ক্লাসের ফার্স্ট বয়ের কাছ থেকে শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবমসময় ভালো কিছু আশা করবে। একই ক্লাসের অন্য স্টুডেন্ট কোনোরকমে পাস করে গেলেও কেউ খুব বেশি মাথা ঘামায় না। কিন্তু ক্লাসের ফার্স্ট বয় যখন একটা এক্সামে ফার্স্ট ক্লাস না পেয়ে সেকেন্ড ক্লাস পায়, তখন সবাই তাকে চিন্তিত হয়ে পড়ে। ক্লাসের ফার্স্ট বয়ের প্রত্যেক বিষয়েই ভালো দখল থাকতে হবে। ক্লাসের অন্য স্টুডেন্টদের মতো নির্দিষ্ট কয়েক বিষয়ে জ্ঞান থাকলেও তার চলবে না। তার সব বিষয়েই যেন জ্ঞান থাকতে হবে- এমন একটি ধারণা সকলের। নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে জ্ঞান থাকলেও জীবনে উন্নতি করা যায়, কিন্তু তাকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা অনেকটাই আকাশছোঁয়া!
সাকিব আল হাসান হলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ফার্স্ট বয়। তার শুধুমাত্র এক বিভাগে ভালো খেললে চলবে না। তার কাছেও সবার প্রত্যাশা একটু বেশিই। বর্তমানে সাকিব আল হাসানের ফর্ম খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। কিছুদিন ধরে তিনি যেন আর তার ফর্মে নেই! যদি একজন ব্যাটসম্যান এক ম্যাচে খারাপ ব্যাটিং করে, তাহলে আরেকজন পুষিয়ে দিতে পারে। বোলারদের ক্ষেত্রেও তা। কিন্তু সাকিব আল হাসান যদি এক ম্যাচে স্বরূপে না থাকেন, তাহলে একইসাথে একজন বোলার এবং একজন ব্যাটসম্যানের অভাববোধ করে বাংলাদেশ। যদি শুধুমাত্র পরিসংখ্যান দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চাই তাহলে সাকিব আল হাসানের পক্ষে কথা বলার জন্য অনেক পরিসংখ্যান আছে।
সাকিব আল হাসান কতদিন ধরে ফর্মে নেই? এইতো বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচে তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। এবং ম্যাচে ৬ উইকেট শিকারও করেছেন। তার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপে ধ্বস নামান তিনি। ম্যাচ সেরা হওয়ার বড় দাবিদারও ছিলেন তিনি। তামিম ইকবাল ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সাকিব আল হাসান ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন।
এবার আসা যাক টি-টুয়েন্টিতে। বাংলাদেশ শেষ টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে সাকিব আল হাসান ব্যাট হাতে ৩৮ রান এবং বল হাতে তিন উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। তামিম ইকবাল ভালো ব্যাটিং করলে বাংলাদেশ ভালো সংগ্রহ পায়। মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাশরাফি বিন মর্তুজা ভালো বোলিং করলে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে অল্প রানে গুটিয়ে দেয়। কিন্তু সাকিব আল হাসান ভালো খেললে বাংলাদেশ একইসাথে ভালো সংগ্রহ করতে এবং প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে রাখতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ের পার্থক্য যে এখন তিনিই গড়ে দেন। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ে সাকিব আল হাসান ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলে বল হাতে পুষিয়ে দিতেন। তাই কখনওই তার পারফরমেন্স নিয়ে খুব একটা কথা উঠেনি। শুরু থেকেই তিনি ছিলেন বিশ্বসেরা।
