Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আদ্রিয়ানো: প্রতিভার এক নিদারুণ অপচয়

ফুলের বাগানে অনেক কলিই আসে, তবে সব কলি ফুলে পরিণত হয় না। কিছু কিছু কলি প্রতিকূলতার কাছে হার মেনে ঝরে যায় অকালেই। খেলোয়াড়দের জীবনটাও অনেকটা ফুলের মতোই, প্রতিভার কলি নিয়ে অনেকেই ক্রীড়াঙ্গনে পা রাখেন। কিন্তু ফুল হয়ে ফোটার আগে অকালে ঝরে গিয়ে অনেক সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারই মাঝপথে থেমে যায়। প্রকৃতির এই অমোঘ বিধান অনুযায়ী প্রতি বছরেই অনেক সম্ভাবনাময় প্রতিভার করুণ পরিণতি আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কিছু কিছু পরিণতি মেনে নেওয়াটা বড্ড বেশি কষ্টকর।

বিশ্বসেরা হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আসা কেউ যখন হুট করে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়, তখন সেটা মেনে নেওয়ার কোনো যুক্তিই আসলে খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনই এক নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রতিভার নাম আদ্রিয়ানো, যিনি বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েও হারিয়ে গিয়েছিলেন অতি অল্প সময়ে। 

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে ১৯৮২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আদ্রিয়ানো লেইটে রিবেরিও। ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গোর হয়ে যুব ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরে সেই একই ক্লাবের হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক ঘটে তার। টেকনিকাল স্কিলের কারণে তরুণ বয়সেই সবার নজর কাড়েন তিনি। ড্রিবলিং এবং প্রচণ্ড শারীরিক ক্ষমতা- এই দুইয়ের সমন্বয় যে অল্প ক’জন খেলোয়াড়ের মাঝে দেখা গিয়েছে, তাদের একজন এই আদ্রিয়ানো। তাছাড়া বাঁ পায়ে নিখুঁত শটেও ভীষণ দক্ষ ছিলেন তিনি। গোলের সামনে আদ্রিয়ানো ছিলেন শিকারি ঈগলের মতোন। আর বাড়তি পাওনা হিসেবে ফ্রি-কিক নেওয়ার দক্ষতা তো ছিলই।

ফ্ল্যামেঙ্গোর হয়ে খেলার সময়েই ২০০১ সালে ইন্টার মিলানের নজরে পড়েন আদ্রিয়ানো। এমন এক রত্নের খোঁজ পেয়ে তাকে আর হাতছাড়া করেনি ইন্টার। সেই বছরেই তাকে দলে ভিড়িয়ে নেয় ইতালির এই জায়ান্ট। তবে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ইন্টারের মতো বড় ক্লাবে খেলার চাপ আদ্রিয়ানো নিতে পারেননি। তাই এক মৌসুম পরেই তিনি আরেক ইতালিয়ান ক্লাব পার্মাতে যোগ দেন। সেখানে গিয়েই নিজেকে আবারো প্রমাণ করেন আদ্রিয়ানো। পার্মার হয়ে প্রথম মৌসুমেই ২৮ ম্যাচে ১৫ গোল করেন তিনি। এই ভালো ফর্মের কারণে ২০০৩ কনফেডারেশনস কাপে ব্রাজিল দলে ডাকও পান আদ্রিয়ানো। 

পার্মায় গিয়ে নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন আদ্রিয়ানো; Image Source : latetacklemagazine.com

আদ্রিয়ানোর খেলার ধরনের সাথে তরুণ বয়সের রোনালদোর খেলার ভীষণ মিল ছিল। আর এ কারণেই সেসময়ের ব্রাজিল কোচ কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা সেই টুর্নামেন্টে রোনালদোর অভাব পূরণ করতে আদ্রিয়ানোকে দলে ডেকেছিলেন। ৩ ম্যাচে ২ গোল করে সেই আস্থার প্রতিদানও তিনি দিয়েছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্রাজিল সেই আসরের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। এরপর ২০০৩-০৪ মৌসুমেও পার্মার হয়ে ভালো শুরু করেন আদ্রিয়ানো, লিগে ৯ ম্যাচে ৮ গোল করেন তিনি। পার্মায় আদ্রিয়ানোর এই ফর্ম দেখে ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে আবারো তাকে দলে ভেড়ায় ইন্টার মিলান। ইন্টার মিলানে তার আদর্শ যেভাবে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন, সেভাবে আদ্রিয়ানোও দাপট দেখাতে শুরু করেন। 

