Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

লিনাক্স: প্রযুক্তির জেলখানায় এক অবারিত স্বাধীনতার নাম

আমরা অনেকেই লিনাক্স নামক একটা অপারেটিং সিস্টেমের নাম শুনেছি। আমরা অনেকে এটাও জানি যে, আজকের দিনে সবচাইতে বহুল ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্মও দিয়েছে এই লিনাক্স। সত্যি বলতে, লিনাক্স রয়েছে সর্বত্র। আপনার মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, সার্ভার এমনকি সুপার কম্পিউটারেও রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আজকে আমরা এই লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানব। 

লিনাক্সের লোগো; Image Source: Liberian Geek

লিনাক্স নিয়ে জানার আগে আমাদের অবশ্যই কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। আমরা কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা কখনোই ভেবে দেখি না যে কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে। আমরা শুধুমাত্র কম্পিউটারকে কাজ দিয়ে যাই এবং এর বদলে কম্পিউটার আমাদের কাজ সম্পূর্ণ করে দেয়। কিন্তু আমাদের কমান্ড দেওয়া প্রত্যেকটি কাজ করার জন্য কম্পিউটারকে অনেকগুলো প্রসেস সম্পূর্ণ করতে হয়। যে প্রোগ্রামগুলোর সাহায্যে আমরা কম্পিউটারে বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করি, যেমন- মিউজিক ভিডিও প্লে, ডকুমেন্ট তৈরি, ইমেইল ইত্যাদিকে মূলত অ্যাপ্লিকেশন বলা হয়। আর এই সব অ্যাপ্লিকেশন যেখানে রান হয় বা যার উপর দিয়ে চলে, তাকেই অপারেটিং সিস্টেম বলা হয়।

মূলত অপারেটিং সিস্টেমই কম্পিউটারের সকল প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্ন করে। যেমন আমরা কম্পিউটারকে কোনো নির্দেশনা দেওয়ার সাথে সাথে কম্পিউটার আমাদের কাজ করে দেয়। এছাড়া ও কম্পিউটারের প্রসেসর বিভিন্ন সময় গরম হয়ে গেলে অটোমেটিক কুলিং ফ্যান চালু হয়ে যায়, আর এই কাজগুলো মূলত অপারেটিং সিস্টেমই সম্পাদন করে। অ্যাপ্লিকেশন মূলত আমাদের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে কাজ করে এবং অপারেটিং সিস্টেমের উপর কাজ চাপিয়ে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যারের সাথে সংযোগ তৈরি করে।

বর্তমানে পৃথিবীতে অনেকগুলো অপারেটিং সিস্টেম আছে। যেমন- অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ, ম্যাক-ওএস, আইওএস ইত্যাদি। লিনাক্সও এগুলোর মতোই।

লিনাস টোরভাল্ডস- লিনাক্স কার্নেলের জনক; Image Source: Youtube Channel – TED

লিনাক্সের জনক হচ্ছেন লিনাস টোরভারল্ডস। আসলে লিনাক্স নিজে কোনো অপারেটিং সিস্টেম নয়। এটি মূলত একটি কার্নেল। কার্নেল হচ্ছে একপ্রকার বিশেষায়িত প্রোগ্রাম, যা মূলত হার্ডওয়ার এবং সফটওয়্যারের মাঝে সামঞ্জস্য বজায় রাখে। যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের জন্যই কার্নেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। সকল অপারেটিং সিস্টেমেরই কার্নেল থাকে। যেমন- উইন্ডোজে ব্যবহার করা হয় উইন্ডোজ এনটি কার্নেল, ম্যাক ওএসে এক্সএনইউ/ ডারউইন কার্নেল। এই যে লিনাক্স কার্নেল, এর সাথে জিএনইউ এবং অন্যান্য সফটওয়্যার-প্রোগ্রাম মিলে একটি সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম তৈরি হয়।

