্সেমবার্গ প্রভৃতি দেশের পতাকা। উল্লম্বের মধ্যে আছে ফ্রান্স, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, রুমানিয়া, বেলজিয়াম প্রভৃতি দেশের পতাকা। রাষ্ট্রগুলোর একইরকম অতীত ইতিহাস, মূল্যবোধ এবং শাসনব্যবস্থার মিলের কারণেই তাদের পতাকার মধ্যে এরকম মিল লক্ষ্য করা যায়।
ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর পতাকায় তিনটি রং দিয়ে সাধারণত প্রজাতন্ত্র (রিপাবলিক), স্বাধীনতা ও বিপ্লবকে বোঝানো হয়। মূলত ফরাসী বিপ্লবের পরেই এ ধরনের পতাকা ইউরোপে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। তবে ফ্রান্সের পতাকা অবশ্য প্রথম তিন রং বিশিষ্ট পতাকা ছিল না। এর অনেক আগে ১৫৭৯ সালে স্প্যানিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর ডাচ রিপাবলিক প্রথম প্রজাতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে তিন রঙা পতাকা ব্যবহার করে। সে সময় আশেপাশের অনেকগুলো রাজ্য এ পতাকা অনুকরণ করে, যা পরবর্তীতে স্বাধীন হওয়া রাষ্ট্রগুলোর পতাকার নকশার উপর প্রভাব বিস্তার করে।
ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর আধুনিক পতাকার ডিজাইনের উপর ফ্রান্সের পতাকার প্রভাব সবচেয়ে বেশি। ফরাসী বিপ্লবের সময় বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে নীল, সাদা, লালের এই পতাকার প্রচলন শুরু হয়। এটি লে ট্রিকালার (Le Tricolour), লে ব্লু-ব্লাঙ্ক-রৌগ (Le Bleu-Blanc-Rouge) প্রভৃতি নামে পরিচিত। ফ্রান্সের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইতালি, রুমানিয়া, আয়ারল্যান্ড এবং পরবর্তীতে ধীরে ধীরে অন্যান্য রাষ্ট্রও প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে এ ধরনের পতাকার প্রচলন করে। ইউরোপের এই পতাকার নকশার প্রভাব তাদের ঔপনিবেশিক শাসনের কারণে ইউরোপের সীমানা ছাড়িয়ে আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর পতাকার রংয়ে প্যান-আফ্রিকান কালারের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু ক্যামেরুন, চাদ, আইভরি কোস্ট, গ্যাবন, গিনি, মালি, নাইজেরিয়াসহ অধিকাংশ আফ্রিকান রাষ্ট্রের পতাকার তিন রংয়ের ব্যান্ডের ডিজাইনটি মূলত তাদের শাসন করা ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর পতাকা থেকেই এসেছে। এমনকি, রাশিয়ার পতাকা তিন রং বিশিষ্ট হওয়ার পেছনের কারণ হিসেবেও জার পিটার দ্য গ্রেটের পাশ্চাত্যের প্রতি অনুরাগকে দায়ী করা হয়। পিটার চেয়েছিলেন রাশিয়াকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর মতো করে গড়ে তুলতে, এবং সেটি তিনি পতাকার মাধ্যমেই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
ইউনিয়ন জ্যাক
যুক্তরাজ্যের পতাকাকে বলা হয় ইউনিয়ন জ্যাক। এটি মূলত ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের পূর্বের পতাকার উপরিপাতনের মাধ্যমে সৃষ্ট। শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের পতাকার সমন্বয়ে তৈরি গ্রেট ব্রিটেনের পতাকাটি ১৬০৬ সাল থেকে চালু থাকলেও আয়ারল্যান্ড সহ আধুনিক ইউনিয়ন জ্যাকের প্রচলন শুরু হয় ১৮০১ সাল থেকে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দ্বীপরাষ্ট্রের অধিবাসীদের অধিকাংশই ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে তাদের পতাকায় পরিষ্কারভাবেই ইউনিয়ন জ্যাকের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ছাড়াও ফিজি ও তুভালুর পতাকায় ইউনিয়ন জ্যাক ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও বারমুডা, ফকল্যান্ড, কেম্যান, কুকসহ ব্রিটিশ অধিকৃত বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জের পতাকাতেও এর ব্যবহার আছে। এর বাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ সাবেক ব্রিটিশ উনিবেশগুলোর অনেকগুলো অঙ্গরাজ্যের পতাকায় এখনও এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কানাডা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বের পতাকাতেও ইউনিয়ন জ্যাকের ব্যবহার ছিল।