দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় অর্ধশতাব্দী আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত ইউনিয়ন, স্নায়ুযুদ্ধকালে মোটাদাগে বিশ্ব ব্যবস্থা ছিল দ্বিমেরু। নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়, বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকটে দেখা যায় নেতৃস্থানীয় আসনে। একবিংশ শতাব্দীতে একসাথে উত্থান ঘটতে থাকে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী রাষ্ট্রের, বৃহৎ অর্থনীতি নিয়ে পরাশক্তি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল চীন। বাণিজ্যযুদ্ধ ছিল সেই বৈশ্বিক নেতৃত্ব নিয়ে লড়াইয়ের প্রথম পাবলিক এপিসোড।
এই বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেই গত বছর ডিসেম্বরে চীনের উহানে ধরা পড়ে নতুন এক ভাইরাস, গত ছ’মাসে যা পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সব প্রান্তে। গত কয়েক দশক ধরে বৈশ্বিক নেতৃত্ব দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে সবচে’ বেশি, পর্যুদস্ত অবস্থা ইউরোপের বিভিন্ন দেশেরও। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে যেতে হয়েছে লকডাউনের পথে, ফলে থমকে গেছে অর্থনীতি। এর মধ্যেই রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে চলছে একে অন্যকে দোষারোপ করার রাজনৈতিক কৌশল, আভাস মিলছে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন পরিবর্তনের। সংকট মোকাবেলায় প্রচলিত নেতৃত্বকাঠামোর ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলে প্রায় সকল বিশ্লেষকই একমত, মহামারি পরবর্তী বিশ্ব অনেক বেশি আলাদা হবে আগের বিশ্ব থেকে।
মহামারি পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে প্রথম প্রশ্নটি হলো- আমরা কি আরো বিশ্বায়নের দিকে যাব, নাকি জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয়ে সীমানা প্রাচীরের ধারণা শক্তিশালী হবে?
এর উত্তর হচ্ছে, মহামারি পরবর্তী সময়ে খুব সম্ভব আমরা আরো বিশ্বায়নের দিকে যাব।
প্রথমত, এই মহামারি চলাকালীনও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট, টেস্টিং কিট, ভেন্টিলেটর দিয়ে এক রাষ্ট্র সহযোগিতা করছে আরেক রাষ্ট্রকে। কোনো রাষ্ট্রই একা এই সংকট মোকাবেলা করতে পারছে না। এই শিক্ষা মহামারি পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, এ সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে রাষ্ট্রের আলাদা আলাদা উদ্যোগে সুফল আসবে না, প্রয়োজন হবে বৈশ্বিক সম্মিলিত সহযোগিতার। ভ্যাকসিন চলে আসলে সেটির ব্যবস্থাপনার জন্যও প্রয়োজন বৈশ্বিক সহযোগিতা। এর একটা উদাহরণ হতে পারে, সাম্প্রতিক ইবোলা মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ। ফলে, অধিকাংশ রাষ্ট্রেরই হার্ড আইসোলেশনের দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তৃতীয়ত, বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি যে সাপ্লাই চেইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সেই সাপ্লাই চেইন পুরোপুরি পরিবর্তন করে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার মতো অবস্থায় নেই অধিকাংশ রাষ্ট্রই। জাতিরাষ্ট্রের এ যুগে যখন দেশ গঠিত হয় তুলনামূলক ছোট ছোট ভূখণ্ড নিয়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই পরস্পর নির্ভরশীলতা চলতে থাকবে মহামারি পরবর্তী সময়েও।
অর্থাৎ, মহামারি পরবর্তী সময়েও মানুষ, অর্থ আর সম্পদের প্রবাহ চলতেই থাকবে, এই লকডাউনের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর তোড়জোড় শুরু হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে, আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শক্তিশালী হবে বিশ্বায়নের ধারণা।
বিশ্বব্যবস্থায় নতুন মূল্যবোধ
বিশ্বের সকল প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া এ মহামারি মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে প্রথম বিশ্বের আধুনিক দেশগুলো, ব্যর্থ হয়েছে অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোও। বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনও দিয়েছে ব্যর্থতার পরিচয়, প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এদের নেতৃত্ব। নাগরিকেরা লকডাউনের মধ্যে ঘরে থেকে খেয়াল করছেন, যে বিশ্বব্যবস্থা এতদিন রাজত্ব করেছে, নাগরিকদের নিরাপত্তায় সেটি কিছুই করতে পারছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, এই মহামারি শেষে প্রতিটি মানুষ নতুন মূল্যবোধ নিয়ে বিশ্বব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করবেন।
