Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

“পাওয়ার-হিটিং নিয়ে পাঁচ বছর কাজ করেছি”- ওয়াটসনের সাক্ষাৎকার | দ্বিতীয় পর্ব

দ্য ক্রিকেট মান্থলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে সাবেক অসি অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন কথা বলেছিলেন তার টেকনিক্যাল আর মানসিক দক্ষতার যোগ নিয়ে, আইপিএলের ফাইনালে তার অসাধারণ সেঞ্চুরি নিয়ে এবং সতীর্থ ফিল হিউজের মর্মান্তিক বিদায় নিয়ে।

দ্বিতীয় পর্বে তিনি কথা বলেছেন তার টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার-হিটিং, মাঝের ওভারে ব্যাটিং এবং রশিদ খানসহ অন্যান্য স্পিনারদের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের কৌশল নিয়ে।

টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে আসি। টি-টোয়েন্টিতে রান করার ক্ষেত্রে নিজস্ব পদ্ধতি খুঁজে পেতে আপনার কতদিন লেগেছিল, যখন আপনার মনে হয়েছে যে আপনার নিজের শক্তির জায়গা আছে, এবং আপনি চাইলে বোলারদের ওপর চড়াও হতে পারবেন?

আমি যখন প্রথম অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দলে এলাম, তখন আমার বয়স বিশ বছর। তখন আমি মূলত মাঝের ওভারে বল করতে পারা একজন ফাস্ট বোলার ছিলাম, যে পাশাপাশি সাত বা আট নম্বরে নেমে ব্যাট করতে পারতো। ঐ অস্ট্রেলিয়া দলে এই সুযোগটুকুই পেতাম আমি। তখনও টি২০ ক্রিকেটের চল শুরু হয়নি। তবে আমি জানতাম যে আমার পাওয়ার হিটিংয়ের উন্নতি করতে হবে, কেননা যেহেতু আমি অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে দলের লেজের দিকের ব্যাটসম্যান, এর চেয়ে বেশি সুযোগ আমি পাবো না। আমি টেকনিক্যালি বেশ ভালো ব্যাটার ছিলাম, মূলত চার দিনের ম্যাচের উপযোগী ব্যাটার, যে ওয়ানডে ক্রিকেটেও ভালো ব্যাট করতে পারতো, এবং বিশেষ করে বলকে জোরে আঘাত করতে পারতো। তবে হ্যাঁ, একেবারে নেমেই প্রথম বল থেকে মেরে বলকে গ্যালারিতে পাঠানোর মতো ব্যাটসম্যান আমি ছিলাম না।

এরপর আমি এটা নিয়ে কাজ শুরু করলাম। প্রথম দিকে আমি মূলত কাজ করতাম আমাদের ফিল্ডিং কোচ মাইক ইয়ংয়ের সাথে। মাইক ইয়ংয়ের আরেকটা পরিচয় ছিল, তিনি বেসবলের কোচিংও করাতেন। আমি মূলত আমার পাওয়ার হিটিংয়ের উন্নতির জন্য তার সাথে কাজ করতাম। যেহেতু তিনি বেসবলের কোচিংটাও করাতেন, তাই শরীরের ওজন স্থানান্তর এবং বলের পেছনে সর্বোচ্চ শক্তির প্রয়োগের ব্যাপারটা তিনি ভালো বুঝতেন। তখন ২০০২ সাল।

আমি পাঁচ বছর ধরে পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করলাম। আর আমার এই কাজের চূড়ান্ত প্রতিফলন দেখা যায় ২০০৭ বিশ্বকাপে। এর মাঝে, ২০০৪ সালে, হ্যাম্পশায়ারের হবে আমি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও খেলেছিলাম, তবে সেই অভিজ্ঞতা একেবারেই সুখকর নয়।

ওয়াটসনের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল দুটো শূন্য দিয়ে; Image Source: Getty Images

