শাওমি: দ্য রাইজিং ফিনিক্স অফ চায়না

‘শাওমি ইনকর্পোরেশন’ (Xiaomi Inc.) বা সংক্ষেপে ‘মি’ (Mi) হলো একটি চীনা ইলেক্ট্রনিক্স এবং সফটওয়্যার কোম্পানি। চীনের বেইজিং এ শাওমির হেডকোয়ার্টার অবস্থিত। স্মার্টফোনের পাশাপাশি শাওমি মোবাইল অ্যাপ, ল্যাপটপসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ইলেকট্রনিক্স পণ্য ডিজাইন, ডেভেলপ এবং বিক্রি করে থাকে। আজকের এ লেখায় শাওমির ইতিহাস এবং এর স্মার্টফোন প্রযুক্তির দিকেই আলোকপাত করা হবে।

মি লোগো; Source: androidauthority.net

২০১১ সালের আগস্ট মাসে চীনে শাওমি তার প্রথম স্মার্টফোন বাজারজাত করে। তারপর থেকে শাওমিকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সময়ের সাথে সাথে দ্রুত চীনে মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে থাকে শাওমি। যার ফলে ২০১৪ সালে অন্য সব কোম্পানিকে পেছনে ফেলে চীনের বৃহত্তম মোবাইল ফোন কোম্পানিতে পরিণত হয় শাওমি। চীন, ভারত, মালয়েশিয়া এবং সিংগাপুরেই শাওমির প্রায় ১৫,০০০ কর্মী নিযুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও শাওমি দ্রুত তাদের বাজার প্রসারিত করছে। শাওমির প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও লেই জুন, যার বর্তমান মোট আয় প্রায় ৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৭ সাল অনুযায়ী, লেই জুন চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ২৪তম স্থানে রয়েছেন।

ইতিহাস এবং বিস্তার

শাওমি বর্তমানে স্মার্টফোন বা হার্ডওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও এর যাত্রাটা মূলত হয়েছিলো এক সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে। কিংসফট-এ সিইও হিসেবে থাকাকালীন মূলত একজন সফটওয়্যার নির্মাতা হিসেবেই লেই জুন ও তার দল গুগলের এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে একটি কাস্টম রম নির্মাণ করেন, যার নাম রাখেন ‘মিইউআই’ বা ‘মিউয়ি’ (MIUI)। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল ব্যবহারকারীদের সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ইন্টারফেস প্রদান করা। পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের এমন সব সুবিধা, কার্যকারিতা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রদান করা যা গুগলের এন্ড্রয়েডে নেই বা তখনও আসেনি।

MIUI ইন্টারফেস; Source: xiaomitoday.com

এ সকল সুবিধা থাকার জন্য মিউয়ি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। সেসময়ে থাকা অনেক এন্ড্রয়েড ফোনে এই কাস্টম রম পোর্ট করা হয়। ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় দু’শর বেশি এন্ড্রয়েড ফোনে মিউয়ি ইন্সটল করার ব্যবস্থা ছিল, যেখানে ব্যবহারকারীরা চাইলে ইংরেজি বা চীনা ভাষায় রমটি ব্যবহার করতে পারতেন। ফলে ২০১৩ সালের শেষের দিকে পুরো বিশ্বে শাওমির প্রায় ৩০ মিলিয়ন মিউয়ি ব্যবহারকারী ছিল। একটি নতুন কোম্পানি হিসেবে এ সংখ্যাটি ছিল খুবই প্রশংসনীয়। বর্তমানে মিউয়ি ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে ৩০০ মিলিয়ন পার হয়ে গেছে।

মিউয়ি রম দেখতে অনেকটাই অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেম আইওএস (iOS) এর মতো, যেমন ইউজার ইন্টারফেস, এনিমেশন, সেটিংস ইত্যাদি। আইওএস এর মতোই মিউয়ি রম ব্যবহার করা সহজ। পাশাপাশি এই রমে ছিল সহজে ব্যবহারযোগ্য মিউজিক প্লেয়ার, ক্লাউড ব্যাকআপ সুবিধা এবং তাদের নিজস্ব অ্যাপ স্টোর। মিউয়ি টিম সবসময় ব্যবহারকারীদের মতামত গ্রহণ করত, সেই অনুযায়ী তাদের রমে বিভিন্ন ফিচার, বাগ ফিক্স এবং প্রয়োজনীয় আপডেটও দিত। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না কেন মিউয়ির ভক্ত এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতই বেড়ে চলছিলো। আর মিউয়ি রমের এই জনপ্রিয়তাই পরবর্তীতে শাওমিকে স্মার্টফোন জগতে এক শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে আসতে সাহায্য করে।