মুক্ত সফটওয়্যার এবং গ্নু প্রজেক্টের পথিকৃৎ; Image Source: LinuxAndUbuntu

জিএনইউ মূলত একটি ওপেন-সোর্স প্রজেক্ট বা বলা যায় ওপেন-সোর্স আন্দোলনের ফলাফল, যার প্রবর্তক হলেন রিচার্ড স্টলম্যান। প্রযুক্তি দুনিয়ার এই দু’জন উদার মহারথী তাদের মহান কর্মকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন, যার ফলস্বরূপ পৃথিবী পেয়ে যায় এক অনন্য সৃষ্টি, যাকে জিএনইউ/লিনাক্স বলে অভিহিত করা হয়। এই জিএনইউ/লিনাক্স-ই মূলত পরিপূর্ণ লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু সাধারণ অর্থে লিনাক্স বলতে কার্নেল কিংবা একক কোনো অপারেটিং সিস্টেমকে না বুঝিয়ে লিনাক্স ভিত্তিক সকল অপারেটিং সিস্টেমকে বোঝানো হয়। তাই কেউ যদি বলে যে সে তার কম্পিউটারে লিনাক্স ব্যবহার করছে, তাহলে এর মানে হলো সে লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করছে এবং সেই কার্নেলের উপর লেখা অ্যাপ্লিকেশন/প্যাকেজ পিসিতে রান করাচ্ছে।

আমরা একটু আগেই জেনেছি, যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের জন্যই কার্নেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি অপারেটিং সিস্টেমের একদম কোরে তথা ভিত্তিতে থাকে। একে অপারেটিং সিস্টেমের প্রাণভোমরাও বলা যায়। তো এই কার্নেল তৈরি করা কিন্তু মোটেই সহজ কাজ নয়। সকল অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেল ওপেন-সোর্স হয় না; বরং সেগুলো ক্লোজড-সোর্স হয় এবং অত্যন্ত নিরাপত্তার সাথে সংরক্ষণ করা হয়। তাই যে কেউ চাইলেই সে সমস্ত কার্নেল নিয়ে কাজ করে নতুন কোনো অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে পারে না। যেমন, আপনি হাজার চেষ্টা করলেও কোটি কোটি টাকা দিলেও উইন্ডোজের কার্নেল সোর্স কখনো দেখতেও পাবেন না। কিন্তু লিনাক্স এখানেই অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলে। লিনাক্স সম্পূর্ণ ওপেন-সোর্স হবার কারণে যে কেউই এর কার্নেল সোর্স শুধু দেখতে পারে, তা-ই নয়,বরং সেটা নিয়ে কাজও করতে পারে; এমনকি সেই কার্নেলকে ভিত্তি করে নিজেদের অপারেটিং সিস্টেমও তৈরি করে ফেলতে পারে। আপনিও চাইলে লিনাক্সকে বেজ করে নিজের একটা অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন, কেউ আপনাকে বাধা দেবে না।

লিনাক্সের এত উদারতা এবং স্বাধীনতার কারণে আমরা লিনাক্স ভিত্তিক প্রচুর অপারেটিং সিস্টেম দেখতে পারি। বর্তমানে পৃথিবীতে হাজারেরও বেশি লিনাক্স-ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম আছে।

যেহেতু এসব অপারেটিং সিস্টেম সবাই লিনাক্সকে বেজ করে বানানো, তাই এদেরকে অনেকসময় আলাদা করে অপারেটিং সিস্টেম না বলে লিনাক্সের ‘ডিস্ট্রো’ও বলা হয়। যারা লিনাক্স ব্যবহার করে এবং লিনাক্সের সাথে পরিচিত, তারা এই ডিস্ট্রো’র বিষয়টাকে অনেক উপভোগ করে। এদের মধ্যে কিছু অপারেটিং সিস্টেম বা ডিস্ট্রো খুবই জনপ্রিয়। যেমন- ডেবীয়ান, উবুন্টু, লিনাক্স মিন্ট, ফেডোরা, আর্চ-লিনাক্স ইত্যাদি।

[সত্যি বলতে আজ পৃথিবী লিনাক্স বলতে শুধু লিনাক্সকে বোঝে। কিন্তু আসলে লিনাক্স বলতে জিএনইউকে বোঝানো উচিত ছিলো। কারন লিনাক্সের শুধু কার্নেলটা বাদে পুরোটাই জিএনইউ। রিচার্ড স্টলম্যানকে ছাড়া পৃথিবী আজকের ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার হয়ত পেত না।]

উবুন্টু এবং লিনাক্স মিন্ট- লিনাক্সের অত্যন্ত জনপ্রিয় দু’টি ইউজার-ফ্রেন্ডলি ডিস্ট্রো ; Image Source: Youtube Channel – LinuxTex

