‘অঘটনঘটনপটীয়সী’ এক বিশ্বকাপ। এমন এক টুর্নামেন্ট, যেখানে ফেভারিট-আন্ডারডগের তকমা ঘুচে গেছে বহুদিন আগেই। গোটা টুর্নামেন্টে তথাকথিত ‘ছোট’ দলগুলোর প্রবল আক্রমণের তোড়ে উড়ে যেতে যেতেও খড়কুটো ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে বড় দলগুলোতে, তেমনি খোলসের মধ্যে ঢুকে গিয়ে সাবধানী ফুটবলে ম্যাচ জেতার স্ট্র্যাটেজিটাও কাজে দিয়েছে বেশ।
এমনই বর্ণিল এক বিশ্বকাপ, যার পরতে পরতে উত্তেজনার ছোঁয়া। এমন এক মহাযজ্ঞ, যা সাধারণ কোনো ফুটবলারকে নায়ক এবং নায়ককে মহানায়কে রূপ দিতে পারে। এক মাস আর ৬৩ ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনাময় অভিজ্ঞতা শেষে অবশেষে আজ পর্দা নামতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের, আর তাতে মুখোমুখি এই টুর্নামেন্টের যোগ্যতম দুই দল ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়া।
ক্রোয়েশিয়া দেশটা খুব একটা বড় নয়, তাতে জনসংখ্যাও মাত্র ৪৫ লক্ষ। যুগোস্লাভিয়া থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে যতবারই বিশ্বকাপে এসেছে তারা, গায়ে ‘ডার্ক হর্স’ তকমাটা যেন শক্ত করে লেগে ছিলো। অবশেষে এবার সুযোগ এসেছে সেটা ঝেড়ে ফেলে নতুন এক সূর্যোদয়ের, আর সেই অভিযাত্রায় সওয়ার হয়েছেন একঝাঁক অভিজ্ঞ ও দারুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়েরা। আর টুর্নামেন্টটা খুব দাপুটে না হলেও সোনালী প্রজন্মের এই দলটা হার না মানা মানসিকতার জানান দিয়েছে ইতোমধ্যেই, অপরাজিত থেকেই আজ মাঠে নামতে চলেছে ক্রোয়াটরা।
ক্রোয়াটদের জন্যে এটিই তাদের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের ম্যাচে ক্রোয়াটরা যেভাবে প্রথমার্ধে পিছিয়ে থেকে ম্যাচটি নিজের করে নিলো, তাতে তাদেরকে ছোট করে দেখাটা যেকোনো দলের জন্যেও বোকামি। আর বিগত ম্যাচগুলোতেই প্রমাণ মিলেছে তারা কতটুকু যোগ্য এই পর্যন্ত আসার জন্য। তাছাড়া বিশ বছর আগে ৯৮’এর বিশ্বকাপে এই ফ্রান্সের কাছে হেরেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল সেমি ফাইনাল থেকে। তাই আজকের ম্যাচটি তাদের কাছে সেই প্রতিশোধ নেয়ার মোক্ষম সুযোগ।
অবশ্য ফরাসিদের মাঝমাঠের তারকা পল পগবা বলে দিয়েছেন, তারা ক্রোয়েশিয়াকে মোটেও অবহেলার চোখে দেখছেন না। তিনি এক সাক্ষাতকারে বলেন, “ইউরো ফাইনালে পর্তুগালের সাথে ম্যাচের আগেই আমরা ধরে নিয়েছিলাম জিতে গেছি। তবে এবারে আর এমনটা ভাবছিনা।”
তাছাড়া প্রতিবারই ‘ফেভারিট’ তকমা লাগিয়ে বিশ্বকাপে আসে ফ্রান্স, জার্সিতে একটি তারকাখচিতও রয়েছে বৈকি। টুর্নামেন্টজুড়ে বৈচিত্র্যময় প্রতিআক্রমণনির্ভর খেলায় তারা একের পর এক দলকে উড়িয়ে দিয়ে শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে দারুণভাবে। তারুণ্যনির্ভর এই দলের বিশ্বকাপটা এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত, ক্রোয়াটদের মতোই অপরাজিত এবং আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই আজ মাঠ কাঁপাতে নামবেন তারা।