প্রথমত, এই মহামারি মোকাবেলায় যেসব সরকার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েছে, সংকটে সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং বাস্তবায়ন করছে, কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংকট থেকে উত্তরণ করবে, মহামারি পরবর্তী সময়ে সেসব দেশ এবং সরকারের প্রতি একটা বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে। অর্থাৎ, বর্তমানে যে অস্ত্রকেন্দ্রিক নিরাপত্তার ধারণা ছিল, সেটা পরিবর্তন হয়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকেন্দ্রিক নিরাপত্তার ধারণা তৈরি হবে।
দ্বিতীয়ত, নিশ্চিতভাবেই, চীনে তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকলে এই মহামারি হয়তো বৈশ্বিক সংকট হিসেবে আবির্ভূত হতো না। আবার, বিভিন্ন দেশের মহামারি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েও জনগণকে বারবার বিভ্রান্ত করেছে। ফলে মহামারি পরবর্তীকালে তথ্যের অধিকার, বাকস্বাধীনতার মতো অধিকারগুলো আরো শক্তিশালী হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রগুলোতে নাগরিকেরা আরো সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া দেখাবেন।
তৃতীয়ত, এই মহামারির সময়টাতে অধিকাংশ মানুষই নিজের ধর্মের দিকে ঝুঁকেছেন, সমানভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন অন্য ধর্মের মানুষদের প্রতিও। ফলে, মহামারি পরবর্তীকালে একটি ন্যায়সঙ্গত, পারস্পরিক সহযোগিতামূলক এবং সহনশীল বিশ্বব্যবস্থার দিকে মানুষের সমর্থন তৈরি হবার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন বিশ্বব্যবস্থা
যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর এই মহামারি প্রথম বৈশ্বিক সংকট নয়। গত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক সংকটে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে, তৈরি করেছে বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা। এতগুলো সংকটের পরও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসন থেকে সরে যায়নি, বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তনের আওয়াজ ওঠেনি। তাহলে, এই সংকট কেন আলাদা? কেন বিশ্বব্যবস্থায় পরিবর্তন নিনাদ উঠেছে?
কারণ, এই বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র আসলে কোথাও নেই। উগ্র জাতীয়তাবাদ আর বিশ্বায়ন বিরোধী প্রচারণা করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই বিচ্ছিন্নতার দিকে যাচ্ছিলেন। একের পর এক আন্তর্জাতিক দায়িত্বকে পিঠ দেখিয়ে তিনি বদ্ধপরিকর হয়েছিলেন সীমানার ধারণাকে পোক্ত করতে। ফলে এই কঠিন সময়ে স্বাভাবিকভাবেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জনতুষ্টিবাদী নেতার মতো ভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতির দিককে অস্বীকার করেছেন, গ্রহণ করেননি কোনো পরিকল্পনা। আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে এখন চলছে মেডিকেল ইকুইপমেন্টের সংকট, মৃত্যুর মিছিল চলছে বড় বড় স্টেটে। এর মধ্যে ট্রাম্প নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসে একের পর এক উদ্ভট মন্তব্য করে হয়েছেন হাসির পাত্র। ফলে এই মহামারির সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে নেই কোনো প্রকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল নেতৃত্ব, বিশ্ব জুড়ে নেই আমেরিকান নেতৃত্ব।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বিশ্বায়নবিমুখ অবস্থানের ফলে বৈশ্বিক নেতৃত্বের জায়গাটিতে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে, মহামারিকালে যা আরো প্রকট হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই ছেড়ে দেওয়া আসনে বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসনে সবচে’ সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী এশিয়ান অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন। বিশাল শ্রমশক্তি আর সাম্প্রতিক সময়গুলোতে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ফলে চীন স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়। বৈশ্বিক পরিসরে এই মহামারি মোকাবেলায় হেজিমন স্টেটের অনেকগুলো দায়িত্বও পালন করছে চীন, প্রশংসা কুড়িয়েছে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে। ফলে, পরবর্তী বিশ্বের নেতা হিসেবে অনেকের বাজির ঘোড়া চীন। কিন্তু কিছু ইস্যু চীনের নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলবে।