যারা লিনাক্সের দুনিয়ায় প্রথম প্রবেশ করে, তারা অধিকাংশই উবুন্টু বা লিনাক্স মিন্ট দিয়ে শুরু করে। উবুন্টু বা লিনাক্স মিন্ট অত্যন্ত ইউজার-ফ্রেন্ডলি এবং বিগিনারদের জন্য ভালো পদ্ধতি, বিশেষত যারা আগে উইন্ডোজ ব্যবহার করেছে, তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো। যদি আজকের বিশ্বের যেকোনো কম্পিউটার বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞেস করেন, মাইক্রোসফটের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন কী? উত্তরে আসবে লিনাক্স মিন্ট অথবা উবুন্টু- এই দু’টোর একটা নাম।

জিএনইউ/গ্নু/লিনাক্সের ইতিহাস

সময়টা তখন ১৯৭১ সালের কাছাকাছি।

এমআইটির আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ল্যাবে ক্যারিয়ার শুরু করা রিচার্ড স্টলম্যান নামের মানুষটার জন্যই আজকে পৃথিবীতে মুক্ত সফটওয়্যারের জোয়ার শুরু হয়েছে। আশির দশকের প্রথমভাগে বাণিজ্যিক সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ল্যাবের ব্রিলিয়ান্ট প্রোগ্রামারদের হাত করতে শুরু করল। সেইসাথে তারা তাদের সফটওয়্যারের সোর্স কোডও গোপন করা শুরু করল। মোদ্দাকথা, আপনার আমার মতো সাধারন মানুষদের কোনো অধিকারই নেই কীভাবে কোন সফটওয়্যার তৈরি হলো, তা জানার। কেউ যদি সেটা জানতেও চায়, তাহলে পড়ে যাবে আইনের মারপ্যাঁচে; কারণ, সেসব আবার কপিরাইটের আওতায় রয়েছে। যদি আপনার যথেষ্ট টাকা থাকে, তাহলে আপনি সফটওয়্যার কিনে ব্যবহার করতে পারবেন, নতুবা সফটওয়্যার আপনার জন্য না।

কিন্তু রিচার্ড স্টলম্যানের দৃষ্টিভঙ্গী ছিল অন্যরকম। তার মতে, এসব বাঁধাধরা নিয়ম দিয়ে সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনাকে আটকে ফেলা পুরোপুরি অনুচিত ও অনৈতিক। তিনি চাইতেন, সফটওয়্যার হবে মুক্ত, এতে করে সফটওয়্যারকে যে কেউ তার মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবে, ফলে সফটওয়্যারের উন্নয়নও দ্রুত হবে। এ ধারণা থেকেই তিনি শুরু করলেন মুক্ত সফটওয়্যারের আন্দোলন, গড়ে তুললেন সমমনাদের নিয়ে সংগঠন, নাম দিলেন ‘গ্নু’ (GNU)। শুরু হলো মুক্ত সফটওয়্যার লেখার কাজ। কিন্তু এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে দরকার ছিল একটা মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু সেজন্য দরকার প্রয়োজনীয় আরো সফটওয়্যার, বিশেষ করে একটা কম্পাইলার।

সে লক্ষ্যে স্টলম্যান শুরু করলেন সি কম্পাইলার লেখার কাজ। তার কিংবদন্তিতূল্য প্রোগ্রামিং দক্ষতায় অল্প দিনেই তিনি শেষ করে ফেললেন কম্পাইলার লেখার কাজ, নাম দিলেন গ্নু সি কম্পাইলার বা জিসিসি। জিসিসিকে অন্যতম রকসলিড এবং কার্যকরী একটি কম্পাইলার মনে করা হয়। এরপর গ্নু হাত দিল অপারেটিং সিস্টেম লেখার কাজে। গ্নু ‘হার্ড’ নামে একটা কার্নেল তৈরি করার পরিকল্পনাও করা হলো। কিন্তু সেটা ডেভেলপারদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে একটা অপারেটিং সিস্টেম ছাড়া গ্নু অসম্পূর্ণ থেকে যায়। গ্নুকে সম্পূর্ণ করতে দরকার একটা মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম, তারও আগে দরকার একটা মুক্ত কার্নেল। নাহলে মুক্ত সফটওয়্যারের পুরো আন্দোলনই যে থেমে যাচ্ছে!