১২ বছর পর আবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দলটি এবং আজ যদি ফ্রান্স জিততে পারে তাহলে তার নামের শেষে যুক্ত হবে বিশ্বের তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় ও কোচ হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব। তার আগে এই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ব্রাজিলের মারিও জাগালো আর জার্মানির ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। ৯৮ বিশ্বকাপ জেতার ফ্রান্স দলের অধিনায়কত্ব করেছেন এই দেশামই। তাই সবকিছুর পর আজকের দিনটা ফ্রান্স আর দেশময়ের জন্যেই যেন একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ফাইনালের আগে চলুন চোখ বুলিয়ে নিয়ে যাক দুই দলের খেলোয়াড়দের উপর।
ফ্রান্স
শুরুর দিকে শিরোপার দাবীদার তিন দলের নাম নিতে বললে অনেকেই ফ্রান্সকে বাদ দিয়ে বলতে ব্রাজিল, বেলজিয়াম কিংবা জার্মানির নাম। তাছাড়া গ্রুপ পর্বও ফরাসীরা পার হয়েছে সাদাসিধে ফুটবল খেলে। প্রথম ম্যাচে দুর্বল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করা দুই গোলের একটি ছিল পেনাল্টি থেকে। ১১ নম্বর অবস্থানে থাকা পেরুর সাথেও জিতেছে ১-০ গোলের ব্যবধানে। আর ডেনমার্কে বিপক্ষে তো বলতে গেলে খেলেছে গা-ছাড়া একটা ভাব নিয়ে।
তাই দুটি জয় ও একটি ড্র নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক আউট রাউন্ডে পৌঁছার পরেও অনেকেরই ভয় ছিল, এই দল বেশিদূর আগাতে পারবেনা। হয়তো দ্বিতীয় রাউন্ডেই বাদ পড়বে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। লিও মেসি ও আর আগুয়েরোদের আর্জেন্টিনার অ্যাটাকের বিপক্ষে টেকা কষ্টকর হবে বৈকি। সেই ভয়টা প্রায় বাস্তবে রূপও নিয়ে ছিল সেদিন। আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত পারফর্মেন্স আর ডি মারিয়ার চমৎকার একটি গোলের পর প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফুলব্যাক মার্কাদোর গোলে এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তরা। কিন্তু খেলার চমক তখনও বাকি। খেলার ৫৭ মিনিট পার হওয়ার পর মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে ৩টি গোল করে আর্জেন্টাইনদের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেঙ্গে দেয় লে ব্লুসরা। বেঞ্জামিন পাভার্ডের দৃষ্টিনন্দিত ভলি আর ফরাসি ইয়ংস্টার কিলিয়ান এমবাপের জোড়া গোলে ম্যাচে ২০ মিনিট বাকি থাকতেই ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। শেষমেশ ম্যাচ শেষ হয় ৪-৩ গোল ব্যবধানে।
সেই ম্যাচে জয় পেলেও ধরা পরে ফরাসি ডিফেন্সের দুর্বল দিকগুলো। সন্দেহের মাত্রাটা একটু হলেও বেড়ে যায়। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে এই নড়বড় রক্ষণভাগ নিয়ে আদৌ জেতা সম্ভব হবে কিনা! কিন্তু সে ভয়ও দূর করেছে ফ্রান্সের এই দলটি। ভারান আর উমতিতিরা বলিষ্টভাবে রুখে দিয়েছে উরুগুয়াইনাদের। পরে সেমিফাইনালে এসে ব্রাজিলকে হারিয়ে দেয়া বেলজিয়ামের বিপক্ষেও দেখিয়ে দিয়েছে তাদের রক্ষণ কতটুকু শক্তিশালী। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ফ্রান্সের রক্ষণভাগ নিয়ে এদের উপরই নির্ভর ছিলেন দেশাম। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকানোর পাশাপাশি গোলও করেছেন চার ডিফেন্ডারের তিনজন পাভার্ড (আর্জেন্টিনার বিপক্ষে), ভারান (উরুগুয়ের বিপক্ষে) ও উমতিতি (বেলজিয়ামের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি এসেছে তার হেড থেকেই)। আর তার উপর মাঝমাঠে আছেন পগবা ও কান্তে জুটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই জুটির শুরু করা ম্যাচের একটিতেও হারেনি এখন পর্যন্ত ফ্রান্স। তাই আজকে ফ্রান্সে মাঝমাঠ রক্ষার জন্য নির্ভর হতে হবে এই দুজনেরই উপরেই।
