একজন ফুটবলারের ক্যারিয়ার কত বছরের হতে পারে? সিনিয়র দলে অভিষেকের পর গড়ে আনুমানিক ২০ বছর? এটা ক্ষেত্রবিশেষে অনেকের বেশি, আবার অনেকের কম হয়। প্রতি বছর নতুন নতুন দলের হয়ে খেললে সাকুল্যে কতগুলো ক্লাবের হয়ে খেলা যাবে বলে মনে হয়? ঠিক ধরেছেন, ২০টি।
তবে প্রোফেশনাল ক্যারিয়ারে কেউ এতবার দল পরিবর্তন করতে চান না আসলে। কিন্তু এমন অনেক প্লেয়ার আছেন, যারা ক্যারিয়ারে খেলেছেন বিশের অধিক দলের হয়ে। এই সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ইব্রাহিমোভিচ ইতঃমধ্যে খেলে ফেলেছেন ৯টি দলের হয়ে। তবে এই ইব্রার চেয়ে অন্যান্য পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকলেও দল পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন অনেকেই। তাদের কয়েকজন সম্পর্কেই জানব আজ।
ড্রিউ ব্রাউটন
ইংলিশ প্লেয়ার ড্রিউ ব্রাউটন সেদেশের ১ম থেকে অষ্টম, প্রতিটি বিভাগেই খেলেছেন। তার ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ২১টি দলের হয়ে খেলেন। তবে এর মধ্যে ১২টি দলেই তার খেলা ম্যাচের সংখ্যা ১০-এর কম। তার দৌড়াদৌড়ি পুরোটাই ইংল্যান্ডেই সীমাবদ্ধ ছিল। একটা বিষয়ে তিনি এগিয়ে, সেটা হলো: যেসব ক্লাবের স্কোয়াডে ছিলেন, প্রতিটি ক্লাবের হয়েই তার মাঠে নামা হয়।
ফ্র্যাঙ্ক ওর্দিংটন
ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকায় খেলা এই ব্রিটিশ ফরোয়ার্ড ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৪টি ক্লাবে খেলেন। ওর্দিংটনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল হাডার্সফিল্ড টাউন ক্লাবে ১৯৬৬ সালে। তার ক্যারিয়ার শুরুর দিকের সময়গুলো দেখলে অবাকই লাগে। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন হাডার্সফিল্ডে। এসময় খেলেন ১৭১টি ম্যাচ। এরপর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন লেস্টার সিটিতে, সেখানে খেলেন ২১০টি ম্যাচ। প্রথম ১১ বছর খেলেন এই দু’টি দলে। এরপরের ১৩ বছর খেলেন ২২টি দলে। ক্যারিয়ারে শেষ ৩ বছর খেলেছেন ৭টি দলের হয়ে। ক্যারিয়ারের শেষ দল হ্যালিফেক্স টাউন ছাড়া বাকি সব দলের হয়েই তার মাঠে নামা হয়।
লাৎজ ফানেনস্টিল
লাৎজ ফানেনস্টিল ছিলেন প্রথম খেলোয়াড়, যিনি ছয়টি মহাদেশেই প্রফেশনাল ফুটবল খেলেছেন। এ সময়ে তিনি খেলেন হয় ২৫টি ক্লাবের হয়ে। ১৯৯০ সালে জার্মান ক্লাব ভিলশোফেনের হয়ে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৯১ সালে যোগ দেন জার্মান ক্লাব ‘Bad Kötzting’-এ। এখানেই তার খেলা হয় ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৬৮টি ম্যাচ।