শুরুটা হয়েছিল দুটো শূন্য দিয়ে…

দুটো শূন্য, হ্যাঁ, ওইটাই। আমি এতটাই বাজে ছিলাম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আমি তিন নম্বরে ব্যাট করতাম, আর আমার মাইন্ডসেট ছিল ওয়ানডের শেষ পাঁচ ওভারে ব্যাটিংয়ের মতো। নতুন বলের মোকাবেলা করা, বা এর সুইং ও সিম মুভমেন্টের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া – এই ব্যাপারগুলো আমার আমার কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করত না। তাই টি-টোয়েন্টির ধাঁচের সাথে অভ্যস্থ হতে আমার বেশ সময় লেগে গিয়েছিল, তবে এরপরে আমি ধীরে ধীরে বিভিন্ন শট আয়ত্ত্বে আনতে শুরু করলাম। বুঝতে শুরু করলাম, কোন বোলারের বিরুদ্ধে আমি চড়াও হতে পারি, অথবা আমার পাওয়ার-হিটিংয়ের কৌশল আসলে কেমন হওয়া উচিত।

আমার পাওয়ার-হিটিংয়ের কৌশল ছিল আমার সাধারণ ব্যাটিংয়ের চেয়ে আলাদা। যখনই আমি কোনো বোলারকে আক্রমণের উপযোগী হিসেবে বেছে নিতাম, আমার টেকনিক পাল্টে যেত। বোলার যখনই দৌড় শুরু করতো, আমি বেসবলের সেট-আপে চলে যেতাম। ক্রিজে একটু পিছিয়ে দাঁড়াতাম, ব্যাটটাকে আরেকটু উঁচুতে তুলে ধরতাম, সামনের পা থেকে ভরটা তুলে নিতাম। এতে যখনই বলটা আমার কাছে এসে পৌঁছাত, আমি সর্বশক্তি দিয়ে তাকে আঘাত করতে পারতাম। তবে এজন্য আমাকে অবশ্যই সঠিকভাবে বোলার, কন্ডিশন, মাঠের দৈর্ঘ্য, এই বিষয়গুলো বেছে নিতে হতো।

এই বিষয়ের ফলে আমি পূর্বপরিকল্পিত শট খেলা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলাম। আমি শুধু ঠিকঠাক স্ট্যান্স নিতাম, কেননা আমি জানতাম, যদি বোলার অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ফুল লেন্থে বল ফেলে, আমি কাভার বা ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে পারব। যদি বোলার শর্ট বল করে, সেক্ষেত্রে আমি মারবো লেগ সাইডে। আমি জানতাম, বোলার যখনই চাপের মুখে ভুল করবেন, আমি ওকে বাউন্ডারির ওপারে আছড়ে ফেলতে পারবো। আমার কাজটা ছিল এই পাওয়ার-হিটিংকেই আরেকটু উন্নত করা। পাঁচ বছর ধরে আমি অনুশীলন করেছিলাম, ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর ২০০৮ এর আইপিএলের জন্য আমার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে নিয়েছিলাম।

আর হ্যাঁ, আমি নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করি, কেননা এই ব্যাপারগুলো আমি ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই আয়ত্তে নিতে পেরেছিলাম। আমি পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করার পরপরই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগ  শুরু হলো, আইপিএল শুরু হলো। এই প্রজন্মের ক্রিকেটাররা তাদের ক্যারিয়ারের শুরুতেই অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে নিজেদের স্কিল বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়। চারদিনের ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ে, কেননা তাদের হাতে অনেক বেশি স্কোরিং শট থাকে। তারা চাইলেই রিভার্স সুইপ বা সুইচ হিট খেলতে পারে। তাই এখনকার তরুণরা নিজেদের স্কোরিং জোন সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন।

আপনি বলছিলেন যে পাওয়ার হিটিংয়ের সময়ে আপনার টেকনিক পাল্টে যেত। এই ব্যাপারটা কি আপনার স্বাভাবিক টেকনিকে কোন প্রভাব ফেলতো?

