আধুনিক বিশ্বের যাত্রা এগিয়ে চলেছে শহরমুখী মানব সভ্যতার মাধ্যমে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান নগরায়নে মানুষ শহরকে করে ফেলছে যেন নিজেরই বিপদের কারণ। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনে শহর দায়ী রয়েছে গুরুতরভাবেই। টেকসই পৃথিবীর জন্য শহরগুলো বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বজুড়েই। উষ্ণায়ন সমস্যায় পড়া একটি শহর, এবং সমস্যা সমাধানের পথে বিজ্ঞানের বুদ্ধি কাজে লাগানো একটি শহর সিঙ্গাপুরের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানব এখানে।
যদি কোনো শহরের তাপীয় মানচিত্র পর্যবেক্ষণ করা হয় আর এর সাথে তুলনা করা হয় গাছপালা শোভিত অংশের মানচিত্র, দেখা যাবে যেখানেই সবুজ সেখানেই তাপমাত্রা কম। একেক পদার্থের তাপধারণ ক্ষমতা ও পরিবাহিতা একেক রকম। এসফল্ট, কংক্রিট, এমনকি কাঠের ছাউনির ছাদও উদ্ভিদের চেয়ে বেশি উত্তাপ গ্রহণ করে সূর্য থেকে। এটাকে বলে শহরের তাপ-দ্বীপ প্রভাব। একটা এলাকার তাপমাত্রা যখন আশেপাশের এলাকার তাপমাত্রার চেয়ে বেশি পার্থক্যে থাকে, তাপমানচিত্রে সেটাকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দেখায়।
এই তাপ-দ্বীপ প্রভাব অধিকাংশ শহরগুলোতে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য দায়ী। প্রাকৃতিক পরিবেশ উপাদানের চেয়ে শহরের রাস্তাঘাট, দালানকোঠা, অন্যান্য অবকাঠামো খুব সহজে বিকিরণ শোষণ করে আবার পরিবেশে তাপ ছেড়ে দেয়। ফলে ঐ শহরের তাপমাত্রা আশেপাশের এলাকার চেয়ে কয়েক ডিগ্রি উপরে থাকে।
আধুনিক বিশ্বের শহরে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে উত্তাপের প্রভাব ক্রমশ মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে উঠছে। তাপপ্রবাহ এমন একটি ঘটনা যা আবহাওয়া সম্পর্কিত যেকোনো চরম ঘটনা— যেমন: টর্নেডো, হারিকেন, এমনকি বন্যার চেয়েও বেশি লোকের মৃত্যুর কারণ। সমস্যা থেকে প্রয়োজনের সৃষ্টি, তাই সিঙ্গাপুরের এ তাপীয় সমস্যা থেকে উত্তরণে নগর তাপ-দ্বীপ প্রশমন কৌশল নিয়ে গবেষণা করছে একদল গবেষক। সিঙ্গাপুর সরকার সমর্থিত এ প্রকল্প ‘কুলিং সিঙ্গাপুর’ নামে পরিচিত। প্রকল্পটিতে এখন তাদের অর্জিত জ্ঞান একত্রিত করছে একটি ডিজিটাল টুল তৈরির উদ্দেশ্যে, যা হয়তো সারা বিশ্বের শহরগুলোকেই সাহায্য করতে পারে। সিঙ্গাপুর উষ্ণমণ্ডলে, সিঙ্গাপুরে বিজ্ঞান ও গবেষণার পরিবেশ রয়েছে, সিঙ্গাপুর সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী, তাই শুরুটা হচ্ছে সিঙ্গাপুরকে দিয়ে।
ভৌগলিক অবস্থান বিষুবরেখার নিকটবর্তী হওয়ায় সিঙ্গাপুরের তাপমাত্রা দিনের বেলা নিয়মিত ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) উপরে উঠে যায়। এই ভৌগলিক কারণের সাথে শহরের কাঠামো একে আরো করুণ করে তোলে। আর সিঙ্গাপুরের দিকে একনজর তাকালেই বোঝা যায় এটা দিব্যি কংক্রিটের জঙ্গল। অনেক বেশি নগরায়িত, অনেক বেশি অবকাঠামোগতভাবে ঘন। এমনকি সিঙ্গাপুরে, অধিক নগরায়িত এবং গ্রামীণ এলাকার মধ্যে একই সময়ে তাপমাত্রার পার্থক্য ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ানোর ঘটনা আছে।