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এরকম কোনো দাবি করা হয় না, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় যে তিনটি রং দেখা যায়, লাল, সাদা এবং নীল, সেটিও মূলত ইউনিয়ন জ্যাকের তিনটি রংয়ের প্রভাব থেকেই এসেছে। এমনকি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পতাকাটিতে তারকাগুলোর স্থানে ছিল একটি ইউনিউন জ্যাক। পরবর্তীতে সেখানে তারকা বসানো হয়, যা ধীরে ধীরে অঙ্গরাজ্যগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে হতে বর্তমান রূপে পৌঁছে।
মধ্য আমেরিকার পতাকা
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের হণ্ডুরাস, নিকারাগুয়ে, এল সালভাদর এবং গুয়াতেমালার পতাকার মধ্যে অবিশ্বাস্য রকমের মিল লক্ষ্য করা যায়। চারটি পতাকাই আসমানী-সাদা-আসমানী সমান্তরাল তিনটি ভাগে বিভক্ত। কারণ এই চারটি রাষ্ট্রই পূর্বে ফেডেরাল রিপাবলিক অব সেন্ট্রাল আমেরিকা নামক একক রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রত্যেকেই মূল রাষ্ট্রের পতাকার সাথে মিল রেখে নিজেদের পতাকার ডিজাইন তৈরি করে। পতাকাগুলোর দুই পাশের নীল বা আসমানী রংয়ের মাঝে সাদা রং দিয়ে সাধারণত দুই মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত ভূমিকে নির্দেশ করা হয়।
এই চারটি দেশের পতাকার সাথে অবশ্য আরেকটি দেশের পতাকারও বেশ ভালো মিল আছে। সেটি হলো আর্জেন্টিনা। প্রকৃতপক্ষে, ফেডেরাল রিপাবলিক অব সেন্ট্রাল আমেরিকার পতাকাটি নির্মিত হয়েছিল আর্জেন্টিনার পতাকা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ে একইসাথে স্বাধীনতার সংগ্রাম করেছিল, ফলে উরুগুয়ের পতাকাতেও একইরকম রংয়ের ব্যবহার দেখা যায়। তার চেয়েও বড় কথা, উভয়ের পতাকাতেই একই ‘সান অফ মে’ এর প্রতীক ব্যবহার করা হয়।
একইভাবে কলম্বিয়া, ইকুয়েডর এবং ভেনেজুয়েলার পতাকার মধ্যেও অবিশ্বাস্য রকমের মিল আছে। এই তিন দেশের পতাকাই তিনটি আনুভূমিক সমান্তরাল বারে বিভক্ত, যেগুলোর রং উপর থেকে যথাক্রমে হলুদ, নীল এবং লাল। এখানেও একই ঘটনা ঘটেছে। এই তিনটি রাষ্ট্রই ঊনবিংশ শতাব্দীতের শুরুর দিকে গ্র্যান কলম্বিয়া বা রিপাবলিক অব কলম্বিয়া কনফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিভক্ত হওয়ার পরে তারাও তাদের পতাকার ডিজাইনের সময় মূল পতাকার ডিজাইনকে অনুসরণ করেছে।
প্যান আফ্রিকান পতাকা
অধিকাংশ আফ্রিকান রাষ্ট্রের পতাকার মধ্যে দুই ধরনের রংয়ের সমন্বয় দেখতে পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে সোনালী, সবুজ, লাল এবং অপরটি কালো, সবুজ, লাল। এই ধরনের রংকে বলা হয় প্যান আফ্রিকান কালার। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা অর্জন করতে শুরু করলে তাদের মধ্যে সমগ্র আফ্রিকা মিলে ঐক্য এবং বন্ধন প্রতিষ্ঠা করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সেখান থেকেই পরবর্তীতে তারা নিজেদের পতাকার নকশা ধার করে।
