Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ম্যানসিটি বনাম রিয়াল মাদ্রিদ: চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের ট্যাকটিক্যাল ব্যবচ্ছেদ

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ইতিহাদে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি এবং রিয়াল মাদ্রিদ৷ সাত গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে ম্যানসিটির কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সিটিজেনদের ক্রমাগত আক্রমণাত্মক ফুটবল বারবারই কোণঠাসা করেছে রিয়াল মাদ্রিদের রক্ষণভাগকে। কিন্তু দিনশেষে রিয়ালের খেলোয়াড়দের ম্যাচের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হার না মেনে লড়াই করার মানসিকতা দুই দলের মধ্যে ব্যবধান রেখেছে কেবলমাত্র এক গোলের।

ম্যাচের শুরু থেকেই সিটি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে রিয়াল মাদ্রিদকে চাপে ফেলতে থাকে। ম্যাচের বয়স যখন ১১ মিনিট তখনই ম্যানসিটি ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু রিয়াদ মাহরেজ এবং ফিল ফোডেনের ক্রমাগত ফিনিশিং ব্যর্থতা এবং করিম বেনজেমার আরেকটি দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচের শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত রাখতে পেরেছে।

Image credit: Getty Images

 

এ ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি এবং রিয়াল মাদ্রিদ উভয় দলই ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলতে নামে। দলের নিয়মিত ফুলব্যাক ওয়াকারের ইনজুরি এবং ক্যান্সেলোর নিষেধাজ্ঞাজনিত সমস্যার কারণে এই দুই পজিশনে জন স্টোনস এবং জিনচেনকোকে খেলতে দেখা যায়। অপরদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাদ্রিদের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো ছিলেন অনুপস্থিত, যার পরিবর্তে টনি ক্রুসকেই এদিন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের ভূমিকায় খেলিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। নিজের সহজাত পজিশনের বাইরে খেলায় পুরো ম্যাচেই ক্রুস খুব একটা ভালো খেলতে পারেননি।

Image credit: UEFA

ম্যানসিটির দুই ফুলব্যাক স্টোনস এবং জিনচেঙ্কো কেউই প্রথাগত ফুলব্যাক না হওয়ায় সিটির ডিফেন্স থেকে বিল্ডআপের সময় তারা দু’জনই টাচলাইনের কাছাকাছি থাকার পরিবর্তে মাঠের মাঝামাঝি অংশে চলে আসছিলেন।

Image credit: Full Match Sports

অফ দ্য বলে মাদ্রিদ ৪-৫-১ ফর্মেশনে প্রেস করছিল, কিন্তু মাদ্রিদের আক্রমণভাগের কাউকেই প্রেসিংয়ে খুব একটা অংশ নিতে দেখা যায়নি, যে কারণে ম্যানসিটির দুই সেন্টারব্যাক এবং পিভট রদ্রি মিলে কোনোরকম বাধা ছাড়াই বল সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছিলেন। ফলে তখন তাদের দুই মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা এবং বার্নাডো সিলভা প্রতিপক্ষ বক্সের কাছাকাছি চলে যাচ্ছিলেন। তখন ম্যানসিটির ফর্মেশন ৪-৩-৩ থেকে ২-৩-৪-১ এ পরিবর্তিত হচ্ছিল।

Image credit: Full Match Sports

অন্যদিকে রিয়াল মাদ্রিদের বিল্ডআপের সময় ক্রুস তার পজিশন ছেড়ে কিছুটা নিচে নেমে দুই সেন্টারব্যাকের জন্য বাড়তি পাসিং অপশন তৈরির চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সিটির দুই মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা এবং বার্নাডো সিলভা তাকে কড়াভাবে মার্ক করে রাখায় মাদ্রিদের দুই সেন্টারব্যাক কিংবা গোলরক্ষক কোর্তোয়া কারো পক্ষেই ক্রুসের কাছে পাস বাড়ানো সম্ভব হচ্ছিল না। ক্রুস মাঝেমধ্যে পাস রিসিভ করার জন্য একেবারেই নিজেদের বক্সে চলে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু সেখানেও প্রতিপক্ষের প্রেসিংয়ের মুখে তিনি বল পায়ে রেখে বিল্ডআপে অংশ নিতে পারছিলেন না। এসময় মাদ্রিদের অপর দুই মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ এবং ভালভার্দে অনেকটা উপরে হাফলাইনের কাছাকাছি অবস্থান করছিলেন।