আক্রমণভাগে আছেন গ্রিজম্যান-এমবাপেরা। গত ইউরোতে সর্বোচ্চ গোল করে ফ্রান্স দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেয়ার পর খালি হাতে ফেরার দুঃখ আজও ভুলতে পারেননি অ্যাটলেটিকো তারকা গ্রিজম্যান। গ্রিজম্যান তাই এবারে নেমেছেন শিরোপা নিয়েই ঘরে ফিরতে। ইউরোর মতো জ্বলে উঠতে না পারলেও ৬ ম্যাচে করেছেন ৩ গোল (২টি পেনাল্টি) আর ২টি অ্যাসিস্ট।
তবে তাকে ছাড়িয়ে সবার চোখ থাকবে এমবাপের উপর। কিলিয়ান এমবাপে ইতোমধ্যেই এই টুর্নামেন্টে প্রমাণ করেছেন নিজের সামর্থ্য, মিডফিল্ড ফাঁকা হয়ে গেলে তার দুর্ধর্ষ গতিময়তার প্রমাণ পাওয়া গেছে একাধিক ম্যাচে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ডিফেন্সচেরা দৌড়, যা কিনা শেষ পর্যন্ত একটি পেনাল্টি আদায় করে দেয়, সেটি ছিলো বিশ্বকাপের শিহরণ জাগানো কিছু মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি। সব মিলিয়ে দলগত পারফর্মেন্স আর অন্য সবকিছু বিচার করলেই স্বীকার না করে উপায় নেই যে আজকের ম্যাচে ফ্রান্সই অন্যতম ফেবারিট।
ক্রোয়েশিয়া
এবারে আসা যাক ক্রোয়েশিয়ানদের কাছে। বিশ্বকাপের শুরুতে যদি কেউ বলতো ক্রোয়াটরা ফাইনাল খেলবে। তাকে পাগল ঠাওরানো ছাড়া আর কিছু বলার থাকতো না কাররই। র্যাংকিংয়ে যে দলের অবস্থান ২০ নাম্বারে! ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, বেলজিয়াম, জার্মানি, পর্তুগাল, স্পেন আর ইংল্যান্ডকে এই দল ফাইনালে খেলবে, সেটা ভাবা বেশ হাস্যকরই বটে। কিন্তু ঘটনা এখানে ঘটেছে বিপরীত। বরং ক্রোয়াটদের ফাইনাল খেলার কথা ভেবে যাদের মুখে বিদ্রূপ দেখা দিতো তাদেরই হাসির পাত্র বানিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেছে তারা।
তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট আসার পরপরই ধুঁকতে হয়েছে ক্রোয়াটদের। প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষেই হয়তো বড়ি ফিরে যেতে হতো তাদেরকে। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল হজম করার পর ৪ মিনিটের মাথায় মানজুকিচের গোলে ফিরে দাঁড়ালেও পুরো ম্যাচ জুড়েই তাদের চোখে ছিল হতাশা। যার দরুন অতিরিক্ত সময়ের ২৬ মিনিটের মাথায় একটি পেনাল্টি মিস করে বসেন অধিনায়ক লুকা মড্রিচ।
কিন্তু ভাগ্য সেদিন তাদের সহায় ছিল। আসলে বলতে হবে ভাগ্য দেবতা সেদিন তাদের মাঝে এসেছিলেন গোলকিপার সুবাসিচের উপর ভর করে। তা নাহলে, প্রতিপক্ষের তিন তিনটি পেনাল্টি ফিরিয়ে দেয়া মুখের কথা নয়। অতিরিক্ত সময়ের পর খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে দলের ত্রাণকর্তা হয়েছিলেন সেদিন এই সুবাসিচই। শুধু সেদিন কেন, কোয়ার্টার ফাইনালে সুবাসিচ ছিলেন অতুলনীয়। স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষেও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দুই দুইটি পেনাল্টি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তিনি ৭৫% রেটে তিনি মোট সেভ করেছেন ১২টি। তাই ক্রোয়াটদের জমাট রক্ষণ না থাকলেও, তাদের আছে সুবাসিচ।
