Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফুটবলের কম বয়সী অধিনায়কেরা

ফুটবল মাঠে অধিনায়কের কাজ আলাদাভাবে ততটা না থাকলেও অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্যে রয়েছে বিশাল সম্মান। ভালো খেলোয়াড়ই যে ভালো অধিনায়ক হবে ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়। নেতৃত্বগুণের জোরে অনেক সময় সাধারণ খেলোয়াড় কিংবা অনেক কম বয়সী খেলোয়াড়কেও দলকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে। আজ আমরা জানবো এমন কিছু ফুটবলার সম্পর্কে, যারা অল্প বয়সেই পরেছেন অধিনায়কের বাহুবন্ধনী।

ফার্নান্দো তোরেস (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ) – ১৯ বছর

১৯৯৫ সাল থেকেই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের যুব একাডেমিতে খেলা শুরু করেন ফার্নান্দো তরেস। সেখানে ছয় বছর থাকার পর ২০০১ সালে মূল দলের সাথে চুক্তি করেন এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। মাত্র দুই বছরের মাথায় ২০০৩ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের অধিনায়ক হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় তোরেসের। সেই সময় তার বয়স ছিলো মাত্র ১৯ বছর।

ফার্নান্দো তোরেস; Image Source: Sky Sports

২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৭ সালে লিভারপুলের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমানোর আগে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ২১৪ ম্যাচ খেলে তোরেস করেন ৮২ গোল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ধারে আবার ফেরত আসেন নিজের শৈশবের ক্লাবে। ধার থেকে স্থায়ী হয়ে খেলেন আরো দু’বছর। চলতি বছরই অ্যাটলেটিকোর হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেন তোরেস। নিজের শেষ ম্যাচেও অধিনায়কের বাহুবন্ধনী ছিলো তার বাহুতে।

সেস্ক ফ্যাব্রিগাস (আর্সেনাল) – ২১ বছর

২০০৩ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সেই আর্সেনালের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন ফ্যাব্রিগাস। ২০০৮ সালে গালাসকে অধিনায়ক থেকে সরিয়ে আর্সেন ওয়েঙ্গার অধিনায়ক মনোনীত করেন সেস্ক ফ্যাব্রিগাসকে। সেই সময় এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের বয়স মাত্র ২১ বছর। কিন্তু আর্সেনালের হয়ে ততদিনে পাঁচ বছর খেলে ফেলায় ফ্যাব্রিগাসের অভিজ্ঞতার ঝুলিও ছিলো পরিপূর্ণ।

সেস্ক ফ্যাব্রিগাস; Image Source: Arsenal.com

তিন মৌসুম ধরে আর্সেনালের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন সেস্ক। ২০১১ সালে বার্সেলোনায় পাড়ি জমানোর আগপর্যন্ত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি।

স্টিভেন জেরার্ড (লিভারপুল) – ২৩ বছর

স্টিভেন জেরার্ড ও লিভারপুল নাম দুটি একে অন্যের সমার্থক। মাত্র ৯ বছর বয়সেই লিভারপুল ইয়ুথ একাডেমিতে ভর্তি হন জেরার্ড। টানা নয় বছর একাডেমিতে খেলার পর ১৯৯৮ সালে মূল দলে জায়গা করে নেন তিনি। তারপরই শুরু তার সোনালী অধ্যায়।

স্টিভেন জেরার্ড; Image Source: Liverpool FC

অলরেড সিনিয়র দলের জার্সি গায়ে অভিষেকের ৫ বছরের মাথায় তৎকালীন কোচ হাউলার জেরার্ডকে দলের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই সময় ২৩ বছর বয়সী জেরার্ড সেই দায়িত্ব পালন করেন ক্লাব থেকে বিদায় নেওয়ার আগপর্যন্ত। ২০০৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১২ বছর ধরে লিভারপুলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তিনি। তার অধীনেই লিভারপুল জেতে ২০০৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। লিভারপুলের হয়ে পাঁচ শতাধিক ম্যাচ খেলার মাইলফলক ছুঁয়ে ২০১৫ সালে ক্লাবটিকে বিদায় জানান জেরার্ড।

ফ্রান্সেস্কো টট্টি (এএস রোমা) – ২১ বছর

১৯৮৯ সালে রোমা যুব একাডেমিতে যোগ দেওয়ার পর রোমার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েই ছিলেন টট্টি। কত শত প্রলোভন ফিরিয়ে দিয়ে ২৫টি বসন্ত কাটিয়েছেন রোমায়।

ফ্রান্সেস্কো টট্টি; Image Source: CNN

১৯৯২ সালে রোমার মূল দিলে জায়গা করে নেন টট্টি। এর ঠিক পাঁচ বছর পর ১৯৯৭ সালে দলটির অধিনায়ক হন তিনি। এরপর একে একে ২০ বছর ধরে দলটির অধিনায়ক ছিলেন। বয়সের সাথে ধার বাড়া টট্টি খেলেছেন ৪১ বছর বয়স পর্যন্ত। সেই ২১ বছর থেকে নিজের ৪১ বছর পর্যন্ত পুরোটা সময় ধরে দলের ভার বয়েছেন টট্টি। ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার আগপর্যন্ত তিনি রোমার হয়ে খেলেন সর্বোচ্চ ৬১৯টি ম্যাচ। রোমার হয়ে করেছেন সর্বোচ্চ ২৫০টি গোলও।