সময়টা ১৯৯১ সাল।

লিনুস তখন হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে সময় তিনি আইবিএমের ইন্টেল ৩৮৬ প্রসেসরের একটা পার্সোনাল কম্পিউটার কিনলেন। এই প্রসেসরটি ছিল ইন্টেলের আগের প্রসেসরগুলোর তুলনায় অত্যধিক উন্নত। সে সময় আইবিএমের সাথে পাওয়া যেত এমএসডস অপারেটিং সিস্টেম। এমএসডস ব্যবহার করে লিনুস পুরোপুরি হতাশ হয়ে পড়লেন, কারণ ইন্টেলের ৩৮৬ প্রসেসরকে পুরোপুরি ব্যবহার করার ক্ষমতা সেটির ছিল না। লিনুস চাচ্ছিলেন আরো ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে। কিন্তু তিনি ইউনিক্স পাবার চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিলেন, যখন দেখলেন যে ইউনিক্সের দাম ৫০০০ মার্কিন ডলার।

তিনি তখন মিনিক্স নিয়ে পড়লেন। মিনিক্স ছিল ডাচ প্রফেসর এন্ড্রু টানেনবমের লেখা ইউনিক্সের মতোই একটি অপারেটিং সিস্টেম। মিনিক্স মূলত ইউনিক্সের ছোটখাটো একটা ক্লোন, তবে পুরোপুরি ক্লোন নয়। প্রফেসর তার ছাত্রদের অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ক্লাস নেবার সময় অপারেটিং সিস্টেমের ভেতরের খুঁটিনাটি বোঝাতে মিনিক্স ব্যবহার করতেন। মিনিক্সের কোড কিছুটা উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু সমস্যা ছিল এই যে, মিনিক্সের কোডকে নিজের ইচ্ছেমতো পাল্টানোর লাইসেন্স ছিল না। তাছাড়া এটি ছিল ছাত্রদের শেখানোর একটা উপকরণমাত্র, পূর্ণাঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম বলতে যা বোঝায়, সেটি না। যা-ই হোক, লিনুস সেই মিনিক্স নিয়ে কাজ করতে গিয়ে টের পেলেন যে, এটাও তার চাহিদা পূরণের জন্য উপযুক্ত নয়।

এরপর দুম করেই এক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন তিনি, নিজেই একটা অপারেটিং সিস্টেম বানিয়ে ফেলবেন। তাও আবার একদম শূন্য থেকে, মিনিক্স আর ইউনিক্সের আদলে, পুরোপুরি নতুন একটা অপারেটিং সিস্টেম। এ সিদ্ধান্ত নেবার আগে তিনি কি বুঝতে পেরেছিলেন, তার এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র তার আইবিএমের পিসিকেই পাল্টে দেবে না বরং তার জীবন এবং পুরো পৃথিবীকেও পাল্টে দেবে?

১৯৯১ সালের এপ্রিলে লিনুস শুরু করলেন তার অপারেটিং সিস্টেমের কাজ। মোটামুটি একটা কাঠামো দাঁড় করিয়ে তিনি মিনিক্স ব্যবহারকারী দলের সবাইকে তার নতুন অপারেটিং সিস্টেমের কথা জানালেন। ধীরে ধীরে অন্যরাও জড়ো হতে থাকে। তারা ওএসটি ডাউনলোড করে নিজের সুবিধামতো পরীক্ষা-পরিবর্তন-পরিবর্ধন করে পরিবর্তিত ভার্সনটি পাঠাতে থাকে লিনুসকে। গড়ে উঠতে থাকে লিনুসের নতুন অপারেটিং সিস্টেম। ৫ই অক্টোবর বের হলো প্রথম অফিসিয়াল রিলিজ ভার্সন ০.০২। কয়েক সপ্তাহের মাঝে বের হলো ভার্সন ০.০৩। সে বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বের হলো ভার্সন ০.১০। এভাবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে থাকে লিনাক্স।