না। দেখুন, আমি আমার টেকনিকে আহামরি কোনো পরিবর্তন আনতাম না। শুধু আমার শরীরটাকে একটু সরিয়ে বলের পেছনে সর্বোচ্চ মোমেন্টামকে নিয়ে যেতাম। প্রি-মুভমেন্ট ছাড়া আর সব মুভমেন্টই প্রায় একই ছিল, শুধু আমার পেছনের পায়ে ভর দিয়ে বলের পেছনে মোমেন্টামটা নিয়ে নিতাম।

তবে ফরম্যাটের ভিন্নতার সাথে সাথে, বিশেষ করে টেস্টের পরপরই টি-টোয়েন্টি খেলার ক্ষেত্রে মানিয়ে নিতে সমস্যা হতো আমার। এক-দুইটা ট্রেনিং সেশন না পেলে আমি আমার পাওয়ার-হিটিংটা ঠিকঠাক শুরু করতে পারতাম না। একেবারে আদর্শ পরিস্থিতিতে, এক ফরম্যাট থেকে আরেক ফরম্যাটে মানিয়ে নিতে তিনদিনের প্রস্তুতিই যথেষ্ট।

আমার জন্য ওয়ানডে ক্রিকেটের তুলনায় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন ছিল। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে ওপেনিং করাটা আমার কাছে সবসময়েই চ্যালেঞ্জিং। তবে শেষ পর্যন্ত আমি আমার চিন্তাকে এমনভাবে চালনা করেছি যে, আমি নিজেকে খুব বেশি পরিবর্তন না করে আমার মতো করে সব ফরম্যাটেই খেলতে পারব।

আপনার টি-টোয়েন্টি খেলার একট বিশেষত্ব হলো, মাঝের ওভারগুলোতে স্পিনের বিপক্ষে আপনার ব্যাটিং। আইপিএলে মাঝের ওভারে অন্তত ৫০০ রান করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্ট্রাইকরেটের দিক দিয়ে বীরেন্দর শেওয়াগ, ক্রিস গেইল এবং আন্দ্রে রাসেলের পরই আপনার অবস্থান। তবে আপনি সবসময়ে ওপেনিংই পছন্দ করেছেন, তাই তো?

হ্যাঁ, ওপেনিংই আমার প্রথম পছন্দ।

আইপিএলে মাঝের ওভারে যাদের রাজত্ব চলে; Image Source: ESPN Cricinfo

মাঝের ওভারের ব্যাটিংটা আপনি কীভাবে রপ্ত করলেন?

প্রচুর অনুশীলন আর নিজের শক্তির জায়গাটা বোঝার মাধ্যমে। দেখুন, আমি কখনোই এমন ব্যাটসম্যান ছিলাম না, যে নিজের পায়ের ব্যবহার করে বোলারের দিকে তেড়েফুঁড়ে যায়, কেননা আমার মনে হতো, সেক্ষেত্রে বোলার বল করার আগেই আমাকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হতো। যদি বল টার্ন না করে, সেক্ষেত্রে হয়তো আমি ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে বোলারকে চার্জ করতাম। বল বেশি টার্ন করলে আমার জন্য কাজটা কঠিন আর চ্যালেঞ্জিং হতো।

আমার স্ট্যান্স নিয়েও আমাকে কাজ করতে হয়েছে। বোলার যদি ফুল লেন্থে বল করেন, সেক্ষেত্রে বলকে লং অফ এবং লং অনের মাঝামাঝি জায়গা দিয়ে হাঁকানোর জন্য স্ট্যান্সটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই অঞ্চলে সাধারণত কোন ফিল্ডার থাকেন না, বলকে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে হাঁকাতে পারলেই বাউন্ডারি পাওয়া প্রায় নিশ্চিত।

