Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যারা অতীতে ভারতের সমালোচনা করতো, এখনও করে: শাস্ত্রী

ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি, কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার আত্মিক সম্পর্ক আছে- এই কথা কেউ বললে একেবারে ভুল হবে না। শাস্ত্রী ১৯৮৫-তে মেলবোর্নে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ টেস্ট রানের ইনিংস (২০৬) খেলেছিলেন ১৯৯২ সালে, সিডনিতে। এখন তিনি সেই ভারত দলেরই প্রধান কোচ। তার অধীনে মাত্রই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারিয়েছে ২-১ এ। একটি ম্যাচ হয়েছে ড্র। দল ও দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সম্প্রতি ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সাবেক এই ভারতীয় ক্রিকেটার।

অজি অধিনায়ক টিম পেইনের সঙ্গে বিরাট কোহলি; Image Source: Stringer

আরও একটা দারুণ জয়। আপনি তো ১৯৮৩ সালের চেয়েও এই জয়কে এগিয়ে রাখছেন? আসলেই কি তা-ই মনে হয়?

টেস্ট হলো ক্রিকেটের বিশুদ্ধতম ফরম্যাট। ইমরান খান থেকে শুরু করে ভিভ রিচার্ডস, সবাই এই সিরিজ নিয়ে একই কথা বলেছেন। যারা অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট খেলেছে, তারা জানে এখানে জয় পেতে হলে কীসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একে তো কঠিন প্রতিপক্ষ, তার উপর এখানে কোনোকিছুই নিজেদের অনুকূলে যায় না। অবশ্যই ১৯৮৩ বিশ্বকাপ গৌরবের। ১৯৮৫ সালটাও গৌরবের ছিল। কিন্তু আমি এবারের সিরিজ নিয়ে যা বলেছি, তাতে অনড়। এই জয় শুদ্ধতম জয়, সত্যিকারের ক্রিকেট। ভারতের এই দলটা তরুণ, এটা তাদের সময়, তারা খুব ভালো করেই জানে তারা কী ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এমনকি, আমিও জানি।

তো বছরটা দারুণভাবে শেষ হলো, সামনেরটা হয়তো আরও ভালো হবে। এখন আসন্ন বিশ্বকাপে দল নিয়ে বলুন…

হ্যাঁ, এটাই এখন আমাদের একমাত্র ভাবনার বিষয়- বিশ্বকাপ। মানসিকভাবে আমরা এরই মধ্যে সাদা বলের ক্রিকেত থেকে লাল বলে ফিরে গেছি। যারা টানা ক্রিকেটের মধ্যে ছিল তাদেরকে কিছুটা বিশ্রাম দেওয়া হবে। উদারণস্বরুপ বুমরাহর কথা বলা যায়। তাকে ভালো একটা বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজগুলোতে আমরা দলের ‘ফাইন-টিউন’ করবো। এই ম্যাচগুলোতে আমরা জয়-পরাজয় নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নই।

রবি শাস্ত্রী ও বিরাট কোহলি;Image Source: AP

মার্চে আইপিএল শুরু হচ্ছে। ঘুরেফিরে সেই পুরনো প্রশ্ন তাই করতেই হচ্ছে। বিশ্বকাপের আগে দলকে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলানো উচিত হচ্ছে কি না। তাছাড়া ঈশ্বর না করুক, যদি তাদের কেউ আহত হয়? এ নিয়ে কিন্তু বিতর্ক চলছে…

এই বিষয়ে আমরা বিসিসিআই ও সিওএ’র সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছি। আমাদের নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনাও আছে, যা আমরা দলের সদস্যদের অনুসরণ করাবো। সাধারণত যেটা হয়, আইপিএলের দুই মাস আমি একরকম ফ্রি থাকি। এই সময়ে আমি ক্রিকেট উপভোগ করি, নতুন ক্রিকেটার খুঁজে ফিরি। কিন্তু এই আইপিএলে আমাকে জাতীয় দলের সদস্যদের মনিটরিং করতে হবে। কারণ একটাই, বিশ্বকাপ। সামনে অনেককিছু হতে যাচ্ছে, হয়তো আপনারা সেগুলো দেখতেও পাবেন। ট্রেইনার, ফিজিও, সহকারী কোচ, অধিনায়ক এবং আমি- বোর্ডের সঙ্গে এগুলো নিয়ে সবাই আলাপ চালিয়ে যাচ্ছি।

কেন যেন মনে হয় অস্ট্রেলিয়ার সাথে বিরাট কোহলির একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে…

ওহ, বিরাট অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে খুব ভালোবাসে। কারণ অস্ট্রেলিয়ানরাও তাকে ভালোবাসে। অজিরা শক্তভাবে লড়াই করেছে, কোনোকিছু সহজে ছেড়ে দেয়নি। আর এখানেই বিরাট এগিয়ে। সে একজন যোদ্ধা, যে নিজের প্রাণ দিয়ে নিজের খেলাটা খেলে। ও চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসে, ছুঁড়ে দিতে ভালোবাসে। ওর প্যাশন, অধ্যবসায়, মেধা আর ব্যক্তিত্ব ড্রেসিংরুমের পরিবেশও বদলে দেয়। বিরাট তার কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করে- কাউকে খুশি করতে করে না।

