ক্রিকেটের মূল আকর্ষণ ব্যাটসম্যান আর বোলারের লড়াই। কখনো ব্যাটসম্যান বোলারের কাছে পরাস্ত হন, আবার কখনো বোলার ব্যাটসম্যানের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন। ২২ গজের এই লড়াইয়ে ক্রিকেটীয় দক্ষতার পাশাপাশি ক্রিকেট বলও সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্রিকেট বলের আকৃতি-প্রকৃতিই অনেক সময় ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে।
টেস্ট ক্রিকেট খেলা হয় লাল বলে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি হয় সাদা বলে। তবে দিবারাত্রির টেস্ট ক্রিকেটে গোলাপী বল দিয়েও খেলা হয়। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তিন কোম্পানির ক্রিকেট বল ব্যবহার করা হয়। সেগুলো হচ্ছে- ইংল্যান্ডের ডিউক বল, ভারতের এসজি বল আর অস্ট্রেলিয়ার কোকাবুরা বল। এই তিনটির মধ্যে কোকাবুরা বলই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। সবচেয়ে বড় কোম্পানিও তারাই। ক্রিকেট বলের পাশাপাশি হকি বল, ক্রিকেট ব্যাট ও অন্যান্য ক্রীড়া সরঞ্জামও বানিয়ে থাকে তারা।
শুরুর গল্প
কোকাবুরার জনক আলফ্রেড গ্রেস থম্পসন ১৮৬৩ সালে কেমব্রিজশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাবার কাছ থেকে ঘোড়ার জিন বানানো শেখেন। ১৮৯০ সালে ব্রাইটনে তিনি একটি দোকান দেন, যেখানে চামড়াজাত পণ্য বিক্রি করা হতো। এর নাম ছিল এজি থম্পসন প্রোপার্টি লিমিটেড। দোকানের পেছনে কারখানায় ঘোড়ার জিন তৈরি করতেন। খেলাধুলার প্রতি তার বিশেষ ঝোঁক ছিল। চামড়ার ব্যবসা যখন অনেক বড় হলো, তখন ১৯০০ সালে তিনি ক্রিকেট বল তৈরি করা শুরু করেন। কোম্পানির নতুন নাম দেন কোকাবুরা। অস্ট্রেলিয়ান মাছরাঙ্গাকে কোকাবুরা বলে ডাকা হয়। থম্পসনের একটি পোষা মাছরাঙ্গা ছিল। এর নামানুসারে কোম্পানির নাম দেন কোকাবুরা।
১৯১২ সালে থম্পসন কারখানাকে আরো বড় করেন। ১৯৩৮ সালে তার কোম্পানি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পা দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে দিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোকাবুরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেসবল ও সফটবল তৈরি করে। ১৯৪৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড যুদ্ধ পরবর্তী প্রথম অ্যাশেজ সিরিজের জন্য ক্রিকেট বল প্রস্তুতকারকদের কাছে বলের নমুনা চায়। সেখান থেকে কোকাবুরা বল নির্বাচিত হয়। সেই থেকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা কোকাবুরা লাল বল ব্যবহার করে আসছে। বর্তমানে তিনটি দেশ বাদে টেস্ট খেলুড়ে সব দেশই কোকাবুরা বল ব্যবহার করে। ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলা হয় এসজি বল দিয়ে। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের দেশে ডিউক বল ব্যবহার করে। তবে দিবারাত্রির টেস্ট ক্রিকেটে কোকাবুরার গোলাপী বল দিয়েই খেলা হয়।
সাদা বলের যুগ
লাল বলের ক্রিকেটে ডিউক ও এসজি বল ভাগ বসালেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কোকাবুরার একক আধিপত্য রয়েছে। কারণ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাদা বলের আগমন তাদের হাত ধরেই। ১৯৭৭ সালে ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট বা ডব্লিউএসসি দিয়ে ক্রিকেটে বিপ্লব নিয়ে আসেন। দিবা-রাত্রির ম্যাচ, রঙিন পোশাক ক্রিকেটের আধুনিকায়ন করে। ডব্লিউএসসি থেকে কোকাবুরাকে ফরমায়েশ দেয়া হয় রাতের বেলা ফ্লাডলাইটের নিচে খেলার উপযোগী বল বানাতে।
