ক্লোজ-ইন ফিল্ডিংয়ের খুঁটিনাটি এবং বাংলাদেশ

https://assets.roar.media/Bangla/2017/04/>

ফ্যাফ ডু প্লেসিসের প্যাডল সুইপ আন্দাজ করতে পেরে টম ল্যাথামের দারুণ ক্যাচ।  ©গেটি ইমেজ                       

বেশ কিছুদিন ধরেই অনলাইনে ভেসে বেড়াচ্ছে শর্ট লেগ পজিশনে দাঁড়িয়ে টম ল্যাথামের দুর্দান্ত এক ক্যাচের ভিডিও। ভিডিওটিতে ফ্যাফ ডু প্লেসিসের দারুণ সুইপ শটকে অসাধারণ দক্ষতায় ক্যাচে পরিণত করেছেন ল্যাথাম, হতভম্ব হয়ে ফ্যাফ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হতাশভাবে প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটতে শুরু করেন। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা শর্ট লেগ ক্যাচগুলোর ছোট্ট তালিকাতেও এই ক্যাচটা রাখতেই হবে।

বেশিদিন নয়, এই গত ভারত সফরেই ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস স্লিপে দাঁড়িয়ে প্রায় ‘সুপারম্যান’-এর মতো বিরাট কোহলীকে অসাধারণ দক্ষতায় তালুবন্দী করেন। ক্লোজ-ইন ফিল্ডারদের মাঝেমধ্যেই এমন দারুণ সব মুহুর্ত উপহার দিতে দেখা যায়। ক্রিকইনফোতে অ্যান্ড্রু ফিদেল ফার্নান্দো এ নিয়ে দারুণ বিশ্লেষণী একটা লেখা দিয়েছেন, যেটার কিয়দংশ এবং আমার আংশিক যোজন-বিয়োজনেই এই লেখার অবতারণা।

ক্রিকেটের গোড়ার দিকে শর্ট লেগ ফিল্ডারদের মূল কাজ ছিলো ব্যাটসম্যানকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলা। তবে ফিল্ডার নিজেও তাতে খুব স্বস্তিতে থাকতেন, সেটা দাবি করা যায় না। ব্যাটসম্যান শট করার প্রাক্কালেই ডাক করে ভয়ে গুটিসুটি মেরে সময়মতো ঘুরে যাওয়া, এটাই ছিলো মূলত শর্ট লেগ ফিল্ডারদের বৈশিষ্ট্য। তবে ল্যাথাম দেখালেন অন্য কিছু, দেখালেন সাহস। ফ্যাফের ডেড মিডল অফ দ্য ব্যাটে লাগা শটকে আগে থেকে অনুমান করে বলটি ধরে বসলেন। ঠিক যেন ডিসি কমিকের ‘দ্য ফ্ল্যাশ’, সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়টাও যেন তাঁর কাছে বিশাল কোনো সময় হয়ে ধরা দিলো!

ল্যাথামের দুর্দান্ত ক্যাচটি সম্পর্কে সর্বকালের অন্যতম সেরা স্লিপ ফিল্ডার মাহেলা জয়াবর্ধনে বলেন, “ফ্যাফের সুইপ শটের জন্যই যেন টম অপেক্ষা করে ছিলো। এটাই মূল ব্যাপার, একজন ব্যাটসম্যানের শটগুলো বুঝতে পারা।” আর এই ক্যাচ ধরতে পারা যে অত্যন্ত চৌকষ শর্ট লেগ ফিল্ডারেরই লক্ষণ, সেটাও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন মাহেলা, “যেভাবে ফ্যাফ খেলেছিলো, ব্যাপারটা প্যাডেল সুইপ হওয়ার কথা ছিলো… ফ্ল্যাট, হার্ড সুইপ নয়। (এই শট আগে থেকেই বুঝতে পারা) ভালো শর্ট লেগ ফিল্ডারের লক্ষণই ফুটে উঠেছে এতে।”

আচ্ছা, বোঝা গেল যে এটা ক্লোজ-ইন ফিল্ডারদের একটা বড় লক্ষণ এই ‘অ্যান্টিসিপেশন’। কিন্তু আর কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত একজন ক্লোজ-ইন ফিল্ডারের?

