![](https://assets.roar.media/assets/WAS60pRhASznLB9X_20211008_141015-(1).jpg?w=1200)
I want to break free,
I got to break free…!!
God knows I want to break free…!!!
সেপ্টেম্বর মাসের ধকল কাটিয়ে অফিসে বসে বসে কুইনের এই গানটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। ক্যাম্পেইন সাকসেস করার জন্য সর্বোচ্চটা অফিসকে উজাড় করে দিয়ে বারবার মনে হচ্ছিল, সীমিত সময়ের জন্যেও যদি কোথাও হারিয়ে যাওয়া যেত! এমনটা ভাবতে ভাবতেই মনে পড়লো চট্টগ্রামে থাকা বন্ধুসুলভ বড়ভাই উইলিয়াম ক্লাইভ উইলির কথা! যে কিনা ইতিমধ্যে আমাকে বহুবার প্রকৃতির রাজ্যে হারিয়ে যাবার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তখন সাড়া দিইনি। তাই এবার দ্বিতীয় কোন চিন্তা ব্যতিরেকেই দিলাম ফোন আর জানালাম রাতে রওনা দিচ্ছি।
বৃহস্পতিবার সাড়ে চারটার বাসে উঠে চট্টগ্রাম জিইসি মোড়ে এসে নামলাম রাত ১১টার দিকে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই চলে গেলাম একে খান মোড়ে। নাস্তা সেরেই উঠে পড়লাম বাসে, সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের উদ্দেশ্যে। একে খান মোড় থেকে অনেক বাসই যায়, তবে ভাড়া জেনে নেবেন অবশ্যই। আর বাসের হেল্পারকে বললেই সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের সামনে নামিয়ে দেবে। একে খান থেকে ইকোপার্ক চয়েস বাসে লাগবে ৮০ টাকা, তবে দ্রুত সময়ে পৌঁছে যেতে পারবেন। অন্যসব বাসে সময় বেশি লাগলেও ৪০/৬০ টাকার মধ্যেই যেতে পারবেন। সময় লাগবে ৪০ মিনিট থেকে ঘণ্টাখানেক বা তার একটু বেশি। নেমে রাস্তা পার হলেই ইকো পার্কের বিলবোর্ড চোখে পড়বে। আর ওত পেতে থাকা ঝাঁকে ঝাঁকে সিএনজিওয়ালারা আসবে আপনাকে ইকোপার্ক নামিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে। ১৫-২০ মিনিটের রাস্তার জন্য ভাড়া নেবে ৫০ টাকা করে, একা গেলেও এই ভাড়া; আবার অনেকজন মিলে গেলেও একই।
নেমেই হোটেলে দুপুরের খাবার অর্ডার করে রাখতে পারেন। কারণ, ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসে পেটপূজা না হলে ব্যাপারটা বেশ কষ্টকরই হয়ে যাবে শরীরের জন্যে। ১১০ টাকায় আমরা ভাত, আলুভর্তা, ডাল আর মুরগির মাংসের অর্ডার দিয়েছিলাম। তারপর জনপ্রতি ৩০ টাকা টিকেট কেটে সোজা ঢুকে পড়লাম সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে। গেট পার হতেই আবারো এসে আপনাকে ধরবে সিএনজিওয়ালারা। অনেক ভয় দেখাবে – খাড়া পাহাড়, হাঁটতে অনেক কষ্ট, ৩ ঘণ্টা হাঁটা লাগবে, এসব বলবে। ৫০০-৬০০ টাকাতে চাইলে সিএনজি নিয়ে নিতে পারেন আসা-যাওয়ার জন্যে। তবে শুধু নামিয়ে দিবে এমন সিএনজিও পাবেন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই। মূলত গেটের ভেতর থেকে সিএনজি নিলে ২৫০/- টাকা চাইবে। আর বাইরে থেকে ৩০০/- টাকা। তবে আমরা প্রকৃতির সান্নিধ্য চাচ্ছিলাম। তাই সিএনজিওয়ালাদের আশায় গুড়েবালি দিয়ে শুরু করলাম ১৫০০ ফুট উপরের দিকে হাঁটা।
