১৯৪৫ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার পর ৪ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারফোর্সের বোম্বার প্লেনের আঘাতের ছাপ কাটিয়ে উঠতে মিউনিখ শহর নতুনভাবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। পুরো জার্মানিজুড়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, চাকরির খুবই অভাব। তবুও ডাকপিয়নের কাজ করে কোনোভাবে পেট চালাচ্ছেন মিউনিখ শহরের অদূরে অবস্থিত গিয়েসলিং শহরের অধিবাসী ফ্রাঞ্জ ও তার স্ত্রী অ্যান্টোনিয়া। এমন সময় তাদের এক ছেলে জন্ম নিলো। এমনিতেই নিজেদের খাবার ঠিকভাবে জুটাতে পারেন না, তার উপর আবার নতুন এক মুখ, কী করবেন তাই ভেবে উঠতে পারলেন না পরিবারের বড় কর্তা।
এভাবে ধীরে ধীরে কেটে গেল ৯ বছর। জার্মানির জাতীয় ফুটবল দল নিজেদের প্রথম জুলেরিমে ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে। একটি সাধারণ দল নিয়ে হাঙ্গেরির মতো অপ্রতিরোধ্য দলকে হারিয়ে জুলেরিমে ট্রফি জয় সেই ছেলেটির মনে ব্যাপক নাড়া লাগাল। ফুটবল খেলার প্রতি আগ্রহী হল ছেলেটি। ১৯৫৪ বিশ্বকাপজয়ী ফ্রিৎজ ওয়াল্টারকে আইডল ভেবে শুরু করলেন পথচলা, ভর্তি হলেন “স্পোর্টস ক্লাব ১৯০৬ ম্যুনশেন”-এ। তবে প্রথমেই বাধা পেলেন পরিবার থেকে। তার বাবা ভেবেছিলেন বড় ছেলের মতই কাজ শুরু করবে তার ছোট ছেলে। তবে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ফুটবলেই মনোযোগ দিল সে। অর্ধাহারে-অনাহারে কাটিয়েও ফুটবলের প্রতি সামান্যতম শিথিলতা দেখাল না সে। এভাবেই গড়ে উঠতে থাকল ফুটবল ইতিহাসের সেরা সুইপার ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার।
কেটে যেতে লাগল মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। ইতিমধ্যেই নিজেকে খুব ভাল ফুটবলার হিসেবে প্রমাণিত করেছেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। এরপর ১৯৫৯ সালে নাম লেখালেন বায়ার্ন মিউনিখের যুব দলে।
৬ জুন, ১৯৬৪; বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে প্রথমবার মাঠে নামেন কাইজার। প্রতিপক্ষ স্টুটগার্ট কিকার্স। সেই মৌসুমেই বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ৩৭ ম্যাচ খেলে করেন ১৭ গোল। বায়ার্ন মিউনিখ প্রোমোশন পায় জাতীয় লিগ বুন্দেসলিগায়। পরের মৌসুমগুলোতেও মাঠে নিজের পারফরম্যান্সের ধারা অব্যাহত রাখেন তিনি। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে প্রথমবার পান ডিএফবি পোকাল জয়ের স্বাদ। তার এই অভূতপূর্ব পারফর্ম্যান্সের ফলে জায়গা পান ১৯৬৬ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে।
১৯৬৬ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই গোল করে নিজেকে লাইমলাইটে নিয়ে আসেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ে এবং সেমিফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে ২ গোল করে কোনো ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে বিশ্বকাপের ৩য় সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড করার গৌরব অর্জন করেন তিনি, জায়গা পান ১৯৬৬ বিশ্বকাপ টিম অফ দ্য টুর্নামেন্টে। এছাড়া ইয়াং প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট অ্যাওয়ার্ডও পান বেকেনবাওয়ার। একইবছর প্রথমবার জার্মান ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।
১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। এই জয়ের ফলে বায়ার্ন মিউনিখ জার্মান ফুটবলে ক্রমেই পরাশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে। ১৯৬৮ সালের গ্রীষ্মে বাভারিয়ান অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি এবং সেই মৌসুমেই বায়ার্ন মিউনিখকে এনে দেন প্রথম লীগ শিরোপা এবং তৃতীয় ডিএফবি পোকাল। এই সময়ে কিছুদিন তিনি সুইপার পজিশনে কিছুদিন পরীক্ষা চালান এবং সফল হন। এর ফলে একই সাথে আক্রমণ ও রক্ষণভাগ সামলানোর ট্যাকটিকস প্রবর্তন করেন বেকেনবাওয়ার এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার থেকে পজিশন পরিবর্তন করে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলতে থাকেন।