ইন্টার মিলানে আদ্রিয়ানোর বিধ্বংসী ফর্ম তার পূর্বসূরি রোনালদোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো; Image Source : 90 min

২০০৪ সালের কোপা আমেরিকায় তারুণ্য নির্ভর দল পাঠায় ব্রাজিল। সেই দলে আদ্রিয়ানোই ছিল অপেক্ষাকৃত বড় তারকা। সেই আসরে ৬ গোল করে ব্রাজিলকে ফাইনালে নিয়ে যান তিনি। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয় ব্রাজিল। জমজমাট সেই ম্যাচে ৮৭ মিনিটে গোল খেয়ে ব্রাজিল যখন ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়লো, তখন সেলেসাওদের হারই সম্ভাব্য ফলাফল হিসেবে মনে হচ্ছিলো। তখনই দলের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন আদ্রিয়ানো। খেলার একদম অন্তিম মুহূর্তে দুর্দান্ত এক ভলির মাধ্যমে গোল করে ব্রাজিলকে সমতায় ফিরিয়ে খেলা টাইব্রেকারে নিয়ে যান এই স্ট্রাইকার। টাইব্রেকারেও প্রথম শট থেকে গোল করে ব্রাজিলের জয়ে অবদান রাখেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্টে ৭ গোল করে গোল্ডেন বুটের সাথে গোল্ডেন বলটাও জিতে নেন আদ্রিয়ানো।

২০০৪ কোপা আমেরিকার ফাইনালের একদম অন্তিম মুহূর্তে গোল করার পর উল্লাসিত আদ্রিয়ানো; Image Source: dreamteamfc.com

এদিকে ২০০৪-০৫ মৌসুমে ইন্টার মিলানের হয়ে নিজের সেরা ফর্মে পৌঁছে যান আদ্রিয়ানো, সেই মৌসুমে ৪২ ম্যাচে ২৮ গোল করেন তিনি। এরপর জাতীয় দলের হয়েও অসাধারণ সময় পার করেন। ২০০৫ সালের কনফেডারেশনস কাপে ৫ গোল করে ব্রাজিলের শিরোপাজয়ে বড় অবদান রাখেন এই দুর্দান্ত স্ট্রাইকার। এই অসাধারণ পারফর্মেন্সের কারণে ২০০৪ সালের কোপা আমেরিকার মতো এই আসরেও গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বল পুরস্কার আবারো আদ্রিয়ানোর হাতে উঠে। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছিলো রোনালদো লিমার যোগ্য উত্তরসূরি বুঝি পেয়েই গিয়েছে ব্রাজিল। কিন্তু এসবকিছুর মাঝেই এমন এক ঘটনা ঘটে গিয়েছিলো যা আদ্রিয়ানোর পুরো জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়েছিলো।

২০০৪ সালে আদ্রিয়ানোর কাছে একটা ফোন কল আসে। সেই ফোন কলের পর হঠাৎ করে আদ্রিয়ানো চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন। সেই চিৎকার যে কতটা তীব্র ছিল সেটা অনেকের পক্ষেই অনুমান করা সম্ভব নয়। আদ্রিয়ানোর কান্না শুনে তাঁর সতীর্থরা ছুটে এলে জানতে পারেন, আদ্রিয়ানোর বাবা হঠাৎ করে মারা গিয়েছেন! ছোটবেলা থেকে বাবাই ছিল তার সবচেয়ে কাছের মানুষ, নিজের সব সুখ-দুঃখ বাবার সাথেই ভাগাভাগি করে নিতেন এই খেলোয়াড়। তাই বাবা মারা যাওয়ায় বিশাল এক ধাক্কা খান আদ্রিয়ানো।  

বাবাকে হারিয়ে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয়ে যান আদ্রিয়ানো; Image Source : laccib

বাবাকে হারানোর পরেও অবশ্য বেশ কিছুদিন গোল করার ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন আদ্রিয়ানো। তখন প্রতিটি গোলের পরেই আকাশের দিকে তাকিয়ে বাবার কথা মনে করতেন তিনি। কিন্তু আদ্রিয়ানোর কাছের মানুষরা বুঝতে পারছিলেন, আস্তে আস্তে তার মাঝে বিশাল এক পরিবর্তন চলে আসছে। বাবাকে হারিয়ে জীবনে ভীষণ নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন তিনি, হতাশার আগুনে প্রতিনিয়ত দগ্ধ হচ্ছিলেন। সেই হতাশা থেকে বাঁচতে বেছে নিলেন অনিয়ন্ত্রিত এক জীবন। এ ব্যাপারে আদ্রিয়ানো বলেন,

