নোভাক জোকোভিচের ‘অস্ট্রেলিয়া সফর’

এই মাসে ক্রীড়া জগতের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব বোধহয় সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরু হওয়ার মাত্র একদিন আগে আদালতের শুনানিতে তাকে নিষিদ্ধ করার শাস্তি বহাল রেখেছে অস্ট্রেলিয়ার আদালত, নোভাকও ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ফলতঃ এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন গ্র্যান্ড স্ল্যামে অংশগ্রহণ করা হয়নি তার। যদিও তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল গত শুক্রবার থেকেই। অস্ট্রেলিয়া সরকারের অভিবাসন দফতরের এক নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে জোকোভিচের ভিসা বাতিল করা হয় সেদিন। এছাড়াও গত শনিবার তাকে আটক করার পর ডিটেনশন ক্যাম্পে প্রেরণ করে কর্তৃপক্ষ। ডিটেনশন ক্যাম্পে থেকেই আপিল করেন বর্তমান বিশ্বের এক নম্বর এই টেনিস তারকা। শুনানিতে তার করা আপিল খারিজ হয়ে যায়, সাথে সম্মুখীন হন নতুন নিষেধাজ্ঞারও।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নোভাক জোকোভিচ; Image Source: GuardianUk

 

যদিও চলতি মাসের ৪ তারিখ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোকোভিচ এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছেন বলে দাবি করেন। অস্ট্রেলিয়া সরকারের অভিবাসন নীতি অনুযায়ী দুই ডোজ অনুমোদিত ভ্যাকসিন গ্রহণ ব্যতীত কেউই অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ করতে পারবেন না। এখন অবধি কোনো প্রকার ভ্যাকসিন গ্রহণ না করায় এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তার অংশগ্রহণ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্ত এবং সমালোচকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। যদিও গত ৫ তারিখ তিনি একটি মেডিকেল ছাড়পত্র পাওয়ার দাবি করেন তিনি। ছাড়পত্রটি টেনিস অস্ট্রেলিয়া এবং ভিক্টোরিয়া স্টেট কর্তৃপক্ষের যৌথ অনুমোদনপ্রাপ্ত। প্রশ্ন আসতে পারে, রাজ্য সরকার এবং টেনিস অস্ট্রেলিয়ার অনুমোদনের পরও কেন আটক হলেন জোকোভিচ? এই উত্তরসহ বিস্তারিত জানাতেই আমাদের আজকের আলোচনা।

জোকোভিচের নাটকীয় আগমন

নোভাক জোকোভিচ মেলবোর্ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ৫ জানুয়ারি তারিখে। রাতভর দরকষাকষি এবং তল্লাশির পর ভোরবেলায় এয়ারপোর্টে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জোকোভিচের প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করে। ঘটনাস্থলেই তার ভিসাসহ যাবতীয় কাগজপত্র বাতিল ঘোষণা করে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক দেখিয়ে কুখ্যাত একটি অভিবাসন হোটেলে প্রেরণ করে। সেখানে সর্বমোট পাঁচদিন আটক ছিলেন তিনি। জোকোভিচের আটক হওয়ার খবরটি প্রচারের পরে অনেক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের সমর্থণ জানিয়ে মতামত প্রদান করেন। মূলত ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ মানতে বাধ্য হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ানরা। একই প্রেক্ষাপটে দেশের প্রচলিত আইনের তোয়াক্কা না করে কেউ একজন প্রবেশাধিকার পাওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিতে পারেননি তারা।

সার্বিয়ান প্রেসিডেন্ট এবং জোকোভিচ; Image Source: AP

 

