ব্ল্যাক প্যান্থার সিনেমার মাধ্যমে সুপারহিরো সিনেমার আকাশে উড়লো এক নতুন নিশান। শুধু মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সই নয়, পুরো সুপারহিরো সিনেমার জগতেই যেন ব্ল্যাক প্যান্থার যোগ করলো নতুন এক মাত্রা। এই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সংস্কৃতিকে ভিত্তি করে হলিউডে তৈরি হল বিশাল বাজেটের কোনো সিনেমা, যার বক্স অফিস সাফল্য হয়তো বদলে দিতে পারে ব্ল্যাক সিনেমাগুলো নিয়ে হলিউডের প্রচলিত রীতি।
অল্পবয়সী পরিচালক রায়ান কুগলারও সিনেমাকে সাজিয়েছেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। ইতিহাস আর বাস্তবের মিশেলে ওয়াকান্দিয়ান রূপকথাকে তুলে ধরেছেন অনিন্দ্য সুন্দর এক রূপে। তার আগের দুই সিনেমা থেকেই বোঝা যাচ্ছিল তিনি হলিউডে চমৎকার কিছু করে দেখাতে এসেছেন। আর সেটা প্রমাণ করতেই যেন এবার উপহার দিলেন ব্ল্যাক প্যান্থার।
প্লট
শত-সহস্র বছর পূর্বে যখন আফ্রিকার পাঁচ জাতি ভিনগ্রহী ধাতু ভাইব্রেনিয়াম নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে, তখন একজন যোদ্ধা ওই ধাতুর দ্বারা প্রভাবিত একটি হৃদয়াকৃতির ঔষধ সেবন করেন যা তাকে সুপারন্যাচারাল ক্ষমতা দান করে। ক্ষমতার বলে তিনিই হয়ে উঠেন প্রথম ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ এবং সব গোত্রকে এক করে ‘ওয়াকান্দা’ জাতি প্রতিষ্ঠা করেন। যুগে যুগে ওয়াকান্দাবাসী পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন ভাইব্রেনিয়াম ব্যবহার করে ভিন্ন মাত্রার প্রযুক্তি গড়ে তোলে। এই অগ্রসর প্রযুক্তি এবং তাদের শত বছরের সংস্কৃতিকে আগলে রেখে ওয়াকান্দাবাসী এক অনন্যসাধারণ জাতিতে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু বহির্বিশ্বের নজর এড়ানোর জন্য এই অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহার করেই তারা নিজেদের একটি তৃতীয় বিশ্বের জাতির চাদরে ঢেকে রাখে।
১৯৯২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকল্যান্ডে আন্ডার-কভার এসাইনমেন্টে আসেন ওয়াকন্দার যুবরাজ এন’জবু। আমেরিকায় বিদ্যমান বর্ণবাদ এবং কৃষ্ণাঙ্গদের দুর্দশা দেখে তিনি উপলব্ধি করেন যে ওয়াকান্দার ‘নিজ দেশ নীতি’ একটি স্বার্থপর নীতি। যেখানে বিশ্বজুড়ে আফ্রিকান বংশোদ্ভূতরা নির্যাতিত হচ্ছে সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন এবং অগ্রসর প্রযুক্তি নিয়ে ওয়াকান্দার নীরব থাকাটা পীড়া দেয় এন’জবকে। তিনি অবৈধভাবে ওয়াকন্দার প্রযুক্তি এবং ভাইব্রানিয়াম চুরি করে তা বিশ্বজুড়ে নিপীড়িত কৃষ্ণাঙ্গদেরকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে করে তারা তাদের শোষকগোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করতে পারে। কিন্তু টি’চাকা গোয়েন্দার মাধ্যমে এ খবর জানতে পারেন এবং এন’জবুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনেন।
১৬ বছর পর, যখন সম্রাট টি’চাকা মৃত্যুবরণ করেছেন, তখন তার সন্তান টি’চালা (ব্ল্যাক প্যান্থার) সিংহাসনে অভিষিক্ত হয়। নতুন সম্রাট হয়েই বিভিন্ন সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হয় টি’চালা/ব্ল্যাক প্যান্থারকে। জাবারি গোত্রের চ্যালেঞ্জ, ওয়াকান্দার ভাইব্রেনিয়াম চুরি করে পাচার করা ইউলেসিস ক্লকে ধরার চ্যালেঞ্জ। আর সাথে যোগ হয় তার হঠাৎ রাজত্ব প্রাপ্ত হওয়ায় রাজা হিসেবে নিজেকে অপ্রস্তুত মনে করা ব্ল্যাক প্যান্থারের মানসিক দ্বন্দ্ব। কেমন রাজা হবে সে? পূর্বপুরুষের মতো দেশকে রক্ষার নাম করে নিজেদের সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখবে? নাকি সারা বিশ্বের নিপীড়িত জনগণের সাহায্যে এগিয়ে আসবে?