এবারের সময়টা ২০০৪ সাল।

সার্জন বাবা আর স্কুল শিক্ষক মায়ের ঘরে জন্ম নেয়া মার্ক শাটলওর্থ তখন যে কাজ করলেন, বিষয়টিকে সেসময় সবাই স্রেফ পাগলামি ছাড়া আর কিছুই ভাবেনি। কারণ, মার্ক তার টাকা দিয়ে লিনাক্সকে ডেস্কটপের দুনিয়ায় ছড়িয়ে দেবার জন্য ইংল্যান্ডে ক্যানোনিকাল নামে এক কোম্পানি খুলে বসেছিলেন। সে সময় ঘটনাটি বেশ হাস্যকরই ছিল। কারণ, অনেক কোম্পানিই চেষ্টা করেছে ডেস্কটপের জন্য লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে। কিন্তু বহু অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে পারলেও সেগুলোকে সে অর্থে জনপ্রিয় করে তুলতে পারেনি। এবার মার্কের পালা। মার্ক ক্যানোনিকালের পক্ষ থেকে উবুন্টু নামে এক নতুন অপারেটিং সিস্টেম তৈরির কাজে নেমে যান।

‘উবুন্টু’ হল একটি দক্ষিণ আফ্রিকান শব্দ, যার অর্থ হলো ‘Humanity to Others‘ বা ‘অন্যের প্রতি মানবতা’. অপারেটিং সিস্টেম উবুন্টুর লক্ষ্য হচ্ছে, মানুষকে  বিনামূল্যে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়া। শুধু তা-ই নয়, ওপেন সোর্সের মন্ত্রে উজ্জীবিত উবুন্টুও বিশ্বাস করে যে, কম্পিউটার সফটওয়্যার কারো কুক্ষিগত হতে পারে না, সবাই স্বাধীনভাবে এটি ব্যবহারের অধিকার রাখে। সেজন্য উবুন্টু ব্যবহার করতে বা লাইসেন্সিং করতে কোনো টাকা-পয়সা দিতে হয় না এবং এই বিনে পয়সার উবুন্টু ব্যবহার করা পুরোপুরি বৈধ। উবুন্টুর স্লোগান হচ্ছে ‘Linux for Human Beings‘; যা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘সবার জন্য লিনাক্স’। অর্থাৎ, কম্পিউটার চালনায় অতি দক্ষদের খটমটে দুনিয়া থেকে লিনাক্সকে সরিয়ে এনে সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য সেটাকে উপযোগী করে তোলা।

সুপার কম্পিউটার আর সার্ভারের দুনিয়াকে একচেটিয়া দখলে রাখার পর উবুন্টুর মাধ্যমে লিনাক্স ডেস্কটপের দুনিয়ায়ও প্রবেশ করল। বলা হয়ে থাকে, যদি লিনাক্সের পতাকা বহন করার কেউ থাকে, তবে সেটা উবুন্টু। ডেস্কটপ ইউজারদের ওপেন সোর্স ফ্রি সফটওয়্যারের স্বাদ দেবার জন্য উবুন্টু ডেস্কটপকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। কম্পিউটার নিয়ে যার তেমন কোনো জ্ঞান নেই, সেও বেশ সহজে উবুন্টু ব্যবহার করতে পারবে। আর উবুন্টু ইনস্টল করলেই অফিস থেকে শুরু করে অডিও-ভিডিও প্লেয়ারসহ প্রয়োজনীয় সব সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায়। এবং একজন সাধারণ ডেস্কটপ ব্যবহারকারীর জন্য তার পিসি পুরোপুরি ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে।

আপনার কি লিনাক্স ব্যবহার করা উচিত?

উত্তরটা হলো অবশ্যই,অবশ্যই এবং অবশ্যই!

আপনি যদি একজন সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীও হয়ে থাকেন তবুও আপনার অবশ্যই একবার হলেও লিনাক্স ব্যবহার করে দেখা উচিত, লিনাক্সের বিশাল দুনিয়াটাতে একবারের জন্য হলেও ঘুরে আসা উচিত। আর আপনি যদি এমন একজন ব্যক্তি হয়ে থাকেন, যিনি নিজের ব্যক্তিগত তথ্যাদির নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন, তাহলে লিনাক্স অবশ্যই আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত। অন্যদিকে আপনি যদি এ বিষয়ের একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার লিনাক্স সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা উচিত। কারণ, লিনাক্স একজন শিক্ষার্থীকে ওপেন-সোর্স দুনিয়া সম্পর্কে বাস্তবিক ধারণা প্রদান করে। লিনাক্স ব্যবহারকারী একজন কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে এবং বুঝতে পারে। বিশেষত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের লিনাক্স দারুণ সহায়তা করে।