ববি মুর (ইংল্যান্ড) – ২২ বছর

সর্বকালের সেরা কয়েকজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের মধ্যে ববি মুর অন্যতম। ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া এই খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হয়েছিলেন মাত্র ২২ বছর বয়সেই।

১৯৬২ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে যখন ববি মুর মাঠে নামেন, তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ২১ বছর। পরের বছরই একটি ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক আর্মফিল্ড মাঠে নামতে না পারায় সেই ম্যাচে অধিনায়ক হন মুর। কিন্তু সেই অধিনায়কত্ব তিনি কিছুদিনের মধ্যেই হারান। নিজের নেতৃত্বগুণের জোরে কিছুদিনের মাথায় অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পুনরুদ্ধার করেন তিনি।

ববি মুর; Image Source: BBC

১৯৬৪ থেকে ১৯৭৩ সালে অবসরের আগপর্যন্ত ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অধ্যায় হয়ে আছে ইংল্যান্ডকে প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা জেতানো। ১৯৬৬ সালে ববি মুরই উঁচিয়ে ধরেন তৎকালীন জুলে রিমে ট্রফি। অবসরের আগ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১০২টি ম্যাচ।

প্যাট্ট্রিক ভিয়েরা (এএস ক্যানেস) – ১৭ বছর

মাত্র ১৭ বছর বয়সে নিজের প্রথম লিগ ওয়ান ম্যাচেই অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরে মাঠে নামেন প্যাট্ট্রিক ভিয়েরা। তার ক্যারিয়ার শুরুই হয় ক্যানেসের হয়ে।

প্যাট্ট্রিক ভিয়েরা; Image Source: Sky Sports

১৯৯৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে দলটির হয়ে অভিষেক হয় তার। প্রথম ম্যাচ থেকেই অধিনায়কের দায়িত্ব পান তিনি। মাত্র এক মৌসুম সেখানে খেলে ১৯৯৫ সালে এসি মিলানের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান ভিয়েরা। এক মৌসুমে ক্যানেসের হয়ে ৪৯টি ম্যাচ খেলেন। সেই ৪৯টি ম্যাচেই দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি, যদিও এসি মিলানের হয়ে খেলেছেন মাত্র ২টি ম্যাচ। তবে ভিয়েরা নিজেকে পরবর্তীতে চিনিয়েছেন আর্সেনালের জার্সি গায়ে।

মামাদু সাখো (প্যারিস সেইন্ট জার্মেই) – ১৭ বছর

২০০২ সালে যুব একাডেমিতে ভর্তি হওয়া মামাদু সাখো প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের মূল দলে ঢোকেন ২০০৭ সালে। সেই সময় সাখোর বয়স ছিলো ১৭ বছর। নিজের প্রথম ম্যাচেই অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নামেন সাখো, যদিও সেই অধিনায়কত্ব ধরে রাখতে পারেননি তিনি।

মামাদু সাখো; Image Source: Telegraph

২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পিএসজিতে থাকলেও কখনোই নিয়মিত অধিনায়ক ছিলেন না তিনি। তবে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরে পিএসজি এবং লিগ ওয়ানের সবচেয়ে কনিষ্ঠ অধিনায়ক হয়ে রেকর্ড গড়েন এই ফরাসি ডিফেন্ডার।

ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ (যুক্তরাষ্ট্র) – ২০ বছর

মাত্র ২০ বছর ৬৩ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মনোনীত হয়ে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে রেকর্ড গড়েন পুলিসিচ।

ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ; Image Source: Goal.com

২০১৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন পুলিসিচ। ডর্টমুন্ডের হয়ে দুর্দান্ত খেলার প্রতিদানে ২০১৬ সালেই মাত্র ১৮ বছর বয়সে জাতীয় দলে ডাক পান তিনি। যদিও প্রথমদিকে এত নিয়মিত মাঠে নামার সুযোগ পেতেন না। তবে ধীরে ধীরে নিজেকে গড়ে তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে। সেই ফলশ্রুতিতে ২০১৮ সালের নভেম্বরে পুলিসিচকে যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মাত্র ২৩ ম্যাচের অভিজ্ঞতা দিয়েই অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পেয়ে যান তিনি। জাতীয় দলের হয়ে পুলিসিচ করেছেন ২৩ ম্যাচে ৯ গোল। ভবিষ্যতের এই বড় তারকাকে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক হিসেবেই মাঠ দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যাবে।

Feature Image : Euro Sports

References : The references are hyperlinked in the article.

Description : This article is about the footballers who became captain in very early age.

Related Articles