জোকোভিচকে প্রথমবার আটকের পর যে হোটেলে রাখা হয়েছিল, সেখানকার মূল ফটকের বাইরে জমায়েত হয়ে তাকে দুয়োধ্বনি দিয়েছিল অনেক অস্ট্রেলীয় নাগরিক। অন্যদিকে, দেশটিতে বসবাসকারী সার্বিয়ান অনেক নাগরিকও জোকোভিচের ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যানের বিরোধিতা করে অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে যোগদান করে। যদিও তাকে আটক করার খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে অস্ট্রেলিয়া-বিরোধী আন্দোলন হয়। সার্বিয়ান প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার ভুসিক অস্ট্রেলীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি দেন। একই সঙ্গে জোকোভিচকে হয়রানির অভিযোগ তোলেন তিনি, যা ক্যানবেরা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন অবশ্য সুকৌশলে ঘটনার দায় এড়িয়েছেন। তিনি ভিক্টোরিয়া স্টেট এবং টেনিস অস্ট্রেলিয়াকে সমাধানের পথ খুঁজতে নির্দেশনা দিয়েছেন। দুই দেশের সরকার এবং প্রশাসনের এমন কানাঘুষার মাঝে বোমা ফাটিয়েছে জোকোভিচের পরিবার। সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক  বিবৃতিতে তারা দাবি করেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার জোকোভিচকে কিউবান সন্ত্রাসীদের মতোই আচরণ করেছে!

কেন আটক হলেন জোকোভিচ?

জোকোভিচের ভিসা বাতিলের পেছনে সর্বাধিক অবদান রাখেন অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন মন্ত্রী অ্যালেক্স হক। কঠোর লকডাউন-সহ নানাবিধ বিধিনিষেধ মেনে চলা ৯০ শতাংশ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ইতোমধ্যেই দুই ডোজ টিকা নিয়েছে। দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী নাগরিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিজের বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে জোকোভিচকে আটক করার সপক্ষে নির্দেশনা দেন। এক বিবৃতিতে অ্যালেক্স হক বলেন,

‘স্বাস্থ্য এবং ভালো শৃঙ্খলা তৈরির উদাহরণ সৃষ্টি করতে আজ আমি জোকোভিচের ভিসা বাতিল করে ক্ষমতার ব্যবহার করলাম। তাছাড়া এটি জনস্বার্থের দাবি ছিল।’

অ্যালেক্স হক তার যুক্তির পেছনে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের সমর্থনের বিষয়টিকে দাঁড় করিয়েছেন। তবে সর্বশেষ শুনানিতে জোকোভিচের পরাজয়ের পর বুঝতে বাকি নেই, নিজেদের আইনের প্রতি ঠিক কতটা শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছেন এই মন্ত্রী।

অভিবাসন মন্ত্রী অ্যালেক্স হক এবং জোকোভিচ; Image Source: Kiratas

 

কিন্তু টেনিস অস্ট্রেলিয়া কিংবা ভিক্টোরিয়া স্টেট কর্তৃপক্ষ জোকোভিচকে ছাড়পত্র দেয়ার পূর্বে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় না করার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারে না। কারণ তাদের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েই জোকোভিচ মেলবোর্নের বিমানে চড়েন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, একজন ক্রীড়াবিদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের করা মামলার মূল বিষয়টি কতটুক যৌক্তিক? এই প্রশ্নের উপযুক্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্পোর্টস ল’ বিভাগের পরিচালক প্রফেসর জ্যাক অ্যান্ডারসনের কথায়। তিনি বলেন,

‘আমরা গত শুক্রবার শুধুমাত্র আইনজীবীদের যুক্তির আভাস পেয়েছি। একটি ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, জোকোভিচের আইনজীবীরা দারুণ চৌকষতার সঙ্গে কিছু আইনের ফাঁক খুঁজছে এবং প্রমাণের পুনর্ব্যাখ্যা করছে। অবশ্যই এটি তাদের কাজ, তবে আমরা এখনও মন্ত্রীর যুক্তি পুরোপুরি দেখিনি। কিছু উপায়ে বিষয়টি খুবই সহজবোধ্য। মন্ত্রী নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার্থে ভিসা বাতিলের কথা বলেছেন, যে আইনটা অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় তবে বিশাল পরিসরেই প্রণয়ন করা হয়েছে।’