অনুশীলনের আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, পুল শট খেলার জন্য ক্রিজের ডিপ অংশকে ব্যবহার করা। এই ব্যাপারটা বোলারের ওপর চাপ তৈরি করে, তাই আমি চেষ্টা করতাম একটু শর্ট বলের বিরুদ্ধে দ্রুত পজিশন নিয়ে বলের পেছনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে। আমি জানতাম, দুটো শট যখন আমার আয়ত্তে চলে আসবে, বোলারের জন্য লেন্থে ভুল করার আর কোন সুযোগ থাকবে না। অন্যথায় আমি খুব দ্রুত রান তুলে নেব। আর যদি মাঠটা একটু ছোট হয়, সেক্ষেত্রে খুব ভালো টাইমিং না হলেও বলের ঠিকানা হবে বাউন্ডারির ওপারে।

যেটা বললাম, বোলারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য আমাকে দুটো শট খেলার অনুশীলন করতে হতো। এই ব্যাপারটাই আমাকে প্রথম আইপিএলে সাহায্য করে। আমি রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতাম। আমাদের দলে গ্রায়েম স্মিথ আর স্বপ্নীল আস্নোধকার ছিলেন, ওপেনিংয়ের জন্য তারাই ছিলেন সেরা পছন্দ। আর আমি যেহেতু মাঝের ওভারে বাউন্ডারি মারতে পারতাম, তাই স্পিনের মোকাবেলা করার জন্য শেন ওয়ার্ন আমাকে মিডল অর্ডারে নামাতেন। রাজস্থানের পিচটা খুবই ব্যাটিংবান্ধব ছিল, বল ব্যাটে আসতো সুন্দরভাবে।

আইপিএলে শেন ওয়ার্ন আমার ওপর যে ভরসাটা রেখেছিলেন, সেটিই আমাকে আমার শক্তির জায়গাগুলো বাজিয়ে দেখতে উদ্বুদ্ধ করেছিল। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে, নতুন বলে অথবা মাঝের ওভারে অথবা ডেথ ওভারে বল করা, ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে ওপেনিং করা, অথবা নম্বর চারে, প্রতিটা বিষয়ই আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছিলাম। স্পিনের বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে পারবো, নাকি উল্টো থামিয়ে দেবো রানের চাকাকেই, সেই ব্যাপারটাও পরিষ্কার হয়ে যায় তখন।

পুল শট খেলছেন ওয়াটসন; Image Source: Getty Images

স্পিনের বিপক্ষে আপনাকে মাঝেমধ্যে পেছনের হাঁটু ভেঙে পুল শট খেলতে দেখা গেছে। এর কারণ কি স্বাভাবিক লেন্থের চেয়ে ফুল লেন্থের বলগুলো থেকে বাউন্ডারি আদায় করা? বিভিন্ন লেন্থের বল থেকে বাউন্ডারি পাওয়ার এই ব্যাপারটা নিয়ে আপনি কতটুকু কাজ করেছিলেন?

হ্যাঁ, সেটাই। স্পিনারদের বিরুদ্ধে পুল শট খেলাটা পাওয়ার-হিটিংয়েরই অংশ। আমার পেছনের হাঁটু ভাঁজ করার অর্থ হচ্ছে আমি বলের পেছনে সর্বশক্তি নিয়ে যেতে পারছি। একই সাথে আমার ভরটাও আমাকে পেছনে হেলিয়ে দিচ্ছে না। পুরো ব্যাপারটাকে মূলত পেসারদের বিরুদ্ধে পাওয়ার-হিটিংয়ের একটা উপজাত বলা যেতে পারে। পেসারদের বিরুদ্ধে যেভাবে পুল শট খেলি, স্পিনারদের বিরুদ্ধেও সেভাবেই খেলছি, শুধু শরীরটা একটু বেশি নিচু হচ্ছে।

এটা অবশ্যই পূর্বনির্ধারিত কোনো শট না। ব্যাপারটা এমন যে আমি আগে থেকেই বলের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করছি, এবং যদি বোলার জোরের ওপরে আর্ম বল করেন, আমি যেন খুব দ্রুত পজিশন নিতে পারি এবং বলের নিচে জোরে আঘাত করতে পারি। এই শটটা খেলতে গিয়ে আমার পেছনের পা মাটি স্পর্শ করে, কিন্তু আমার শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকায় আমি সজোরে শট খেলতে পারি।

রশিদ খানের বিরুদ্ধে আপনার ভালো খেলার রহস্য কী? আপনি ১১ ইনিংসে রশিদের মুখোমুখি হলেও কখনোই আউট হননি, পাশাপাশি তার ৭৩ বলে সংগ্রহ করেছেন ১০৮ রান। এর কারণ কী?