আমরা যারা উইন্ডোজ চালাই, তাদের বেশিরভাগই আসলে বেআইনিভাবে চুরি করে চালাই। একটি উইন্ডোজের আসল দাম প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা,তাই বে-আইনিভাবে উইন্ডোজ ব্যবহার করার সময় নিজেকে চোর চোর মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। মজার ব্যাপার হলো, মাইক্রোসফট নিজেই কিন্তু আমাদের মতো স্বল্পোন্নত দেশের মানুষদের পাইরেটেড বা চুরি করা উইন্ডোজ ব্যবহারে সমর্থন করে! এটা শুনে আপনার যদি মনে হয়, মাইক্রোসফট অনেক উদার, তাহলে কিন্তু আপনি বড্ড বড় একটা ভুল করে বসবেন! আসলে এর পেছনে অনেক বড় ব্যবসায়িক পরিকল্পনা ও কৌশল কাজ করে। উন্নত বা মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও পাইরেটেড উইন্ডোজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আইন আছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা বিনামূল্যে যেসব সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি বলে মনে করি, সেগুলো তাদের কিনে ব্যবহার করতে হয় এবং এদের দাম অনেক বেশি। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে এ আইন এত কড়াকড়ি না করে তাদেরকে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে দেয়া হয়, যাতে তারা সেটা ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এই অভ্যস্ততার কারণে তারা সেই নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে বের হতে চায় না বা পারে না। ফলে তারা ঐ নিদির্ষ্ট একটা পণ্য বা ব্যবস্থায়ই আটকা পড়ে যায়, যেখান থেকে ঐ কোম্পানি বিভিন্নভাবে মুনাফা অর্জন করে এবং বাজারে একক আধিপত্য অর্জন করে। ফলে ঐ বাজারে তার কোনো প্রতিদ্বন্দী থাকে না

আমাদের দেশেও উইন্ডোজ তার একচেটিয়া নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে এবং সাধারণ মানুষ সেটায় অভ্যস্ত হয়ে যাবার কারণে তারা আর নতুন কিছু গ্রহণ করতে চায় না এবং যেমন করেই হোক, তারা সেই পরিচিত নেটওয়ার্কে থাকতেই পছন্দ করে। এ কারণেই লিনাক্স উইন্ডোজের থেকে অনেক দিক থেকে ভালো হওয়া সত্ত্বেও মানুষ উইন্ডোজ ব্যবহার করে। দুঃখের বিষয় হলো আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই উইন্ডোজই ব্যবহার করা হয়, অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচিত সবসময় শিক্ষার্থীদের মুক্ত সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগ্রহী করে তোলা।

আবার ফিরে আসি, কেন আপনি লিনাক্স ব্যবহার করবেন, সে আলোচনায়। এক নজরে দেখে নিন-

লিনাক্স সম্পূর্ণ বিনামূল্যের আবার ওপেন সোর্স। মানে যদি কেউ চায় সে আবার এতে কন্ট্রিবিউটও করতে পারবে। আর উইন্ডোজে যা যা করা যায়, তা তো লিনাক্সে করা যায়ই; বাড়তি সুবিধা হলো, এখানে আপনি ব্যাপক স্বাধীনতা এবং সুরক্ষা পাবেন। আপনি চাইলে লিনাক্স মিন্ট অথবা উবুন্টু দিয়ে শুরু করতে পারেন। লিনাক্সের আরেকটি বিশাল সুবিধা হলো, এখানে গুটিকয়েক অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া বাকিসবই ফ্রি। ম্যাক্সিমাম লিনাক্স অ্যাপ্লিকেশন ওপেন-সোর্স, অর্থাৎ এগুলো দক্ষ এবং সহায়ক লোকেদের অবদানে তৈরি, যেখানে উইন্ডোজের সফটওয়্যারগুলো মাল্টি-বিলিয়নিয়ার এবং ডাটা-হাংরি অর্গানাইজেশন দ্বারা পরিচালিত।

