রোর বাংলার দৃষ্টিতে কাতার বিশ্বকাপের সেরা একাদশ

আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ফাইনাল ম্যাচ দিতে গত ১৮ ডিসেম্বর কাতার বিশ্বকাপের পর্দা নামল। অনেকের মতে, এই বিশ্বকাপ সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপের মর্যাদা পেতে বাধ্য। তবে অনেকে ভিন্নমত পোষণ করেন। যারা কিছুটা বয়স্ক এবং ম্যারাডোনার সময়ের বিশ্বকাপ দেখে এসেছেন, বিশেষ করে তারা। নব্বই এর দশকে যাদের জন্ম, তাদের কাছে হয়তো কাতার বিশ্বকাপই সবার উপরে থাকবে। তবে আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ম্যাচ যে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা ফাইনাল, সেটাতে কারও দ্বিমত হয়তো থাকবে না। 

দুই গোলে এগিয়ে প্রায় ৮০ মিনিট; আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতার পথে এক পা বাড়িয়েই ফেলেছে। এরপর পাঁচ মিনিটের কম সময়ে এমবাপের দুই গোল আর্জেন্টাইনদের টেনে মাটিতে নামিয়ে নিয়ে এলো। ম্যাচটা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে মেসি আবার তার দেশকে এগিয়ে নিলেন। কিন্তু কয়েক মিনিট যেতে না যেতেই ফ্রান্সের পক্ষে পেনাল্টি। এমবাপে আবার ম্যাচটা নিয়ে ফেললেন ৩-৩ সমীকরণে। বাকি থাকলো টাইব্রেকার। এমন নাটকীয় ফাইনাল আবার হয় নাকি!

তবে আজ ম্যাচের প্রসঙ্গ থাক। কাতারের মাটিতে যারা সাফল্যের ফুল ফোটালেন, দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে চমকে দিলেন পুরো বিশ্বকে, তাদের থেকে বাছাইকৃত এগারোজনের একাদশের দিকে নজর দেয়া যাক।

রোর বাংলার দৃষ্টিতে কাতার বিশ্বকাপের সেরা একাদশকে সাজানো হয়েছে ৪-৪-২ ছকে।

গোলরক্ষক: এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (আর্জেন্টিনা)

গোল্ডেন গ্লাভস হাতে এমি; Image Credit: Getty Images

আর্জেন্টিনা দলে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের অভিষেক হয়েছিল ২০২১ সালে। খুব বেশি ম্যাচ তিনি খেলেননি। কিন্তু মাত্র কয়েক ম্যাচ আর সর্বশেষ কোপা আমেরিকাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে হয়ে উঠেছিলেন আর্জেন্টিনার গোলবারের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে প্রথম ম্যাচে হারে মার্তিনেজ ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। দুটো গোলে পজিশনিং ভুলও ছিল তার। কিছুটা হলেও এমির প্রতি অনেকের আস্থা কমেই গিয়েছিল। কিন্তু ঐ ম্যাচের পর তিনি আর পেছনে ফিরে তাকাননি, হয়ে উঠেছিলেন আর্জেন্টিনার গোলবারের আস্থার প্রতীক।

ফ্রান্সের আগে ফাইনালে মার্তিনেজ ছিলেন মরক্কোর বোনো আর ক্রোয়েশিয়ার লিভাকোভিচের সাথে একই কাতারে। কিন্তু ফাইনালে কোলো মুয়ানির সেভ এবং টাইব্রেকারে পেনাল্টির নায়ক বনে যাওয়ার ফলে তাদের থেকে এক ধাপ এগিয়েই গেছেন মার্তিনেজ।

রাইটব্যাক: আশরাফ হাকিমি (মরক্কো)

Image Source: AP

এবার বিশ্বকাপে খুব কম রাইটব্যাকই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে খেলতে পেরেছেন। তাদের পারফরম্যান্সের কথা তুললে প্রথমেই আসে ক্রোয়েশিয়ার জুরানভিচের নাম। ব্রাজিলের বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস এবং রদ্রিগোকে একাই আটকে রেখেছিলেন তিনি। আর্জেন্টিনার মোলিনা এবং ফ্রান্সের ক্যুন্দেও দারুণ খেলেছেন পুরো বিশ্বকাপজুড়ে। কিন্তু সবার থেকে এক ধাপ উপরে ছিলেন মরক্কোর আশরাফ হাকিমি। 

পুরো বিশ্বকাপে কোনো গোল করেননি তিনি, অ্যাসিস্ট মাত্র একটি। কিন্ত ডানপাশে দুর্দান্ত রক্ষণ এবং দুঃসাহসিক ফরোয়ার্ড রানে প্রতিপক্ষকে ব্যস্ত রেখেছেন সারাক্ষণ। স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে উইনিং গোল তার করা। এছাড়াও সেমিফাইনালে একমাত্র তার জন্য দেশম তার কৌশল পালটাতে বাধ্য হন।