দেশটির সরকার স্থিতিশীলভাবে তাপমাত্রা হ্রাসের জন্য বেশ কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সিঙ্গাপুরে ২৫০ একর জায়গায় উপসাগরের তীরে একটি উদ্যান তৈরি করা হয়, নাম ‘গার্ডেনস বাই দ্যা বে’ (Gardens by the Bay), এটি একটি পুরস্কার বিজয়ী পার্ক। পার্কের ভেতরে ডিজাইন করা হয়েছে গাছের মতো কাঠামো, যা ধরে ধরে সবুজায়ন করা হয়েছে। এর মাঝে রয়েছে ফ্লাওয়ার ডোম নামে একটি গ্রিনহাউজ যেটি ঝিনুক বা গম্বুজ আকৃতির। এর অভ্যন্তরে তাপমাত্রা মনোরম ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মানুষ সবুজের প্রশান্তি পেতে রীতিমত টিকিট কেটে সময় উপভোগ করতে আসে।
বহু মানুষের ভীড়ে পূর্ণ এই গ্রিনহাউজ, আশেপাশে দুই ডজন টাওয়ারের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা রাখা হয় সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ভূগর্ভস্থ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে। এর নাম ডিস্ট্রিক্ট কুলিং সিস্টেম, এ পদ্ধতিতে শীতল পানি বা অন্য কোনো তরলের মাধ্যমে একটা কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ভূগর্ভস্থ পাইপের মাধ্যমে অনেকগুলো ভবনের নেটওয়ার্কে পৌঁছে দেয়া হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে একটা প্ল্যান্ট পানিকে শীতল করে, এরপর সে শীতল পানি পাইপের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয় ব্যাংক, আবাসিক টাওয়ার, প্রদর্শনী কেন্দ্র, বিপণী বিতান, এবং শহরের আইকনিক মারিনা বে স্যান্ডস হোটেল আর ক্যাসিনো কমপ্লেক্সে।
ডিস্ট্রিক্ট কুলিং সিস্টেমটি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো প্রচলিত পদ্ধতিতে এয়ার কন্ডিশনারের চেয়ে এভাবে ৪০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। সিঙ্গাপুর যেহেতু এর শক্তি উৎপাদনের মূল উৎস হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভর করে, তাই এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সমতুল্যতা দাঁড়ায় শহরের রাস্তা থেকে ১০,০০০ গাড়ির অপসারণের সমান। বাকি সারা বিশ্বের জন্যই এই ঘটনাটি বড়সড় শঙ্কার উদ্রেক করে। যদি সব পরিস্থিতি যেমন আছে তেমনি থাকে এখনকার মতো, তবে ২০৫০ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত শক্তির এক তৃতীয়াংশ ব্যবহার করতে হবে কেবল শীতল করার পেছনেই দালানকোঠা আর যানবাহনে।
যেহেতু পৃথিবী উত্তপ্ত হচ্ছে, বাড়ছে উষ্ণায়ন, সুতরাং সে মোতাবেক আরো বেশি করে এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর ইত্যাদির প্রয়োজন বাড়বে। আর যতই মানুষ এ ধরনের গৃহস্থালী পণ্য কিনতে থাকবে, ততই বাড়বে শক্তি ব্যবহারের পরিমাণ। আর সংখ্যায় বর্ধনশীল যন্ত্রগুলো সামগ্রিকভাবে আরো বেশি উত্তাপ পরিবেশে ত্যাগ করবে। ফলে, জলবায়ু পরিবর্তন ক্রমশ উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। এটি একটি দুষ্টচক্র।
তাই ২০১৭ সাল থেকে, ‘কুলিং সিঙ্গাপুর’ প্রকল্পের গবেষকরা নানান নকশা তৈরি করে যাচ্ছেন, যাতে প্রথমত এই শীতল বাতাসের অতিচাহিদা হ্রাস করা যায়। অনেক শহরের জোরারোপের দিক থেকে একটি বিষয়ে মিল রয়েছে— উদ্ভিদের গুরুত্ব।