প্যান আফ্রিকান কালারের মধ্যে সোনালী, সবুজ ও লাল রংয়ের সমন্বয়টি এসেছে মূলত ইথিওপিয়ার পতাকা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে। আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ইথিওপিয়ার বিশেষ মর্যাদা আছে, কারণ তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অল্প কিছুদিন বাদে এর আগে কখনো ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনস্ত ছিল না। তাদের এই স্বাধীনতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলো নিজেদের পতাকায় এই তিন রং ব্যবহার করে। এ ধরনের পতাকার মধ্যে আছে ঘানা, ক্যামেরুন, গিনি, গিনি-বিসাউ, মালি, সেনেগাল প্রভৃতি রাষ্ট্রের পতাকা।
অন্যদিকে কালো, সবুজ ও লাল রংয়ের সমন্বয়কে বলা হয় ইউনিয়া (UNIA – Universal Negro Improvement Association) কালার। এখানে লাল রং রক্তকে, কালো রং আফ্রিকানদের শরীরের রংকে এবং সবুজ রং আফ্রিকার উর্বর ও সমৃদ্ধশালী ভূমিকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই রংয়ের পতাকার মধ্যে আছে কেনিয়া, লিবিয়া, মালাওই, দক্ষিণ সুদান প্রভৃতি রাষ্ট্রের পতাকা।
প্যান আরব পতাকা
অধিকাংশ আরব রাষ্ট্রের পতাকায় চারটি রংয়ের ব্যবহার দেখা যায়। এগুলো হলো লাল, সাদা, সবুজ ও কালো। এগুলোকে বলা হয় প্যান আরব কালার। ১৯১৬ সালের আরব বিদ্রোহের সময় প্রথম এ ধরনের পতাকার প্রচলন শুরু হয়। রং চারটির প্রতিটি একেকটি সময়ের ইসলামিক সাম্রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। কালো হচ্ছে আব্বাসীয় শাসনামলের পাতাকার রং, সাদা উমাইয়া শাসনামলের রং, সবুজ ফাতেমীয় শাসনামলের রং এবং লাল হচ্ছে হাশেমী রাজবংশের এবং উসমানী খিলাফতের পতাকার রং। চার রংয়ের পতাকার মধ্যে আছে জর্ডান, কুয়েত, ফিলিস্তিন, আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশের পতাকা।
পঞ্চাশের দশকের পর থেকে নতুন স্বাধীনতা লাভ করা আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবুজ রংয়ের গুরুত্ব কমিয়ে লাল-সাদা-কালো রং ব্যবহার করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এটি ছিল প্রধানত মিসরের পতাকার প্রভাবের ফল। বর্তমানে মিসর ছাড়াও ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুদান প্রভৃতি রাষ্ট্রে এ ধরনের পতাকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
চাঁদ-তারা খচিত পতাকা
চাঁদ-তারাকে সাধারণত ইসলামিক প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনেকগুলো মুসলিম রাষ্ট্রে তাই চাঁদ-তারা খচিত পতাকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। অটোমান সাম্রাজ্যের পতাকায় চাঁদ-তারা থাকার কারণেই প্রধানত সাবেক অটোমান প্রদেশগুলোতে এবং তুর্কিক রাষ্ট্রগুলোতে এ ধরনের পতাকা ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। বর্তমানে তুরস্ক, উত্তর সাইপ্রাস, লিবিয়া, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, আজারবাইজান, উজবেকিস্তান, তুর্কমিনিস্তানের পতাকায় ক্রিসেন্ট তথা চাঁদ-তারা অন্তর্ভুক্ত আছে। এর বাইরে পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মৌরিতানিয়ার পতাকায়ও ক্রিসেন্ট ব্যবহৃত হয়।
সমাজতান্ত্রিক পতাকা
হাতুড়ি ও কাস্তের পাশাপাশি পাঁচ কোণ বিশিষ্ট তারকা সমাজতন্ত্রের একটি প্রধান প্রতীক। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতাকাতেও একটি পাঁচ কোণ বিশিষ্ট লাল রংয়ের তারকা ছিল। বর্তমানে কাস্তে ও হাতুড়ির ব্যবহার দেখা না গেলেও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কয়েকটি রাষ্ট্রে লাল রং এবং তারকার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এ ধরনের পতাকার মধ্যে আছে চীন, উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামের পতাকা। এছাড়াও কিউবা, মোজাম্বিক এবং অ্যাঙ্গোলার পতাকায় সমাজতন্ত্রের চিহ্ন হিসেবে ছোট আকারের তারকা ব্যবহার করা হয়।
ফিচার ইমেজ- Reddit