তবে যার কথা বিশেষ করে না বললেই নয় তিনি হলে লুকা মড্রিচ। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই তিনি দিয়েছেন যোগ্য অধিনায়কের পরিচয়। দল এবং দলের মাঝ মাঠ সামাল দিয়েছেন দক্ষ হাতে। যদিও তার সাফল্যের ঝুলিতে আছে ২টি গোল আর ১টি মাত্র অ্যাসিস্ট কিন্তু তারপরেও এই বিশ্বকাপের সেরা ৫ জনের নাম বললে প্রথমেই স্মরণ করতে হবে মড্রিচের কথাই। তাছাড়া তার সাথে ছিলেন বার্সেলোনার মাঝ মাঠের প্রাণ ইভান রাকিটিচ। টুর্নামেন্টে মোট ১৬টি চান্স তৈরি করা মড্রিচ আর ১০টি গোলে সহায়তা করা রাকিটিচ, এই দুয়ে মিলে গড়ে ওঠা ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠ কতটুকু সুবিধা করতে পারবে ফ্রান্স দেখবার বিষয়।
দুই দলের আজকের একাদশ
আজকের খেলায় দলীয় কোনো পরিবর্তন আনেননি দুই কোচের একজনও। টুর্নামেন্টের অধিকাংশ ম্যাচ খেলানো দল নিয়েই খেলতে নামছেন দেশাম। অপরদিকে তার পছন্দের দল নিয়েই ফরাসিদের বিপক্ষে লড়তে নামছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ দালিচ।
৪-২-৩-১ ফর্মেশনের দলের গোলরক্ষক হিসেবে আছে হিউগো লরিস। তার সামনে আছেন বেঞ্জামিন পাভার্ড, রাফায়েল ভারান, স্যামুয়েল উমতিতি ও লুকাস হার্নান্দেজ। আজকের ম্যাচেও ফরাসীদের মাঝ মাঠ রক্ষার দায়িত্ব থাকছে পল পগবা আর এনগোলো কান্তের কাঁধে। দুই আক্রমণভাগের দুই প্রান্তে থাকবেন কিলিয়ান এমবাপে ও মাতুইদি। আর আক্রমণভাগের ছক পরিপুর্ণতা দিতে সামনে থাকবেন গ্রিজম্যান আর অলিভিয়ে জিরু।
একই ফর্মেশনে ক্রোয়াটদের মাঠে নামাবেন দালিচও। গোলরক্ষক ড্যানিয়েল সুবাসিচকে সামনে থেকে পাহারা দিবেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ইভান স্ট্রাইনিচ, দোমাগোজ ভিদা, দেজান লভরেন ও সিমে ভ্রাসালিকো। মাঝমাঠে আছেন মার্সেলো ব্রোজোভিচ ও ইভান রাকিটিচ, আর তাদের ঠিক সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দেবেন লুকা মড্রিচ। এই ম্যাচে দুই প্রান্তে উইঙ্গারের দায়িত্ব পালন করবেন ইভান পারিসিচ ও আন্তে রেবিচ এবং লন স্ট্রাইকার হিসেবে থাকবেন মারিও মানজুকিচ।
ফ্রান্স একাদশ (৪-২-৩-১)
লরিস – হার্নান্দেজ, উমতিতি, ভারানে, পাভার্ড – কান্তে, পগবা – মাতুইদি, গ্রিজমান, এমবাপে – জিরু
ক্রোয়েশিয়ার একাদশ (৪-২-৩-১)
সুবাসিচ – স্ট্রাইনিচ, ভিদা, লভরেন, ভ্রাসালিকো – ব্রোজোভিচ, রাকিটিচ- পারিসিচ, মড্রিচ, রেবিচ – মানজুকিচ
তথ্য ও পরিসংখ্যান
পুরো টুর্নামেন্টেই ফ্রান্সের খেলার ধরন ছিল প্রতিআক্রমণ ফুটবল আর গতির উপর নির্ভরশীল। যেখানে ক্রোয়েশিয়ানরা তাদের আক্রমণের ছক সাজিয়েছে ধীর গতিতে। তাছাড়া ক্রোয়েশিয়া দলের আটজন নিয়মিত খেলোয়াড় যখন টুর্নামেন্টে গোল করেছেন সেখানে ফরাসিদের মূল স্ট্রাইকার অলিভিয়ে জিরু এখনো গোলে মুখ দেখেননি।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো এর আগে ফ্রান্সের বিপক্ষে মোট ৫টি ম্যাচে মোকাবেলা করে একটিতেও জিততে পারেনি ক্রোয়েশিয়ানরা। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপেতো ফ্রান্সের সাথে সেমিফাইনালে হেরেই শেষ গিয়েছিলে ক্রোয়াটদের বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন।মজার ব্যাপার হলো শেষ যেবার ফ্রান্সের রক্ষণভাগের তিনজন খেলোয়াড় গোল করেছিলেন সেবার বিশ্বকাপের সোনার ট্রফি উঠেছিল তাদের হাতেই। এবার কি তাহলে সেই ৯৮ এর পুনরাবৃত্তি হবে?
Featured photo: Jafar Jeef (DeviantART)