“বাবার মৃত্যু আমার জীবনে বিশাল এক শূন্যতা নিয়ে এসেছিলো। মিলানের সেই বিশাল শহরে নিজেকে ভীষণ একা লাগতো, মনে হতো আমার চেয়ে বিষণ্ণ মানুষ এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই। হতাশা থেকে বাঁচতেই আমি মদ্যপান শুরু করি। তখন শুধুমাত্র মদ্যপানের সময়েই আমি খুশি থাকতাম।”

এই অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের প্রভাব আস্তে আস্তে আদ্রিয়ানোর ক্যারিয়ারের উপর পড়তে লাগলো। আগের মৌসুমের চেয়ে ২০০৫-০৬ মৌসুমে ৫ ম্যাচ বেশি খেললেও গোলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে উল্টো কমে গেলো! মদ্যপানের কুপ্রভাবটা ভালোভাবে টের পাওয়া গেলো ২০০৬ বিশ্বকাপে। আগের দুটি টুর্নামেন্টে যে খেলোয়াড় একাই গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বল জিতেছিলেন, তাকে নিয়ে বিশ্বকাপে বড় আশা থাকবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক। যদিও সেই বিশ্বকাপে আদ্রিয়ানো দুটি গোল করেছিলেন, কিন্তু তাকে নিয়ে সবাই যে প্রত্যাশা করেছিলো তার ছিটেফোঁটাও তিনি সেবার পূরণ করতে পারেননি! পুরো টুর্নামেন্টে তিনি যেন নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। সেই আসরে হট ফেভারিট হয়ে এসেও ব্রাজিলের কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নেওয়ার পেছনে আদ্রিয়ানোর এহেন পারফর্মেন্স অন্যতম মূল কারণ। 

২০০৬ বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন আদ্রিয়ানো; Image Source : News18.com

লাগামহীন জীবনযাপনের কারণে আদ্রিয়ানোর ওজন দিন দিন বেড়ে যেতে লাগলো। ফিটনেস হারিয়ে ক্লাবে দিনের পর দিন জঘন্য পারফরম্যান্স দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। যে ইন্টার মিলান আদ্রিয়ানোর পারফর্মেন্সে খুশি হয়ে ২০১০ সাল পর্যন্ত তার সাথে চুক্তি করেছিলো, সেই ক্লাবই এমন পারফর্মেন্সে হতাশ হয়ে ২০০৮ সালে তাকে ধারে সাও পাওলোতে খেলতে পাঠায়। সাও পাওলোর হয়ে প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আদ্রিয়ানো। কিন্তু কিছুদিন পর সেখানেও নিয়ম ভাঙতে শুরু করেন এই স্ট্রাইকার। সবকিছুতে বিরক্ত হয়ে মাত্র এক মৌসুম পরেই তাকে ইন্টার মিলানে ফেরত পাঠায় সাও পাওলো।

আদ্রিয়ানোর এমন খামখেয়ালী আচরণ ইন্টার মিলান আর সহ্য করতে পারেনি। তাই চুক্তি শেষ হওয়ার এক বছর আগেই তাকে ফ্রি এজেন্ট করে দেয় ক্লাবটি। এরপর আদ্রিয়ানো যোগ দেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গোতে। এখানে এসে বেশ ভালোই খেলতে থাকেন তিনি। তার পারফর্মেন্সে ভর করে দীর্ঘদিন পর আবারো লিগ শিরোপা ঘরে তোলে ফ্ল্যামেঙ্গো। এই ভালো পারফরম্যান্সের কারণে ব্রাজিল দলের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলার সুযোগও পেয়েছিলেন আদ্রিয়ানো। কিন্তু সেসময়ের ব্রাজিল কোচ দুঙ্গা বেশ কড়া ধাঁচের ছিলেন। তাই খামখেয়ালী স্বভাবের কাউকেই তিনি ২০১০ বিশ্বকাপের মূল দলে রাখেননি। এ কারণে সেই বিশ্বকাপ দলে আদ্রিয়ানোর জায়গা হয়নি। 

