১০
রকেট প্রযুক্তির জনক তিনজন। এদের প্রত্যেকেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন রকেটের ইতিহাসে। তবে ইন্টারনেটে, বিশেষ করে গুগলের কাছে ‘ফাদার অফ রকেট্রি’ কে, তা জানতে চাইলে একজন মানুষের নামই দেখান। রবার্ট হাচিংস গডার্ড। এর মূল কারণ দুটো। এক, গডার্ড আসলেই রকেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে চমৎকার কিছু কাজ করেছেন। আর দুই, ভদ্রলোক আমেরিকান।
কথাটাকে ভুলভাবে নেবেন না। আসলে, গডার্ডের কৃতিত্ব কোনোদিক থেকেই কম ছিল না। তার অবদান যেমন অনস্বীকার্য, তেমনি তাকে কষ্টও করতে হয়েছে প্রচুর। লোকে তাকে জীবদ্দশায় ‘পাগল’ পর্যন্ত বলেছে। কিন্তু সেজন্য রকেটের তিন জনকের বাকি দুইজনের নাম সরাসরি বাদ দিয়ে দেওয়া ঠিক মেনে নেওয়া যায় না।
রকেটের এই ইতিহাসে আমরা তিন জনকের গল্পই শুনব। জানব তাদের জীবন ও কাজ নিয়ে বিস্তারিত। আর, এ নিয়ে বলতে গেলে, শুরুটা আমেরিকা থেকে করা যাবে না। আমাদের সেজন্য যেতে হবে রাশিয়ায়। চলুন, যাওয়া যাক!
১১
কনস্ট্যানটিন জাল্কোভস্কি। ১৮ ভাইবোনের পরিবারে পঞ্চম সন্তান হিসেবে তার জন্ম। তখন ১৮৫৭ সাল। বাবা ম্যাকারি এডওয়ার্ড জাল্কোভস্কি ছিলেন পোলিশ ইমিগ্র্যান্ট। শিক্ষকতা ও চার্চে বাগান দেখাশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো সরকারি চাকরিও করতেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা যে খুব একটা ভালো ছিল না, তা তো বোঝাই যাচ্ছে।
এর মধ্যেই দশ বছর বয়সে স্কারলেট ফিভার বাঁধিয়ে বসলেন কনস্ট্যানটিন। এই রোগে আক্রান্তের শরীর লাল র্যাশে ভরে যায়। সেই সাথে গলায়, কানে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। চিকিৎসা না দিলে রোগীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এখন এই রোগের চিকিৎসা আছে, কিন্তু সে সময় ছিল না। স্কারলেট ফিভারের এন্টিবায়োটিক আবিষ্কৃতই হয়েছে ১৯২৪ সালে এসে। তো, ক্ষতি যা হওয়ার হয়েই গেল। শ্রবণক্ষমতা বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হলো জাল্কোভস্কির। অনেকটা বধির হয়ে গেলেন তিনি। এবং সহপাঠীদের তুলনায় পড়াশোনায় বেশ পিছিয়ে পড়লেন।
স্কুল ব্যবস্থা আজও শিক্ষার্থীদের প্রতি খুব বেশি সদয় না। যত যা-ই হোক, প্রতিষ্ঠানের একটা নিয়ম-নীতি আছে। তাতে ছাড় হয়তো দেওয়া যায়, কিন্তু কত! যে কারণে রামানুজনের মতো গণিতবিদ মেট্রিক ফেল করেন, সেই একই কারণে কনস্ট্যানটিন জাল্কোভস্কিকে ১৪ বছর বয়সে স্কুল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাঠ সেখানেই চুকে গেল।
কিন্তু যিনি বড় হয়ে ইতিহাসের বুকে দাগ কেটে দেবেন, স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হওয়া তাকে থামাতে পারবে কেন? বাবার সাহায্য নিয়ে গ্রাম থেকে চলে এলেন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে। চার্তকোভস্কায়া লাইব্রেরি থেকে তখন বিনামূল্যে বই নিয়ে পড়া যেত। আর, জাল্কোভস্কির শেখার আগ্রহও ছিল প্রবল। সেই লাইব্রেরির বইপত্র ঘেঁটে ঘেঁটে নিজে নিজেই শিখে ফেললেন অনেক কিছু। অনেক মানে, আসলেই অনেক। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গতিবিদ্যার ওপরে ভালো দখল চলে এলো তার। সেই সাথে হাতে এলো এমন এক মুক্তো, যেটা তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে।
