সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যাকান্ডের পর থেকেই নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তথা এমবিএস। কাতার অবরোধ, লেবাননের প্রধানমন্ত্রীকে জোরপূর্বক আটকে রাখা, নিজ দেশে মানবাধিকার লংঘন প্রভৃতির পরেও যারা এতদিন তার প্রশংসা করে আসছিল, তাকে মহান সংস্কারক হিসেবে বিশেষায়িত করছিল, তারাও এ ঘটনার পর তার সমালোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু তার সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকেই তাকে তুলনা করছেন সাবেক লিবীয় নেতা মোয়াম্মার আল-গাদ্দাফির সাথে।
এমবিএসকে গাদ্দাফির সাথে তুলনা করেছেন, এমন সাংবাদিকদের মধ্যে আছেন আল-জাজিরার মেহদি হাসান, দ্য ইন্টারসেপ্টের মুর্তজা মোহাম্মদ হুসেন, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক রুলা জিবরিলসহ আরো অনেকেই। তাদের অধিকাংশের মূল বক্তব্য অনেকটা একই রকম। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন গাদ্দাফির উত্থান ঘটছে। কিন্তু যে গাদ্দাফি তার নিজ দেশের অনেক উন্নতি করেছেন, যিনি জীবনের অধিকাংশ সময় জুড়ে ছিলেন পশ্চিমের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, এবং যাকে শেষপর্যন্ত ন্যাটো সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে, তাকে কেন আমেরিকা এবং ইসরায়েলের প্রিয়পাত্র মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে তুলনা করা হচ্ছে?
Well said @rulajebreal
“This is Gaddafi on steroids. This is worse than Gaddafi because he [MBS] has billions of dollars to spend on the US, on PR, on lobbying, on buying consensus” https://t.co/GhMUeGFSTm— Mehmet Solmaz (@MhmtSlmz) October 14, 2018
এ কথা সত্য যে, গাদ্দাফি সত্যি সত্যিই পশ্চিমা বিরোধী বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। কিন্তু এটাও সত্য যে, পশ্চিমা বিরোধিতাই সুশাসক হওয়ার একমাত্র শর্ত না। বাস্তবে মধ্যপ্রাচ্যের আর দশজন স্বৈরশাসকের মতোই গাদ্দাফি নিজেও ছিলেন একজন স্বৈরশাসক। একদিকে তিনি দেশকে একতাবদ্ধ রেখেছিলেন, দেশের প্রভূত উন্নতি করেছিলেন। কিন্তু অন্যদিকে তিনি ভিন্নমতকে অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করেছিলেন। এবং বিন সালমানের জন্মেরও আগে, তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তার সমালোচকদেরকে হত্যা করার উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলেন।
গাদ্দাফি জনপ্রিয় ছিলেন সত্য। কিন্তু বিশ্বের কোনো শাসকেরই শতভাগ জনসমর্থন থাকে না, গাদ্দাফিরও ছিল না। আর বিন সালমানের মতোই গাদ্দাফিও সামান্যতম সমালোচনাও সহ্য করতেন না। গাদ্দাফির শাসনামলে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড, মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ ছিল। যারাই রাজনৈতিক দল গঠন করার বা তার বিরোধিতা করার চেষ্টা করতো, তাদেরকেই তিনি দেশদ্রোহী এবং রাস্তার কুকুর হিসেবে আখ্যায়িত করতেন। গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা যখন বিদেশে পালিয়ে যেত, তখন তাদেরকে ধরে আনার জন্য নিয়োগ করতেন তার বিশেষ বাহিনীকে।
বিরোধী মতের কর্মীদেরকে বিদেশের মাটিতে হত্যার গাদ্দাফির এই নীতি শুরু হয় মূলত আশির দশকের শুরু থেকে। ১৯৭৭ সালে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে গাদ্দাফির সাথে তার সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। সে সময় এমনকি তিনদিনের জন্য মিসর এবং লিবিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধও সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে ইয়াসির আরাফাতসহ অন্যান্য আরব নেতাদের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বন্ধ হয়। তবে যুদ্ধ বন্ধ হলেও দুই নেতার শত্রুতা এবং পরস্পর বিরোধী অভিযোগ ও হুমকি বন্ধ হয়নি। মূলত এরপর থেকেই গাদ্দাফি দেশে এবং দেশের বাইরে অবস্থিত বিরুদ্ধমতের উপর খড়গহস্ত হন। তার অভিযোগ ছিল, সাদাত, আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ এবং ইসরায়েল তাকে উৎখাতের জন্য বিদ্রোহীদেরকে সহায়তা করছে।
গাদ্দাফির প্রথম শিকারদের মধ্যে একজন ছিলেন লন্ডনে বসবাসরত এক সাংবাদিক মোহাম্মদ মোস্তফা রমাদান, যিনি গাদ্দাফির প্রচন্ড সমালোচক ছিলেন। তিনি লন্ডন ভিত্তিক আরবি সংবাদপত্র আল-আরবে চাকরি করতেন। একইসাথে তিনি বিবিসি অ্যারাবিকেও একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন। ১৯৮০ সালের ১১ এপ্রিল শুক্রবার লন্ডনের একটি মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় দুজন লিবিয়ান তাকে গুলি করা হত্যা করে। অভিযোগ আছে, লিবিয়ান সরকার তার লাশও লিবিয়াতে ফেরত নেওয়ার অনুমতি দেয়নি।