শাওমির প্রথম ফোন Mi1; Source: bgr.in

২০১১ সালে শাওমি তাদের প্রথম স্মার্টফোন ‘মি ওয়ান’ বের করে। সফটওয়্যারের পাশাপাশি শাওমি তখন থেকে নিজেরাই হার্ডওয়্যার নির্মাণের দিকেও মনোযোগ দিতে শুরু করে। মি ওয়ান ছিল আকর্ষণীয় দামে স্পেসিফিকেশনের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ এক ফোন। এই ফোন থেকে সেই যে শুরু এখন পর্যন্ত শাওমির মূল দর্শন হলো সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রেতাদের নিকট মানসম্পন্ন পণ্য সরবারহ করা। মি ওয়ানের পর থেকে শাওমি দ্রুত মানুষের নজরে আসা শুরু করে। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা শাওমিকে ‘দ্য অ্যাপল অফ চায়না’ বলেও ডাকা হতো সে সময়। তবে শাওমি আর অ্যাপলের মধ্যে মিল বলতে ছিল তারা উভয়েই হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার কোম্পানি। তাদের অপারেটিং সিস্টেমে দৃশ্যত কিছু মিল ছিল। পাশাপাশি উভয়েরই নিজেদের পণ্যের সাপ্লাই চেইনের উপর ছিল শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ। সবশেষে দুই কোম্পানিরই ছিল বিশাল ফ্যানবেজ। এছাড়া তাদের মধ্যে যে অমিল রয়েছে তা হলো অ্যাপল তাদের পণ্যের আকাশচুম্বী দাম রাখতে পছন্দ করে এবং ব্যবহারকারীদের মতামতের কোনো তোয়াক্কা করে না। সেখানে শাওমি ঠিক অ্যাপলের উল্টো কাজটাই করে।

শাওমির সিইও লেই জুন; Source: fortunedotcom.files.wordpress.com

২০১২ সালে শাওমি প্রায় ৭.২ মিলিয়ন স্মার্টফোন বাজারজাত করে। ২০১৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ১৮.৭ মিলিয়নে আসে, যা এক কোয়ার্টারের হিসেবে অ্যাপলের থেকেও বেশি ছিল। ফলাফলে ২০১৩ সালে শাওমি প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুনাফার্জন করে। নতুন শুরু করা একটি কোম্পানির জন্য এই মুনাফার অংকটা বেশ প্রশংসনীয়ই বটে। ২০১৪ সালে সিংগাপুরে শাওমি তাদের ‘শাওমি মি ৩’ বাজারে আনার প্রথম দিনেই, মাত্র দুই মিনিটে এর প্রথম ব্যাচ বিক্রি হয়ে যায়। সে বছরের এপ্রিলেই শাওমি তাদের মি.কম (mi.com) নামের ইন্টারনেট ডোমেইন কিনে নেয় রেকর্ড ৩.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে, যা ছিল চীনে তখন পর্যন্ত সবচাইতে বেশি দামে কেনা ইন্টারনেট ডোমেইন। ২০১৪ সালে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি স্মার্টফোন বিক্রয় করতে সক্ষম হয়েছিল শাওমি।

২০১৫ সালের এপ্রিলে শাওমি ভারতে তাদের স্মার্টফোন সরবরাহ করার ঘোষণা দেয় এবং ২৩ এপ্রিল অন্য যেকোনো দেশের আগে ভারতেই তারা শাওমি ‘Mi4i’ নামে এক স্মার্টফোন বাজারজাত করে। একই বছরে তারা ব্রাজিলেও নিজেদের বাজার সম্প্রসারণ করার ঘোষণা দেয়। ২০১৬ সালের আগস্টে ‘সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড’ কোম্পানির মাধ্যমে শাওমি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। গ্রামীনফোনের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা বাংলাদেশে মি ম্যাক্স, মি ৫ এবং রেডমি ৩ নামের তিনটি স্মার্টফোন বাজারে আনে। ২০১৭ সালে শাওমি পাকিস্তানে অফিসিয়ালি প্রবেশ করে। এ বছরের ১৯ এপ্রিল তারা মি ৬ নামে একটি ফ্লাগশিপ স্মার্টফোন বের করে। শাওমির ভারতে পদার্পণের পর এর জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, শাওমি শুধু ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই ১০ মিলিয়ন ফোন বিক্রি করেছে। ১ বিলিয়ন ডলার মুনাফা শুধু ভারত থেকেই এসেছে। পাশাপাশি ভারতেই এখন তাদের ফোনের চাহিদা শতকরা ৪০০ ভাগ বেড়ে গেছে!