ফাইনাল থার্ডে ম্যানসিটির আক্রমণের সময় রিয়াল মাদ্রিদ সরাসরি প্রেসিংয়ে অংশ না নিয়ে তাদের ৪-৫-১ ডিফেন্সিভ ফর্মেশন বজায় রাখতে চেষ্টা করছিল। এতে করে ম্যানসিটি খুব সহজে কোনোরকম বাধা ছাড়াই নিজেদের মধ্যে বলের আদান-প্রদান করে আক্রমণে উঠে আসার সুযোগ পাচ্ছিল।

Image credit: Full Match Sports

উপরের উদাহরণটি ম্যানসিটির প্রথম গোলের সময়কার। মাঠের ডানপাশে মাহরেজের পায়ে বল থাকার সময়ই মাদ্রিদ তাদের রক্ষণ এবং মিডফিল্ডের মধ্যকার ‘বিটুইন দ্য লাইনের’ ব্যবধান কমিয়ে আনে যাতে করে মাঝখান দিয়ে সিটি আক্রমণে উঠার সুযোগ না পায়। কিন্তু মাহরেজ ভেতরে কাটইন করার সময় বার্নাডো সিলভা আড়াআড়ি রান নিয়ে মাদ্রিদের লেফ্টব্যাক মেন্ডির মনোযোগ তার দিকে সড়িয়ে নেয়, ফলে একপ্রকার বাধা ছাড়াই মাহরেজ বক্সের বাইরে চলে আসে।

Image credit: Full Match Sports

গ্যাব্রিয়েল হেসুস সামনের দিকে এসে মাদ্রিদের সেন্টারব্যাক মিলিতাওকে নিজের দিকে টেনে আনে। একইসময়ে ডি ব্রুইনা বক্সের বাইরে থেকে মিলিতাওয়ের ব্লাইন্ড স্পট বরাবর রান নেয়, মাহরেজের ইনসুইং ক্রস থেকে গোলপোস্টের সামনের ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে ডি ব্রুইনা খুব সহজেই জালে জড়িয়ে দেন।

মাদ্রিদের দুই ফুলব্যাকই ম্যানসিটির দুই ওয়াইড উইঙ্গারকে আঁটসাঁটভাবে মার্ক করায় তাদের পক্ষে ড্রিবলিং করে ভেতরে ঢুকে পড়া সম্ভব হচ্ছিল না। এই সমস্যা সমাধানে সিটির দুই মিডফিল্ডার ডি ব্রুইনা এবং বার্নাডো সিলভা এগিয়ে আসেন।

Image credit: Full Match Sports

 

ডি ব্রুইনা এবং বার্নাডো সিলভা দু’জনই মাদ্রিদের বক্সের বাইরের হাফস্পেসে জায়গা নিতে শুরু করেন; ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই মাদ্রিদের দুই ফুলব্যাক কার্ভাহাল এবং মেন্ডিকে হাফস্পেসের দিকে চেপে আসতে হয়। এতে করে মাহরেজ এবং ফোডেনের সামনে অনেকটা ফাঁকা জায়গা তৈরী হয়, যার মাধ্যমে তারা কাটইন করে ভেতরে ঢুকে পড়ার সুযোগ পান।

Image credit: Full Match Sports

 