![](https://assets.roar.media/assets/OtlTpGAqy2p7V40i_20211008_103006.jpg)
শুরুতে তেমন কোন কষ্ট না হলেও ১৫/২০ মিনিট হাঁটার পরই আসলে বুঝতে পারলাম, কেন পাহাড় বুক চিতিয়ে এমন অহংকার প্রকাশ করে। পথিমধ্যে থামছিলাম বিভিন্ন ভিউ পয়েন্ট থেকে চারিদিকের চোখধাঁধাঁনো সবুজের সমারোহ দেখার জন্যে। আবার, হাঁটার সময় পাহাড়ি ঘন জঙ্গলে বানরের গাছের ডাল ভাঙ্গার শব্দ চমকে দিচ্ছিল আমাদের। কখনো বা অসতর্কে একদম মুখের সামনে চলে আসছিল ঝুলন্ত বিছে। কখনো বা ছোট ছোট টিলার মতো জঙ্গল উঠে গেছে রাস্তা থেকে আরো উপরের দিকে, কখনোবা নেমে গেছে একদম খাদের মতো নীচের দিকে। ঝিঁঝিঁ পোকার ঝি-ঝি শব্দের ঝিম ধরানো ভাব, আর নিস্তব্ধ এমন পরিবেশ, সবুজের বুক চিরে ক্লান্ত হয়ে হেঁটে চলা, সিএনজিতে উঠে আয়েশ করে যাওয়ার চাইতে হাজার গুণে ভালো; অন্তত পাহাড় আর প্রকৃতিপ্রেমী তো তাই বলবে।
টানা দেড় ঘণ্টা কিংবা তার খানিকটা বেশি হাঁটার পর সুপ্তধারা ঝর্ণার চেকপয়েন্টে এসে দাঁড়ালাম আমরা। নামার ইচ্ছাকে দমিয়ে রেখে আবারো হাঁটা শুরু করলাম পাহাড়ের আরো উঁচুর দিকে। কিন্তু এতক্ষণ যেই কষ্টটা হচ্ছিল সেটা অনেকটাই লাঘব করে দিল ৩০ টাকা দিয়ে নেয়া একটা লাঠি। যাবার সময় ফেরত দিলে ২০ টাকা পাবেন। সুপ্তধারার চেক পয়েন্ট অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে চললাম পাহাড়ের আরো উঁচুতে, আরো গহীনে।
পথ যেন শেষ হতে চায় না, পা যেন আর এগোতে চায় না, কাঁধ আর শরীরের মাংসপেশি ব্যথায় তীব্র প্রতিবাদ জানায়; কিন্তু ঝর্ণার দেখার অদম্য ইচ্ছের কাছে সেসব নেহায়েত নস্যি লাগে। আরো প্রায় ঘণ্টাখানেক বা তারও বেশি সময় হাঁটার পর এসে পৌঁছালাম পাহাড়ের উঁচুতম চূড়ায়, যার উচ্চতা প্রায় ১৪৯৬ ফুট (অন্তত মাইলফলকে তাই লেখা ছিল)।
![](https://assets.roar.media/assets/RQm3PGeDnRv0NxhX_20211008_110121.jpg)
খানিক বিশ্রাম নিয়েই নেমে পড়লাম আসল উদ্দেশ্যে। সৌন্দর্য উপভোগ করতে এতক্ষণ পাহাড়ে উঠেছি এবার নামতে হবে সিঁড়ি বেয়ে। পাহাড়ের গাঁয়ে খোঁদাই করা ৪৮৩টা সিঁড়ি অতিক্রম করতে হবে। শুরু হলো আমাদের যাত্রা। যতই নিচে নামছি ততই ঝর্ণার গর্জন শুনতে পাচ্ছিলাম। যেন অভিযাত্রীদের ডাকে তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। যখন প্রায় শেষে পৌঁছে গেছি, নিচে তাকিয়েই ঝিরিপথ দেখা যাচ্ছে, ঠিক সেই সময় উইলি ভাই পেছন থেকে ডেকে আমাকে জানালো যে, আমার পা থরথর কাঁপছে। অথচ বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে কেবল ছবিতে দেখা ঝর্ণার কথা মনে করলাম। কোথা থেকে সাহস আর শক্তি ভর করলো, কে জানে? সিঁড়ি ভেঙ্গে নেমেই ঝিরিপথ ধরে সোজা হাঁটা শুরু তাকে দেখার উদ্দেশ্যে।