রশিদের বিরুদ্ধে সময় নিয়ে একটা কার্যকরী পরিকল্পনা তৈরি করেছিলাম আমি, কেননা যখনই আমরা তার মুখোমুখি হতাম, আমি বাদে প্রায় প্রত্যেকেই তার কাছে পর্যদুস্ত হতাম। প্রথম কয়েক মুখোমুখি লড়াইয়ে তিনি আমাকে আউট করতে পারেননি, আমিও তার বলে খুব বেশি রান করতে পারিনি। তিনি স্বাভাবিকের তুলনায় একটু জোরে বল করেন, বাতাসে তার হাতটা একটু দ্রুত ঘোরে। এই কারণে তার বৈচিত্র্যগুলো, বিশেষত তার প্রধান অস্ত্র গুগলি, ধরতে পারা কঠিন। তাই আমি তার বিরুদ্ধে একটু বেশি রক্ষণাত্মক ছিলাম, তাকে উইকেট দিয়ে আসতে চাইছিলাম না।

ওয়াটসন-রশিদ দ্বৈরথ; Image Source: ESPN Cricinfo

এরপরই আমি একটা কার্যকরী পরিকল্পনা খুঁজে বের করি। আমি তার গুগলিতে পরাস্ত না হওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে অফ স্ট্যাম্পে গার্ড নেওয়া শুরু করি। যদি তিনি সাধারণত লেগ স্পিনটাই করেন, যেটা টার্ন করে আমার থেকে দূরে চলে যাবে, স্লিপে ফিল্ডার থাকুক বা না থাকুক, আমার বিট হতে কোনো আপত্তি ছিল না। এটাই ছিল আমার প্রথম পরিকল্পনা।

সময়ের সাথে সাথে আমি আমার দ্বিতীয় পরিকল্পনাটাও পেয়ে যাই। আমি বুঝলাম, যদি প্রথম তিন ওভারের মধ্যে রশিদ আমার উইকেট তুলতে না পারেন, চতুর্থ ওভারে তিনি রান আটকানোর বদলে উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে তিনি ফুল লেন্থে বোলিং শুরু করেন, তাই আমি যদি ঠিকমতো পজিশন নিতে পারি, আমি স্ট্রেইট ড্রাইভ বা স্লগ সুইপ খেলতে পারবো। এরপর থেকে আমি যতবারই তাঁর মুখোমুখি হয়েছি, বেশিরভাগ সময়ে আমি তাঁর তৃতীয় ওভারের শেষ দিকে বা চতুর্থ ওভারেই সিংহভাগ রান তুলেছি।

আর রশিদের বিরুদ্ধে খেলতে খেলতে একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি, তিনি শর্ট বল দেন না বললেই চলে, আর যদি দেন, গতি বেশি থাকায় ঐ বলকে সীমানাছাড়া করা যথেষ্ট কঠিন। তিনি ফুল লেন্থে বল করলেই বরং আমার জন্য খেলা সহজ।

[সাক্ষাৎকারের তৃতীয় ও শেষ পর্বে ওয়াটসন কথা বলেছেন ম্যাচ-আপ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আক্রমণ আর রক্ষণের সমন্বয় এবং তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটার থেকে একজন পুরোদস্তর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারে রূপান্তরিত হওয়া প্রসঙ্গে।]

This article is in Bangla language. It is the translation of an interview of Shane Watson, the famous former Aussie allrounder. This is the second part, where Watson talked about his power hitting in T20 cricket, batting approach in middle overs, and the technique of facing spin bowlers, especially Rashid Khan.

Necessary Source: The Cricket Monthly
Featured Image: Getty Images

Related Articles