কী সেই জিনিস? কোনো মহান জ্ঞান? বিজ্ঞানের কোনো দারুণ তত্ত্বের ওপরে লেখা বই? উঁহু। তার হাতে এসেছিল জুল ভার্নের বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। সেখানে তিনি অদ্ভুত এক কামানের কথা পড়লেন। যে কামান থেকে গোলা ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। কলাম্বিয়াড। আর, সেই গোলা চাঁদের চারপাশে ঘুরে-টুরে ফিরে এসেছে পৃথিবীতে। হ্যাঁ, সেই বইটি নিয়েই আমরা আগের পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম – ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন।
বই তো সবাই পড়ে। কিন্তু কল্পবিজ্ঞান লেখকের কল্পনা মেপে দেখে কয়জন? জাল্কোভস্কি তাই করলেন। বেগ হিসেব করে বুঝলেন, জুল ভার্ন যে বেগে কলাম্বিয়াডকে ছুঁড়ে দিতে চেয়েছেন, মানুষ পেটে নিয়ে ওই বেগে, ওভাবে কোনো মহাকাশযান ছুট দিলে নভোচারীরা মরেই যাবে।
জাল্কোভস্কি ভাবেন। ভাবতে ভাবতেই তার মনে হলো, ভাবনার পাশাপাশি কাজ-কর্মও কিছু করা দরকার। ততদিনে মস্কোতে এসেছেন, তিন বছর পেরিয়ে গেছে। ভাবলেন, এবার ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা দরকার। ফিরে এলেন নিজ এলাকায়। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেন। শুরু হলো তার শিক্ষকতা জীবন।
এদিকে, শিক্ষক হওয়ার আগেই একটা সেন্ট্রিফিউজ বানিয়েছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য, মহাকর্ষের প্রভাব হাতে-কলমে পরীক্ষা করে দেখা। এলাকার কিছু মুরগীকে টেস্ট সাবজেক্ট হিসেবে ব্যবহার করে সেই পরীক্ষাও হয়ে গেল।
বিজ্ঞান নিয়ে এ ধরনের নানা রকম চিন্তা তখন তার মাথায় ঘুরছে। এদিকে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরিও পেয়ে গেছেন। বাচ্চাদের পাটিগণিত ও জ্যামিতি পড়িয়ে সময় যাচ্ছে। এ সময় তিনি ভাবলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লিখবেন। কিন্তু লিখতেই বসলেই মাথার ভেতরে একটা ক্যালকুলেটর চালু হয়ে যায়। খালি হিসেব কষে। বিজ্ঞানের জায়গায় কল্পনা বসাতে গেলেই মনে হয়, উঁহু, হবে না!
জাল্কোভস্কি বুঝলেন, কল্পনার চেয়ে বাস্তব যেসব সমস্যার মধ্যে দিয়ে নভোচারীদেরকে যেতে হতে পারে, সেসব-ই তাকে বেশি টানছে। যেমন, মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে রকেট নিয়ে পাড়ি দিতে গেলে, রকেট নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে নভোচারীদের যা যা ঝক্কি পোহাতে হতে পারে, সেসব তাকে ভাবাচ্ছিল। ১৮৮৩ সালে জিরো গ্র্যভিটি বা মহাকাশে মহাকর্ষহীনতার প্রভাব ও সেখানে বসবাস প্রসঙ্গে একটা নিবন্ধ লিখলেন তিনি।
এ সময় গ্যাসের গতিতত্ত্ব নিয়েও কিছুদিন কাজ করেছিলেন। কিন্তু তাকে একটা বড় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। মফস্বলে বসবাসের ফলে বহির্বিশ্বে কী ধরনের গবেষণা হচ্ছে, তা তিনি জানতেন না। ফলে গ্যাসের গতিতত্ত্ব নিয়ে তার কাজ প্রকাশ করতে গিয়ে জাল্কোভস্কি টের পেলেন, এ নিয়ে বেশ কিছুদিন আগেই অন্য একজনের গবেষণা ও পেপার প্রকাশিত হয়ে গেছে। এই খবর তাকে জানিয়েছিলেন দিমিত্রি মেন্ডেলিভ। কিন্তু হতাশ হওয়ার বান্দা তিনি নন। কিছু সময় নাহয় নষ্ট হলোই বা, কী হয়েছে!