১৯৭০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক গোল করেন তিনি। ‘গেম অফ দ্য সেঞ্চুরি’ খ্যাত ১৯৭০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে জিয়ানলুইজি সেরার ফাউলের ফলে হাত ভেঙে যায় তার। কিন্তু অদম্য ব্যাকেনবাওয়েরকে কেউই থামাতে পারেনি। ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভাঙা হাত নিয়েই লড়াই চালিয়ে যান কাইসার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে পশ্চিম জার্মানিকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ইতালি। ১৯৭১ সালে জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি। ১৯৭২ ইউরো কাপের ফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেশের হয়ে প্রথম কোনো মেজর ট্রফি জয় করেন ব্যাকেনবাওয়ের। একই বছর প্রথম ব্যালন ডি অর অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।
ক্লাব ফুটবলেও একের পর এক লীগ শিরোপা জিতে বায়ার্ন মিউনিখকে ইউরোপের ফুটবল পরাশক্তিতে গড়ে চলেছেন। তার অধিনায়কত্বেই হ্যাটট্রিক লীগ শিরোপা জয় করে বায়ার্ন মিউনিখ। এরপর শুরু হয় ইউরোপ জয়। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম ইউরোপিয়ান কাপ জেতে বায়ার্ন মিউনিখ।
১৯৭৪ বিশ্বকাপ, নিজের দেশেই হতে চলেছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের দশম আসর। প্রথম রাউন্ডেই পূর্ব জার্মানির কাছে হেরে যায় পশ্চিম জার্মানি। সতর্ক হয়ে যান ব্যাকেনবাওয়ের। দলের খেলোয়াড়দেরকে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে উজ্জীবিত করেন এবং কোচ হেলমুট স্কোনের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ম্যাচগুলোর টিম লাইনআপ পরিচালনা করেন। ১৯৭৪ বিশ্বকাপে তার ট্যাকটিক্স কাজে লাগিয়েই সাফল্য পান কোচ হেলমুট স্কোন। টোটাল ফুটবলের ট্যাকটিক্স ব্যবহারকারী নেদারল্যান্ডস পুরো টুর্নামেন্টে সকল দলকেই ধরাশায়ী করতে পারলেও ব্যাকেনবাওয়ের ও জার্মান দলের অন্যান্য ডিফেন্ডারদের সামনে পড়ে নিজেরাই ধরাশায়ী হয়ে পড়ে। ১৯৭০ বিশ্বকাপের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে ২য় বিশ্বকাপ জয় করে পশ্চিম জার্মানি। এর ফলে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে একইসাথে ইউরো কাপ ও বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে পশ্চিম জার্মানি। একইসাথে ইউরোপ ও বিশ্বে ক্লাব ও দেশ উভয়ের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ফ্রাঞ্জ ব্যাকেনবাওয়ের। ঠিক এ সময়েই কাইসার উপাধিতে ভূষিত হন তিনি। ১৯৭৪ বিশ্বকাপের সিলভার বল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি। একই বছর ৩য় বার জার্মান ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।
বিশ্বকাপের পরবর্তী ২ মৌসুমেও ইউরোপিয়ান কাপ জয় করে ৩য় দল হিসেবে হ্যাটট্রিক ইউরোপিয়ান কাপ জয় করার রেকর্ড গড়ে বায়ার্ন মিউনিখ। ১৯৭৬ সালে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জেতেন ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ। ১৯৭৬ ইউরো কাপে ফাইনালে উঠলেও টাইব্রেকারে চেকোস্লোভাকিয়ার কাছে হেরে গিয়ে রানার্স-আপ হিসেবে সন্তুষ্ট থাকতে হয় ব্যাকেনবাওয়েরকে। ১৯৭৬ সালে ২য় ও শেষবার ব্যালন ডি অর অ্যাওয়ার্ড এবং ৪র্থ ও শেষবার জার্মান ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। একইবছর পশ্চিম জার্মানির সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ‘ক্রস অব দ্য অর্ডার অফ মেরিট অব ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানি’ পান তিনি। ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন এই কিংবদন্তী।
একইবছর বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে পাড়ি জমান সুদূর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। সেখানেও পান সাফল্য। ১৯৭৭ সালে নর্থ অ্যামেরিকান সকার লীগের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড়ের অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। নিউ ইয়র্ক কসমসে ৪ মৌসুম কাটিয়ে ৩টি লীগ শিরোপা এবং ১টি ট্রান্স-আটলান্টিক শিরোপা জিতেছেন। এরপর আবারো ফিরে আসেন জার্মানিতে, তবে এবার বায়ার্ন মিউনিখে নয়। ২ বছরের চুক্তিতে যোগ দিয়েছেন হ্যামবার্গার এসভিতে। তিনি যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই পেয়েছেন সাফল্য। সাফল্য বোধহয় তার পিছু ছাড়ত না। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে হ্যামবার্গারের হয়ে জেতেন বুন্দেসলিগা। ২ বছর কাটানোর পর আবারো নিউ ইয়র্ক কসমসে যোগ দেন। ট্রান্স-আটলান্টিক কাপ জয়ের মধ্য দিয়ে নিজের ক্লাব ক্যারিয়ারেরও ইতি টানেন এই কিংবদন্তী। “ওর মত সঙ্গী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সে ফুটবল মাঠে যতটা না শক্তি ব্যবহার করে তার চেয়ে বেশি ব্যবহার করে বুদ্ধিমত্তা।”-ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী এবং নিউ ইয়র্ক কসমসে খেলা ব্যাকেনবাওয়েরের সহযোগী পেলে।
