জাপানি উপকথার নায়ক নায়িকারা || পর্ব ৩

জাপানি সংস্কৃতির শিকড় খুঁজতে গেলে ভারতীয় ঐতিহ্য বের হয়ে আসে। কমপক্ষে বিশ জন ভারতীয় চরিত্র ঈষৎ বিবর্তিত হয়ে জাপানে উপাসিত হয় বর্তমানেও। সরস্বতী, গণেশ এবং ব্রহ্মার মতো দেব-দেবীর ধারণা চীন হয়ে জাপানে প্রবেশ করে। অন্য কথায় ভারতীয় ধারণাই চীনা নামের মোড়কে প্রবেশ করে। এমনকি কিছু কিছু জাপানি মন্দিরে সংস্কৃত ভাষা শেখানোর ঐতিহ্যও জারি আছে। ভারত থেকে সিদ্ধং লিপি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তা জাপানে এখনো জীবন্ত। মন্ত্র এবং উপাসনার জন্য সংস্কৃত সেখানে পরিচিত বীজা আকশারা বা বীজ অক্ষর নামে। আরো অবাক করার বিষয় হলো, ভারতীয় উপাসনার রীতি আর মন্ত্রও অনেক ক্ষেত্রেই অক্ষতভাবে সেখানে হাজির।

প্রথমে হিন্দুধর্ম এবং পরে বৌদ্ধধর্ম ভারত থেকে জাপানে প্রবেশ করে। সূচিত হয় সংস্কৃতির নতুন ইতিহাস। সামুরাই আমলে জেন বৌদ্ধ মতবাদ প্রভাবশালী রূপ লাভ করে। পরিবর্তন আসে জীবন যাপনেও। পরিণত হতে থাকে ধর্মবিশ্বাস। ততদিনে পশ্চিম দিক থেকে নতুন দুইটা স্রোত ধাক্কা দেয়। প্রথমত খ্রিষ্টধর্ম এবং দ্বিতীয়ত ইসলাম। মানুষের চিন্তায় তাদের প্রভাব একেবারে কম পড়েনি। আর সেভাবে বিশেষায়িত হয়েছে দেব-দেবীদের চরিত্র।

বেনজাইতেন

পানি, সৌন্দর্য, আর সম্পদের দেবী বেনজাইতেন। একইসাথে সংগীত আর শিল্পের দেবী। মোটা দাগে বলতে গেলে পানি এবং যা কিছু পানির মতো প্রবাহমান, তার দেবী বেনজাইতেন। শব্দ, ভাষা, সৌন্দর্য, সম্পদ- সকল কিছুই সেই প্রবাহমানতার কাতারে। অনেকটা এইজন্যই তার উদ্দেশ্যে নির্মিত মন্দিরগুলো উপকূলের পাশে অবস্থিত। কবি, বুদ্ধিজীবি এবং শিল্পকলার সাথে সংম্পৃক্ত মানুষের কাছে বেনজাইতেনের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। মানুষকে বস্তুবাদী দুনিয়ার অন্ধকার থেকে মুক্ত রাখেন তিনি। ভারতীয় দেবী সরস্বতীর জাপানি অবয়ব যেন।

