Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মারু এবং স্নুপি: অসাধারণ তারকাখ্যাতি পেয়েছিলো যে দুই বিড়াল

এসে গেলো বিড়াল জাতির কতিপয় তারকা সদস্যকে নিয়ে আরেক পর্বের গল্প। মানুষের সঙ্গী হিসেবে বিড়াল সবসময়ই চমৎকার একটি প্রাণী। আর এই তারকা বিড়ালেরা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বিচরণের ফলে বিশ্বের আনাচেকানাচে বহু মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের মজার মজার ছবি দেখতে গেলে যেমন মন ভালো হয়ে যায়, তাদের উদ্ভট কাজকর্মের ভিডিও দেখে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়, ঠিক তেমনই তাদের জীবনের গল্পেও বিড়ালপ্রেমীদের আগ্রহের কমতি হবে না নিশ্চয়। আগের বার কথা হয়েছিলো ইন্টারনেট দুনিয়ার দুই বিখ্যাত মুখ, গ্রাম্পি ক্যাট ওরফে টারডার সস আর জিভ দেখানো ছোট্ট বাবের। আজকের পর্বে আছে তাদের মতোই ইন্টারনেট তোলপাড় করা আরো দুই মজার বিড়ালের গল্প।

এই চারপেয়ে জীবগুলো এতই আদুরে আর চমৎকার যে, তাদের নিয়ে যত গল্প হবে তা যেন কমই হয়ে যায়! এবং তারা প্রত্যেকেই ইন্টারনেট জগতে একেকজন বিড়াল মহারথী হয়ে রয়েছে যেন। জমকালো জীবনযাপন তাদের, যা দেখে ঈর্ষা জন্মাতে পারে মানুষের মনেই! এই পর্বে গল্প হবে বাক্সের বিড়াল মারুকে নিয়ে, বাক্সই যার জীবনের ধ্যান জ্ঞান। সাথে থাকছে স্নুপির গল্প, যে হুলো বিড়ালটিকে সবচাইতে কিউট বলে মনে করা হয় তার আদুরে চেহারার কারণে।

মারু দ্য ক্যাট

গোলগাল আকারের ভীষণ মায়াবি দেখতে বিড়ালটি, যাকে বেশিরভাগ সময়ই বাক্সবন্দী অবস্থায় দেখে থাকবেন, সে হচ্ছে মারু। হুলো বিড়াল মারু মহাশয় জাতে স্কটিশ, বাসিন্দা জাপানের। জন্ম তার ২০০৭ সালের ২৪ মে। সে যখন প্রথম ঘরে ঢোকে, অর্থাৎ মানুষের ঘরে ঠাঁই পায়, তার বয়স ছিলো চার সপ্তাহ এবং সেই সময়ই তার ওজন ছিলো ২.৪ কেজি! জাপানি ভাষায় ‘মারু’ অর্থ গোলাকার, কিন্তু মারুর হুম্যান অর্থাৎ মানুষ অভিভাবক মুগুমগুর মতে, তিনি আকৃতি বুঝে বিড়ালের নামকরণ করেননি। মারু সহজ ও ছোট নাম, বিড়াল এই নাম সহজে বুঝতে পারবে বলে মারু ঘরে আসার আগেই এটি নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেক্ষেত্রে ব্যাপারটিকে কাকতালীয় বলা চলে যে, মারুর আকৃতির সাথে চমৎকার মানানসই হয়েছে তার নামখানা!

এই লোভনীয় তুলার বস্তাটার নামই মারু! Source: en.rocketnews24.com

ইন্টারনেট দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় বিড়াল মনে করা হয় এই মহাশয়কে। আর বুঝতেই পারছেন, এত এত বিড়ালছানার মাঝে নিজের রাজত্ব কায়েম করা মোটেও সহজ কর্ম নয়! এই বিড়ালটিকে বলা হয় বাক্সের বিড়াল, বাক্স জিনিসটা যেন তার একান্তই ব্যক্তিগত সম্পদ! যদিও প্রায় সব বিড়ালই বাক্সপ্রেমী, কিন্তু মারু মশাই বোধ করি কিঞ্চিৎ বেশিই পছন্দ করেন বাক্স। ছোট হোক বা বড়, আপনি কেবল তাকে একটি বাক্স দিন, আর সে তাতে নিজের জানপ্রাণ সঁপে দেবে! বাক্সের প্রতি তার এই ভালোবাসা প্রকাশ পায় ছোটবেলাতেই। বড় হতে হতে মারুর অক্লান্ত পরিশ্রম ও তার হুম্যানের উদ্যগে এই বাক্সপ্রীতি রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে যায়!

এই যে, বাক্সবন্দী মারু মহাশয়; Source: Why Cat Why

এইটুকুন বাক্সেও দিব্যি জায়গা করে নিচ্ছে মারু, উপরের ছবিটা তাই বলে। কার্ডবোর্ড থেকে নিয়ে প্লাস্টিকের বাক্স, কিছুতেই জনাবের অরুচি নেই। কেবল বাক্স হওয়া চাই বস্তুটির! এই অদ্ভুত প্রতিভাবান বিড়াল নিজের দুষ্টুমিভরা কাজকর্মের মাধ্যমে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও পছন্দ করে। সে আরো পছন্দ করে পানির সাথে খেলতে। মুগুগরু যখন তাকে গোসল করাতে নেন, মারু তার ছোট্ট থাবার সাহায্যে পানি ছিটিয়ে আনন্দ উপভোগ করে!