তখন তিন রঙের বল দিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়। তিন রঙের মধ্যে ছিল কমলা, হলুদ ও সাদা। পরীক্ষায় দেখা যায়, সাদা বলই কৃত্রিম আলোয় ভালো দেখা যায়। তখন সাদা বলই ব্যবহার করা শুরু হয়। ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট মাত্র দুই বছর চললেও ক্রিকেটে এর প্রভাব থেকে যায় ভালোভাবেই। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের সাথে বিদ্রোহ করে ডব্লিউএসসি টুর্নামেন্ট চললেও বোর্ডের পক্ষ থেকে কোকাবুরার সাথে চুক্তিভঙ্গ করা হয়নি। বরং ১৯৭৮ সালে ওয়ার্ল্ড সিরিজের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজেদের দেশে রঙিন পোশাক ও সাদা বলে ওয়ানডে খেলা শুরু করে। এমনকি পাশের দেশ নিউজিল্যান্ডেও তখন কোকাবুরার সাদা বল চলে যায়।
১৯৭৫ সাল থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে শুরু হয় বিশ্বকাপ। প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ হয় ইংল্যান্ডে। সেখানে সবগুলোই ডিউক বলে খেলা হয়। এমনকি ১৯৮৭ সালে উপমহাদেশে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপটিও লাল ডিউক বল দিয়েই হয়। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ দিয়ে প্রথমবারের মতো সাদা বল দিয়ে বিশ্বকাপ খেলা হয় এবং বলটিও থাকে কোকাবুরার তৈরি। মাঝে ’৯৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ বাদ দিলে পরবর্তী সব বিশ্বকাপেই খেলা হয়েছে কোকাবুরার সাদা বল দিয়ে।
কোকাবুরার পাশাপাশি ডিউকও সাদা বল বানানো শুরু করে। তাদের সাদা বল দিয়েই ’৯৯ এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলা হয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে এসজিও সাদা বল তৈরি শুরু করে। কিন্তু জনপ্রিয় হয় কোকাবুরার বলই। ২০০৩ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসির সব টুর্নামেন্টেই কোকাবুরার সাদা বল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও কোকাবুরার সাদা বল দিয়ে খেলা হয়।
যেহেতু আইসিসি কোকাবুরাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে, দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তাই কোকাবুরার সাদা বলই ব্যবহৃত হয়। যদিও আইসিসির দাবি, কোকাবুরা তাদের অফিসিয়াল বল নয়। টুর্নামেন্টের স্বাগতিক দেশ যে বল খেলে অভ্যস্ত সেটা দেখেই নাকি বল ঠিক করা হয়। ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপও হবে কোকাবুরার সাদা বল দিয়েই। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ও বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও কোকাবুরা বল ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতেও কোকাবুরার বলই ব্যবহৃত হয়।
বল তৈরির প্রক্রিয়া
কোকাবুরার কারখানা মেলবোর্নের মুরাবিনে অবস্থিত। লাল আর সাদা বল প্রায় একইভাবে তৈরি করা হয়। এদের পার্থক্য থাকে বাইরের চামড়ার আবরণে। লাল বলের ক্ষেত্রে সাধারণত চামড়াকে আগেই রঙ করে চামড়া পাকা করার স্থান থেকে বলের কারখানায় পাঠানো হয়। অন্যদিকে সাদা বলের ক্ষেত্রে তা করা হয় না। কারণ চামড়ার রঙ সাদার কাছাকাছিই থাকে।
সব বলেরই থাকে কয়েকটি স্তর। সবচেয়ে ভেতরের মূল অংশটি হচ্ছে গোলাকার কর্ক। এর বাইরে মোটা সুতা দিয়ে পাঁচটি স্তরে কুন্ডলী পাকানো হয়। তার বাইরে থাকে বলের চামড়া। প্রথমে চারটি চামড়া পরিমাপমতো নেয়া হয়। তারপর দুটি করে চামড়াকে জোড়া লাগিয়ে অর্ধগোলক আকৃতি দেয়া হয়। তারপর চামড়ায় ছয়টি সারিতে সেলাই দেয়া হয়। প্রতি সারিতে থাকে প্রায় ৮০টি করে সেলাই। বাইরের চার সারির সেলাই দেয়া হয় মেশিনে। ভেতরের দুটি সারির সেলাই দেয়া হয় হাতে।