এত পথ ঘুরে, এতদিনে এসে তিনি মন দিলেন ফ্লাইট সংক্রান্ত গবেষণায়। উড়োযানের ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে গিয়ে উইন্ড টানেল নিয়েও কিছুদিন গবেষণা করলেন। উইন্ড টানেল নাম শুনেই কিছুটা ধারণা করা যায়, জিনিসটা কী। একটা টানেল বা পাইপের মতো, যার ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। খুব সরল এই মেকানিজম উড়োযান ও ফ্লাইট সংক্রান্ত গবেষণায়, এবং বাতাসের মধ্যে দিয়ে একটা উড়োযান কীভাবে যাচ্ছে- এসব বুঝতে দারুণ কাজে লাগে। তার এসব কাজ ১৮৯২ সালে প্রকাশিত হয়। ১৮৯৫ তে এসে একটা সম্পূর্ণ ধাতব উড়োযান কেমন হতে পারে – এ নিয়েও কিছু কাজ করেন তিনি।
এর কিছুদিন পরে, ১৯০৩ সালে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাটি প্রকাশিত হয় নখনো অবযরেনি ম্যাগাজিনে। এটি একটি রাশান সায়েন্স রিভিউ জার্নাল। তার লেখার নাম ছিল, এক্সপ্লোরেশন অব কসমিক স্পেস বাই মিনস অফ রিয়েকশন ডিভাইসেস’। পরবর্তীতে আরো কিছু লেখা লিখেছিলেন তিনি। মহাকাশে রকেট ইঞ্জিনের ব্যবহার ও এ সংক্রান্ত নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সব সমস্যার কথা এসব লেখায় উঠে এসেছিল। যেমন- তাপের স্থানান্তর, নেভিগেশন, বাতাসের ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন তাপ এবং জ্বালানী সরবরাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা। তার এই লেখাগুলোকে ‘মহাকাশ অভিযান নিয়ে পৃথিবীর প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে বাস্তব প্রস্তাবনা’ বলে গণ্য করা হয়।
‘জাল্কোভস্কি রকেট ইকুয়েশন’ নামে একটি সমীকরণও আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। রকেটের মূল নীতি ব্যবহার করে চলা দ্রুতগামী কোনো যান কিভাবে চলবে, তা এই সমীকরণ থেকে ব্যখ্যা করা যায়। এরকম কোনো যান একাংশ ভর বের করে দেবে। আর, এই ভরের বেরিয়ে যাওয়ার সময় উৎপন্ন ধাক্কা কাজে লাগিয়ে ছুট দেবে সামনের দিকে। রকেট যেমন পেছন দিক দিয়ে জ্বালানী (যা ওই রকেটের ভরের একাংশ) বের করে দিয়ে সামনে এগোয়, সেরকম।
সেই সাথে লেখায় জাল্কোভস্কি রকেটের জ্বালানী হিসেবে তরল হাইড্রোজেন ও তরল অক্সিজেনের মিশ্রণের কথা বলেন। ১৮৯৮ সালে প্রথমবারের মতো হাইড্রোজেনের তরলীকরণ সম্ভব হয়েছিল। এ থেকে বোঝা যায়, জাল্কোভস্কি ততদিনে বহির্বিশ্বের খোঁজ-খবর রাখতে শুরু করেছেন। পরে, নাসার বানানো প্রথম পুনঃব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান স্পেস শাটল-এ জাল্কোভস্কির এই জ্বালানীই ব্যবহার করা হয়।
জাল্কোভস্কির গবেষণা রকেট প্রযুক্তির জগতে এক নতুন দরজা খুলে দেয়। কিন্তু পেশায় তিনি ছিলেন এক স্কুল শিক্ষক। আবার, যে ম্যাগাজিনে তার লেখা প্রকাশিত হয়েছিল, কিছুদিন পরে সেটা প্রকাশিত হওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। সবমিলে ধারণা করা হয়, ম্যাগাজিনের খুব বেশি কপি রাশিয়ার বাইরে, বিজ্ঞানের জগতে সেভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়নি। পরে, ১৯১৯-২০ সালের দিকে (প্রায় ১৭ বছর পরে) জার্মান বিজ্ঞানী হারমান ওবার্থ এবং আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট গডার্ড আলাদা আলাদাভাবে রকেট প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন। তারা দুজনে যেসব সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন, তার অনেকগুলোর সঙ্গেই জাল্কোভস্কির প্রস্তাবণার মিল পাওয়া যায়। সেজন্যই তাদের তিনজনকে ‘রকেট প্রযুক্তির জনক’ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এখানে দুটো ব্যাপার নিয়ে একটুখানি আলোচনা করা প্রয়োজন।