১. ভয়ডরহীন মানসিকতা

২০০১ সালে কলম্বোতে গ্রায়েম হিক শর্ট লেগে ক্যাচ থেকে বেঁচে যাচ্ছেন।  ©গেটি ইমেজ

 মাহেলা জয়াবর্ধনের মতে, “প্রথম যেটা করা উচিত, সেটা হচ্ছে ফিল্ডিংয়ের সময় আহত হওয়ার ভয় না পাওয়া। আপনি দেখতে পারেন, টম যেভাবে ফিল্ডিং করছিলো, সে ওখানে খুবই কমফোর্টেবল ছিল।” তিনি আরো বলেন, “যদি কিছুটা ভয়ে ভয়ে থাকেন, যদি আপনার প্রথম চিন্তাটাই হয় যে শুরুতেই ঘুরে যাবো, তাহলে সেখানেই আপনার সীমাবদ্ধতা।

মুত্তিয়া মুরালিধরণ যখন তাঁর ক্যারিয়ারের চূড়ায়, উইকেটের আশেপাশে তিনি পেয়েছেন হাশান তিলকারত্নে, রাসেল আরনল্ড, মাহেলা জয়াবর্ধনে এবং রাসেল আরনল্ডকে। আর প্রত্যেকেই ছিলেন দারুণ ক্লোজ-সার্কিট ফিল্ডার। শেন ওয়ার্নও পেয়েছিলেন গিলক্রিস্ট-পন্টিং-ল্যাঙ্গারদের, প্রত্যেকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ফলে খুব সহজেই মুড়িমুড়কির মতো শর্ট লেগ, সিলি পয়েন্ট কিংবা স্লিপে উইকেট পেয়েছেন তাঁরা।

সেই তুলনায় রঙ্গনা হেরাথ কিছুটা দুর্ভাগা, ক্লোজ-ইন ফিল্ডারের কথা বাদই দিন, তাঁর দলে আপ টু দ্য মার্ক ফিল্ডারের সংখ্যাই কম! হেরাথের মতে, “যদি কেউ সবসময় ভাবতেই থাকে, ‘এই লাগলো বুঝি’, ‘গেছি এইবার’, ‘লেগে গেলো’, তাহলে সত্যি বলতে ওই ফিল্ডারকে ওখানে দাঁড় করানোর কোনো মানেই হয় না!

কিন্তু দায় সবটাই কি শুধুই ফিল্ডারদের? নাহ, বরং বোলারদের একটা বড় প্রভাব রয়েছে এখানে।  রাসেল আরনল্ড এ বিষয়ে বলেন, “যদি হতভাগা বোলার উল্টোপাল্টা বোলিং করতে থাকে, আপনার ভয় পাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। ” তিনি আরো বলেন, “যখন আপনি জানেন আপনার বোলার আসলেই দারুণ, আর ব্যাটসম্যান কোনো কিছুই করার চেষ্টা করছে না, এমন মুহুর্তে খুব ডেঞ্জারাস কোনো পজিশনও হঠাৎ দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে। আমার সময়টাতে মুরালি ছিলো, ও বোলিং করার সময়ে কখনো আমি বিন্দুমাত্র অনিরাপদ বোধ করিনি। ব্যাটসম্যান যখন ওর বলগুলো ব্যাট কিংবা প্যাডে লাগানো নিয়ে সংগ্রাম করতো, আমি, দিলশান এবং মাহেলা প্রায় প্রতি বলেই পিচের উপর হামলে পড়তাম। মাঝেমধ্যে এদিক-ওদিক লাফঝাঁপ দিয়ে বল আটকানোর চেষ্টা করতাম। একটা কোনোমতে আটকে গেলেই উইকেট এসে যেত!”