সেলাইপর্ব শেষ হলে এতে নাইট্রোসেলুলোজ স্প্রে করা হয় বল চকচক করার জন্য। সাদা বলের জন্য সাদা রঞ্জক পদার্থ দেয়া হয়। সবশেষে এতে কোকাবুরার ব্র্যান্ডের নাম খোদাই করা হয়। বর্তমানে উপমহাদেশেও কোকাবুরার কারখানা রয়েছে। কোকাবুরা বল তৈরির প্রক্রিয়া আরো ভালোভাবে জানতে এই ভিডিওটি দেখুন।
অন্যান্য বলের সাথে পার্থক্য
- কোকাবুরার বলের চামড়ায় যে সেলাইগুলো থাকে সেগুলোর শুধুমাত্র ভেতরের দুই সারিতে হাতে সেলাই করা হয়। বাকি সারিগুলো মেশিনে করায় ’৮০ এবং ’৯০ দশক থেকে বলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা সেগুলো পূরণ করতে পারছে। অন্যদিকে ডিউক বল ও এসজি বল ঐতিহ্য অনুযায়ী ছয়টি সারিই হাতে সেলাই করে থাকে।
- বিশ্বজুড়ে যত কোকাবুরা বল আছে সব একইরকম। অন্যদিকে ডিউক বল অঞ্চলভেদে ভিন্নরকম হয়ে থাকে। ইংল্যান্ডে ডিউক বলে চর্বি লাগানো হয় একে জলরোধী করার জন্য। কিন্তু এর কারণে বলের চামড়া নরম হয়ে যায়, যা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে খেলার অনুপযোগী। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজে ডিউক বলগুলোতে চর্বির পরিবর্তে ইউরেথেন পলিশ দেয়া হয়। অন্যদিকে এসজি বল পুরোটাই ভারত কেন্দ্রিক।
- কোকাবুরা বল প্রথম ২০-৩০ ওভারে ডিউক বা এসজির তুলনায় বেশি সুইং করে। কিন্তু এরপর এটি নরম হয়ে যায় আর সিমও নষ্ট হয়ে যায়। তখন বল আর সুইং করে না। অন্যদিকে ডিউক বল বাইরের বার্ণিশের কারণে প্রথম কয়েক ওভার সুইং করে না। যখন চকচকে ভাব চলে যায় তখনই সুইং করা শুরু করে। মোট সময়ের হিসেবে ডিউক বল কোকাবুরা বা এসজির তুলনায় বেশি সময় ধরে সুইং করে।
- কোকাবুরার তুলনায় ডিউক আর এসজির সিম স্পিনাররা ভালো গ্রিপ করতে পারেন।
- রিভার্স সুইংয়ের ক্ষেত্রেও কোকাবুরার চেয়ে ডিউক বলই এগিয়ে।
সমালোচনা
কোকাবুরার সমর্থক যেমন আছে প্রচুর, তেমনি এর সমালোচনাও কম নয়। সবেচেয়ে বেশি সমালোচনা ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ইনিংসে দুই প্রান্তে দুই নতুন বল দিয়ে খেলা নিয়ে। ২০০৭ সালের আগে থেকেই ব্যাটসম্যানরা কোকাবুরা বল নিয়ে অভিযোগ করে আসছিলেন। সাদা বলের রঙ ৫০ ওভারের আগেই পরিবর্তিত হয়ে যেত। ব্যাটসম্যানরা বল ঠিকমতো দেখতে পারতেন না। তাই তখন ৩৪ ওভারের পর বল পরিবর্তন করা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু পরিবর্তন হলেও বলের সমস্যাটা থেকেই গিয়েছিল।
২০১১ সাল থেকে আইসিসির নতুন নিয়মে দুই প্রান্তে দুই নতুন বল দিয়ে খেলা হয়ে আসছে। এর কারণে এক ইনিংসে একটি বল সর্বোচ্চ ২৫ ওভার ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কোনো বলই ফাস্ট বোলাররা রিভার্স সুইং পাওয়ার মতো পুরনো হচ্ছে না। স্পিনারদের জন্যও কঠিন হয়ে গেছে যারা পুরনো বলে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। পুরো ইনিংস জুড়ে বল শক্ত থাকায় ইনিংসের শেষ দিকেও ব্যাটসম্যানরা অনেক রান তুলতে পারছেন। এর আগে এই সময়ে বোলাররা রিভার্স সুইং পেতেন।
বোলারদের জন্য এটি কতটা হুমকি নিয়ে এসেছে তা পরিসংখ্যান দেখেই বোঝা যায়। ২০১১-১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রতি ইনিংসে ৩০০ বা তার বেশি রান ছিল ১২৮ বার। ২০১৯ বিশ্বকাপ এখনো আসেনি। কিন্তু ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে ইতিমধ্যে ১৫৩ বার ৩০০ বা ততোধিক স্কোর হয়ে গেছে। বোলারদের অসহায়ত্ব দেখেই আইসিসির নিয়মের কড়া সমালোচনা করছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা।