জনপ্রিয়তার কারণ

শাওমির একটি শো-রুমের আগে মানুষের ভিড়; Source: phonearena.com

ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও বর্তমানে শাওমির জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যদিও প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো শাওমি এখনো পুরোদমে তাদের কার্যক্রম বাংলাদেশে শুরু করেনি, তবুও ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে শাওমির বাংলাদেশী কমিউনিটি চোখে পড়ার মতো। তাহলে শাওমির এত জনপ্রিয়তার কারণ কি? আসুন এখন সে সম্পর্কে জানা যাক।

মূল্য

শাওমি মূলত জনপ্রিয় হয়েছিল এর পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করার জন্য। শাওমি সবসময় নিশ্চিত করেছে তার স্মার্টফোনগুলোর দাম যাতে সবসময় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। ভারত, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় সাধারণত মধ্যবিত্ত মানুষদের বাসই বেশি, যারা সব সময়ে নিজেদের অর্জিত অর্থের মাঝে সবটুকু উপযোগ গ্রহণ করতে চায়। পাশাপাশি তারা আরো আশা করে নিজের অর্থ দিয়ে যেটা কিনবে সেটা যেন যুগোপযোগী হয়। আর এ ধরনের জনগোষ্ঠীকেই শাওমি টার্গেট করেছে।

শাওমি তাদেরকে প্রিমিয়াম ডিভাইস উপহার দিয়েছে, কিন্তু দাম রেখেছে সাধ্যের মধ্যেই। শাওমিই এই ট্রেন্ডটি চালু করেছে সর্বপ্রথম, যা এখন অন্যান্য মোবাইল কোম্পানিগুলোও অনুসরণ করছে। তাই ভারতে কোনো স্মার্টফোন কোম্পানিকে যদি সফল হতে হয়, তাহলে তাকে আগে দামের দিকটা মাথায় রাখতে হবে। তবে বাংলাদেশে হুয়াউয়ি, অপ্পো, সিম্ফোনি এবং দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন ইতোমধ্যে কম মূল্যে ভাল মানের স্মার্টফোন প্রদানের কায়দা শিখে ফেলেছে। তাই শাওমি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের প্রসার ঘটালে যে একটি জমজমাট প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে তা বলাই বাহুল্য।

প্রিমিয়াম হার্ডওয়্যার

শাওমি মি৪; Source: cdn.arstechnica.net

কম মূল্যে স্মার্টফোন সরবরাহ করলেও শাওমি সবসময়ে তাদের পন্যের গুণগত মান নিশ্চিত করেছে। এমনকি শাওমির ১০-১৫ হাজার টাকার স্মার্টফোনগুলোর ডিজাইন এবং স্পেসিফিকেশনও উঁচু স্তরের স্মার্টফোনগুলোর মতো। হাতে নিলেও ফোনের গঠনের গুণগত মানের প্রিমিয়াম ফিলিং পাওয়া যায়। শাওমি তাদের স্বল্প বাজেটসম্পন্ন ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে সবসময় ভাল ক্যামেরা, উন্নত স্ক্রিন, দ্রুতগতি সম্পন্ন পারফর্ম্যান্সের চিপসেট এবং বেশি স্টোরেজ ব্যবহার করার মতো সুবিধা দিয়ে থাকে কম দামী ফোনগুলোতেও।

ইউজার ইন্টারফেস

বর্তমান বাজারে অনেক এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন তৈরি করা কোম্পানি রয়েছে, কিন্তু হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি পেরেছে বেশি ব্যবহারকারীর মনে আলাদা জায়গা দখল করতে। শাওমি তাদের মধ্যে একটি।

শাওমি তাদের প্রত্যেক ফোনে (Mi A1 ব্যতীত) নিজেদের কাস্টম রম MIUI প্রদান করে থাকে, যা তাদের ফোনগুলোর অত্যাধিক বিক্রির অন্যতম কারণও বটে। গুগলের এন্ড্রয়েড ইন্টারফেস অনুসরণ করে তৈরি অন্যান্য অধিকাংশ রমেই মিউয়ির মতো বেশি কাস্টমাইজেশন সুবিধা নেই, নেই অনেক ফাংশনও। মিউয়ির রয়েছে নিজস্ব অ্যাপ স্টোর। নিজের পছন্দমতো থিমও ব্যবহার করে ফোনের পুরো রূপটাই বদলে ফেলা যায়। প্রয়োজনীয় প্রায় সকল অ্যাপই মিউয়ি রমে দিয়ে দেয়া থাকে। তাই আলাদা করে প্লে স্টোর থেকে এপস ডাউনলোড না করেও নিজের সকল প্রয়োজন মেটানো যায়।