“I’ve seen gods fly. I’ve seen men build weapons that I couldn’t even imagine. I’ve seen aliens, drop from the sky. But I have never seen anything like this.”
প্রথম সুপারহিরো, সুপারম্যানের আবির্ভাব হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে। ঈশ্বরের সমকক্ষ সুপারম্যানকে যে স্যুট দেয়া হয় তা আমেরিকার পতাকার মতোই লাল-নীল। বলা হয়ে থাকে, সুপারম্যানের পুরো প্রতিমাটিই অঙ্কিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে সিম্বোলাইজ করে। লেক্স লুথারের মতো ভিলেনকে বানানো হয়েছে হিটলারের আদলে। দেবতা-রাক্ষসের সংঘর্ষ চিত্রায়নের মাধ্যমে তরুণ যোদ্ধাদের ভালো-খারাপের তফাৎ দেখানোটাই মনে করা এই কমিক সৃষ্টির প্রথম উদ্দেশ্য, সুপারম্যানকে দেখে যাতে তারা আমেরিকার মহত্বটা ধরতে পারে।
এরপরে আরও অনেক সুপারহিরো এসেছে। কেউবা সুপারম্যানের মতোই দেবতা-সম, কেউ অন্য কোনো যোগ্যতায় অতিমানব। তাদের মধ্যে সার্বজনীন যে বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় তা হচ্ছে তাদের সবাই শ্বেতাঙ্গ এবং তাদের প্রায় সবাই তথাকথিত আমেরিকান স্বপ্ন লালন করে। কখনোই আমরা একজন কৃষ্ণাঙ্গকে অতিমানবের চরিত্রে দেখি নি। এর প্রধান কারণ, শতাব্দী ধরে চলে আসা গাত্রবর্ণ সম্পর্কে মানুষের ঘৃণ্য গৎবাঁধা ধারণা। হাজার বছর ধরে কালো চামড়ার মানুষদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ হিসেবে দেখা হয়েছে। তাদের কেউ অতিমানব হতে পারে সেটা ছিল সাধারণ মানুষের কল্পনারও বাইরে।
‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ মানুষের গৎবাঁধা চিন্তাধারাকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। ব্ল্যাক প্যান্থারকে বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর দেশ ওয়াকান্দার সম্রাট হিসেবে দেখানোর মূল উদ্দেশই হচ্ছে মানুষকে জানান দেয়া ‘অভিজাত’ শব্দটা শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য নয়। আর এই প্রথমবারের মতো অল-ব্ল্যাক কাস্ট এবং আফ্রিকার প্রান্তরে কোনো ব্লকবাস্টার রচিত হওয়ার মাধ্যমে যেন মারভেল জানান দিতে চাচ্ছে- Black Lives Matter।
রায়ান কুগলার সহস্র বছরের উপনিবেশিক শাসন অধ্যুষিতদেরকে কতটা শুষে নিয়েছে তা-ও দেখিয়েছেন ওয়াকান্দার মাধ্যমে। সভ্যতার শুরু হয় আফ্রিকায়। শিল্প-সংস্কৃতি-সম্পদে পরিপূর্ণ আফ্রিকাতে বসতি গাঁড়ে সাম্রাজ্যবাদীরা। লুট হয় তাদের সব সম্পদ, নিগৃহীত হয় তাদের সংস্কৃতির। কল্পিত আফ্রিকান রাজ্য ওয়াকান্দা সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য নিজেদের তৃতীয় বিশ্বের চাদরে লুকিয়ে রেখেছে এবং শুধু নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করেই তারা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে পরিচালক স্পষ্টভাবে এই বার্তা দিতে চেয়েছেন সাম্রাজ্যবাদীরা সবকিছু শুষে না নিলে আজকে আফ্রিকাও হয়তো ওয়াকান্দার মতো চোখ ধাঁধানো কিছুতে রূপান্তরিত হতে পারতো। সাম্রাজ্যবাদীরা অধ্যুষিতদের কাছ থেকে কতটুকু শুষে নিয়েছে তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন কুগলার।