ভারতীয় সরস্বতী থেকে প্রভাবিত দেবী বেনজাইতেন; Image Source: booksfact.com

শিন্টোধর্মে শষ্যের দেবতা ইনারির সাথে বিয়েতে আবদ্ধ হয়ে উগাইজিন নাম ধারণ করেছেন। এই মিলন তাকে উর্বরতা আর ফসলের দেবী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। জাপানি বৌদ্ধধর্মে আমাতেরাসুর সাথে তাকে জড়িয়ে চমকপ্রদ উপকথা প্রচলিত আছে। বেনজাইতেন সেখানে ড্রাগন রাজা মুনেতসুচির কন্যা। প্রায়শ উদ্ধৃত সমুদ্র আর ড্রাগনদের সাথে। ড্রাগনরা পৃথিবীতে শিশুহত্যার জন্য নেমে আসে, দয়ার্দ্র বেনজাইতেন আবির্ভুত হতেন রক্ষক হিসেবে। তার আটটি হাতে প্রায়ই বই, চাবি, অলঙ্কার, তরবারি এবং সঙ্গীতের উপকরণ ধৃত। অবশ্য দুইটা হাত রত থাকে প্রার্থনায়। এনোশিমা বেনতেন জাপানের সবচেয়ে প্রাচীন বেনজাইতেন মন্দিরের একটি। এদো আমল থেকে এখন অব্দি উপাসনা চলে আসছে। মন্দিরের চত্বরে মুদ্রা ধোয়ার রীতি প্রচলিত। বিশ্বাস অনুসারে, এর মাধ্যমে সম্পত্তি দ্বিগুণ হয়।       

হাচিমান

মধ্যযুগের জাপানে শিন্টো এবং বৌদ্ধধর্মের সম্মিলনের চুড়ান্ত স্বাক্ষর হাচিমান বা ইয়াহাতা। যুদ্ধ এবং তীরচালনার দেবতা হিসেবে গণ্য করা হয়। নবম শতকের দিকে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারের যুগে এই দেবতা চরিত্র বিকশিত হতে থাকে। বৌদ্ধধর্মে স্থিত বোধিসত্ত্ব ধারণার সাথে তাকে তুলনা করা যেতে পারে।

হাচিমানকে গণ্য করা হয় যুদ্ধের দেবতা হিসেবে; Image Source: demigodgames.net

হাচিমানকে সম্পর্কিত করা হয় যুদ্ধ এবং সংস্কৃতির সাথে। সমাজ বিবর্তনে তার ঐতিহ্য এবং প্রভাব জারি রাখতে আগমন ঘটে অবতারের। এ ক্ষেত্রেও ভারতীয় অবতারবাদের প্রভাব। বিশ্বাস করা হয়, তৃতীয় শতাব্দীতে কোরিয়া আক্রমণকারী সম্রাজ্ঞী জিংগু বাস্তব অর্থে হাচিমানের অবতার ছিলেন। তারই পুত্র সম্রাট ওজিন চীনা এবং কোরিয়ান পণ্ডিতদের নিজের দরবারে একত্রিত করেছিলেন। তিনিও পরিগণিত হন অবতার হিসেবে। একাদশ শতকের প্রভাবশালী মিনামোতো বংশ হাচিমানের প্রতি বিশেষ অনুরাগী ছিল। পরবর্তীকালে রাজনৈতিকভাবে তৎপর হয়ে উঠে এবং নিজেদের দাবি করে প্রাচীন সম্রাট ওজিনের বংশধর বলে।

কাননোন

জাপানি সংস্কৃতিতে কাননোন খুবই পরিচিত। ভাষ্কর্য এবং চিত্র থেকে শুরু করে বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে প্রায়ই চোখে পড়ে। সোজা ভাষায় কাননোন বোধিসত্ত্ব। অর্থাৎ তিনি তার নির্বাণকে পিছিয়ে রেখেছেন কেবল জগতের মানুষের দুঃখের অবসান ঘটানোর জন্য। এই বদান্যতাই তাকে মহান করে তুলেছে। চিন্তাটা বৌদ্ধধর্ম থেকে এলেও মিশে গেছে জাপানের মাটি-গন্ধে।

স্বর্ণে নির্মিত পদ্মের উপরে ধ্যানমগ্ন কাননোনের মূর্তি; Image Source: japantravelmate.com

ধর্মীয় এবং পৌরাণিক চোখে কাননোন অন্যান্য দেবতা থেকে কিছুটা ভিন্ন। তাকে উপস্থাপিত হতে দেখা যায় কখনো নারী আর কখনো পুরুষের অবয়বে। সেনজু কাননোন বা সহস্র হাতওয়ালা কাননোন বেশ জনপ্রিয়। তীর, বর্শা, ঘন্টা, আয়নাসহ অনেক কিছু ধরে আছেন দেবী। এত কিছু ধারণ করার জন্য তাকে সর্বদর্শী এবং সর্বশ্রোতা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