অনলাইন এবং অফলাইন উপস্থিতি

শাওমির একটি অফলাইন স্টোর; Source: cdn.techinasia.com

শাওমির শুরুটা হয়েছিল অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানি হিসেবে, যেখানে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে কোম্পানিটি স্মার্টফোন বিক্রি করে থাকতো। এমনকি শাওমি ভারতে জনপ্রিয় ‘ফ্লাশ সেল’ নামক ধারণার প্রবর্তন করে, যেখানে হাজার হাজার স্মার্টফোন মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু শাওমি শুধু অনলাইন ভিত্তিকই থেকে যায়নি। বর্তমানে তারা বিভিন্ন রিটেইলার এবং পরিবেশকদের সাথে  অংশীদারিত্ব করে বেশ কিছু অফলাইন স্টোর বা শো-রুমের প্রসার ঘটিয়েছে। ফলে ক্রেতারা নিজের হাতে দেখে-শুনে, যাচাইবাছাই করে ফোন কেনার সুবিধা ও ওয়ারেন্টি পেয়ে থাকছেন।

বাজারজাতকরণ কৌশল

বিভিন্নভাবে বিজ্ঞাপন প্রদানের মতো মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজি অনুসরণ করার পাশাপাশি শাওমি অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর মাধ্যমেও তার ব্যবহারকারী ও ভক্তদের সাথে যুক্ত থাকে। তাদের নিজস্ব মিউয়ি ফোরাম এবং ফেইসবুকেই রয়েছে বিশাল অনলাইনভিত্তিক সামাজিক কমিউনিটি। এত বড় ভক্ত ও ব্যবহারকারীদের কমিউনিটি খুব কম সংখ্যক স্মার্টফোন কোম্পানিরই রয়েছে। এই সামাজিক মাধ্যমগুলো শাওমিকে সাহায্য করে বিভিন্নভাবে। ব্যবহারকারীদের মতামত এবং চাহিদানুযায়ী শাওমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করে থাকে। ব্যবহারকারীরাও শাওমি থেকে প্রতিক্রিয়া পেয়ে নিজেদের স্মার্টফোন নিয়ে সুনিশ্চিত থাকার ভরসা পায়। বর্তমানে শাওমির এই বিশাল ভক্তদের একসাথে ‘Mi Fans‘ বলা হয়। মাঝে মাঝে শাওমি ‘মি ফ্যানস ফেস্টিভ্যাল’ এর আয়োজন করে, যা ভক্ত এবং ব্যবহারকারীদের সাথে শাওমির সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে সাহায্য করে।

পরিসংখ্যানে শাওমি; Source: forbes.com

তবে ২০১৪ সাল অব্দি ব্যাপক আধিপত্য দেখানো শাওমি নিজের দেশ চীনে পরবর্তীতে তার স্থানটি হারায়। হুয়াউই এবং অপ্পোর মতো স্মার্টফোন কোম্পানি চীনে শাওমিকে পেছনে ফেলে দেয়। শাওমির পেছনে পড়ার মূল কারণ ছিল এর অনলাইন নির্ভরতা এবং যথেষ্ট রিটেইল স্টোর না থাকা। ক্রেতারা মূলত দেখে-শুনে স্মার্টফোন কিনতে পছন্দ করে- এটি বুঝে উঠার পর শাওমি তার বিস্তার হওয়া সকল বাজারে ধীরে ধীরে অফলাইন স্টোর বা শো-রুম দেয়া শুরু করেছে। ফলে ২০১৭ সালের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে শাওমি প্রায় ২১.২ মিলিয়ন ইউনিট ফোন বাজারজাত করেছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৫৯% বেশি। ২০১৯ সালের মধ্যে পুরো বিশ্বে ২,০০০ রিটেইল স্টোর দেয়ার পরিকল্পনাও নিয়েছে শাওমি। চীনের বাজারে আবার আধিপত্য ফিরে আসতে শুরু করায় শাওমিকে এখন ‘দ্য রাইজিং ফিনিক্স অফ চায়না’ বলা হয়।

ফিচার ইমেজ: pedanticpatil.com

Related Articles

Exit mobile version