গত বছর ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে সিরিজে রানবন্যা দেখে শচীন টেন্ডুলকার টুইটারে লিখেন-
“দুটি নতুন বল ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য একটি দুর্যোগ ছাড়া কিছুই না। কারণ এতে বলকে রিভার্স সুইং করার জন্য পুরনো হওয়ার সময় দেয়া হয় না। আমরা অনেক দিন ধরেই রিভার্স সুইং দেখতে পাচ্ছি না, যা ডেথ ওভারগুলোর একটি অংশ হয়ে ছিল।”
সাবেক পাকিস্তানি পেসার ওয়াকার ইউনিসও টেন্ডুলকারের সাথে একমত পোষণ করে টুইট করেন। ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিও এই নিয়মকে বোলারদের জন্য নির্মম মনে করেন। এছাড়া মাহেন্দ্র সিং ধোনি, মাহেলা জয়াবর্ধনে, ডেল স্টেইনও এই নিয়মের সমালোচনা করেছেন।
তবে বোলারদের জন্য এটি অভিশাপ হলেও কোকাবুরার ব্যবসা করে দিয়েছে দ্বিগুণ। অন্যদিকে ক্রিকেট বোর্ডগুলোর খরচও বাড়িয়ে দিয়েছে। কোকাবুরা টার্ফ বলের দাম ১২০-১৮০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৮৭-১৩১ মার্কিন ডলার)। বলের সংখ্যাভেদে দামও পরিবর্তন হয়। অন্যদিকে ডিউক বলের দাম ৫০ পাউন্ড (৬৫ মার্কিন ডলার) এবং এসজি টেস্ট বলের দাম ১,৮০০ রুপি (২৬ মার্কিন ডলার)। ডিউক বলের দাম তুলনামূলক কম হওয়ার পাশাপাশি পুরো ৫০ ওভার খেলার উপযোগী হওয়ার পরও আইসিসি কোকাবুরাকে বেছে নেয়। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেসার জেসন গিলেস্পি এটি নিয়ে বলেন,
“তারা (আইসিসি) ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দুই প্রান্তে দুটি নতুন বল ব্যবহার করছে কোকাবুরা বল ৫০ ওভার পর্যন্ত টিকতে পারছে না দেখে। বলের অক্ষমতার কারণে নীতিনির্ধারকদের খেলার নিয়মই পাল্টে ফেলাটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
এ বিষয়ে কোকাবুরার যোগাযোগ বিষয়ক ম্যানেজার শ্যানন গিল বলেন,
“কোকাবুরা ধারাবাহিকভাবে বলের মান উন্নয়নের জন্য কাজ করে থাকে। আমরা গত ৩-৪ বছর ধরে কোকাবুরা বলের উন্নতির জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের বলের সুইং, সিম এবং স্পিন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। কিন্তু আমরা ব্যাটিং সহায়কের পাশাপাশি এগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রাখার কাজ করছি। আর আমরা কাজ করে যাচ্ছি দেখেই কোকাবুরা বল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয়।”
শেষকথা
বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়াতে, কোকাবুরার একচেটিয়া রাজত্ব থাকলেও সম্প্রতি ডিউক বল সেখানে তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। ২০১৬-১৯ সাল পর্যন্ত তারা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের সাথে একটি চুক্তি করে। এই চুক্তিতে ঘরোয়া শেফিল্ড শিল্ড ক্রিকেটে এই সময়ের প্রতি মৌসুমের অর্ধেক সময় খেলা হয় ডিউক বল দিয়ে। বোর্ড থেকে অবশ্য বলা হয়, এটি ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ সিরিজের প্রস্তুতির জন্য করা হয়েছে। আইসিসিও এখন সহযোগী দেশদের নিয়ে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগে ডিউক বল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে এক বল দিয়েই পুরো ৫০ ওভার খেলা হবে। তবে যে বল দিয়েই খেলা হোক, ক্রিকেটপ্রেমীরা চাইবেন ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলাররাও যেন সহযোগিতা পান।