ফাইনাল থার্ডে আক্রমণের সময় সিটির দুই ফুলব্যাক একেবারেই মাঠের মাঝের অংশে চেপে বল ডিস্ট্রিবিউট করছিলেন, যার ফলে মাদ্রিদের মিডফিল্ডারদের পক্ষে সিটির তিনজনের এই পিভট লাইনের থেকে বল কেড়ে নিয়ে কাউন্টারে যাওয়াটা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। একইসময়ে মাদ্রিদের দুই উইঙ্গার ভিনিসিয়াস এবং রদ্রিগো সিটির দুই ফুলব্যাককে প্রেস করতে সেন্টার এরিয়ায় চেপে আসেন, ফলে তখন দুইপাশের উইংয়ে মাদ্রিদের ফুলব্যাকের সাথে সিটির উইঙ্গার এবং মিডফিল্ডারের ২ ভার্সেস ১ অবস্থার সৃষ্টি  হয়।

ম্যানসিটির ডানপাশের আক্রমণ গতানুগতিক ধারায় হলেও মাঠের বামপাশে জিনচেনকো-ড্রি ব্রুইন-ফোডেন মিলে রোদ্রিগো-কার্ভাহালের বিরুদ্ধে ওভারলোড তৈরী করে আক্রমণে যাচ্ছিলেন। সাধারণত জিনচেঙ্কো হাফস্পেস এবং টাচলাইনের মাঝামাঝি, ডি ব্রুইনা হাফস্পেসে এবং ফোডেন একেবারে টাচলাইন ঘেঁষে অবস্থান করেছেন, যে কারণে বামপাশে তাদের মধ্যকার পাসিং অপশন বন্ধ করতে মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা একপ্রকার খাবি খেয়েছে। 

Image credit: Full Match Sports

সিটির দ্বিতীয় গোলটাও এসেছে বামপাশে ওভারলোড তৈরী করার মাধ্যমে। জিনচেঙ্কো তার পজিশন ছেড়ে মাঝমাঠে চলে গিয়ে ক্রুসকে নিজের দিকে টেনে নেন। এসময় ডি ব্রুইনা তার পজিশন ছেড়ে বল রিসিভ করতে কিছুটা নিচে নামায় কার্ভাহাল তাকে মার্ক করে উপরে উঠে আসেন, ফলে মাদ্রিদের ডানপাশ একেবারেই খালি হয়ে পড়ে, ফোডেন মাদ্রিদের রক্ষণভাগের পিছনের ফাঁকা জায়গা ধরে রান নেন এবং লাপোর্তে তার উদ্দেশ্যে লং পাস বাড়ান।

Image credit: Full Match Sports

ফোডেন বল পায়ে টাচলাইনের কাছাকাছে গেলে তাকে প্রেস করতে মিলিতাও তার পজিশন ছেড়ে টাচলাইনে চলে যান। ফোডেন তখন কিছুটা নিচে ফাঁকায় দাড়ানো ডি ব্রুইনাকে ব্যাকপাস দেন। ড্রি ব্রুইনার আশেপাশে মাদ্রিদের কোনো ফুটবলার না থাকায় তিনি সহজেই বলের দখল নিয়ে টার্ন করে ডান পায়ে বক্সে ইনসুইং ক্রস বাড়ান এবং সেখান থেকে জেসুস ম্যানসিটিকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন।