এক, পরবর্তীতে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, গডার্ডের প্রায় ১৭ বছর আগে জাল্কোভস্কি এসব নিয়ে কাজ করে গেছেন। স্বীকৃতিটা তাই তারই বেশি প্রাপ্য বলেই মনে হয়। অন্তত ইতিহাসজুড়ে আমরা এমনটাই হতে দেখি। রাশিয়ার এক মফস্বলে বসে এ ধরনের কাজ করার পরও যথেষ্ট স্বীকৃতি না পাওয়ার পেছনের কারণ কী, সেটা ইতিহাসে সুস্পষ্টভাবে বলা নেই। কাগজে-কলমে যাই লেখা থাকুক, স্নায়ুযুদ্ধে আমেরিকার কাছে রাশিয়ার পরাজয় যে এর পেছনে কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছে, এই সম্ভাবনা কোনোভাবেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
দুই, ১৮৯০ এর দিকে মেন্ডেলিভের মতো বিখ্যাত বিজ্ঞানীর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরেও তার কাজ এতটা অবমূল্যায়িত হয়ে পড়েছিল কেন সে সময়? এই প্রশ্নের উত্তর বুঝতে হলে জাল্কোভস্কির ব্যক্তিগত জীবন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন অবস্থার দিকে তাকাতে হবে।
১৯০২ সালে জাল্কোভস্কির ছেলে ইগান্তি আত্মহত্যা করে। এর বছরখানেক পরে, ১৯০৩ সালে তিনি ওই লেখাগুলো প্রকাশ করেন। কিছুদিন পরে সেই ম্যাগাজিন আবার বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, ১৯০৮ সালে ওকা নদীর বন্যায় ভেসে যায় জাল্কোভস্কির ঘরবাড়ি। ততদিনে তার গবেষণা সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্য অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর কাছে পৌঁছে গেছে। ওরা তার এসব লেখার মূল্য বুঝতে পারেনি সে সময়। ১৯১৪ সালে তার এসব লেখা দ্য অ্যারোনটিকস কংগ্রেস ইন সেন্ট পিটার্সবার্গ-এর কাছে পৌঁছায়। ওরাও লেখাগুলো মূল্যায়ন করতে পারেনি।
১৯১৯-২০ সালের দিকে জাল্কোভস্কিকে নিয়ে মেতে ওঠে রাশান সরকার। ১৯১৯ সালে তাকে সোশ্যালিস্ট অ্যাকাডেমি (পরে এর নাম হয়েছিল দ্য অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস, সোভিয়েত ইউনিয়ন) এর প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। পরে, ১৯২১ সালের নভেম্বরে কাজের স্বীকৃত হিসেবে নিয়মিত হারে তাকে ভাতা দিতে শুরু করে সরকার। ১৯৩৫ সালের সেপ্টেম্বরের ১৯ তারিখ জাল্কোভস্কির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরেও তার পরিবারের জন্য এই ভাতা চালু ছিল।
এ সবই আসলে চোর পালানোর পরে বুদ্ধি বাড়ার উদাহরণ। এক জাল্কোভস্কির গবেষণাকে সাথে সাথে গুরুত্ব দিলে রাশিয়া স্নায়ুযুদ্ধে অনেক দূর এগিয়ে যেত। সেটা ওরা করেনি। এবং এর মাশুলও দিয়েছে হাড়ে হাড়ে।
জাল্কোভস্কির গল্প শেষ করার আগে আরেকটি জিনিস বলে রাখা দরকার। হবে না হবে না করেও কিছু বিজ্ঞান কল্পকাহিনী জাল্কোভস্কি লিখেছিলেন। এর মধ্যে ‘অন দ্য মুন’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও একটি দর্শনের বই লেখেন তিনি। দ্য উইল অফ দ্য ইউনিভার্স: দ্য আননৌন ইন্টেলিজেন্স। তার দর্শন ছিল, মানুষ এক সময় মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। বিভিন্ন গ্রহে গড়ে তুলবে মানব-কলোনি।
জাল্কোভস্কিকে স্বপ্নদ্রষ্টা, চিন্তাশীল ও অনুপ্রেরণা হিসেবে অনেক বিজ্ঞানীই গ্রহণ করেছিলেন। এরকমই একজন ছিলেন ওয়ার্নার ভন ব্রন। রকেট প্রযুক্তিতে তিনিও এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তবে তাকে নিয়ে আলোচনা হবে আরো খানিকটা পরে।
যাই হোক, জাল্কোভস্কির গল্প এখানেই শেষ। এবারে শুরু হবে রবার্ট গডার্ডের গল্প।
সিরিজটির আগের পর্বগুলো পড়তে ক্লিক করুন: ১ম পর্ব | ২য় পর্ব | ৩য় পর্ব