অন্যদিকে এগারো মুখ বিশিষ্ট দেবীমূর্তি পরিগণিত অসুস্থতা এবং দূর্যোগ থেকে পরিত্রাণকারিণী রূপে। তখন নাম জুইচিমেন কাননোন। উপসনাকারীরা খোদ বুদ্ধের কাছে থেকে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পাবেন। অবশ্য শো কাননোন মূর্তিটা একটু ব্যতিক্রম। এক হাতে অপ্রস্ফুটিত পদ্ম ধরে রাখা আর অন্য হাত খোলা। পদ্ম নির্দেশ করে প্রতিটি মানব-আত্মার ভেতরেই বুদ্ধ বিরাজ করে অপ্রস্ফুটিত অবস্থায়। ফোটার অপেক্ষায়। আর খোলা হাত নির্দেশ করে অনুসারীদের জন্য মুক্তির আহ্বান।

বাতু কাননোনের সম্পর্ক মোটাদাগে যুদ্ধের সাথে। সামুরাই যুগে তার কদর তুঙ্গে ছিল। শত্রু, দুর্ঘটনা কিংবা দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী হিসেবে তাকে উৎকীর্ণ করা হয় ঘোড়ার মাথাবিশিষ্ট রূপে। যোদ্ধা, নাবিক এবং নির্মাতাদের মধ্যে তার আবেদন সবচেয়ে বেশি। খ্রিষ্ট ধর্মের আগমনের পর সেখান থেকে প্রভাবিত হয়ে বদান্যতা আর স্নেহের দেবী মারিয়া কাননোনের ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত ভার্জিন মেরি থেকেই তার উদ্ভব।

জিজো

ভারতীয় প্রভাবের আরেকটা স্পষ্ট উদাহরণ জিজো বোসাতসু বা জিজো বোধিসত্ত্ব। উপমহাদেশের ক্ষিতিগর্ভ পরবর্তীতে কোরিয়া, তিব্বত এবং চীনে ছড়িয়ে পড়ে জিজো নামে। জাপানে জনপ্রিয় হয় অষ্টম শতকের গোড়ার দিকে। হাল আমলে অবশ্য কেবল বন্ধ্যাত্ব, অকাল গর্ভপাত, প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মদান, শিশুর অসুস্থতা প্রভৃতি থেকে সুরক্ষাদাতা বলে গণ্য করা হয়। এর বাইরে দুঃখক্লিষ্ট এবং উদ্ভ্রান্ত আত্মাগুলোকে নরক থেকে উদ্ধার করে স্বর্গের দিকে ধাবিত করেন তিনি। স্বর্গ বলতে এমন স্থান, যেখানে গেলে আত্মা স্বীয় কর্মের মাধ্যমে সৃষ্ট পুনর্জন্মের শিকল থেকে মুক্ত হয়। যেসব সন্তান দুনিয়ায় জন্মগ্রহণ করেই মৃত্যুবরণ করেছে, তারা তো কর্ম পূর্ণ করার জন্য সময়ই পায়নি। এই ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসেন জিজো।

শিশু আর ভ্রমণকারীর রক্ষাকর্তা জিজোর সাথে থাকে লাল রং; Image Source: jpninfo.com

বিশ্বাস অনুসারে, লাল হলো দানব এবং অসুস্থতা দূরীকরণের রঙ। জিজোর কর্মও মানুষকে দানবীয় ছায়া থেকে মুক্ত রেখে দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করা। প্রায়শ তাকে তাই লাল পোশাকে দেখা যায়। কাকতালীয়ভাবে, জাপানে প্রায়ই শিশুকে ‘আকা চ্যান’ বা লাল প্রিয়তম বলে অভিহিত করা হয়। শিশুর বাইরে তীর্থযাত্রী, ভ্রমণকারী কিংবা দুর্বলদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন জিজো।