গাছের ডালের ফাঁক গলে যখন সহস্রধারা ঝর্ণা দেখলাম তখন নিমেষেই পায়ের ব্যথা, মাংসপেশির যন্ত্রণা, অ্যাডভেঞ্চার করার জন্য নিজেকে দোষারোপ করা সব যেন কোথায় মিলিয়ে গেল। জীবনে প্রথমবারের মতো ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। সঠিক বাংলায় বললে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম ক্ষণিকের জন্যে। সম্বিত ফিরে পেতেই পানিতে নেমে দাপাদাপি শুরু। ঘণ্টাখানেক বরফশীতল জলে ক্লান্তি ধুয়ে নিয়ে উঠে পড়লাম পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। আবার সেই ৪৮৩টা সিঁড়ি উপরে উঠতে হলো। দম ফুরিয়ে আসতে চায়, পায়ে খিল ধরে কিন্তু ঝর্ণা দেখার অদম্য ইচ্ছে সেসব ব্যথা আর যন্ত্রণাকে পাশ কাটিয়ে আমার মনে সাহস আর শরীরে শক্তি যোগায়।
![](https://assets.roar.media/assets/eQ1JzvaTnRThJumZ_IMG_20211008_111646204_HDR-01.jpeg)
সহস্রধারা ঝর্ণার চেকপয়েন্টে এসে উঠে আর নড়ার শক্তি ছিল না। তখনই সাত রাজার ধনের মতোই আমাদের সাথে আসা এক বড় ভাই তার ব্যাগ থেকে সেদ্ধ ডিম, খেজুর আর বন রুটি বের করে দিল। এগুলো খেয়ে খানিক বিশ্রাম নিয়েই আবার নিচের দিকে নামা শুরু, উদ্দেশ্য সুপ্তধারা ঝর্ণা। একটানা হেঁটে সুপ্তধারা চেকপয়েন্টে এসে খানিকটা জিরিয়ে নিয়েই আবার নামতে শুরু করলাম সিঁড়ি বেয়ে। এবার প্রায় ৩৮৩টা সিঁড়ি হবে (সঠিক খেয়াল নেই)। কিন্তু এই সিঁড়ি ঠিক আর সিঁড়ির পর্যায়ে ছিল না। এমনকি সিঁড়ি ধরে হাঁটলে উলটো পড়ার সম্ভাবনা আছে। তাই হাঁটছিলাম সিঁড়ির পাশ দিয়ে মাটি ধরে। পাশে ঘন জঙ্গল আর খাদ দেখে ভয় লাগলেও খানিকটা রোমাঞ্চকর অনুভূতি হচ্ছিল। সিঁড়ির ধাপ শেষ করেই দেখলাম ঝিরিপথ।
সহস্রধারাতে নেমেই যেমন ৫ মিনিট হেঁটে ঝর্ণার সন্ধান পেয়েছিলাম, সুপ্তধারাতে ব্যাপারটা তেমন নয়। ঝিরিপথ ধরে কমপক্ষে ৩০/৩৫ মিনিট হাঁটতে হয়। অবশ্য মানুষ হাঁটাচলা করতে করতে ঝিরিপথের পাশ দিয়ে পায়ে হাঁটা রাস্তা হয়ে গেছে। তবে কিছু জায়গায় পানিতে নামতেই হবে নাহলে সেই পথে হাঁটা মুশকিল হয়ে যায়। যতই সামনের দিকে যাচ্ছিলাম ঝর্ণার গর্জন ততই বাড়ছিল। এমনই করে হাঁটতে হাঁটতে যখন হঠাৎ একটা গাছের ডাল সরিয়ে সুপ্তধারার রূপ দেখলাম তখন দুটো লাইন হুট করেই মাথায় উদয় হয়েছিল,
সুপ্ত অবস্থায় তুমি ঝড়ে পড়ো অঝোর ধারায়,
তোমার সৌন্দর্যের কাছে তুচ্ছ প্রকৃতির সকল ধারা!