এ সময় তার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছিল জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, তার পক্ষে কখনো বায়ার্নের প্রথম পছন্দের গোলরক্ষক হওয়া সম্ভব নয়। তাই বায়ার্নের সাথে চুক্তিতে রাজি হননি। এই এক নম্বর কিপার হতে গিয়েই তিনি পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করে ফেলেন।
১৯৯৩ সালে চলে যান ইউএসএর ক্লাব পেনাংয়ে। সেখান থেকে ১৯৯৪ সালে আসেন ইংল্যান্ডের ক্লাব উইম্বলডনে। পরের বছর যোগ দেন নটিংহ্যাম ফরেস্টে। ফরেস্টে থাকাকালীন সময়েই লোনে যান দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাব ওরল্যান্ডো পাইরেটসে। ইংল্যান্ড থেকে এরপর সিঙ্গাপুর হয়ে আসেন ফিনল্যান্ডে। কিছু সময়ের জন্য যোগ দিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরের ক্লাব সেমবাওয়াং রেঞ্জার্সে। ১৯৯৭ সালে তিনি ছিলেন ফিনল্যান্ডের টিপিভি ও হাকা দলে। ১৯৯৮ সালে জার্মানি ফিরে যোগ দেন ‘SV Wacker Burghausen’-য়ে। এরপর আবার সিঙ্গাপুর, যোগ দেন ‘গেল্যাং ইউনাইটেড’-এ। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬টি ম্যাচ খেলেন এই ক্লাবে।
২০০১ সালের এপ্রিলে যোগ দেন নিউ জিল্যান্ডের ক্লাব ডানেডিন টেকনিক্যালে। দু’মাস পরই ধারে ফেরেন ইংল্যান্ডে, এবার ব্র্যাডফোর্ড ক্লাবে। এরপর আবারও লোনে হাডার্সফিল্ডে। ২০০২ সালের জুনে আবার লোনে আসেন জার্মানিতে, এএসভি চ্যাম ক্লাবে । ২০০৩ সালে লোনে আসেন নরওয়ের ‘বেরাম’ ক্লাবে। লোন পিরিয়ডের ব্রেকে তাকে বারবার উড়াল দিতে হতো নিউ জিল্যান্ডে। ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়ার মাঝে থাকা বিশাল সমুদ্র তার এই ভ্রমণের কাছে ছোট হয়ে যায়।
২০০৪ সালে স্থায়ী চুক্তিতে যোগ দেন কানাডার ‘ক্যালগারি মুসট্যাংস’ ক্লাবে। কিন্তু নিউ জিল্যান্ডের মায়া কাটাতে পারেননি। পরপর দুই বছর ধারে খেলেন সেখানকার ‘ওটাগো ইউনাইটেড’-এ।
চুক্তিশেষে ২০০৬ সালে যোগ দেন আলবেনিয়ার ক্লাব ভ্লাজনিয়াতে। পরের বছর যান আর্মেনিয়ার ক্লাব বেনটোনিট আইয়েভানে। একমাস পরই ফেরেন নরওয়ের বেরাম ক্লাবে। সেখানেও এক মাস থেকে এরপর চলে যান কানাডার ভ্যাঙ্কোভার ক্লাবে। এরপর ছয় মাস করে থাকেন ব্রাজিলের আইচিঙ্গার, নরওয়ের ফ্লয় ও ম্যাংলেরাদ স্টার ক্লাবে।
২০০৯ সালে এসে যোগ দেন নামিবিয়ার র্যাম্বলার্স ক্লাবে। ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি খেলেন এই ক্লাবের হয়েই। পরবর্তীতে এখানেই শেষ করেন তার প্রোফেশনাল ফুটবল ক্যারিয়ার।
জেফারসন লুইস
ডমিনিকার জাতীয় দলে মাত্র একটি ম্যাচ খেলা এই ফরোয়ার্ড তার ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেন ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিভাগের ৩৮টি ক্লাবে। ঠিকই পড়েছেন বৈকি, সংখ্যাটা ৩৮-ই। ইংল্যান্ডের বাইরে হয়তো তার যাওয়া হয়নি, কিন্তু ইংল্যান্ডে বিভিন্ন অঞ্চলে তার বিচরণ ছিল বেশ। রিসবোরো, অক্সফোর্ড ইউনাইটেড, চেশাম ইউনাইটেড – এই তিনটি ক্লাব ছাড়া আর কোনো ক্লাবেই তার সেভাবে জমিয়ে উঠতে পারেননি। এছাড়া ১৫টির মতো ক্লাব আছে, যেখানে খেলতে পারেননি ১০টি ম্যাচও। তবে ৩৮টি ক্লাবেই হয়েই কমপক্ষে ১টি ম্যাচে তার মাঠে নামা হয়।