ছায়ার মাধ্যমে নগরায়নের উত্তাপ হ্রাস বেশ কার্যকরী একটি উপায়, জনজীবনে সবুজায়নের আবার একটি গভীর ইতিবাচক মানসিক প্রভাবও রয়েছে। যেহেতু গাছপালার বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শীতলীকরণের সহজাত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই ভূপৃষ্ঠে গাছপালা বড় কিংবা গুল্মাকারে তাপমাত্রা হ্রাসে টেকসই ভূমিকা রাখতে পারে। আর গাছপালার নিচ দিয়ে থাকবে মানুষের চলাচল। উপরে গাছপালা আর তার নিচ দিয়ে মানুষের যাতায়াতের কাঠামোটি হলো সবুজের শামিয়ানার মতো। তবে এই সবুজায়ন দালানকোঠার মুখোমুখিও হতে পারে, মানে দেয়ালের গায়ে বা দালানের খোপে।
সৌভাগ্যক্রমে, সিঙ্গাপুর চেষ্টা করে চলেছে উদ্যান-নগর হিসেবে গড়ে উঠতে। ১৯৬৭ সালে করা এই চিন্তার প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা লি কুয়ান ইউ ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রাথমিকভাবে এই দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন, মানুষের জীবনকে আরো আনন্দময়, প্রশান্তিময় করার লক্ষ্যে। আর আজ, নগর সবুজায়নের দিক থেকে সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম সবুজ শহরগুলির একটি।
কাম্পুং বলে সেখানে একটি কমিউনিটি কেন্দ্র রয়েছে যাতে স্বাস্থ্য সুবিধা, এবং সামাজিক স্থান রয়েছে। চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে, বর্তমানে এটি আগের চেয়েও বেশি সবুজ স্থানের সুযোগ দেয়, যতটুকু ভূমিপরিমাণ জায়গা নিয়ে এটি নির্মিত হয়েছিল সে সময়ের তুলনায়। এর ছাদটি বড় নান্দনিক, স্থানীয় গাছপালায় ছাওয়া। একই সাথে এটি কাজ করে কমিউনিটি পার্ক হিসেবে। আর কেন্দ্রে রয়েছে বাসিন্দাদের পরিচর্যা করার মতো গ্রামীণ সবুজায়নে সাজানো খামার প্লট।
পিকারিং-এ পার্ক রয়াল ডিজাইন করা হয়েছিল বাগানের মধ্যে হোটেল হিসেবে, হোটেলে গড়া বাগান নয় কিন্তু! এর ছাদটি বড় নান্দনিক, স্থানীয় গাছপালায় ছাওয়া। একই সাথে এটি কাজ করে কমিউনিটি পার্ক হিসেবে। আর কেন্দ্রে রয়েছে বাসিন্দাদের পরিচর্যা করার মতো গ্রামীণ সবুজায়নে সাজানো খামার প্লট। এখন সেখানে ১৫০০০ বর্গমিটার উন্মুক্ত বাগান, পুল, কৃত্রিম জলপ্রপাত, গাছ রোপন করা সোপান এবং সবুজ দেয়াল।
সরকারেরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে। সিঙ্গাপুর আগামী ১০ বছরের মধ্যে ১০ লক্ষ গাছ রোপন করতে চায় এবং একই সাথে যুক্ত করতে চায় আরো সবুজমণ্ডিত ফাঁকা জায়গা। এটা মূলত, শহরের তাপ-দ্বীপ দশার প্রশমনের লক্ষ্যে নেয়া উদ্যোগ। আবার অন্যদিকে, এর ফলে শহরের বাসিন্দারা প্রকৃতির সাথে আরো সম্পৃক্ত হতে পারবে। তবু এটুকুই যথেষ্ট নয়, বিগত ৬ দশক ধরে গড় বৈশ্বিক উষ্ণতার চেয়ে এই শহরের দশা এখনো দ্বিগুণ হারে উষ্ণ হয়ে উঠছে। এ কারণেই ‘কুলিং সিঙ্গাপুর’ প্রকল্পটি তাপমাত্রা প্রশমনের যত কার্যকর উপায় আছে সেগুলোর ফর্দ তৈরি করে ফেলেছে।
তাপমাত্রা প্রশমনের লক্ষ্যে তাপ-দ্বীপ হয়ে উঠা শহরের জন্য প্রথমে কাজ শুরু করতে হবে এর জানালাগুলোয় ছায়া দানের মাধ্যমে। এর আশপাশটাও এতটা মুক্ত থাকা চাই যেন এদের মধ্য দিয়ে বায়ু চলাচল করতে পারে। শহরে জলাশয়ে পানির একটি নির্দিষ্ট গভীরতাও থাকতে হয়, যাতে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকে।