Image credit: Full Match Sports

তবে বামপাশ দিয়ে সিটির আক্রমণের প্যাটার্নে পরিবর্তনও লক্ষ্য করা গেছে কখনো কখনো। উপরের উদাহরণটি খেয়াল করা যাক। এখানে ডি ব্রুইনা হাফস্পেসে অবস্থান করার পরিবর্তে টাচলাইন ধরে রান নিচ্ছেন এবং ফোডেন হাফস্পেসে অবস্থান করছেন। ফলে জিনচেঙ্কো থেকে বল রিসিভ করে ফোডেন এক স্পর্শেই ঘুরে গিয়ে ডি ব্রুইনা বরাবর আউটসাইড পাস দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, যেটা ডি ব্রুইনা হাফস্পেসে থাকলে সম্ভব হচ্ছিল না — কারণ পাসগুলো বাম পায়ে আসলেও ডি ব্রুইনা তার শক্তিশালী ডান পা দিয়ে তার উল্টোপাশে ফোডেনকে পাস দিচ্ছিলেন, যাতে কিছুটা বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হচ্ছিল। কিন্তু ফোডেনের এক্ষেত্রে কোনো বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়নি, এবং খুব দ্রুত সময়েই নিজেদের মধ্যে ওয়ান-টু করে বক্সে ঢুকে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছেন। তবে এই ধরনের পরিস্থিতি গত ম্যাচে খুব কমই দেখা গিয়েছে। 

Image credit: Full Match Sports

 

বিল্ডআপের সময় ক্রুসকে বিচ্ছিন্ন করে রাখায় মদ্রিচ মাঝেমধ্যে তার পজিশন ছেড়ে নিচে নেমে আসছিলেন সেন্টারব্যাকদের সামনে বাড়তি পাসিং অপশন তৈরি করার জন্য। 

Image credit: Full Match Sports

তবে এই কৌশল খুব একটা কার্যকরী না হওয়ায় মদ্রিচ বেশিরভাগ সময়ই হাফলাইনের কাছাকাছি ম্যানসিটির মিডফিল্ডারদের পেছনের ফাঁকা জায়গায় অবস্থান করেছেন। এতে করে তিনি বল রিসিভ করে টার্ন করে পুনরায় পাস দেওয়ার জন্য কিছুটা বাড়তি সময় পেয়েছেন। তবে মাঝেমধ্যেই রুবেন ডিয়াস তার পজিশন ছেড়ে উপরে উঠে এসে মদ্রিচকে প্রেস করতে শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে আশেপাশে পাসিং অপশন না থাকায় বেশিরভাগ সময়ই মদ্রিচকে বলের দখল হারাতে হয়েছে। 

Image credit: Full Match Sports

ম্যানসিটির নিয়মিত রাইটব্যাক ওয়াকার না থাকায় সবচেয়ে চিন্তা ছিল ভিনিসিয়াসকে নিয়ে। কারণ স্টোনস ওয়াকারের মতো অতটা ক্ষিপ্রগতির নন, যে কারণে ভিনিসিয়াসের গতির কাছে খাবি খাওয়ার বেশ ভালো একটা সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছিল।

এই সমস্যার সমাধানও গার্দিওলার কাছে প্রস্তুত ছিল। যখনই ভিনিসিয়াসের পায়ে বল গিয়েছে, প্রায় প্রতিবারই স্টোনসের পাশাপাশি মাহরেজ কিংবা বার্নাডো সিলভা মিলে ভিনিকে ২-ভার্সাস-১ অবস্থানে ফেলেছেন। এ সময় স্টোনস চেষ্টা করেছেন ভিনির সামনের ফাঁকা জায়গাকে নিরাপদ রাখতে, অপরজন আগ্রাসীভাবে প্রেস করে ভিনি থেকে বল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

Image credit: Full Match Sports

রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণের সময় ভিনি বামপাশ থেকে মাঝ বরাবর সরে গিয়ে স্টোনসকে নিজের দিকে টেনে আনছিলেন৷ এতে করে বামপাশে মেন্ডির সামনে অনেকটা ফাঁকা জায়গা উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ক্রুস তার সহজাত বল ডিস্ট্রিবিউশনে ব্যর্থ হওয়ায় মাদ্রিদ এভাবে বল সুইচ করে আক্রমণে যাওয়ার খুব একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