ডিফেন্ডার: নিকোলাস ওটামেন্ডি (আর্জেন্টিনা)

আর্জেন্টিনার ডিফেন্সিভ জেনারেল; Image Credit: Getty Images

সাম্পাওলির আর্জেন্টিনার সময় ওটামেন্ডি ছিলেন আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের অন্যতম দুর্বল দিক। কিন্তু স্কালোনির ছোঁয়াতে এই বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার ধীরে ধীরে স্বরূপে ফিরেছেন। কোপার পর তাই এবারও তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের আস্থার প্রতীক।

আর্জেন্টিনার ৭ ম্যাচেই তিনি মাঠে নেমেছিলেন। ক্লিনশিট রেখেছেন মোট ৩ ম্যাচে। পুরো টুর্নামেন্টে ৫৩% এরিয়াল ডুয়েলে জয়লাভ করেছেন তিনি। এছাড়াও তার অভিজ্ঞতার ছোঁয়া যেমন রক্ষণভাগ পেয়েছে, তেমনি রোমেরো ও লিসান্দ্রোর উন্নতিতে কাজে লেগেছে প্রতিটা মুহূর্তে।

ডিফেন্ডার: ইয়োস্কো ভারদিওল (ক্রোয়েশিয়া)

কাতার বিশ্বকাপে বেশ ক’জন ডিফেন্ডার তার দেশের হয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন। ফ্রান্সের হয়ে কোনাতে এবং উপামেকানো ছাড়াও ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুয়ের ও জন স্টোনস, মরক্কোর সাইস খেলেছেন দুর্দান্ত। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন ক্রোয়েশিয়ার ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডার ভারদিওল, এবং নিঃসন্দেহে এই বিশ্বকাপের সফলতম ডিফেন্ডার তিনিই। তার শক্তপোক্ত মনোবল, গায়ের জোর থেকে ইন্টারসেপশন, ট্যাকল, বল ক্লিয়ারেন্স – প্রত্যেকটা জায়গাতে তিনি চমক দেখিয়েছেন। এই বিশ্বকাপে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, কেন চেলসির মতো ক্লাব তার জন্য কাড়িকাড়ি অর্থ নিয়ে প্রস্তুত।

তবে বিশ্বকাপের পর এখন ভারদিওল লাইপজিগের জন্য সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতো। সন্ধিৎসু ক্লাবটির পকেট না কেটে লাইপজিগ নিঃসন্দেহেই ভারদিওলকে বিক্রি করবে না।

Image Credit: Getty Images

লেফটব্যাক: থিও হার্নান্দেজ (ফ্রান্স)

থিও হার্নান্দেজ বিশ্বকাপে এসেছিলেন দ্বিতীয় পছন্দের লেফটব্যাক হিসেবে। কারণ পারফরম্যান্স, অভিজ্ঞতা আর কোচের পছন্দের হিসাবে তার বড় ভাই লুকাস হার্নান্দেজই ছিলেন ফ্রান্সের প্রথম পছন্দের লেফটব্যাক। কিন্তু লুকাসের ইনজুরির কারণে সুযোগটা এসে গেল থিও’র কাছে। সুযোগের সঠিক ব্যবহারও তিনি করেছেন।

Photo Credit: Frederic Chambert

থিও মূলত আক্রমণাত্মক লেফটব্যাক। রক্ষণের কাজটায় তিনি সেভাবে পটু নন। তবে তার সীমাবদ্ধতা বুঝে দেশমও তাকে ব্যবহার করেছেন আক্রমণভাগের জন্যই। ৬ ম্যাচে ১ গোল, ২ অ্যাসিস্ট, ১.৮ শতাংশ কী-পাস এবং ৮৭ শতাংশ সঠিক পাসের পরিসংখ্যান তাই তাকে বাকি সবার থেকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। 

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার: সোফিয়ান আমরাবাত (মরক্কো)

বল যেখানে, আমরাবাত সেখানে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিজের দেশকে তোলার পেছনের প্রত্যেকটা ম্যাচে আমরাবাত যেন এক মুহূর্তের জন্য থামেননি। প্রত্যেক মুহূর্তে ছুটে গেছেন প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল কেড়ে নিতে অথবা তাদের আক্রমণ নষ্ট করতে। ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের একাদশের মধ্যমাঠও গঠিত হয়েছিল আমরাবাতকে ঘিরে। 

বল যেখানে, আমরাবাত সেখানে; Image Credit: Getty Images

সেমিফাইনালে এমবাপের সাধারণ খেলা খেলাতে নষ্ট করেছেন বারবার। গ্রুপপর্বে বেলজিয়াম থেকে স্পেন ও পর্তুগাল তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেননি এই মরক্কান মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যেই। ২৬ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের প্রতি আগ্রহী ছিল প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব টটেনহ্যাম। বিশ্বকাপের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর তাদের পুরনো আগ্রহ আবার জেগেও উঠতে পারে। 