ভারী ভারী দালানকোঠা নির্মাণের ক্ষেত্রে, যেমন আকাশচুম্বী ভবন, অন্ততপক্ষে বহির্মুখী দেয়ালগুলো তুলনামূলক কম ভারী রাখা যায়। এর সাথে সরাসরি সূর্যালোক ঢুকে যাওয়াকে প্রতিরোধ করার সুযোগ থাকতে হবে। মাঝারি থেকে দীর্ঘ মেয়াদে কোনো ধরনের দহন ইঞ্জিনও শহরের ভেতরে যেন না রাখা যায়। তার মানে, বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে শহরের বাইরে। শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও কেবল নবায়নযোগ্য শক্তি শহরে সরবরাহ করা। শক্তির ব্যবহার সম্ভাব্য ন্যূনতম পরিমাণে নিয়ে আসতে হবে শহরের অভ্যন্তরে।
সমসাময়িকভাবে ধীরে ধীরে শহরের ছাদগুলোকে, বহির্দেয়ালগুলোকে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, সিঙ্গাপুরে এই সুযোগটি প্রায়ই সীমিত। তবুও দীর্ঘমেয়াদী চিন্তায়, প্রয়োজনের ২৫% শক্তি এইভাবে উৎপাদন করা সম্ভব যদি সব ছাদ এবং দালানের ব্যবহারযোগ্য উন্মুক্ত জায়গা কাজে লাগানো হয়।
বহুসংখ্যক বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে ‘কুলিং সিঙ্গাপুর’ শহরের একটি ভার্চুয়াল মডেল ডিজাইন করছে। যার নাম দেয়া হয়েছে ডিজিটাল আরবান ক্লাইমেট টুইন (Digital Urban Climate Twin or DUCT)। এই মডেল হিসেব করতে পারবে শহরের ডিজাইনের প্রতিটি উপাদান কোনটি কী রকম প্রভাব রাখছে তাপ-দ্বীপ প্রভাবের জন্য। অর্থাৎ, কেবল শহরের জ্যামিতিক মডেলই নয়, পরিবহন, অন্তরায়ন, তাপমাত্রা, সৌর বিকিরণ, আবহাওয়া, স্থানীয় আবহাওয়া, স্থানীয় জলবায়ু, এমনকি শহরের ক্ষুদ্র পরিসরের জলবায়ুব্যবস্থা, পানি, মানুষের চলাচল ইত্যাদি সবই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অর্থাৎ, পূর্ণাঙ্গ ভার্চুয়াল সিমুলেশন। দৃশ্য ডিজাইন করার পর অবশ্যই যাচাই করা হবে, সিমুলেশন ঠিকমতো, আশানুরূপভাবে কাজ করলে সেটার উপযোগিতা হয়ে উঠবে চূড়ান্ত। কারণ, বাস্তবে যেটা করা যেত না, ভার্চুয়ালি সে পরীক্ষা করে সহজেই অনুমান করা যাবে বাস্তব পরিস্থিতি। এবং সিমুলেশনের পরীক্ষা থেকে পাওয়া সবচেয়ে উপযোগী সমাধানগুলোই বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব হবে।
এ প্রয়াসটি আমাদের একটি বৈশ্বিক সুখবরের ইঙ্গিত দেয়। অনুরূপ কর্মপদ্ধতি কাজে লাগিয়ে বিশ্বের যেকোনো শহরেরই মডেল করা যাবে। ঐ মডেলের তাৎপর্য তখন আর কেবল তাপমাত্রা কমিয়ে রাখা না, বরং চাইলে তাপমাত্রা কীভাবে ধরে রাখা যায় সে পরীক্ষাও করা সম্ভব। শীতপ্রধান শহর, বা শীতকালে শক্তির ব্যবহার পরিমিত করায়, তাপমাত্রার ধীর পরিবর্তন— সব মিলিয়ে জীবনমান উন্নয়নেও এটি ভূমিকা রাখবে।
তো এই প্রযুক্তি, স্থাপত্য, নগর পরিকল্পনা সবকিছুর সমন্বিত বিজ্ঞানকে সিঙ্গাপুর অন্য কোথাও ব্যবহার করতেও প্রস্তুত। সিঙ্গাপুর হচ্ছে বিশ্বের খুব অল্প কয়েকটি শহরের মধ্যে একটি যেখানে বিজ্ঞানের অগ্রসরতা বিকশিত হয়েছে সুপ্রতিষ্ঠিত নগর-পুনঃনকশা এবং কংক্রিট নকশাকে বাস্তবায়ন করেও।
সুপরিকল্পনার মাধ্যমে সিঙ্গাপুর অনেক কিছু অর্জন করেছে অতীতে। যদি এই বৈজ্ঞানিক পথ অনুসরণের ধারা অব্যাহত থাকে এবং শহরের প্রচলিত ধারণার বিপরীত আইডিয়ার মিশেলে, আমরা আশা করতে পারি সিঙ্গাপুর সত্যিকার অর্থে ভবিষ্যতের জন্যও দারুণ বসবাসযোগ্য শহরে হয়ে উঠবে, যদিও এখনও কম বাসযোগ্য নয়।