গত দুই বছরে বাংলাদেশ ওডিআই ক্রিকেটে অনেক উন্নতি করেছে। জয় পেয়েছে বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে। কিন্তু এই সময়ে সাকিব আল হাসান মাত্র একটি ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন। তাও আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তার মানে এই না যে, সাকিব আল হাসান খারাপ খেলেছেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার অবদানের কারণেই বাংলাদেশ শেষপর্যন্ত ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনতে পেরেছে। বাংলাদেশ সর্বশেষ ওডিআই ম্যাচ জিতেছে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেখানে উল্লেখ থাকবে তামিম, সাব্বিরের ফিফটি এবং রিয়াদ, মুশফিকের ফিনিশিংয়ে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হ্যাঁ, ঠিক এমনটাই হয়েছে। এই জয়ে সাকিব আল হাসানের অবদান আর কী? শেষদিকে বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক হতে পারতো এমন দুই কিউই ব্যাটসম্যান কোরি অ্যান্ডারসন এবং মিচেল স্যান্টনারকে দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফেরান। এরপর ব্যাট হাতে ভুল সময়ে ভুল শট খেলে আউট হলেও ১৯টি মূল্যবান রান করে গিয়েছেন।
কয়েক বছর আগেও সাকিব আল হাসান ছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র ভরসা। তার সাথে যেদিন তামিম, মুশফিকরা জ্বলে উঠতো তখন বাংলাদেশ জয় পেতো। আর বর্তমানে সাকিব আল হাসানের সাথে আছে আরও বেশ কয়েকজন ম্যাচ উইনার। তামিম নিয়মিত ভালো খেলছেন। সাব্বির, সৌম্য, মুস্তাফিজের দিনে বাংলাদেশ যেকোনো দলকে উড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু সাকিব আল হাসানের ফর্মে থাকাটাও খুব জরুরি। তার ঠিকঠাক অংশগ্রহণ ছাড়া যে তীরে এসে তরী ডুববে!
এই বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ নিয়ে অনেকেরই নানান প্রশ্ন ছিল। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা পারবে তো কিউই পেসারদের সামনে দাঁড়াতে? সব কৌতূহল উড়িয়ে দিয়ে ওয়েলিংটন টেস্টে সাকিব আল হাসান খেললেন ২১৭ রানের ইনিংস। টেস্ট ক্রিকেটে এটিই বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনিই কাণ্ডজ্ঞানহীন শটে কোনো রান না করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। যার ফলে খুব ভালো অবস্থানে থেকেও বাংলাদেশকে শেষপর্যন্ত হারতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ গত বছর টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে ম্যাচ উইনারদের তালিকায় নাম থাকবে মেহেদি হাসান মিরাজ এবং তামিম ইকবালের নাম। থাকারই কথা। একজন ম্যাচে ১২ উইকেট শিকার করেছেন, আরেকজন হাঁকিয়েছেন শতক। এই ম্যাচেও সাকিবের অবদান না থাকলে হয়তো ফলাফলটা অন্যরকম হতে পারতো। দ্বিতীয় ইনিংসে মূল্যবান ৪১ রান করার পর ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে আসলে জো রুট এবং বেন স্টোকসের মতো বিপদজনক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে তিনিই ফেরান।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে। এরপরে সাকিব আল হাসান প্রায় ত্রিশটি একদিনের ম্যাচ খেললেও ম্যাচ সেরা মাত্র একটিতে। এই সময়ের মধ্যে সাকিব আল হাসান কিন্তু খুব একটা খারাপ খেলেননি। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে সাকিব আল হাসান ওডিআইতে ১৪বার ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন। কারণ তখন বাংলাদেশ ম্যাচ জিতলেই সাকিব থাকতেন তার নায়ক। বিশ্বকাপের পর জয়ের নায়কদের তালিকায় আরও কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানকে বাংলাদেশ হোয়াইটসওয়াশ করলো। সেখানে সাকিব আল হাসানের খুব বেশি দরকার পড়েনি। কিন্তু সাকিব ঠিকই দলের জয়ে অবদান রেখেছেন। তিন ম্যাচে তার ঝুলিতে পাঁচ উইকেট। দুই ইনিংস ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ৩১ এবং ৭* রানের ইনিংস খেলেছেন।