বলাই বাহুল্য, বিশাল পরিসরে প্রণীত এই আইনের ‘সুব্যবহার’ই করেছেন অভিবাসনমন্ত্রী। 

শুনানি এবং জোকোভিচের মুক্তি

গত ১০ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত জোকোভিচের আইনজীবী এবং সরকারপক্ষের যুক্তি শোনেন। জোকোভিচের আইনি দল বেশ কয়েকটি যুক্তি উত্থাপন করেছিল। যদিও জোকোভিচের পক্ষ থেকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তিটি ছিল, মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল। তাদের দাবি, অভিবাসন কর্মকর্তারা ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে জোকোভিচ কিছু সময় চেয়েছিলেন। জোকোভিচের দাবি, তিনি পরদিন সকাল ৮:৩০ মিনিট অবধি সময় চান, যাতে করে তিনি তার আইনজীবী এবং টেনিস অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তার এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন অভিবাসনকর্মীরা। জোকোভিচ আরও অভিযোগ করেন, কর্মীরা তার দাবিকে ‘আইনত অযৌক্তিক’ বলে ঘোষণা দেয় এবং ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়াকে নিজেদের প্রতিদিনের কাজের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে।

হোটেল থেকে আদালতে নেয়া হচ্ছে জোকোভিচকে; Image Source: daily mail

 

জোকোভিচের যুক্তির বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের যুক্তি ছিল কিছুটা ভিন্ন। তারা জানায়, জোকোভিচের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার বিপরীতে মামলা ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট সময় তার হাতে রয়েছে। যদিও শুনানির সময় বিচারক জোকোভিচের আইনজীবীদের ব্যাখ্যায় বেশি সন্তুষ্ট হন। বিচারক অ্যান্টনি কেলি শেষ পর্যন্ত জোকোভিচের পক্ষে রায় প্রদান করেন। ১০ জানুয়ারির রায়ে জোকোভিচকে মামলা ব্যাখ্যা করার জন্য ‘ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। একইসাথে তার ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল কি না, সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা চায় আদালত। আদালত জোকোভিচকে বিনা শর্তে মুক্তি দেয় এবং সরকারপক্ষকে সমস্ত আদালত খরচ প্রদান করতে নির্দেশ দেয়।

নথি ফাঁস এবং জোকোভিচের দায়

১০ তারিখ রায় ঘোষণার পরই অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ায় জোকোভিচের ভ্রমণ সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। সেখানে আদালতের নথি, ভ্রমণ ঘোষণাপত্রসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, জোকোভিচের ভ্যাকসিন গ্রহণের কোনো প্রকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের পূর্বে সর্বমোট দুইবার কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছিলেন তিনি। জোকোভিচ সর্বশেষ গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছিলেন, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে প্রকাশিত নথিতে। এসব তথ্য ফাঁস হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জোকোভিচের প্রতি বিরূপ ধারণা প্রকাশ করেন অনেকেই। কারণ, তার নিজের ব্যক্তিগত ব্যাখ্যার বিপরীতে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে ততক্ষণে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, শেষবার কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার আগে এবং পরে কয়েকদিন জোকোভিচ একাধিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও সে সময় তিনি একটি ফরাসি প্রকাশনী প্রতিষ্ঠানকে সাক্ষাৎকার দেন।

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জোকোভিচ; Image Source: Mirror Uk

জোকোভিচের ভ্রমণ নথিতে দেখা যায়, তিনি স্পেন থেকে দুবাই হয়ে মেলবোর্ন পৌঁছান। তার আইনজীবীরা এই একই তথ্য আদালতেও প্রদান করেন। এর ১৪ দিনের মাথায় তিনি অন্য কোথাও ভ্রমণ করেননি, এমন প্রমাণও হাজির করেছিলেন জোকোভিচ। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট দেখে জানা গেছে, এই সময়ে তিনি সার্বিয়াতেও অবস্থান করেছেন। আদালতের রায়ে মুক্ত হয়ে ১২ জানুয়ারি জোকোভিচ ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘ongoing misinformation’। কারণ, ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের অনেক বড় বড় পত্রিকায় জোকোভিচের সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সেদিন জোকোভিচ স্বীকার করেন যে, কিছু ইমিগ্রেশন ফর্মে ভুল তথ্য লেখা হয়েছে। এই ভুলের জন্য তিনি একজন এজেন্টকে দায়ী করেন।