![](https://assets.roar.media/assets/azvnfaUcREmASrzc_20211008_144324.jpg)
পরপর তিনটা ধারা থেকে অঝোর ধারায় ঝরে পড়ছিল সুপ্তধারা ঝর্ণা। পাশেই আরো দুটো ছিল কিন্তু সেগুলো দিয়ে একদমই টিপটিপ করে পানি পড়ছিল। হয়তো ভরা বর্ষায় নিজের সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে বসে এই ঝর্ণার ধারা। তবে ভাগ্য ভালো হওয়ায়, আমি আসার আগের রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। যেজন্য ঝর্ণার স্রোত, রূপ আর স্বচ্ছ পানি তিনটাই দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। মুহূর্ত বিলম্ব না করে নেমে পড়লাম ঝর্ণার পানিতে।
একদম শেষের ধারাটার খানিক উপরে একটা পাহাড়ের মাঝে একটা খাঁজকাটা জায়গা আছে। যদিও অনেক বেশি ঝুঁকি, তবুও ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে পারিনি। ভয় নিয়েই সেখানে উঠে বসার পর মনে হচ্ছিল, পৃথিবী যেন নিজের কক্ষপথ আবর্তন করা বন্ধ করে দিয়েছে, সময় যেন টিকটিক করে ছুটে চলা বন্ধ করে দিয়েছে; শুধু ঝর্ণা ঝরে পড়ছে অঝোর ধারায় আর আমি বসে ছিলাম ভিন্ন এক গ্রহে।
ঝর্ণা থেকে উঠে কাপড় না বদলেই আমরা আবারো সেই খাড়া আর ভঙ্গুর সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করলাম। আগেরবার যতটা কষ্ট হচ্ছিল উঠতে, এবার অনেকটাই কমে গেল। উপরে উঠেই সিএনজি ঠিক করলাম যেন ইকো পার্কের গেট পর্যন্ত নামিয়ে দেয়। যদিও শরীরের শক্তি তখনো অবশিষ্ট ছিল কিন্তু আমাদের ট্যুর প্ল্যানে আরেকটা স্পট ছিল দেখার। তাই, দরদাম করে ১৫০ টাকায় একটা সিএনজি নিয়ে নিলাম তিনজন মিলে। গেটের কাছে নেমেই একটা ফাঁকা জায়গা দেখে ভেজা কাপড় বদলে শুকনো জামা পরে নিলাম। অবশ্যই খুব সহজে পরিধান করা যায় এমন কাপড় নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
![](https://assets.roar.media/assets/w1SMNUVGoFIr8RUq_20211008_134121.jpg)
গেট দিয়ে বের হয়েই হোটেলে ঢুকে পড়লাম পেটপূজা করতে। এতটাই ক্ষুধার্ত ছিলাম আমরা সবাই যে খাবারের স্বাদ নিয়ে ভাবার সময়ও ছিল না। খাওয়া শেষ করেই সিএনজি নিলাম মেইন রোডে উঠার উদ্দেশ্যে। ভাড়া তো আগেই বলেছি। কিন্তু নামার আগে হঠাৎ করেই সিএনজি চালককে জিজ্ঞেস করলাম আমাদেরকে বাশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত নামিয়ে দিতে কত নেবে? অনেক দর কষাকষি শেষে ৩০০ টাকায় চলে গেলাম। কারণ, আমাদের হাতে সময় ছিল কম।