সিরিজের একমাত্র টি-টুয়েন্টিতে সাব্বির রহমান ৫১* রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু এই ম্যাচেও জয়ের কারিগর সাকিব আল হাসান। বল হাতে চার ওভারে মাত্র ১৭ রান খরচ করার পর খেললেন ৪১ বলে ৫৭* রানের অসাধারণ ইনিংস। পাকিস্তানের সিরিজের পর বাংলাদেশ সফরে আসে ভারত। মুস্তাফিজের বোলিং তোপে প্রথম ওডিআইতে জয় পায় বাংলাদেশ। সেখানে সাকিব আল হাসানের কন্ট্রিবিউশন কী? ব্যাট হাতে ৫২ রানের ইনিংস খেলার পর ভারতের অধিনায়ক ধোনির উইকেট সহ দুই উইকেট শিকার করেন তিনি। সিরিজের দ্বিতীয় ওডিআইতে ভারতের দেওয়া ২০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ৫১* রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান তিনি।
পরের সিরিজ অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সাকিব আল হাসান প্রথম ওডিআইতে ৪৮ রান করে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে আউট হলে বাংলাদেশ আর লড়াই করার মতো পুঁজি পায়নি। পরের ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলেও সাকিবের খুব একটা প্রয়োজন হয়নি। সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে ঠিকই দলের জয়ে অবদান রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই সেরা ব্যাটসম্যান হাশিম আমলা এবং ফাফ ডু প্লেসিসকে আউট করার পর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বেহারদিনকেও ফেরান তিনি। যার কারণে সাউথ আফ্রিকা স্কোর বোর্ডে বড় সংগ্রহ যোগ করতে পারেনি। পরিসংখ্যান দিয়ে সাকিব আল হাসানকে বিবেচনা করতে গেলে বেশিরভাগ সময় পরিসংখ্যান সাকিবের পক্ষেই কথা বলবে।
সাকিব আল হাসান ও তার অফ ফর্ম
এবার আসা যাক সাকিব আল হাসান ঠিক কতটা অফ ফর্মে আছেন। হ্যাঁ, সাকিব আল হাসান বর্তমানে নিজের সেরা ছন্দে নেই। টেস্ট ক্রিকেটে চলতি বছরে সাকিব আল হাসান ৫৫.০০ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৫৫০ রান। শুধুমাত্র চলতি বছরেই না। সাকিব আল হাসান টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত রান পাচ্ছেন গত চার-পাঁচ বছর ধরে। গত বছর বাংলাদেশ মাত্র দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলে। সেটা বাদ দিলে ২০১৫ সালে সাকিবের টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং গড় ৫৮.৮০। ২০১৪ সালে ব্যাটিং গড় ৪৭.১১, ২০১৩ সালে ৪৫.০০, ২০১২ সালে ৫১.২৫ এবং ২০১১ সালে ৫০.১১। তার মানে সাকিব আল হাসান ঠিকই প্রতি বছর রান পাচ্ছেন। তাহলে সাকিব আল হাসান নিজের সেরা ছন্দে নেই কেন বলা হলো! এই বছর টেস্ট ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান ৫৫০ রান করেছেন। তার দায়িত্ব কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ক্লাসের ফার্স্ট বয় তিনি। সব বিষয়েই সমান দখল থাকতে হবে। কিন্তু চলতি বছরে তিনি পাঁচটি টেস্ট ম্যাচে তিনি শিকার করেছেন মাত্র ১৭ উইকেট। ২০১৫ সালে তার ব্যাটিং গড় ৫৮.৮০! নিঃসন্দেহে খুবই ভালো। কিন্তু তিনি সেই বছর ছয় ইনিংস বল করে শিকার করেছেন মাত্র সাত উইকেট। প্রতি উইকেটের জন্য বল করেছেন ১০২টি! এবং গড়ে রান খরচ করেছেন ৭০.৫৭। সাকিব আল হাসান গত কয়েক বছর ধরেই টেস্ট ক্রিকেটে বল হাতে সেরা ছন্দে নেই।
টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে অবশ্য দলের প্রয়োজনে তাকে ফর্ম হারাতে হয়েছিল। কিন্তু তার মতো বিশ্বমানের ক্রিকেটারের কাছে শুধুমাত্র ব্যাটিং পজিশনের কারণে ফর্ম হারানো বড্ড বেমানান। সাকিব আল হাসান ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে তিন নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ব্যাট করেছেন। এই পজিশনে তিনি বেশ সফল ছিলেন। ১৬ ম্যাচে পাঁচটি ফিফটির সাহায্যে ৩৭.০৭ ব্যাটিং গড়ে করেছেন ৫১৯ রান। রান। ক্যারিয়ারের স্ট্রাইক রেইটের চেয়েও তিন নাম্বার পজিশনে তার স্ট্রাইক রেট বেশি। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যানের উপরেই ম্যাচের ফলাফল নির্ভর করে। সেখানে সাকিব আল হাসান বর্তমানে পাঁচে বা চারে ব্যাট করছেন। পাঁচে তিনি ১৫ ইনিংস ব্যাটিং করে ১০.৮০ ব্যাটিং গড় এবং ৯৪.১৮ স্ট্রাইক রেইটে মাত্র ১৬২ রান করেছেন।
সাকিব আল হাসান কতটা অফ ফর্মে আছেন সেটা তার ওডিআই ক্রিকেটের বোলিং পারফরমেন্স দেখেই আন্দাজ করা যায়। এ বছর এখন পর্যন্ত নয়টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তার মধ্যে সাত ইনিংস বল করে চার ইনিংসেই ছিলেন উইকেট শূন্য। ব্যাট হাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি অর্ধশতক ছাড়া তার ব্যাটিং গড় মাত্র ২৯.১৪। গত বছর ওডিআই ক্রিকেটে তার ব্যাটিং গড় আর কম ছিল। মাত্র ২৮.০০ গড়ে রান করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ে সাকিব আল হাসান কতটা ভূমিকা পালন করেন সেটা তার ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে।
সাকিব আল হাসান খেলেছেন এমন আটটি টেস্ট ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই আট ম্যাচে সাকিব আল হাসান ৪৮.৮০ ব্যাটিং গড়ে ৭৩২ রান করেছেন। বল হাতে ছিলেন আরো বেশি ভয়ংকর, এই আট ম্যাচে শিকার করেছেন ৪৬টি উইকেট। সাকিব আল হাসান শূন্য রানে আউট হয়েছেন এমন টেস্টে বাংলাদেশ কখনও ড্র পর্যন্ত করতে পারেনি। বাংলাদেশ ড্র করেছে এমন ম্যাচে সাকিবের ব্যাটিং গড় ৫২.২০। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে-বলে চড়েই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ১৭৫টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশ ৭৮টি ম্যাচে জয় পেয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ জয় পাওয়া ক্রিকেটার তিনিই।
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের ৭৭টি জয়ে দলে ছিলেন। সাকিব আল হাসান এই ৭৮ ম্যাচে ৪৮.৫৮ ব্যাটিং গড়ে ২,৪২৯ রান করেছেন এবং ১২০টি উইকেট শিকার করেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান খেলেছেন এমন ১৯টি ম্যাচে জয়ে পেয়েছে বাংলাদেশ। এই ১৯টি জয়ে সাকিবের ব্যাট হাতে অবদান ৩২.৭৬ ব্যাটিং গড়ে ৪২৬ রান এবং ৩১টি উইকেট।
বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ে সাকিব বড় একটা ভূমিকা পালন করেন। তাই সাকিব যত দ্রুত সম্ভব ব্যাটে বলে নিজের চেনা রূপে ফিরতে পারবেন দলের জন্য ততোটাই ভালো। সাকিব যদি ফর্মে থাকেন তাহলে বাংলাদেশের যেমন দ্বিগুণ লাভ হয়, তেমনি সাকিবের অফ ফর্মে বাংলাদেশ দ্বিগুণ পিছিয়ে যায়। সাকিবের ঠিকঠাক অংশগ্রহণ না থাকলে তীরে এসে তরী ডুবার ঘটনা ঘটবে।