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: এনজো ফার্নান্দেজ (আর্জেন্টিনা)

জিওভানি লো চেলসো ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপের দল থেকে ছিটকে না গেলে হয়তো এনজোর বিশ্বকাপেই আসা হতো না। সৌদি আরবের বিপক্ষে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডের বেঢপ দশা সম্মুখে না এলে হয়তো এবার তিনি বেঞ্চ থেকে মাঠে নামতেন। অথচ মূল একাদশের বাইরের একটা খেলোয়াড় শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জিতলেন টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান তারকার পুরস্কার পেয়ে। 

মেক্সিকোর বিপক্ষে এনজোর দুর্দান্ত সেই গোল; Image Credit: Getty Images

মেক্সিকোর সাথে জয়সূচক দুর্দান্ত একটা গোল করেছিলেন, এরপর পোল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাসিস্ট। তবে গোল বা অ্যাসিস্টের সংখ্যা দিয়ে এনজোর পারফরম্যান্স বোঝা সম্ভব নয়। স্কালোনি তাকে হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে ব্যবহার করেছেন; তখন তাকে নিচে নেমে তিনজনের রক্ষনভাগ তৈরি করতে হয়েছে। এক ম্যাচ হোল্ডিং মিডফিল্ডার খেলার পরেই তাকে খেলতে হয়েছেন বক্স-টু-বক্স এবং প্রথাগত সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের ভূমিকায় – যেখানে তার বাড়তি দায়িত্ব ছিল ফরোয়ার্ড পাস এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেওয়া। প্রত্যেকটা পজিশনে এনজো লেটার মার্কস নিয়ে উৎরে গেছেন।

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: অরেলিয়ে চুয়ামেনি (ফ্রান্স)

ফাইনালের টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করেছিলেন। কিন্তু এই এক মিস চুয়েমেনির বিশ্বকাপ পারফরম্যান্সে কোনো দাগ ফেলবে না। কাতারে ফ্রান্সের হয়ে কান্তে ছিলেন না, ছিলেন না পগবাও। তরুণ তুর্কি চুয়েমেনি আর কামাভিঙ্গাদের উপর ছিল বাড়তি চাপ। কামাভিঙ্গাকে নিয়মিত নামাননি দেশম। কিন্তু পুরো বিশ্বকাপে ফ্রান্সের মধ্যমাঠের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ২২ বছর বয়সী চুয়ামেনি।

Image Credit: Getty Images

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধে চুয়ামেনি ছন্দটা ধরতে পারেননি। এরপর যখন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন, তাকে এড়িয়ে ফ্রান্সের রক্ষণভাগে প্রবেশ করাই দায়। প্রতিপক্ষের খেলাটা মাঝমাঠেই নষ্ট করে দেবার কাজটা ছিল তার কাঁধে। ইন্টারসেপশন, ট্যাকেল অথবা বল ক্লিয়ারেন্স; যেভাবেই হোক, চুয়ামেনি প্রতিপক্ষের খেলার ছন্দ ভেঙে দিয়েছেন বারবার। 

অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার: আঁতোয়ান গ্রিজমান (ফ্রান্স)

বার্সেলোনা থেকে আবার অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদের ডেরায় গিয়ে গ্রিজমান ইউরোপের লাইমলাইট থেকে একটু হলেও দূরে সরে গিয়েছিলেন। এজন্য কাতার বিশ্বকাপে ফ্রান্স দলের নাম্বার টেন পজিশনে তাকে নিয়ে তেমন কোনো উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। এমনকি বিশ্বকাপ শেষ হবার পরও তাকে নিয়ে সেভাবে আলোচনা হচ্ছে না। অথচ ফ্রান্সের হয়ে পুরোটা সময় গ্রিজমান ছিলেন দুর্দান্ত।

নাম্বার টেনের ভূমিকাতে থাকলেও গ্রিজমান ফ্রান্সের রক্ষণভাগ থেকে আক্রমণ – প্রত্যেকটা পজিশনে নিঃস্বার্থভাবে খেলে গেছেন। প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগের সময় তাকে নিজেদের ডি-বক্সে নেমে রক্ষণে সহায়তা করতে দেখা গেছে। মাঝে মাঝে হোল্ডিং মিডফিল্ডার থেকে মাঠের ডান অংশেও তিনি সাহায্য করতে নেমে এসেছেন।