হোটেল থেকে কোর্টে যাওয়ার পথে ভক্তদের সমর্থণ পান জোকোভিচ; Image Source: 9News.com

জোকোভিচ আরো জানান, গত মাসে তিনি একজন ফরাসি সাংবাদিকের সাথে দেখা করেছিলেন। সেখানে তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও আইসোলেশনের নিয়ম ভঙ্গ করে ফটোশুটের জন্য মাস্ক সরিয়ে ফেলেন। যদিও ঐ ইনস্টাগ্রাম বার্তায় তিনি নিজের আংশিক ভুলের কথা স্বীকার করে পুনরায় ব্যাখ্যা করার সুযোগ দাবি করেন। যদিও জোকোভিচের ব্যক্তিগত স্বীকারোক্তির চেয়েও সংবাদপত্রে প্রকাশিত নথির প্রতিই মানুষের সমর্থন ছিল বেশি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন জোকোভিচকে নিষিদ্ধ করা উচিত। মূলত ভ্যাকসিন গ্রহণ না করায় মানুষ যতটুক সমালোচনা করেছে তার থেকেও বেশি ক্ষিপ্ত হয়েছে তার কর্মকাণ্ড এবং নথিতে দেয়া তথ্যের অমিল দেখে।

জোকোভিচ কি নিষিদ্ধ হচ্ছেন?

১৬ জানুয়ারি শুনানির ফলাফল ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার শুনানির সময় তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল উপস্থিত ছিলেন জোকোভিচের পক্ষে। আদালতে বিচারক উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে জোকোভিচের বিপক্ষে রায় প্রদান করেন। জোকোভিচের প্যানেল দাবি করে, অস্ট্রেলিয়া সরকারের উত্থাপনকৃত সমস্ত যুক্তি অবৈধ। যদিও শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় আইনের পক্ষেই অনড় ছিলেন বিচারক। প্রধান বিচারপতি জেমস অ্যালসপ বলেন যে,

‘কেন্দ্রীয় আদালতের রায়টি অভিবাসন মন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বৈধতার উপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নেয়া সঠিক ছিল কি না তার উপর ভিত্তি করে নয়।’

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কোভিড-১৯ বিষয়ক সচেতনতা এবং নির্দেশনার গুরুত্ব। মহামারী মোকাবেলায় অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক এবং ভ্রমণকারী সবাইকেই কঠোর আইন মানতে হবে। প্রত্যাখ্যানকারী যে-ই হোক না কেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলেও মন্তব্য করেন জেমস অ্যালসপ।

মেলবোর্ন ত্যাগ করছেন জোকোভিচ; Image Source: the Guardian

এই রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন,

‘এই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে এবং আমাদের নাগরিকদের নিরাপদ রাখবে।’

রায়ের পর সব থেকে বেশি প্রশ্ন উঠেছিল জোকোভিচের কোনো প্রকার শাস্তি হবে কি না। সেটাই হয়েছে, তিন বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়াতে নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। যদিও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সে শাস্তি আংশিক মওকুফেরও সুযোগ রয়েছে। রায়ের কয়েক ঘন্টা পর বিশেষ বিমানে করে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে মেলবোর্ন ত্যাগ করেছেন জোকোভিচ, এমনটাই জানায় বিবিসি অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে, জোকোভিচের অস্ট্রেলিয়া ত্যাগে বেশ চিন্তিত পুরুষদের টেনিসের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এটিপি। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যায়িত করেন। 

This article is about Novak Djokovic who got arrested twice in Melbourne this year. Novak Djokovic’s last-ditch attempt to salvage his hopes of defending his Australian Open title has failed, with judges ruling on Sunday that Australia’s immigration minister was within his rights to cancel the unvaccinated tennis star’s visa for a second time on the basis that the player could pose a risk to public health and order. The judges’ decision cannot be appealed.

Feature Image source: REUTERS

Related Articles

Exit mobile version