রমাদানকে হত্যার ১০ দিনের মাথায় লন্ডনে বসবাসরত আরেকজন লিবিয়ান আইনজীবিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মাহমুদ আবুৃ নাফা নামে ঐ আইনজীবি আল-জিহাদ ম্যাগাজিনে গাদ্দাফির শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন। ঐ বছরের ২১ এপ্রিল লন্ডনে তার অফিসের সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করে দুই লিবিয়ান। এই হত্যাকান্ডগুলো শুরুর কয়েক মাস আগেই লিবিয়ান সংবাদপত্রে বিদেশে বসবাসরত বিরুদ্ধমতের সবাইকে দেশে ফেরার আহ্বান জানানো হয়েছিল এবং ফিরে না এলে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
এসব হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্তত দুজন লিবিয়ানের সে সময় যাবজ্জীবন কারাদন্ডও হয়েছিল। এবং ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে সময় ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভ প্রমাণ পেয়েছিল যে, লন্ডনে অবস্থিত লিবিয়ান দূতাবাসই এসব হত্যাকারীদেরকে নিয়োগ করছিল। এমনকি, ঐ প্রতিবেদন অনুযায়ী লিবিয়ান সরকার দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরকে সফলভাবে হত্যাকান্ড পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তিরস্কারও করেছিল।
গাদ্দাফির বিরুদ্ধমত দমন এখানেই শেষ ছিল না। ১৯৮০ সালের নভেম্বরে ফারাজ শাবান গেসুদা নামে এক লিবিয়ান ব্যবসায়ী এবং তার ব্রিটিশ স্ত্রী হেদার ক্লেয়ারের বাসায় উপস্থিত হন এক লিবিয়ান বিমান কর্মচারী হুসনি ফারহাত। উপহার হিসেবে তিনি সাথে করে এক প্যাকেট বাদাম নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ বাদামের সাথে বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান মেশানো ছিল। সেই বাদাম খেয়ে ঐ দম্পতির সাত-আট বছরের দুই শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তাদের পোষা কুকুরটি মৃত্যুবরণ করে।
শুধু লন্ডন না, একই সময়ে ইতালি, জার্মানি, গ্রিস, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশেও গাদ্দাফির হিট টিম বিরুদ্ধমতের লিবিয়ানদেরকে হত্যা করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। শুধুমাত্র ১৯৮০ সালেই রোমে চারজন লিবিয়ানকে হত্যা করা হয়, যাদের সবগুলোর পেছনেই গাদ্দাফির সরকারের হাত ছিল। এদের মধ্যে একজন ছিলেন মোহাম্মদ এরতেইমি নামে একজন লিবিয়ান ব্যবসায়ী। এর আগে একবার অপহরণের চেষ্টা থেকে বাঁচলেও ১৯৮০ সালের ২১ মার্চ তার লাশ পাওয়া যায় তার গাড়ির ট্রাঙ্কের ভেতর।
একই বছর রোমে পরপর হত্যা করা হয় আরো তিনজন লিবিয়ানকে। এদের মধ্যে একজন ছিল মোহাম্মদ ফুয়াদ আবু হাজার। ১৯৮০ সালের মে মাসে নাইলনের তার গলায় পেঁচিয়ে এবং উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। তার মৃতদেহের পাশে একটি নোট রাখা ছিল, যেখানে লিবিয়ান রেভোলিউশনারি কমিটির নামে স্বাক্ষর করা ছিল। ঐ নোটে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, জনগণের শত্রুরা যেখানেই থাকুক, তাদেরকে খুঁজে বের করা হবে।
একই সপ্তাহে এথেন্সেও এক লিবিয়ানের লাশ পাওয়া গিয়েছিল। আবুবকর আব্দুর রহমান নামের ঐ লিবিয়ান ছিলেন লিবিয়ান পুলিশ বাহিনীর সাবেক সদস্য, যিনি পরে পদত্যাগ করে ইউরোপে চলে যান এবং গাদ্দাফির শাসনব্যবস্থার কঠোর সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হন। মে মাসের ২২ তারিখে এথেন্সে তাকে জবাই করে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখা হয়। তার লাশ আবিষ্কৃত হয় দুদিন পরে। তার হত্যাকারী পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে মৃত্যুদন্ড হলেও পরবর্তীতে আপিলের পর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয় তাকে।
শুধু ইউরোপে না, মহাসাগর পাড়ি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছে গিয়েছিল গাদ্দাফির হিট টিম। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো স্টেট ইউভার্সিটির ছাত্র ফায়সাল জাগাল্লায় ছিলেন গাদ্দাফির শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে বেশ সক্রিয়। তিনি নিয়মিত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিয়ে যাচ্ছিলেন। বিদ্রোহী ছাত্রদের দ্বারা ওয়াশিংটনে লিবিয়ান দূতাবাস দখল করে নেওয়ার ঘটনায়ও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। গাদ্দাফির নিযুক্ত এজেন্টরা তার উপর আক্রমণ করতে পারে, এফবিআই থেকে এমন সতর্কবার্তার পরেও তিনি তার কর্মসূচী অব্যাহত রাখেন।