শুধু ইতিহাস নয়, বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতাকেও সম্বোধন করেছে এই ছবি। বতর্মানে প্রথম বিশ্বের প্রায় সকল দেশের রাষ্ট্রনীতিই অন্তর্মুখী। ব্রিটেন যখন অভিবাসীদের চাপে ব্রেক্সিটের মাধ্যমে নিজেদের একঘরে করে নিয়েছে, আমেরিকাও তখন অভিবাসী ঠেকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওয়াকান্দার পররাষ্ট্রনীতিও কিন্তু অন্তর্মুখী (তাদের আসলে পররাষ্ট্রনীতিই নেই, কারণ তারা বাকি বিশ্ব হতে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে)। তৃতীয় বিশ্ব যখন ধুকছে, তখন ওয়াকান্দার এই নীতিকেও ধিক্কার জানানো হয়েছে। এই নীতির প্রশ্নেই আমরা টি’চালাকে দ্বন্দ্বে ভুগতে দেখি।
রায়ান কুগলারের ভিশনে ধরা পড়েছে এই সময়ের সবচেয়ে নিখুঁত ইউটোপিয়ান ছবি। এই সিনেমায় সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন বিষয়টি হয়তো নারীর কল্প-মূর্তি। ব্ল্যাক প্যান্থারের আশেপাশে যত শক্তিমান চরিত্র তার সবই নারী। ব্ল্যাক প্যান্থারের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে তাকে গার্ড অব অনারও দেয় নারী সৈনিকরা। ওয়াকান্দার সেনাবাহিনীর সিংহভাগ সদস্যই নারী, এমনকি তাদের জেনারেলও। এত সুন্দরভাবে নারীর ক্ষমতায়ন দেখাতে পারেনি আর কোনো ছবি।
রায়ান কুগলারের পরিচালনা এককথায় ছিল অসাধারণ। জো রবার্ট কোলের সাথে সিনেমার চিত্রনাট্যও লিখেছেন তিনি। কমিক বই অনুসরণ করলেও ছবিটি কুগলারের দর্শন ও ভিশনারি দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছে যে ‘রজার ইবার্ট’ তাদের রিভিউ এ বলেছে, “কুগলার আসলে MCU কে RCU (Rayan Coogler Universe)- এ রূপান্তরিত করেছে”। ‘ফ্রুটভেল স্টেশন’-এর অস্কার গ্র্যান্টের মতো টি’চালাও পূর্বপুরুষের পদচিহ্ন অনুসরণ করে পৃথিবীতে নিজের স্থান খুঁজছে এবং সাথে সাথে নিজের ভূতকেও তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ‘ক্রিড’-এর ডনির মতোও প্রয়াত বাবার ছায়া অনুসরণ করে তার লিগাসিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে টি’চালা। এবং প্রায় একইরকম বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই আমরা কিলমঙ্গারের মধ্যেও। বলতে গেলে তারা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।
একজন ভিলেন তখনই শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে যখন তাকে দেখে দর্শকের মনে এই প্রশ্ন জাগে যে, সে তো নায়কও হতে পারতো। কিংবা অনেকের চোখে সে নায়কই হয়ে যায়। নিকৃষ্ট ভিলেন তারাই যাদের মনস্তত্ত্ব নায়কের বিরোধিতা করার জন্যই গড়ে উঠে এবং তাদের কর্মপ্রেরণা আমাদের কাছে পরিষ্কার না (মারভেলের অধিকাংশ ভিলেনই এই গোত্রের)। কিলমঙ্গারের বেলায় আমরা দেখতে পাই, তার লক্ষ্য খুবই স্পষ্ট এবং যৌক্তিক। যুবরাজ এন’জবুর মতো সে ওয়াকান্দার অন্তর্মুখী নীতির ঘোর বিরোধী। ওয়াকান্দার উন্নত প্রযুক্তি ও ভাইব্রেনিয়াম দিয়ে সে বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটি নিপীড়িত আফ্রিকান বংশোদ্ভূতকে সাহায্য করতে চায়। হাজার বছরের নিপীড়নের প্রতিশোধ নিতে চায়। ক্ষণিকের জন্য আপনার মনেও হতে পারে কিলমঙ্গারের চিন্তাধারায় দোষের কী আছে? কিন্তু একটু গভীরে চিন্তা করলে দেখবেন, সকল সাম্রাজ্যবাদী এবং মৌলবাদীদের চিন্তার কাঠামো একই রকম ছিল। ঔপনিবেশিক ব্রিটেন থেকে হিটলার, কিংবা এই সময়ের আইএস (IS), সবাই কিলমঙ্গারের মতো করেই চেয়েছে তাদের রাজত্ব ও মতাদর্শ প্রসারিত হোক। এমনকি ছবিতে এক জায়গায় ব্রিটিশদের মতো করে কিলমঙ্গারকে আমরা বলতেও শুনি, “the sun will never set on the Wakandan empire”. (ওয়াকান্দান সাম্রাজ্যে কখনো সূর্য অস্ত যাবে না)।