রোমায় গিয়ে আবারো অন্ধকারে হারিয়ে যান আদ্রিয়ানো; Image Source : BBC

এদিকে ফ্ল্যামেঙ্গোয় আদ্রিয়ানোর ভালো পারফর্মেন্স দেখে ইতালিয়ান ক্লাব রোমা তিন বছরের চুক্তিতে তাকে দলে ভেড়ায়। কিন্তু ইতালিতে ফিরে গিয়ে আগের মতো সেই লাগামহীন জীবনযাপন শুরু করেন তিনি। ফলে মাত্র সাত মাস পরেই আদ্রিয়ানোর সাথে চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয় রোমা। এরপর করিন্থিয়াস, অ্যাটলেটিকো প্যারানেস ঘুরে শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি ইউনাইটেডেও নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু কোথাও তিনি থিতু হতে পারেননি। আসলে ফুটবল খেলাটার প্রতি ভালোবাসাই হারিয়ে ফেলেছিলেন আদ্রিয়ানো। তাই থিতু হওয়ার চেষ্টাটাই হয়তো করেননি। এ ব্যাপারে বিবিসির সাংবাদিক টিম ভিকারি বলেন, 

“দুটো লক্ষ্যই আদ্রিয়ানোকে ফুটবল খেলার ব্যাপারে অনুপ্রেরণা যোগাতো- বাবাকে খুশিকে করা এবং টাকা দিয়ে দারিদ্র্য দূর করা। ২০০৪ সালে যখন তার বাবা মারা যান, ততদিনে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা জমে গিয়েছিলো। এরপর আদ্রিয়ানো সত্যিই ফুটবল খেলার ব্যাপারে কোনো কারণ খুঁজে পায়নি! মদ্যপান করে যখন বাবাকে হারানোর শোক ভুলে থাকা যাচ্ছে এবং সেই মদ্যপানের যথেষ্ট টাকা যখন তার কাছে আছেই, তাহলে কেন সে প্রতিদিন সকালে কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে অনুশীলনে যাবে?”

উপরের কথাগুলোই প্রমাণ করে এমন অসাধারণ প্রতিভা এভাবে অপচয় করা সত্ত্বেও আদ্রিয়ানোর মনে তেমন কোনো দুঃখ কিংবা অনুশোচনা নেই। তবে এমন একটা প্রতিভার এভাবে ঝরে যাওয়াটা অনেক কাছের বন্ধু, সতীর্থ মেনে নিতে পারেননি। এমনই এক সতীর্থ হচ্ছেন হ্যাভিয়ের জানেত্তি, আদ্রিয়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন,

“বাবা মারা যাওয়ার পর আদ্রিয়ানো সেই যে হতাশ হয়ে পড়লো, সেখান থেকে সে আর বের হতে পারেনি। তাকে হতাশার জগত থেকে বের করে আনার সব ধরনের চেষ্টা আমি করেছি। কিন্তু কিছু কিছু সময় আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, পরিস্থিতির কাছে আপনাকে হার মানতেই হবে। এটাও এমনই এক পরিস্থিতি ছিল, আমাদের সমস্ত চেষ্টাকে ব্যর্থ করে আদ্রিয়ানো সেই হতাশার জগতেই আস্তে আস্তে নিমজ্জিত হয়ে গেলো। ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেকবারই হারের সম্মুখীন হয়েছি, কিন্তু আদ্রিয়ানোকে এভাবে হারানোটা হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় হার। এই হারের ব্যথা এখনো আমাকে তাড়া করে বেড়ায়।” 

আদ্রিয়ানোর খুব কাছের একজন মানুষ হলেও সেই অন্ধকার গলি থেকে তাকে ফেরানোর পথটা জানেত্তিরও জানা ছিল না; Image Source : dreamteamfc.com 

শুধু জানেত্তিই নন, অসংখ্য ফুটবলপ্রেমীর মনেই আদ্রিয়ানোর এই পতন বিশাল এক ক্ষত সৃষ্টি করে গিয়েছে। এখনো তার কথা উঠলে ব্রাজিল কিংবা ইন্টার মিলান ভক্তরা কিছুটা সময়ের জন্যে থমকে যায়। এমন প্রতিভা চাইলেই পাওয়া যায় না। এ কারণেই আদ্রিয়ানোর হারিয়ে যাওয়ার এত বছর পরেও ব্রাজিল এমন একটা প্রতিভাবান স্ট্রাইকারের দেখা পায়নি। এরকম এক প্রতিভার এভাবে হারিয়ে যাওয়াটা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না। অথচ সেদিন আদ্রিয়ানোর বাবা এভাবে হুট করে চলে না গেলে সবকিছু অন্যরকম হতে পারতো, হয়তো মেসি-রোনালদোর সাথে আদ্রিয়ানোর নামটাও আজ সমানভাবে উচ্চারিত হতো। 

This article is in Bangla language. It's an article about a famous footballer named Adriano.

Featured Image: Planet Football

For references please check the hyperlinks inside the article.

Related Articles