২. ফোকাস

কথা যখন ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং নিয়ে, তখন খেলায় পুরোপুরি ডুবে থাকা, শতভাগ ফোকাসড থাকাটা অত্যন্ত জরুরী  ©গেটি ইমেজ    

আপনি ক্রিকেট খেলেন, ফুটবল খেলেন, কিংবা গলফ, আপনার যেটা ষোলআনা থাকা দরকার, সেটা হলো ‘ফোকাস’। শব্দটা বেশ জনপ্রিয়, সব খেলাতেই দারুণ প্রচলিত এই টার্মটা। কিন্তু ফোকাস ব্যাপারটা আসলে কি?

একজন আলোকচিত্রী যখন ‘ফোকাস’ শব্দটা ব্যবহার করেন, তখন তিনি বুঝাতে চান এমন কোনো বিশেষ স্থান বা বস্তু যার উপরে তিনি বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে চান।

ঠিক তেমনি খেলার ক্ষেত্রেও ‘ফোকাস’ শব্দটা এভাবেই ব্যবহার করা হয়, বিশেষভাবে মনোঃসংযোগ। ফোকাস এমন কিছু, যা আপনার মস্তিষ্ককে এমনভাবে প্রস্তুত করে যে আপনার শরীরও মস্তিষ্কের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শতভাগ সম্মত থাকে। নিঃসন্দেহে ‘ফোকাস’ নামের পুরো ব্যাপারটাই মনস্তাত্ত্বিক প্রচেষ্টা, প্রচুর ট্রেনিং ও তার চেয়েও বেশি চর্চার ব্যাপার। আর কথা যখন ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং নিয়ে, তখন খেলায় পুরোপুরি ডুবে থাকা, শতভাগ ফোকাসড থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। কেননা কিয়ৎক্ষণের অসাবধানতাই কখনো কখনো বড় ধরণের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। আবার খানিকক্ষণের জন্য ফোকাস হারিয়ে ফেললেও সমস্যা, যেকোনো সময় সম্ভাব্য ক্যাচ মিস হয়ে যেতে পারে। আর যেখানে ক্লোজ-ইন ফিল্ডারদের মূল কাজটাই হচ্ছে হাফচান্স কোনো ক্যাচ কিংবা ফিল্ডিং মাঝেমধ্যেই করে দেওয়া, সেখানে যেকোনো লোপ্পা ক্যাচ মিসকে বিলাসিতা হিসেবে দেখা যেতেই পারে!

৩. খেলা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা

ডাইভিং শুধু ক্যাচ ধরার জন্যই নয়, মাইন্ডগেম খেলতেও সহায়ক হতে পারে।  © গেটি ইমেজ                     

সাহসিকতা কখনো কখনো ফিল্ডারকে এনে দিতে পারে মানসিক সুবিধা, ক্লোজ সার্কিট ফিল্ড প্লেসমেন্টে ব্যাটসম্যানকে সামান্য অস্বস্তিতে ফেলতে পারাটাই কখনো কখনো দারুণ কাজে দেয়।  আর ব্যাটসম্যানের খেলার ধরণ বদলানোর জন্য ফিল্ডারকে সব ধরণের খুঁটিনাটি পড়ে ফেলতে হয় খুব দ্রুত। বোলার, পিচ এবং ব্যাটসম্যান- কে কেমন আচরণ করছে, কে কি করতে চাইছে, কার বিপক্ষে কে কখন কেমন করছে সবকিছু নিয়ে নিজের একটা পরিষ্কার ধারণা থাকাটা বাঞ্ছনীয়।

ধরুন, একজন অফ স্পিনার ডানহাতি কোনো ব্যাটসম্যানকে বোলিং করছেন। খেলার শুরুতে নতুন বলে ক্লোজ-ইন ফিল্ডারকে যেভাবে দাঁড়াতে হবে, যেভাবে অ্যাপ্রোচ করতে হবে, পুরোনো বলে যখন বল আরো কিছুটা টার্ন করতে শুরু করবে তখন অ্যাপ্রোচটা হতে হবে একেবারে ভিন্ন। একই ব্যাপার প্রযোজ্য বাঁহাতি স্পিনারের ক্ষেত্রেও।