শিতেননো

জাপানি বৌদ্ধধর্মে অস্তিত্বশীল দুনিয়ায় বিভিন্ন স্তর বিদ্যমান। সকলের ঊর্ধ্বে বুদ্ধ। বলে নেয়া ভালো, বুদ্ধ বলতে কেবল ঐতিহাসিক বুদ্ধকেই বুঝানো হয় না। বুদ্ধের বিশেষণকে বুঝানো হয়। আমিদা, ইয়াকুশি, দাইনিচি- ভিন্ন রূপে একেকজন বুদ্ধ। দ্বিতীয় স্তরে আসে বোধিসত্ত্ব বা বোসাতসুর নাম। কাননোন এবং জিজো জনপ্রিয় দুই বোধিসত্ত্ব। তৃতীয় স্তরে মিয়ো-ও নামে একদল দুঃসাহসী সত্তা। সাধারণত আগুনের স্ফুলিঙ্গ দ্বারা পরিবেষ্টিত। ফুদো মিয়ো-ও এর মূর্তি নেহায়েত কম নেই। চতুর্থ ধাপে তেনবু, যা ভারতীয় হিন্দুধর্মের দেব থেকে উদ্গত। শিতেননো হলো এই দেব অভিভাবক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। একক ব্যক্তি না, চার জনের সমষ্টি। বৌদ্ধমন্দির এবং বৌদ্ধ আইনের সংরক্ষক হিসেবে পরিগণিত।

শিতেননো বা চার স্বর্গীয় অভিভাবক; Image Source: shoreexcursions.asia

জাপানে প্রথম শিতেননো মন্দির ৫৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ওসাকাতে প্রতিষ্ঠিত হয়। যুদ্ধসাজে সজ্জিত চার সেনানায়কের রূপে দেখা যায় কখনো। কখনো স্থাপিত মন্দিরের চার কোণায়, কখনোবা মন্দিরের তোরণের দুই পাশে। চার জনের মধ্যে সবথেকে বেশি পরিচিত তেমোনতেন। পৃথিবীর উত্তর প্রান্তের অভিভাবক এবং যুদ্ধের দেবতা হিসেবে সমাদৃত। তার প্রিয় ঋতু শীত, গায়ের রং সাদা এবং উপাদান মাটি। পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তের অভিভাবক জিকোকুতেন হাতে বহন করে একটা তরবারি। প্রিয় ঋতু বসন্ত, গায়ের রং নীল এবং উপাদান পানি।

জোচোতেনকে গণ্য করা হয় পৃথিবীর দক্ষিণ প্রান্তের অভিভাবক হিসেবে। সমৃদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক পরিপুষ্টতার দেবতা। গ্রীষ্ম তার প্রিয় ঋতু, গায়ের রং লাল এবং উপাদান আগুন। চতুর্থ জন কোমোকুতেন পশ্চিম প্রান্তের প্রতিরক্ষক। আকৃতি দানবীয় এবং হাতে গুটিয়ে রাখা নথি। প্রিয় ঋতু শরৎ, গায়ের রঙ সাদা এবং উপাদান ধাতব। এই চারজনের বাইরে পঞ্চম জন হিসেবে তাইশাকুতেনকে কেবল পুস্তকেই দেখা যায়। বাস্তবে তার মূর্তি বিরল। তিনি মধ্যভাগের অভিভাবক এবং বাকি চারজনের প্রধান।