১৯৮০ সালের ১৪ অক্টোবর এক সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা তার ওয়াশিংটনের বাসায় গিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। পরপর দুবার তার মাথা লক্ষ্য করে গুলি করার পরেও অবশ্য তিনি শেষপর্যন্ত বেঁচে যান, যদিও তার এক চোখ অকেজো হয়ে যায়। পরবর্তীতে আদালতে তার হত্যাচেষ্টাকারীর পরিচয় পাওয়া যায়। জানা যায়, তিনি সে সময় এক সাবেক সিআইএ কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছিলেন। ঐ সিআইএ কর্মকর্তা, এডউইন উইলসন, সে সময় লিবিয়ার গোপন তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে লিবিয়ান প্রশাসনের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এবং লিবিয়ার সরকারের হয়ে অস্ত্র সরবরাহসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
শুধু ইউরোপ কিংবা আমেরিকার রাজপথে বা বাসার ভেতরে না, জামাল খাশোগজির ঘটনার মতোই দূতাবাসেও সমালোচকদের উপর আক্রমণের অভিযোগ আছে গাদ্দাফির সরকারের বিরুদ্ধে। ১৯৮২ সালের নভেম্বর মাসে পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থিত লিবিয়ান রাষ্ট্রদূতের বাড়ির ভেতর আল-হাদি আল-গারিয়ানি নামের এক ছাত্রকে সারা রাত আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে আদালতে গারিয়ানি অভিযোগ করেন, মোস্তফা জায়িদি নামের দূতাবাসের এক ডাক্তার এবং সালেম ইয়াইইয়া নামের এক সহকারী তার উপর নির্যাতন চালায়।
গারিয়ানি ছিলেন লিবিয়ার ইসলামপন্থী মৌলবাদী একটি দলের সদস্য। দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে নির্যাতন করে তার মুখ থেকে দলের অন্যান্য সদস্যদের নাম বের করার চেষ্টা করছিল। গারিয়ানির অভিযোগ অনুযায়ী তারা লাঠি এবং তার দিয়ে তাকে মারধোর করে এবং তার চোখে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। পশ্চিম জার্মানির সরকার অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করলে গাদ্দাফি পাল্টা আটজন জার্মান নাগরিককে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে লিবিয়াতে আটক করেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে কূটনৈতিক সংকট অব্যাহত থাকে।
তবে বিদেশের মাটিতে গাদ্দাফির সবচেয়ে সমালোচিত অপারেশনটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৮৪ সালের ১৭ এপ্রিল। এর আগের দিন লিবিয়ার ত্রিপলী ইউনিভার্সিটি চত্বরে দুই বিদ্রোহী ছাত্রকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার প্রতিবাদে সেদিন লন্ডনে অবস্থিত লিবিয়ান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করে গাদ্দাফি বিরোধী প্রবাসী লিবিয়ানদের একটি সংগঠন। কিন্তু বিক্ষোভ চলাকালে দূতাবাসের ভেতর থেকে মেশিনগান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ১০জন লিবিয়ান আহত হয় এবং দায়িত্বরত একজন ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা ইভোন ফ্লেচার নিহত হন।
এই ঘটনার পর লিবিয়া এবং ব্রিটেনের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ব্রিটেন লিবিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরকে বহিষ্কার করে এবং লিবিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে, যা স্থায়ী হয় পরবর্তী কয়েক দশক পর্যন্ত। এ ঘটনার ফলশ্রুতিতেই ১৯৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন লিবিয়াতে বিমান হামলার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন অন্য কোনো ইউরোপীয় রাষ্ট্র অনুমতি না দিলেও ব্রিটেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের বিমান ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে লিবিয়া ইভোন ফ্লেচার হত্যাকান্ডে নিজেদের দায় স্বীকার করে নেয় এবং ফ্লেচারের পরিবারকে আড়াই লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
আশির দশকের মাঝামাঝির পর থেকে কিছুটা হ্রাস পেলেও গাদ্দাফির এ ধরনের হত্যাকান্ড অব্যাহত ছিল নব্বইয়ের দশকের শেষ পর্যন্ত। একদিক থেকে বিবেচনা করলে গাদ্দাফিকে মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে মেলানো অনুচিত বলে মনে হয়। কারণ মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচকরা অধিকাংশই নিছকই সমালোচক। অন্যদিকে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে সে সময় সিআইএ, এমআইসিক্সসহ সমগ্র পশ্চিমা বিশ্ব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এবং তার সমালোচকদের মধ্যে সবাই না হলেও একটি অংশ শুধুমাত্র সমালোচক ছিল না, তারা এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গাদ্দাফিকে সশস্ত্র পদ্ধতিতে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টায় জড়িত ছিল। কিন্তু তারপরেও আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে, কোনো রকম বিচার ছাড়া অভিযুক্তদেরকে হত্যা করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।