এমনকি কখনো কখনো ব্যাটসম্যানকে মানসিকভাবে পিছিয়ে দেওয়াটাও দারুণ বুদ্ধিমত্তার ব্যাপার, সে দায়িত্বও অনেকটাই বর্তায় ফিল্ডারদের উপরেই। রাসেল আরনল্ড বলেন, “একবার আমি গলে একটা দারুণ ক্যাচ নিয়েছিলাম, ড্যারিল কালিনানের ওই ক্যাচটা নিতে প্রায় অর্ধেকটা পিচ দৌড়ে গিয়ে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ। ও যেভাবে খেলছিলো, ব্যাট আর প্যাডের মাঝামাঝি একটা জায়গা থেকে বলটা এমনভাবে চাপিয়ে দিচ্ছিলো যে বল একবার হলেও ড্রপ খাচ্ছিলো। এমনকি মুরালির বলেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছিলো না। ফলে সিলি মিড-অফ থেকে আমি প্রায় প্রতি বলেই ডাইভ দিচ্ছিলাম, আর তার মধ্যেই একটা হঠাৎ আটকে গেল!

আবার কখনো কখনো একটু অন্যরকম কিছুও ভাবতে হয়। কিছু কিছু ব্যাটসম্যান চোখের সামনে গা ঘেঁষে দাঁড়ানো ফিল্ডার দেখতে মোটেই পছন্দ করে না। আর এধরণের ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে ক্লোজ-ইন ফিল্ডার থেকে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। “যখন দেখবেন আপনি কিছুটা অলসতা দেখাচ্ছেন, ব্যাটসম্যানও কিছুটা গা-ছাড়া ভাবে খেলতে থাকবেন। কিন্তু যখন ব্যাটসম্যান দারুণ খেলতে থাকেন, কখনো কখনো ‘ফেইক শো’ও বেশ কাজে দেয়”, বলছিলেন আরনল্ড।  তিনি আরো বলেন, “ব্যাটসম্যানকে মারতে না দেওয়া নয়, বরং ব্যাটসম্যানকে এটা বুঝিয়ে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, মারলেও সে খুব স্বস্তিতে থাকবে না। মাঝেমধ্যেই দিলশান শুধু শুধু স্ট্যাম্পে হিট করতো এবং চিৎকার করতো। ব্যাটসম্যান তখন পরের বল নিয়ে নয়, বরং বোকার মতো চিৎকার নিয়ে ভাবতে শুরু করতো। সেটা ব্যাটসম্যানের স্বাভাবিক চিন্তাপ্রক্রিয়া ব্যাহত করতো।

এটাই বলছিলাম, ব্যাটসম্যানের সাথে মাঝেমধ্যে মাইন্ডগেম খেলাটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ!

৪. উদ্ভাবনী চিন্তাশীলতা

কিছু কিছু ব্যাটসম্যান চোখের সামনে গা ঘেঁষে দাঁড়ানো ফিল্ডার দেখতে মোটেই পছন্দ করে না।  আর এধরণের ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে ক্লোজ-ইন ফিল্ডার থেকে সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। © গেটি ইমেজ

ল্যাথামের ক্যাচটা ছিলো উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তির চুড়ান্ত এক নিদর্শন। ফ্যাফ যেখানে প্যাডল সুইপ করতে যাচ্ছিলেন, এমনকি ব্যাটের মাঝামাঝিও টাইমিং করেছিলেন। ল্যাথাম গতানুগতিকভাবে ভাবলে হয়তো তিনি সময়মত বলটাকে ডাক করে ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে বরং তিনি বলের পিছনে ছুটে দুর্দান্তভাবে বলটাকে তালুবন্দী করলেন।