প্রথমত, চীন শক্ত হাতে মহামারি মোকাবেলা করলেও মহামারির উৎপত্তি নিয়ে রাষ্ট্র হিসেবে চীনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়নি, বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হয়নি প্রকাশিত তথ্যের। ফলে, বৈশ্বিক পরিসরে চীনের গ্রহণযোগ্যতা সংকটের মধ্যেই থাকবে।
দ্বিতীয়ত, চীনের প্রভাবের পরিসরটা তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যেই বেশি। ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের সাথে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও চীনের রাজনৈতিক নেতৃত্ব মেনে নেওয়ার মতো অবস্থানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেই। অর্থাৎ, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক শক্তি দিয়েই একক পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়।
তৃতীয়ত, নয়া বিশ্বব্যবস্থায় যে মূল্যবোধগুলো জাগ্রত হচ্ছে, চীন সেগুলোকে ধারণ করে না। শুধুমাত্র শক্তিশালী অর্থনীতির নিয়ে একটা কর্তৃত্ববাদী সরকারের মডেলকে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য করা সম্ভব নয়। তাই এটা মোটামুটি নিশ্চিত, বৈশ্বিক নেতৃত্বে চীন এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। বরং, মহামারি পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থায় হবে বহুমেরু, যেখানে অনেকগুলো রাষ্ট্র বৈশ্বিক একক পরাশক্তি হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরেই এরকম একটি বিশ্বব্যবস্থা আবির্ভূত হয়, একক আধিপত্য ছিল না কোনো রাষ্ট্রের। প্রভাবশালী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপানের মতো রাষ্ট্রগুলো।
নয়া বিশ্বব্যবস্থায় প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো
বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় সবচে’ উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে জার্মান সরকার, বিশ্বব্যাপী প্রশংসা হচ্ছে জার্মান মডেলের। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাফল্যের পাশাপাশি পূর্বাভাস বলছে, সরকার গৃহীত উদ্যোগগুলোর ফলে বেকারত্ব খুব বেশি বাড়বে না জার্মানিতে। এর আগে, ২০০৯ সালের সংকট মোকাবেলায় প্রশংসিত হয় জার্মান নেতৃত্ব। সংকট মোকাবেলায় এই সাফল্য জার্মানিকে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা দিচ্ছে, যার প্রমাণ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে জার্মানিকে পছন্দ করছেন শিক্ষার্থীরা।
নয়া বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসবে বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকার নিয়ে উচ্চকণ্ঠে থাকা কানাডা। সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ও দক্ষ ভূমিকা রেখেছে কানাডা সরকারও, প্রশংসিত হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে গৃহীত উদ্যোগগুলোও।
সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচে’ বেশি মেডিকেল ইকুইপমেন্ট দিয়ে সহযোগিতা করেছে তুরস্ক, যাদের সহযোগিতা পৌঁছে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫৫টি দেশে। ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া তুরস্ক নিশ্চিতভাবেই নয়া বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আবির্ভূত হবে। ভূমিকা রাখবে তাদের দক্ষ নেতৃত্ব, বিভিন্ন দেশে মানবতাবাদী সহযোগিতাগুলোও।
বিশাল শ্রমশক্তি নিয়ে নয়া বিশ্বব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় চলে আসতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতও। তবে তাদের বিভক্তিমূলক রাজনীতি, শ্রেণী বিভাজন প্রভাব ফেলবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে, বৈশ্বিক পরিসরে গ্রহণযোগ্যতার সংকটে ফেলবে কাশ্মীর ইস্যু, ইসলামবিরোধী মনোভাবও।
রাশিয়া, ইরান, ফ্রান্সসহ আরো কয়েকটি রাষ্ট্রের প্রভাবও থাকবে নয়া বিশ্বব্যবস্থায়, বড় হতে পারে নিরাপত্তা পরিষদের আকার। তবে কোনো রাষ্ট্রই উঠে আসতে পারবে না একক পরাশক্তি হিসেবে ।