ব্ল্যাক প্যান্থারের চরিত্রায়নও হয়েছে এককথায় অসাধারণ। ব্ল্যাক প্যান্থারের মধ্যে যে রাজকীয় আভিজাত্য, আফ্রিকান একসেন্ট দরকার ছিল তা পূরণ করতে শতভাগ সফল হয়েছেন চ্যাডউইক বোজম্যান, আর সাথে তার নিরেট অভিনয় তো আছেই। ছবিতে ব্ল্যাক প্যান্থারের প্রধান সাহায্যকারী হিসেবে ছিল তার বোন রাজকুমারী সুরি। তার ভূমিকা অনেকটাই জেমস বন্ডের ‘কিউ’ (Q)- এর মতো। সুরি চরিত্রে লেতিশিয়া রাইট এক অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। বলা হচ্ছে টনি স্টার্ক, ভ্যালকারির পর মারভেলের নতুন সিন স্টিলার হচ্ছে সুরি। সকল অভিনেতাই নিজ নিজ চরিত্রে দৃঢ় পারফরম্যান্স উপহার দিলেও প্রশ্নাতীতভাবে সবাইকে ছাপিয়ে সেরা পারফরম্যান্সটি উপহার দিয়েছেন মাইকেল বি জর্ডান। কিলমঙ্গার চরিত্রে মাইকেল বি জর্ডান এতটাই অসাধারণ অভিনয় করেছেন যে, প্রতিটি নায়ক-ভিলেন এনকাউন্টারে সবার দৃষ্টি ব্ল্যাক প্যান্থারের থেকে সরিয়ে নিজের দিকে নিতে সক্ষম হয়েছেন। মারভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের শ্রেষ্ঠ ভিলেন এবং হিথ লেজারের জোকারের পর সর্বশ্রেষ্ঠ সুপারভিলেন হিসেবে দেখা হচ্ছে মাইকেল বি জর্ডানের কিলমঙ্গারকে।
রায়ান কুগলারের পরিচালিত তিনটি ছবির (ফ্রুটভেল স্টেশন, ক্রিড, ব্ল্যাক প্যান্থার) তিনটিতেই অভিনয় করেছেন মাইকেল বি জর্ডান। সম্ভবত তাদের মধ্য দিয়ে আমরা আরেকটি স্করসিসি-ডি নিরো জুটি দেখতে যাচ্ছি।
টেকনিক্যাল খাতে ব্ল্যাক প্যান্থার মারভেলের অন্য সব সিনেমার মতোই দুর্দান্ত। রুথ কার্টারের কড়া জাঁকজমকপূর্ণ কস্টিউম ডিজাইন বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। র্যাচেল মরিসনের সিনেম্যাটোগ্রাফি কিংবা লুডউইগ গোরানসনের মিউজিক- সবই ছিল মনোমুগ্ধকর।
ডার্ক নাইট, লোগান, ক্যাপ্টেন আমেরিকা: উইন্টার সোলজারের মতো অনেক সুপারহিরো ক্লাসিক আমরা উপহার পেয়েছি, কিন্তু তাদের কোনোটিই ব্ল্যাক প্যান্থারের মতো বাস্তবতাকে এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে নি। এই সময়ে একটি সুপারহিরো ফিল্মের কাছে আমরা যতটা চাইতে পারি তার সবটুকুই দিয়েছে ব্ল্যাক প্যান্থার। কৃষ্ণাঙ্গ সংস্কৃতির পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থাপনা যেমন দেখেছি, তেমনি বর্তমান বিশ্ব-নীতির কালো দিকগুলোকে প্রতীকীরুপে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বনীতি-সাম্রাজ্যবাদ-মৌলবাদকে ভাবাদর্শিকভাবে চপেটাঘাত যেমন করা হয়েছে, তেমনি তা থেকে উত্তরণের উপায়ও বাতলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্বনেতাদের কাছে এই মুহূর্তে যে বার্তাটি সবাই শুনতে চাচ্ছে, সম্রাট টি’চালা যেন ছবি শেষে তাই বললেন-
“… in times of crisis the wise build bridges, while the foolish build barriers”
(“… সংকটের সময় বুদ্ধিমানরা সেতু তৈরি করে, আর বেকুবরা তৈরি করে বেষ্টনী”)
স্বাভাবিকভাবে বিশ্বব্যাপী সিনেমাবোদ্ধাদের মনে এখন প্রশ্ন, তাহলে ব্ল্যাক প্যান্থারই কি পরবর্তী সুপারহিরো ক্লাসিক? উত্তরটা আমাদের সময়ই বলে দিবে।
IMDB: ৭.৯/১০
রোটেন টমেটোস: ৯৭%* ফ্রেশ
মেটাক্রিটিক: ৮৭/১০০ *
*যেকোনো সুপারহিরো ছবির জন্য সর্বোচ্চ।
ফিচার ইমেজ- Marvel Spoiler Official