১৯৮৪ সালে ফিফা অর্ডার অফ মেরিট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন ব্যাকেনবাওয়ের। ১৯৮৪ ইউরো কাপে জার্মানি খারাপ করার ফলে ইয়ুপ ডেরওয়ালের বদলে তাকে জার্মানির জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তার অধীনে পশ্চিম জার্মানি ফাইনালে উঠলেও ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যায়। ১৯৮৮ অলিম্পিকে পশ্চিম জার্মানিকে ফুটবলে প্রথম কোনো পদক এনে দেন তিনি। ১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে আবারো মুখোমুখি হয় তার অধীনস্থ পশ্চিম জার্মানি এবং আর্জেন্টিনা। তবে এবার আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৩য় বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় পশ্চিম জার্মানি। এর ফলে ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র ও প্রথমবার কোনো দলের অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করেন তিনি। বিশ্বকাপ জয়ের পর জার্মানি ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি।
এরপর ফ্রেঞ্চ ক্লাব অলিম্পিক ডি মার্শেই-এর ম্যানেজার পদে যোগ দেন তিনি। কিন্তু ৪ মাসের মধ্যেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। যদিও এরই মধ্যে মার্শেইয়ের ম্যানেজার হয়ে জিতে ফেলেছেন লীগ শিরোপা! ২ বছর পর ১৯৯৩ সালের ২৮শে ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৪ সালের ৩০শে জুন বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং জেতেন বুন্দেসলিগা শিরোপা। মাঝখানে ২ বছর ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করার পর আবারো মাত্র ২ মাসের জন্য বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হন তিনি এবং বায়ার্ন মিউনিখের ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র উয়েফা কাপ জেতেন। এর সাথে সাথে ম্যানেজিং ক্যারিয়ারও সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখের ইতিহাসে এমন কোনো শিরোপা নেই যাতে কাইসারের অবদান নেই।
১৯৯৮ সালে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশানের ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান তিনি। নব্বই দশকের শেষ দিকে ২০০৬ বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হিসেবে জার্মানিকে নির্বাচন করতে সফল হন তিনি। ২০০৬ বিশ্বকাপের আয়োজক কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে ফিফা প্রেসিডেনশিয়াল অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১৩ সালে উয়েফা প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন ব্যাকেনবাওয়ের।
ফুটবল ইতিহাসের সেরা সেন্টারব্যাক তিনি। ১৯৯৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ অল-টাইম টিম, ১৯৯৮ সালে ওয়ার্ল্ড-টিম অফ টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি, ২০০২ সালে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ড্রিম টিমসহ পেয়েছেন অনেক অ্যাওয়ার্ড। তিনি যে কয়টি বিশ্বকাপ খেলেছেন তার সবকয়টির টিম অফ দ্য টুর্নামেন্টে জায়গা পেয়েছেন। এছাড়া ২০০৪ সালে ঘোষণা করা সেরা ১০০ জন জীবিত খেলোয়াড়ের মধ্যেও তিনি আছেন। ফুটবলের বাইরেও তিনি অনেক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮২ সালে বাভারিয়ান অর্ডার অফ মেরিট, ১৯৮৬ সালে ক্রস অফ দ্য মেরিট অফ ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানি, ২০০৪ সালে অনারারি ডক্টর অফ ন্যাশনাল স্পোর্টস অ্যাকাডেমি এবং ২০০৬ সালে কমান্ডার’স ক্রস অফ মেরিট উল্লেখযোগ্য।
ফুটবলের প্রায় সবকিছুই অর্জন করে ফেলেছেন তিনি, সাথে জয় করেছেন ফুটবলপ্রেমীদের মন। খেলোয়াড়, ম্যানেজার, এমনকি প্রেসিডেন্ট হিসেবেও এত সাফল্য আর কেউই অর্জন করতে পারেনি। সারা জীবনই তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে। তার মত আদর্শ নেতা হয়ত আর কখনোই ফুটবল ইতিহাসে দেখা যাবে না।
শেষ করা যাক তাকে নিয়ে করা ২০০৪ ইউরো জয়ী কোচ অটো রেহাগেলের মন্তব্য নিয়ে। জার্মান ফুটবলে ফ্রাঞ্জ ব্যাকেনবাওয়েরের প্রভাব কতটা তা বোঝাতেই রেহাগেল মজা করে বলেছিলেন,
“ফ্রাঞ্জ যদি বলে ফুটবল একটা ঘনকাকৃতির জিনিস, কোনো গোলাকার বস্তু নয়, তাহলে জার্মানরা সেটাও বিশ্বাস করবে!“