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, তার নাকি নিজেকে অভিশপ্ত মনে হয়। তিনি এখনো খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন চুক্তিতে আছেন সেন্ট আলবানস সিটির সাথে। ৪০টি ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার মাইলফলকের খুব কাছাকাছি আছেন তিনি। ফুটবলের ‘জার্নিম্যানদের জার্নিম্যান’ বলা হয় তাকে।
সেবাস্তিয়ান আব্রু
১১টি দেশে ২৭টি ক্লাবের হয়ে খেলা এই উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৯৫ সালে স্থানীয় ক্লাব ডিফেন্সরের হয়ে। পরবর্তী বছরই সেখান থেকে যোগ দেন আর্জেন্টাইন ক্লাব সান লরেঞ্জোতে। সেখান থেকে ১৯৯৮ সালে পাড়ি জমান স্প্যানিশ ক্লাব দেপোর্তিভো লা করুনায়। কিন্তু সেখানে ২০০৪ সাল পর্যন্ত থাকলেও খেলেছিলেন মাত্র ১৫টি ম্যাচে। পুরো সময়টাই তার কেটে যায় বিভিন্ন ক্লাবে ধারে খেলে। ১৯৯৮ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিও, ১৯৯৯তে মেক্সিকান ইউএজি টেকোস, ২০০০ সালে আবার সান লরেঞ্জো, ২০০১-এ উরুগুইয়ান ন্যাশিওনাল ও মেক্সিকান ক্রুজ আজুল, ২০০৩ এ মেক্সিকান ক্লাব ‘আমেইরিকা’ এবং আবার টেকোস। এই দেপোর্তিভোতে থাকাকালীনই তার আরো ৫টি ক্লাবের হয়ে খেলা হয়ে যায়।
২০০৪ সালে এরপর স্থায়ীভাবেই দেপোর্তিভো ছাড়েন, আবার ফেরেন ন্যাশিওনালে। কিন্তু এক বছর যেতেই যোগ দেন মেক্সিকান ক্লাব ডোরাডোস দে সিনালোয়ায়। পরের বছর খেলেন মনটেরি ও সান লুইজের হয়ে। এরপরের বছর টাইগ্রেস ইউএএনএল এর হয়ে। সেখানে একমাত্র বিদেশি প্লেয়ার হিসেবে ‘ক্লাসিকো রেজিও’তে দুই দলের বিপক্ষেই গোল করার রেকর্ড করেন। ২০০৭ সালেই ধারে যোগ দেন আর্জেন্টিনার অন্যতম সেরা ক্লাব রিভারপ্লেটে। সেখানে খেলেন ১৭ ম্যাচে। ২০০৮ সালে যান ইসরায়েলের বেইটার জেরুজালেম ক্লাবে। কিন্তু ১ ম্যাচও খেলা হয়নি। ফিরে আসেন আবার রিভারপ্লেটে, কিন্তু দলে আর চান্স পাননি। ২০০৯ সালে রিয়াল সোসিয়েদাদে লোনে আসেন। এরপর ছয় মাস পার করেন গ্রিসের অ্যারিস সালোনিকিতে।
২০১০ সালে স্থায়ী চুক্তি করেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগোর সাথে। ক্যারিয়ারের একটানা সর্বোচ্চ দুই বছর থাকেন এখানেই, খেলেন ৯৩টি ম্যাচে। ২০১২ সালে লোনে যোগ দেন ব্রাজিলিয়ান ফিগুইরেন্সে। ২০১৩ সালে ফিরে আসেন ন্যাশিওনালে। কিন্তু এসেই লোনে যেতে হয় আর্জেন্টিনার রোজারিও সেন্ট্রালে। ২০১৫তে লোনে যোগ দেন ইকুয়েডরের ক্লাব অকাসে।