কোহলির টস ভাগ্য বেশ খারাপ। কিন্তু যখনই সে টসে জেতে, দলও জেতে…

হ্যাঁ, নটিংহামকে (ঐ ম্যাচে ভারত টসে হেরেও টেস্ট জিতেছিল) একপাশে রাখলে জোয়ানেসবার্গ, অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন, সিডনি; যখনই ভারত টসে জিতেছে, তারা টেস্টও জিতেছে। সেক্ষেত্রে এটা বলতেই হবে যে ভাগ্য এই জায়গাগুলোতে কিছুটা খবরদারি করেই। কিন্তু এই জায়গাটা আপনার হাতে নেই। আবার টসে হেরেও কেপটাউনে আমরা জয়ের খুব কাছে চলে গিয়েছিলাম, ইংল্যান্ডের এজবাস্টনেও আমরা ম্যাচে ছিলাম।

দুই পেসার মোহাম্মদ শামি (বাঁয়ে) ও জাসপ্রিত বুমরাহ; Image Source: Getty Images

দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে পেসাররা বেশ ভালো করছে…

একদম ঠিক। ইশান্ত, সামি, বুমরাহ- ওরা এককথায় অসাধারণ। কয়েক বছর আগের কথা বাদ দিলে, শামি ইনজুরিপ্রবণ পেসার ছিলেন। পুরো একটা সিরিজ ইনজুরি ছাড়া শেষ করাটাই তখন তার জন্য মুখ্য ব্যাপার ছিল। তার মতো বোলারের জন্য ফিটনেস নিয়ে কাজ করাটা অনেক উপকার হয়েছে। তার জন্য উপহার হয়ে এসেছে তার পারফরম্যান্স। এরই মধ্যে ফিটনেসের জন্য একটা বেঞ্চমার্ক তৈরি করা হয়েছে, যা খুব সাহায্য করছে দলকে। ইশান্ত শর্মা অনেক পরিশ্রম করে, সে পেস আক্রমণে দলের মেরুদণ্ড। বুমের (বুমরাহ) কথা আর কী বলবো, ও ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ট্যুরে ব্যাটসম্যানদের মতো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল, যেটা অন্যান্য বোলারদের কাজ সহজ করে দিয়েছে।
আপনি যদি ইয়ান চ্যাপেলের কথা খেয়াল করেন, তিনি বলেছেন, “এটা হলো অস্ট্রেলিয়ায় সফর করা ভারতের সেরা পেস আক্রমণ সম্বলিত দল।
এমনকি কপিল দেব পর্যন্ত বলেছেন ভারতের এই পেস আক্রমণ ‘অবিশ্বাস্যরকম সুন্দর’।

ফিটনেস এমন কিছু যা নিয়ে ভারত ভালো কাজ করেছে, আবার সেই একই জিনিস দলকে বিভিন্ন সময়ে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রেখেছে…

দেখুন, ইনজুরি নিয়ে আপনি বেশিকিছু করতে পারবেন না। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। তবে আপনার ফিটনেস সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিশ্চিত করতে হবে। আমি যখন দ্বিতীয়বারের মতো কোচের দায়িত্ব নিলাম, তখন থেকেই দলের সবার ফিটনেস ছিল আমার গুরুত্বপূর্ণ মিশনের তালিকায় প্রথম স্থানে। আমি জানতাম, এই জায়গাটা যদি ঠিক করতে পারি তাহলে আমরা দলে শৃঙ্খলাও আনতে পারবো। কয়েকটা উদাহরণ বাদ দিলে, ছেলেরা এই জায়গাটাতে ‘দল’ হিসেবে দারুণ কাজ করেছে। আমার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে সাপোর্টিং স্টাফরাও অনেক কষ্ট করেছেন।

চেতেশ্বর পূজারা; Image Source:  Getty Images

পূজারার ব্যাটিং সৌন্দর্য নিয়ে কি বলবেন?

সেই পুরনো দিনের সুন্দর টেস্ট ব্যাটিং। প্রতিবার উইকেট থেকে ফেরার পথে পূজারা সেটাই মনে করিয়ে দেয়। বিশ্ব ক্রিকেটে আজকের দিনে যদি কোনো একজন টেস্ট ম্যাচকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে থাকে, সেটি পূজারা। সে এমন একজন মানুষ যে কখনও নিরর্থক কথা বলে না। কোনোকিছু তাকে বিভ্রান্ত করতে পারে না। আর কোনো ব্যাটসম্যান যখন জানে তার শক্তির জায়গা কোথায়, সেখানে বোলারের খুব বেশিকিছু করার থাকে না। পূজারা যেভাবে পেস ও স্পিন সামলায়, বিশেষ করে লায়নকে সে এই সিরিজে অসাধারণভাবে খেলেছে।

আইপিএল; Image Source: IPL

এই সিরিজ নিয়ে বাতাসে অনেক সমালোচনার রেশ পাওয়া যাচ্ছে…

ভারত এই সিরিজ জিতেছে বলে কারো (অস্ট্রেলিয়ান) কাছে এবারের ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ারের খুশিটা কমে গেছে। কিছু লোক ছিল যারা কেবলই দলের সমালোচনা করতে চেয়েছিল। এমনও কিছু লোক আছে যারা আপনার দলকে সমালোচনা করে নামিয়ে দেবে, আপনার মন ভেঙে দেবে। সিডনি টেস্টের পর আমি যা বলার সংবাদ সম্মেলনে বলেছি। আমি যখন প্রথমবার ভারতের কোচ হই, তখন টেস্টে ভারত র‍্যাংকিংয়ের পাঁচ নম্বর কিংবা তার আশেপাশে ছিল। গেল তিন বছরে এই দলটি ১ নম্বর অবস্থানে এসেছে। যারা তখনও সমালোচনা করতো, উপহাস করতো; এখনও করছে। আজ কিংবা কাল তারাও বুঝতে পারবে তাদের সমালোচনায় আসলে কিছু যায় আসে না।

This is an interview on Indian national cricket team head coach Ravi Shastri. He has talk about many issues regarding win the test series againest Australia recently.

Feature Photo: Getty Images

Related Articles