Image Credit: Getty Images

এজন্যই ৩ অ্যাসিস্ট, প্রতি ম্যাচে ৩.১ শতাংশ কী-পাস, ৮৬ শতাংশ সফল লং-বল ও মোট ৭টি গোলের সুযোগ ছাড়াও তার রক্ষণাত্মক পরিসংখ্যানও চমক জাগানো। মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচে তিনি রক্ষণভাগে নেমে এসে ৩ বার বল ক্লিয়ার করেছিলেন। এছাড়াও সেদিনের ম্যাচে তার ইন্টারসেপশন ও ট্যাকল রয়েছে দু’টি করে। নিজের দায়িত্ব ছাড়াও রক্ষণে এমন বাড়তি দায়িত্ব পালন করেন বলেই হয়তো অনেকে তাকে ‘অ্যাটাকিং ডিফেন্ডার’ বলে ডাকে।

তবে মাঝমাঠ থেকে ‘প্লেমেকার’-এর ভূমিকায় বিশ্বকাপে দারুণ খেলেছেন পর্তুগালের ব্রুনো ফার্নান্দেজ। গ্রিজমানের পর তার নামটা তাই অবশ্যই আসা উচিত।

সেন্টার ফরোয়ার্ড: কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স)

জিওফ হার্স্টের পর বিশ্বকাপ ফাইনালে এবার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করেও কিলিয়ান এমবাপে আরেকবার বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখতে পারলেন না। বিষয়টা প্রচণ্ড হতাশাজনক হলেও এমবাপে’র পারফরম্যান্স ছিল ঠিক যেমনটা ফরাসিরা তার কাছ থেকে আশা করে। ৭ ম্যাচ করে বিশ্বকাপে সর্বাধিক ৮ গোল করে জিতেছেন গোল্ডেন বুট। এছাড়াও নামের পাশে দু’টি অ্যাসিস্ট রয়েছে। ফাইনালে ৭৫ মিনিট যেখানে আর্জেন্টিনা ফ্রান্সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দুর্দান্ত খেলেছে, সেখানে এমবাপে তাদের মাটিতে নামিয়ে এনেছেন মাত্র ৫ মিনিটের কম সময়ের মাঝে। ১২০ মিনিটে দুটো পেনাল্টি এবং টাইব্রেকারের প্রথম পেনাল্টি নিয়েছেন ঠাণ্ডা মাথায়। ফাইনালে তার এমন পারফরম্যান্স দেখে মাঝে মধ্যে ভুলে যেতে হয় তার বয়সটা মাত্র ২৪ বছর।

জিওফ হার্স্টের পর বিশ্বকাপ ফাইনালে এবার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন এমবাপে;Image Credit: Getty Images

সেন্টার ফরোয়ার্ড: লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা)

লিওনেল মেসিকে নিয়ে আর বিতং করে বলার কী দরকার! ঠিক যেমন দ্য গার্ডিয়ান তাদের নির্বাচিত সেরা একাদশের লেখাটাতে লিওনেল মেসিকে নিয়ে স্রেফ একটা শব্দ লিখেছে:

“Duh.”

The Guardian

তার ঐতিহাসিক পারফরম্যান্স চর্মচক্ষে দেখেছে পুরো বিশ্ব। ফাইনালের পর মেসির এই ছবিই বলে দেয় মেসি বিশ্বকাপে কেমন ছিলেন আর তিনি কী জিতেছেন।

বিশ্বকাপ হাতে মেসি; Image Credit: FIFA

এই একাদশ ছাড়াও বিশেষভাবে বলতে হয় আর্জেন্টিনার হুলিয়ান আলভারেজের কথা। লাউতারোর ফর্মহীনতার সময়ে হুলিয়ান সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছেন। গ্রুপপর্ব থেকে বাদ হলেও দুর্দান্ত খেলেছেন জার্মানির জামাল মুসিয়ালা। ক্রোয়াটদের সেমিফাইনাল পর্যন্ত টেনে আনতে আরও একবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লুকা মদরিচ। ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে আসার পেছনে বড় অবদান ছিল তাদের ডিফেন্ডার ম্যাগুয়ের এবং স্টোনসের।

বিশ্বকাপের এই সেরা একাদশের দায়িত্বে থাকবেন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপজয়ী কোচ লিওনেল স্কালোনি। ভুলে যাওয়া এক অন্ধকার সময়ে মেসিদের দায়িত্ব নিয়ে পুরো দলের অবস্থাকেই ভোজবাজির মতো পালটে দিয়েছেন তিনি। ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত হয়ে কাতারে এসেছিল তার দল। অবশ্য ৫৭ ম্যাচে ৪৪ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন হেরেছেন মাত্র ৫ ম্যাচ। আর পুরো বিশ্বকাপে তার ফুটবল কৌশল এবং দর্শন তো পুরো বিশ্ব দেখেছে।

This article is in Bangla language. It is about the best playing XI in the Football World Cup 2022 at Qatar.

Featured Image Credit: Getty Images

Related Articles

Exit mobile version