যদি বলেন বাশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে কি দেখার আছে? তাহলে বলতেই হয় আসলেই তেমন কিছু দেখার নেই শুধুমাত্র বঙ্গোপসাগর ছাড়া। তবে পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এখানে একটা স্টিলের ব্রিজ আছে যা সমুদ্রের অনেকটা দূর অবধি চলে গিয়েছে। তাই, সমুদ্রের জোয়ারের পানি যখন নামতে শুরু করে তখন সেই ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আপনি যেদিকেই তাকাবেন সেদিকেই শুধু পানি দেখবেন। তবে সেজন্য আপনাকে গুণতে হবে ২০ টাকা জনপ্রতি। আর হ্যাঁ, অবশ্যই ভাটার সময় যাবেন এবং সতর্ক থাকবেন। কারণ, একে তো নেই কোনো রেলিং বা ধরার কিছু; তার উপর মাঝে মাঝে অনেক জায়গায় ফাঁকা আছে। যদিও পানি খুব বেশি হলে কোমর অবধি হবে, তবুও সতকর্তা অবলম্বন করা উচিত।
![](https://assets.roar.media/assets/QrUgQVU6Al33WKgz_20211008_172540.jpg)
কিন্তু আমরা খুব বিষণ্ণ মনে ফিরে এসেছিলাম বাশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত থেকে। কারণ, সমুদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলাম ঠিকই কিন্তু চারিদিকে দেখেছি কেমন ময়লা আর আবর্জনাময় নোংরা পানি। চিপসের প্যাকেট, বোতল আরো কত কি! মনটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল, নিজেরাই নিজেদের প্রকৃতিকে এভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছি বলে। তাই, দেরি না করে কাদামাটি পেরিয়ে চলে এলাম বাধের উপরে। পা ধুয়ে আবার সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম বাঁশবাড়িয়া বাজারে। ভাড়া নিলো ১০০ টাকা। আমরা রিজার্ভ নিয়েছিলাম সিএনজি। তবে জনপ্রতি গেলে ২০/- টাকা করে নেয়।
বাঁশবাড়িয়া বাজার নেমে সেখান থেকে উঠে পড়লাম এক বাসে চিটাগাং শহরের উদ্দেশ্যে। প্রায় দেড় ঘণ্টা সময়ের জন্য জনপ্রতি আমাদের গুণতে হয়েছিল ৬০/- টাকা করে। শহরের মূল পয়েন্টে নেমে চলে গেলাম যে যার উদ্দেশ্যে। তবে হিসেব কষে দেখলাম সারাদিনের আমাদের ট্যুরের খরচ হয়েছিল মাত্র ৬৫০-৭০০ টাকা ছিল জনপ্রতি, তবে সেটা চিটাগাং শহর থেকে। সাথে শুধু আপনার যাতায়াত খরচ যোগ করবেন, যদি ঢাকা বা অন্য জেলা থেকে যান।
![](https://assets.roar.media/assets/4KJhTWW0GuTLWkzB_20211008_171233-%283%29.jpg)
আবার যদি আগের রাতে ঢাকা থেকে বাসে উঠেন তাহলে চিটাগাং শহর না গিয়ে সরাসরি সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের সামনেই নেমে যেতে পারেন। তাহলে খরচ আরো কমে যাবে। তাছাড়া, তাড়াহুড়োর জন্য আমরা খরচের কথা ভাবিনি। তাই, আপনি চাইলে ৫০০/- টাকার মধ্যেই এই তিনটা স্পট, সন্ধ্যে নামার আগেই শেষ করতে পারবেন। তারপর চিটাগাংয়ের ঐতিহ্যবাহী মেজ্জান খেয়ে আবার রাতের বাস ধরলাম সকালে ঢাকা পৌঁছে অফিস ধরার উদ্দেশ্যে। তবে এত সফল একটা ট্যুর সত্ত্বেও মনের মধ্যে ১টা শূন্যতা ছিল; সেটা হতে পারে কাছের এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়নি বলে; অথবা হতে পারে যান্ত্রিক শহরের কোলে আবারো রোবট হতে যাচ্ছি এই ভয়ে।