জয়াবর্ধনে বলেন, “যখন ব্যাটসম্যান বারবার সুইপ বা প্যাডল সুইপ করতে থাকে, তখন শর্ট লেগকে কিছুটা পিছিয়ে দিয়ে খানিকটা আন্দাজ করতে দেওয়ার জায়গাটা দেওয়া উচিত। তাহলে সেখানে ওঠা ক্যাচগুলো ধরতে অন্তত কিছুটা সময় পাবে তাঁরা। সেটা যদি না-ও হয়, তবু ব্যাটসম্যানের মাথায় ব্যাপারটা ঘুরতে থাকবে। আর কিছুটা হলেও সম্ভাবনা থাকবে অন্য কোনোভাবে ব্যাটসম্যানের আউট হওয়ার।

এছাড়াও নানাভাবে বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসা যেতে পারে। একজন ভালো মানের ক্লোজ-ইন ফিল্ডারের জন্য প্রত্যুৎপন্নমতিতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাশীলতা দুটোই দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এবং বাস্তবতায় বাংলাদেশ

কিছুদিন আগে গলে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নিরোশান ডিকওয়েলার দারুণ একটা ক্যাচ তালুবন্দী করেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস। ডিকওয়েলা একটি রিভার্স সুইপ খেলেছিলেন আগের বলেই, এরপর আর একটা প্যাডল সুইপও খেললেন। লিটন দুটোই আগে থেকে সেটা ধরতে পেরেছিলেন, ব্যাটসম্যান কি করতে চলেছেন সেটা আগে থেকেই ধারণা করে শেষ পর্যন্ত অসাধারণ একটা ক্যাচও ধরতে পেরেছিলেন।

তবে এটা নেহায়েত বিচ্ছিন্ন একটা চিত্র। টেস্টে আমরা অবশেষে মোটামুটি থিতু একটা দল পেয়েছি। কিছু পজিশন নিয়ে এখনো কিছু প্রশ্ন রয়েছে বটে, তবে মোটামুটি একটা দল দাঁড়িয়ে গেছে এটাও সত্যি। বাংলাদেশ দলে এখন বৈচিত্র্যের বিশেষ অভাব নেই, ডানহাতি ফাস্ট বোলার, বাঁহাতি পেসার, বাঁহাতি স্পিন, ডানহাতি অফ স্পিন, দারুণ কিছু বোলার একসাথে পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো যেটা সেভাবে পায়নি, সেটা হলো ক্লোজ-ইন ফিল্ডার। কখনো সৌম্য, কখনো ইমরুল, কখনো মমিনুল, কখনো সাব্বির, আবার কখনো সাকিব। নানাভাবে নানা ফিল্ডার সবসময় স্লিপ, সিলি পয়েন্ট বা শর্ট লেগে দাঁড়াচ্ছেন বটে, তবে বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারছেন না। নিয়মিত খেলা দেখেন যারা, নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন অন্য দলগুলোর জন্য হাফচান্সগুলো বাংলাদেশের জন্য কেন যেন ক্যাচ বলেই মনে হয় না। কিভাবে মনে হবে? বেশিরভাগ সময়ই যে লাইনেই যেতে পারেন না তাঁরা!

বাংলাদেশের সামনে এখন মূল চ্যালেঞ্জ ক্লোজ-ইন কিছু ফিল্ডার তৈরি করা। নাহ, জয়াবর্ধনে-আরনল্ড-পন্টিং-দ্রাবিড় দরকার নেই আমাদের, শুধু দরকার এক সেট স্পেশালিস্ট ক্লোজ-ইন ফিল্ডার, যারা সত্যিই ইফেক্টিভ হবেন। বড় হয়ে উঠতে শুরু করা বাংলাদেশের দরকার আরো বেশ কিছু জয়, আর সেই উদ্দেশ্য সম্পন্ন করতে যে হাফচান্সগুলোকে কাজে লাগানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা তো না বললেও চলে!

তথ্যসূত্র এবং ছবি কৃতজ্ঞতাঃ

১) thecricketmonthly.com/story/1078605/look-sharp

২) espncricinfo.com/magazine/content/story/1089965.html

Related Articles

Exit mobile version