লিনাক্সকে নিজের ইচ্ছামতো সাজানো যায়, কনফিগার করা যায়। এটা লিনাক্সের অন্যতম বড় শক্তি। আপনি আপনার ইচ্ছামতো ডেস্কটপকে সাজাতে পারবেন। উইন্ডোজের মতো নির্দিষ্ট একটি প্যাটার্ন নেই এখানে। আপনি যদি উইন্ডোজের একঘেয়ে চেহারা দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে লিনাক্স আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে। লিনাক্সকে আপনি যেকোনো রূপ দিতে পারবেন। লিনাক্সের কিছু ডিস্ট্রো উইন্ডোজের অনুরূপ, যা কিনা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য একদম মানানসই।

লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলো একেবারে সব কাজের জন্য তৈরি হয়ে আসে। ইনস্টলের পরপরই ছবি সম্পাদনার জন্য জনপ্রিয় ওপেনসোর্স সফটওয়্যার গিম্প, ভেক্টর গ্রাফিক সম্পাদনার জন্য ইংকস্কেপ, অফিস স্যুট হিসেবে লিব্রাঅফিস বা ওপেনঅফিসের পুরো প্যাকেজ, ব্রাউজার হিসেবে ফায়ারফক্স, একটি ইমেইল ক্লায়েন্ট, টরেন্ট ক্লায়েন্ট, জনপ্রিয় ওপেনসোর্স মিডিয়া প্লেয়ার ভিএলসি, টেক্সট এডিটর হিসেবে সাধারণ একটি এডিটরের পাশাপাশি চমৎকার কমান্ডলাইন এডিটর ভিম, ইম্যাকস বা ন্যানো পাওয়া যায়। অর্থাৎ একজন সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য দরকারি সবকিছু লিনাক্সের সাথে বিল্ট-ইন দেয়াই থাকে।

লিনাক্স খুবই লাইটওয়েট সিস্টেম। এটা আপনি যদি ১৫ বছর আগের পেন্টিয়াম ফোর প্রসেসর ও ৫১২ মেগাবাইট র‍্য্যাম কিংবা তার চেয়েও লো-কনফিগারেশনের কম্পিউটারের কম্পিউটারে সেটআপ করেন, এটা সেখানেও ভালোই চলবে। লিনাক্স আপনার কম্পিউটারকে কোনো অবস্থাতেই স্লো করবে না, যদি না আপনি তাকে দিয়ে খুব বেশি ভারি কিছু করান। লিনাক্স অনেক স্টেবল, উইন্ডোজের মতো ল্যাগ বা ক্রাশ একদম করে না বললেই চলে। বুট-আপ টাইমও তুলনামূলকভাবে অনেক কম। লিনাক্সের মেইনটেন্যান্স এবং কাস্টমাইজেশন অপশন উইন্ডোজের তুলনায় শতগুন উন্নত, নিজের পছন্দমত ওয়ার্কস্পেস সেটআপ করলে কাজ করতে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়।

* আপনি যদি একান্তই উইন্ডোজ সফটওয়ার ব্যবহার করতেই চান, তবে ওয়াইন ব্যবহার করে আপনি লিনাক্সে উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। কিছু কিছু লিনাক্স ডিস্ট্রো আছে, যেগুলো বিল্ট-ইন ওয়াইন সুবিধা দিয়ে থাকে, সেসব ডিস্ট্রোতে আপনি উইন্ডোজের মতো করেই উইন্ডোজ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি ডুয়াল-বুটের মাধ্যমে উইন্ডোজের পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারে লিনাক্স ব্যবহার করতে পারবেন। এ প্রক্রিয়ায় আপনার কম্পিউটারের পারফর্মেন্সে সামান্যতম কোনো প্রভাব পড়বে না। অর্থাৎ, লিনাক্স ব্যবহার করতে হলে যে আপনাকে উইন্ডোজ বাদ দিতে হবে, এমনটা কখনোই না। আমি নিজেও ডুয়াল-বুটে লিনাক্স-উইন্ডোজ উভয়ই ব্যবহার করি।

লিনাক্স খুবই নিরাপদ। মানে এটি ব্যাবহারের মাধ্যমে আপনি ভাইরাস, ট্রোজান ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাবেন। লিনাক্সে কোনো ভাইরাস নেই। লিনাক্স কার্নেল লেভেল থেকেই আপনার সিস্টেমের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। লিনাক্সের ফায়ারওয়াল কার্নেল লেভেলে কাজ করে। ফলে, কোনো অ্যাটাক হলে তা অন্যান্য প্রোগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছুতেই পারে না, আগেই ব্লক হয়ে যায়। এছাড়া SELinux এর সাহায্যে আপনি আপনার সিস্টেমকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করতে পারেন। উইন্ডোজে ডাবল ক্লিক করলেই প্রোগ্রাম এক্সিকিউট হয়, বিধায় কেউ যদি আপনাকে একটি ছবির চেহারা দিয়ে একটি ভাইরাস পাঠায়, তবে তা ওপেন করলেই আপনি আক্রান্ত হবেন। লিনাক্সে এক্ষেত্রে সিস্টেম দেখাবে যে,

“This file does not have permissions to execute. Are you sure this file is safe?”