দৌড়াদৌড়ি থামেনি ৪০ বছর বয়সে এসেও। ২০১৬ সালে প্যারাগুয়ের সল ডি আমেইরিকা ও এল সালভাদরের সান্তা টেকলায় খেলেন। এরপর ২০১৭ সালে ব্রাজিলের বাংগু, উরুগুয়ের সেন্ট্রাল এস্পানিওল ও চিলির পুয়ের্তো মন্টের হয়ে খেলেন। সেখান থেকে ২০১৮ সালে চিলির অডাক্স ইটালিয়ানো ও পরে মাগায়ানেসের হয়ে খেলেন। ২০১৯ সালে যোগ দেন ব্রাজিলের রিও ব্রাংকো ক্লাবে। ওই বছরেই ফিরে আসেন উরুগুয়েতে, বোস্টন রিভার ক্লাবে। বর্তমানে এই দলে তাকে প্লেয়ার ও কোচ দুই ভূমিকাতেই দেখা যাচ্ছে। দলের হয়ে তিনি নামেন ১১৩ নম্বর জার্সি পরে।
ট্রেভর বেঞ্জামিন
ক্যামব্রিজ ইউনাইটেডের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা এই জ্যামাইকান ফরোয়ার্ড ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেন ২৯টি দলের হয়ে। একদম শুরুর পাঁচ বছর ছিলেন ক্যামব্রিজে, সেখানে তাদের হয়ে খেলেন ১২৩টি ম্যাচে। এরপর ২০০০ সালে যোগ দেন লেস্টার সিটিতে। তবে ২০০৫ সাল পর্যন্ত লেস্টারে থাকলেও এ সময় তার খেলা হয় ৮১টি ম্যাচে। এই সময়কালেই তিনি লোনে গিয়েছিলেন ৭টি ক্লাবে। সামান্য সময়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন জর্জের হয়ে খেলার হিসাব বাদ দিলে তার পুরো ক্যারিয়ারই ছিল ইংল্যান্ডে।
রিচার্ড পাক্যুয়েত
৩৭ বছর বয়সী এই ডমিনিকান ফুটবলারের ক্লাব ক্যারিয়ার পুরোটাই ইংল্যান্ডে। তার ক্লাব সংখ্যা ও বয়স বেশ কাছাকাছি, রীতিমতো পাল্লা দিয়ে ‘মাত্র’ ৩২টি ক্লাবে খেলেছেন এখন পর্যন্ত। ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ বাদে প্রথম সারির বাকি সব বিভাগেই খেলেছেন তিনি। ক্যারিয়ার এখনও শেষ হয়নি তার। যে গতিতে এগোচ্ছেন, তাতে ক্যারিয়ারশেষে তার ক্লাবসংখ্যা ৪০ ছাড়াতেই পারে!
জন বারিজ
জন বারিজ একজন ব্রিটিশ গোলরক্ষক। তিনি তার পুরো ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২৯টি দলের হয়ে।
১৯৬৯ সালে ওয়ার্কিংটনের হয়ে অভিষেকের পর ক্যারিয়ার শেষ করেছেন ১৯৯৭ সালে ব্লিথ স্পার্টানসের হয়ে। ১৯৭১ সালে লোনে যোগ দেন ব্ল্যাকপুলে। এরপর স্থায়ী চুক্তিতে সেখানে থাকেন ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত। এই ব্ল্যাকপুলের হয়েই খেলেন ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ১৩১টি ম্যাচ। সেখান থেকে যোগ দেন অ্যাস্টন ভিলায়। ১৯৭৮ সালে সংক্ষিপ্ত লোন ডিলে যান সাউদেন্ড ইউনাইটেডে। ওখানে কিছুদিন থেকে স্থায়ী চুক্তি করেন ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে। ১৯৮০ সালে ক্রিস্টাল প্যালেস ছেড়ে যোগ দেন কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সে। এরপরে ১৯৮০ সালে আসেন উলভারহ্যাম্পটনে। সেখানে ২ বছর কাটিয়ে সংক্ষিপ্ত সময়ের লোনে যোগ দেন ডার্বি কাউন্টিতে। ১৯৮৪ সালে এরপর আসেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ২ বছর করে ছিলেন সাউদাম্পটন, নিউক্যাসল ও হাইবারনিয়ানে। এই ৩ দলের প্রতিটির হয়েই মাঠে নামেন ৬০-এর বেশি ম্যাচে।