নিও

জাপানের বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে তার উপস্থিতি বিরল কিছু না। প্রশান্তি, বদান্যতা, অসহিংসতা আর ভালোবাসার প্রতিমূর্তি নিও। দুষ্ট আত্মা এবং দানবদের হাত থেকে মন্দিরকে রক্ষা করেন। একইসাথে চোর এবং ছিনতাইকারীর হাত থেকেও। অন্যান্য বৌদ্ধ শিল্পকলার মতো নিও চরিত্রেও বৈচিত্র্য প্রবেশ করেছে। কখনো কাঠ কিংবা পাথরের মূর্তি, কখনো রঙের ছটায় অঙ্কন। দুইজন নিওকে হাজির দেখা যায় প্রায়শ। একজন মুখ খোলা অবস্থায়, অন্যজন মুখ বন্ধ। খোলা মুখের দেবতার মুখ থেকে ‘আ’ শব্দ বের হবার দরুন পরিচিত ‘আগয়ু’ নামে। অন্যদিকে বন্ধ মুখের জন মুখে ‘ন’ শব্দ করার দরুণ পরিচিত ‘আনগু’ নামে। আগয়ু এবং আনগু জাপানি ভাষায় প্রথম এবং শেষকে নির্দেশ করে। অনেকটা গ্রিকো-রোমান ঐতিহ্যে আলফা এবং ওমেগার মতো।

নিও চরিত্র চিন্তনের পেছনে গ্রিক প্রভাব বিদ্যমান; Image Source:kimonoflaminia.com

নিও শব্দের অর্থই দয়াময় রাজা। লোককথা অনুসারে, তারা দুনিয়াব্যাপী ভ্রমণ করেন এবং সম্ভাব্য বুদ্ধদের সুরক্ষা প্রদান করেন। সেই দিক থেকে তারা কোঙ্গো রিকিশি অভিধাতেও পরিচিত। ভারতীয় সংস্কৃতির বজ্রধারণকারী দেবতাদের ধারণা থেকে উৎসারিত হওয়া অসম্ভব না। তবে ৬ষ্ঠ শতকের দিকে আফগানিস্তানের দিকে গ্রিক আধিপত্য বৃদ্ধি পায়। গ্রিক নায়ক হেরাক্লিসের প্রভাব পড়ে। নিও তারই বিবর্তিত ফসল। জাপানে সবচেয়ে পুরাতন নিও মন্দির স্থাপিত হয়েছে ৭১১ সালে।

তারপর

ধর্ম জাপানি সংস্কৃতিতে কখনো প্রধান নিয়ামক হিসেবে দেখা দেয়নি। জাতি হিসাবেও তাদের ভেতরে ধর্ম নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি দেখা যায় না। সাধারণ মানুষ একটা বিশেষ ধর্মবিশ্বাস ধারণ করে। জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গমন করে মন্দিরে। বলতে গেলে শিন্টোই সেখানে আদিম ধর্ম। বৌদ্ধ এবং হিন্দুধর্মের প্রভাব পড়েছে ৬ষ্ঠ শতকের পর থেকে। খ্রিষ্টধর্মের প্রভাব পড়েছে আরো পরে। তারপরেও বিশ্বাসগুলো পরস্পর এতোটাই জড়িয়ে গেছে যে, ‍পৃথক করে চিনে ফেলা দায়। উদাহরণ হিসেবে বেশিরভাগ জাপানিই নিজেদের শিন্টো এবং বৌদ্ধ দুই-ই দাবি করে।

ধর্ম মানুষকে ভেতর থেকে সংহত করে। সেই ধর্মীয় আচার এবং বিশ্বাসের ব্যাখ্যা প্রদান করে পুরাণ বা মিথ। প্রদান করে মানুষের ইহকালীন এবং পরকালীন মুক্তির পথ। সময় এবং কালের ভিন্নতায় ধর্মগুরুদের অভিজ্ঞতায় ভিন্নতা আসে। ফলে বৈচিত্র্য ঢুকে ধর্ম চর্চাতেও। জাপানের বুকে এই বৈচিত্র্য যেন আরো বেশি চমকপ্রদ। একদিকে লালিত হয়েছে আদিম বিশ্বাস; তার সাথে প্রবেশ করেছে বাইরের সংস্কৃতি। লোককথা আর ধর্ম পরস্পর বেড়ে উঠেছে গলাগলি ধরে। যেন অজস্র রকমের ফুলে এক সমৃদ্ধ বাগান।

Related Articles

Exit mobile version