স্টোনস ইনভার্টেড রাইটব্যাকের ভূমিকায় খেললেও তিনি বল পায়ে আক্রমণ গড়ে দেওয়ার কাজে খুব একটা সাহায্য করতে পারছিলেন না। এ দৃশ্য পুরোটাই পাল্টে যায় রাইটব্যাক পজিশনে ফার্নান্দিনহো মাঠে নামার পর। রাইটব্যাকের ভূমিকায় খেললেও ফার্নান্দিনহো মূলত একজন মিডফিল্ডার, আর তিনি খেলায় তার প্রমাণও রেখেছেন। ওভারল্যাপ করে উপরে ওঠার পরিবর্তে মাঝমাঠ থেকে বেশ কয়েকটা দুর্দান্ত লং বল বাড়িয়ে সরাসরি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন।

মাদ্রিদের রক্ষণভাগের ফাঁকা জায়গায় হেসুসকে লক্ষ্য করে ফার্নান্দিনহোর লং বল; Image credit: Full Match Sports

 

তবে ফার্নান্দিনহো নামার পর বিপত্তি বাধে অন্য জায়গায়। ফার্নান্দিনহোর গতি স্টোনসের তুলনায় অনেকটাই কম, তিনি ভালো আক্রমণ তৈরি করতে পারলেও দ্রুত সময়ে নিচে নেমে বল পুনরোদ্ধারে খুব একটা পটু নন। এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন ভিনিসিয়াস।

Image credit: Full Match Sports

মাদ্রিদের দ্বিতীয় গোলের উদাহরণটি খেয়াল করা যাক। এসময় ম্যানসিটির সব ডিফেন্ডারই হাইলাইনে থাকায় রক্ষণভাগের পেছনের পুরো জায়গাটাই উন্মুক্ত হয়ে ছিল। মেন্ডি টাচলাইন এরিয়ায় ভিনিসিয়াস বরাবর পাস বাড়ান। ফার্নান্দিনহো সেই পাসে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। এই জায়গাতেই তিনি সবচেয়ে বড় ভুলটা করে বসলেন। ভিনিসিয়াসের ‘বডি ডজ’-এ তিনি বলের লাইন ধরতে পারেননি। ফলে ভিনির সামনে পুরো রক্ষণভাগ উন্মুক্ত হয়ে যায়। সেখান থেকে ভিনিসিয়াস ব্যবধান কমানোর সুযোগ পান।

Image credit: Full Match Sports

দ্বিতীয়ার্ধে আনচেলত্তি রদ্রিগোর পরিবর্তে কামাভিঙ্গাকে মাঠে নামান। তখন ভালভার্দে তার পজিশন ছেড়ে উইঙ্গারের ভূমিকায় খেলতে শুরু করেন। সিটির আক্রমণের সময় তিনি রক্ষণে নেমে রাইটব্যাকের ভূমিকা পালন করেছেন; ফলে রাইটব্যাক কার্ভাহাল তখন হাফস্পেসে ডি ব্রুইনা-জিনচেঙ্কোর রানগুলো আটকে দিতে পেরেছেন, যে কারণে পরবর্তীতে ম্যানসিটির আক্রমণের ধার কিছুটা কমে গিয়েছিল।

ফুটবলভক্তরা গতকাল দুর্দান্ত একটি ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছেন। ম্যানসিটির কাছে সুযোগ ছিল নিজেদের মাঠেই বড় ব্যবধানে জিতে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখার। কিন্তু কিছু বাজে মিস এবং ডিফেন্ডারদের ভুলের কারণে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাই আগামী বুধবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হতে যাওয়া সেকেন্ড লেগের উপরই নির্ভর করছে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়ের দিকে ম্যানসিটি আরেক পা বাড়াবে, নাকি আরেকবার শিরোপাজয়ের উল্লাসে মাতবে সর্বোচ্চসংখ্যকবার এই শিরোপা নিজের দখলে নেওয়া রিয়াল মাদ্রিদ!  

This article is in Bangla language. It is about the match analysis between Manchester City and Real Madrid.

Feature Image: laitimes.com

Background Image: Getty Images

Related Articles