এরপর তার ক্যারিয়ার হয়ে যায় মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা।
১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ এই ৪ বছর তিনি ছিলেন ১৪টি ক্লাবের স্কোয়াডে। এরা হলো স্কারবোরো, লিংকন সিটি, এনফিল্ড, অ্যাবারডিন, নিউক্যাসল, ডানফার্মলিন অ্যাথলেটিক, ডাম্বারটন, ফালকার্ক, ম্যানচেস্টার সিটি, নটস কাউন্টি, উইটন অ্যালবিয়ন, ডার্লিংটন, গ্রিমসবি টাউন, গেটসহেড, নর্দাম্পটন টাউন, কুইন অফ দ্য সাউথ, পারফ্লিট এবং ব্লিথ স্পার্টান। এই ক্লাবগুলোর অধিকাংশের হয়েই তার মাঠে নামা হয়নি। তিনি ছিলেন দলের ইমার্জেন্সি গোলরক্ষক। ম্যানসিটির হয়ে মাঠে নেমেছিলেন, আর তাতেই হয়ে যায় রেকর্ড। প্রিমিয়ার লিগে খেলা সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড়ের রেকর্ডটি করে নেন নিজের।
১৯৯৭ সালে অবসরের পর যোগ দেন কোচিংয়ে। বর্তমানে ভারতীয় দল কেরালা ব্লাস্টার্সের একাডেমির গোলকিপিং কোচ তিনি।
এবং আরো ক’জন
উল্লেখিত ফুটবলাররা বাদে আরো কয়েকজন আছেন, কিন্তু তারা ২০-এর নিচে আটকা পড়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাজিলের রিভালদো, তিনি তার পুরো ক্যারিয়ারে ১৫টি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। তারই স্বদেশী এবং ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রোমারিও খেলেছেন ১০টি ক্লাবে। এছাড়া ইংল্যান্ডের মার্কাস বেন্ট ১৪টি, অ্যান্ডি কোল ১৩টি, পিটার ক্রাউচ ১০টি ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেন পুরো ক্যারিয়ারে। ইতালির ক্রিস্টিয়ান ভেইরি খেলেন ১৩টি ক্লাবে।
ফরাসি খেলোয়াড় নিকোলাস আনেলকা ১২টি ক্লাবের হয়ে খেলেন। এত ফুটবল পর্যটকের মাঝে তিনি অনন্য হয়ে আছেন পিএসজি, আর্সেনাল, চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাসের মতো জায়ান্ট ক্লাবগুলোয় খেলে। বলা যায়, জার্নিম্যানদের মধ্যে ক্লাবগুলোর দিক থেকে তার প্রোফাইলই সবচেয়ে এগিয়ে। তার কাছাকাছি রাখা যায় ক্যামেরুনের স্যামুয়েল ইতোকে। ২২ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি খেলেন ১৩টি ক্লাবের হয়ে, যাদের মধ্যে আছে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, চেলসির মতো ক্লাব। এছাড়া আইরিশ প্লেয়ার রবি কীন ১০টি ক্লাবে ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রেডি আদু খেলেন ১৪টি ক্লাবের হয়ে।
ফুটবল ইতিহাসে এমন জার্নিম্যান আরো আছেন অনেকেই। বর্তমানে খেলছেন, এমন অনেক খেলোয়াড়ই আছেন, ক্যারিয়ারশেষে যাদের দলের সংখ্যা দেখা যাবে দশের উপরে চলে গেছে। বর্তমানকার ‘প্রোফেশনাল’ ফুটবলবিশ্বে অবশ্য এমন বৈচিত্র্য যে নতুন কিছু নয়, সেটা তো বুঝতে পারছেন!