দেখতে পাচ্ছেন সে কোথায় শুয়ে আছে? Source: BrainBerries.co

ইন্টারনেট দুনিয়া তোলপাড় করে দেওয়া এই ভোলাভালা বিড়াল জানেই না, সে কতটা জনপ্রিয়, কত ভক্ত তার দুনিয়াজোড়া। মারুরও আছে এমন সব মিম যা বিভিন্ন মজার পরিস্থিতি ও আপনার মনের কথা বর্ণনা করবে! “I Am Maru“, এই দুষ্টু মহাশয়ের নামে বই। এলেন ডিজিনার্স টিভি শো সহ অন্যান্য আরো টিভি শোতে দেখা গেছে তার উপস্থিতি। তার প্রথম ইউটিউব ভিডিও আপলোড করা হয় ২০০৮ সালের জুলাইতে। বলাই বাহুল্য, তার আছে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল এবং ব্লগ, যাতে তার খবরাখবর পাওয়া যায় নিয়মিত। গিনিজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড আছে মারুর, ইউটিউবে সর্বাধিক ভিউ পাওয়া কোনো প্রাণীর ভিডিও যে তারই! বাক্স নিয়ে তার কসরত জয় করে নিয়েছে অগুনতি মানুষের মন। তাদের ভালোবাসার ফলস্বরূপই মারুকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিড়াল বলে মনে করা হয়।

স্নুপি

এই বিড়ালটিও হুলো বিড়াল, অর্থাৎ পুরুষ শ্রেণীর সদস্য। জন্ম তার ২০১১ সালের ১১ মে। ছোট পশমওয়ালা ভীষণ আদুরে দেখতে এই পার্সিয়ান বিড়ালটি চীন দেশের বাসিন্দা। স্নুপিকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় বানিয়েছে তার বড় বড় চোখ দুটি। ডোরাকাটা লেজটাও নজর কাড়ে খুব। এই বিল্লু মহাশয়কে পৃথিবীর সবচেয়ে কিউট বিড়াল বলেও অভিহিত করা হয়।

এই আদুরে মুখখানা দেখে স্নুপিকে বিশ্বের সবচেয়ে কিউট বিড়াল বলাটা কি ভুল হবে? Source: onmogul.com

ইন্টারনেট দুনিয়ায় বেশ তারকাখ্যাতি পাওয়া এই তুলার বল অবশ্য সেসবের মোটেও পরোয়া করে না, দিনের মোটামুটি সতেরো ঘণ্টা সে ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়! খাওয়া এবং ঘুমানোই হলো স্নুপির প্রিয় কাজ। তবে সে কিছুটা সময় খেলা এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করার কাজেও ব্যয় করে থাকে! ২০১২ সালে ইন্সটাগ্রামে পদার্পণ করার পরপরই স্নুপি অসংখ্য ফলোয়ার জুটিয়ে নেয়, যারা তার মজার এবং আদুরে সব ছবি ও ভিডিও দেখতে অপেক্ষা করে থাকে। চীনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইটেও আছে এই বিড়ালের প্রচুর ভক্ত। এই বিড়ালের আছে নিজের ফেসবুক পেইজও।

গলায় তার মুক্তোমালা! Source: YouTube

মালা, টুপি, জামাকাপড়- এসব জিনিসের সাথে স্নুপির বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যার ফলে তাকে প্রায়ই এসব ব্যবহার করতে দেখা যায়। অর্থাৎ পরিধেয় বস্তু কিংবা গহনা, এসবে স্নুপির ঠিক অরুচি নেই, যা বেশিরভাগ বিড়ালের থেকে থাকে। তার মানুষ অভিভাবক হচ্ছেন মিস নিং, যিনি স্নুপির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করার পর স্নুপি দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। গ্রাম্পি ক্যাট, লিল বাব কিংবা মারুর মতোই স্নুপির ছবি ও ভিডিও পেতেও আগ্রহী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। আর হবেই না বা কেন, এমন মায়াকাড়া দেখতে বিল্লুর জন্য ভালোবাসা না হওয়াটাই বরং খানিক গোলমেলে ব্যাপার! মিস নিংয়ের মতে, স্নুপির ‘পাই ফেস‘ এবং দুঃখী চোখগুলোই তার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা স্নুপির এই দুঃখী চেহারা ও টারডার সস ওরফে গ্রাম্পি ক্যাটের বিরক্ত চেহারাকে একসাথে এসেছে অনেক মি্মে, বলার অপেক্ষা রাখে না যে সেগুলো বেশ মজাদার!

বিড়ালদের ফ্যাশন জগতে নিঃসন্দেহে স্নুপির নামখানা থাকবে! Source: Odd Stuff Magazine

স্নুপি এবং মারু, দুনিয়াজোড়া বহু অন্তর্জাল ব্যবহারকারীর কাছে তারা নির্ভেজাল কিছু ভালো সময়ের অন্য নাম। আপনিও হয়তো অবসরের সময়টা মাঝেমাঝেই এসব দুষ্টু-মিষ্টি বিড়ালদের ছবি আর ভিডিও দেখে কাটান। কারো কারো ফেসবুক প্রোফাইল থেকে লাইক করা বেশিরভাগ পেজই পাওয়া যাবে এই তুলার বস্তাগুলোর! সামনে থাকবে এই বিখ্যাত বিড়ালদের নিয়ে শেষ পর্ব। ইন্টারনেটের তারকা বিড়ালদের আরো কিছু গল্প বলে শেষ করা হবে এই ধারাবাহিক আয়োজন। আর হ্যাঁ, যারা এখনো গ্রাম্পি ক্যাট, লিল বাব, মারু এবং স্নুপিকে চেনেন না; সময় করে একটি বার ঘুরে আসুন তাদের দুনিয়া থেকে। সময়টা মন্দ কাটবে না, এটুকু নিশ্চিত!

ফিচার ইমেজ- teenvogue.com

Related Articles