তাহলে বুঝুন, লিনাক্সে কেন ভাইরাসের আনাগোনা নেই?

তার উপর লিনাক্স আপনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় কখনোই হস্তক্ষেপ করে না। লিনাক্স উইন্ডোজের মতো কখনোই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে আপনাকে বিজ্ঞাপনের পণ্য বানিয়ে ফেলে না।

ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের দ্রুত প্যাচিং হয়। এ কথা চির সত্য যে, ‘দশের লাঠি একের বোঝা’, সফটওয়্যারের ক্ষেত্রেও একথা সত্য। লিনাক্সে যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, কমিউনিটির সদস্যরা সাথে সাথেই বাগ রিপোর্ট করে। ফলে, অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবী প্রোগ্রামারদের বিশাল কমিউনিটি একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করে খুবই অল্প সময়ে বাগ ফিক্স করে নতুন সিকিউরিটি প্যাচ রিলিজ করে।

লিনাক্সে রয়েছে লাইভ ইউএসবি সুবিধা। আপনি আপনার কম্পিউটারে লিনাক্স রান করার জন্য এটি ইনস্টলও করতে হবে না। শুধু মাত্র ইন্টারনেট থেকে লিনাক্স এর একটা আইএসও ডাউনলোড করে পেনড্রাইভে বুট করুন। তারপর সেই পেনড্রাইভ আপনার মেশিনে প্লাগ করুন এবং প্লে করলেই ব্যবহার করতে পারবেন। পরে আপনি চাইলে স্থায়ীভাবে আপনার কম্পিউটারে লিনাক্স সেট-আপ করতে পারবেন। লিনাক্স কখনোই ইনস্টলেশনে বাধ্যবাধকতা রাখেনি। লিনাক্সে অসংখ্য ডিস্ট্রো থাকায় আপনি নিজের পছন্দসই ডিস্ট্রো বেছে নিতে পারবেন। কিন্তু উইন্ডোজ আপনাকে এ ধরনের সুবিধা কখনোই দেবে না।

লিনাক্সকে ইচ্ছেমতো সাজানো যায়; Image Source: FossByte

আসলে লিনাক্স ব্যবহারের জন্য এত কারণের প্রয়োজন হয় না। লিনাক্স আপনাকে যে অসীম স্বাধীনতা এবং সুবিধা দেবে, সেটা আপনি অন্য কোথাও পাবেন না। আপনি যদি কিছুদিন লিনাক্স ব্যবহার করেন এবং লিনাক্সের আসল মজাটা বুঝতে পারেন, তাহলে আপনি নিজেই আর লিনাক্স বাদ দিতে চাইবেন না! আর লিনাক্সকে উইন্ডোজের বিকল্প হিসেবে মনে করার কোনো প্রয়োজন নেই। লিনাক্স নিজে একটা স্বয়ংস্বপূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম, যার উইন্ডোজের সাথে কোনো বিরোধিতা নেই। আপনি লিনাক্স আর উইন্ডোজ পাশাপাশি ব্যবহার করলেও কোনো সমস্যা নেই।

লিনাক্স অনেকগুলো মুক্তমনা উদার মানুষের তরফ থেকে পৃথিবীর জন্য এক অসামান্য উপহার। আমরা যারা কম্পিউটার কিংবা উইন্ডোজ ব্যবহার করি তাদের সবারই অন্তত একবার হলেও লিনাক্স ব্যবহার করা উচিত কিংবা লিনাক্সের দুনিয়াটা থেকে ঘুরে আসা উচিত।

This article is in the Bengali language. It is a brief discussion about what is GNU/Linux, It's History, and why we Should use GNU/Linux.

Featured Image: Wallpaperset 

Related Articles