Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফেসবুকের নির্বাচনী কেলেঙ্কারিতে আছে বাংলাদেশর নামও: আপনি নিরাপদ তো?

২০০৪ সালে যখন ফেসবুকের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন এটি ছিল শুধুই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের ছবি এবং সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সম্বলিত একটি ওয়েবসাইট। কিন্তু কালক্রমে সেটিই হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে একটি। ফেসবুক এখন শুধুমাত্র একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং একইসাথে এটি হয়ে উঠেছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ক্রিস্টোফার উইলি, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হুইসেলব্লোয়ার; Source: NBC NEWS

দিনের একটি বড় অংশ সময়ই আমরা ফেসবুকে কাটাই। এখানেই আমরা নিজের মনের ভাব প্রকাশ করি, সামাজিক বা রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করি, পছন্দের স্ট্যাটাস, ছবি, ভিডিওতে লাইক দেই, কমেন্ট করি, শেয়ার করি, নিজের বিভিন্ন মুহূর্তের অবস্থান প্রকাশ করি। ফেসবুক হয়ে উঠেছে আমাদের সংবাদ সংগ্রহেরও প্রধান মাধ্যম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরাসরি সংবাদ মাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইটে না গিয়ে আমরা ফেসবুকের মাধ্যমেই বিভিন্ন সংবাদ গ্রহণ করি।

অর্থাৎ এক কথায় আমাদের অনলাইন জীবনে আমরা অনেকটাই এখন ফেসবুকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। আর এর ফলে ফেসবুক আমাদের উপর এতোবেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারছে, যা আমাদের অনেকেরই কল্পনারও বাইরে। আমাদের লাইক-কমেন্ট-শেয়ার বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে ফেসবুক আমাদের সম্পর্কে এতোবেশি তথ্য জানে, যা আমরা নিজেরাও জানি না। আর আমাদের এসব তথ্য ফেসবুক ব্যবহার করছে নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থে, যা অনেক সময়ই যাচ্ছে আমাদেরই বিপক্ষে।

ফেসবুক যেভাবে আমাদের গোপন তথ্য ব্যবহার করে

ফেসবুকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অবশ্য নতুন না এবং তা গোপন কিছুও না। আমরা কী ধরনের স্ট্যাটাস, ছবি বা ভিডিওতে লাইক দেই, কোন কোন শব্দ আমাদেরকে বেশি আকর্ষণ করে, কোন ধরনের সংবাদ পড়ি, কোন ধরনের লিংকে ক্লিক করি, এসব তথ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করাটাই ফেসবুকের মূল ব্যবসা। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসব তথ্য ব্যবহার করেই ফেসবুকের মাধ্যমে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন বাছাই করা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছায়।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা যেভাবে কাজ করে; Source: The Guardian

ফেসবুকের ভূমিকা যদি এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে হয়তো খুব একটা সমস্যা হতো না। কিন্তু গ্রাহকদের তথ্য সরকারী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে বিক্রি করার অভিযোগও আছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। আছে ভুয়া সংবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এবং রাশিয়ানদের দ্বারা প্রদত্ত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নির্বাচিত হতে সাহায্য করার অভিযোগও।

কিন্তু গত কয়দিন আগে ফাঁস হওয়া ফেসবুকের “কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা” কেলেঙ্কারি ছাড়িয়ে গেছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অতীতের সব অভিযোগের রেকর্ড। অভিযোগ উঠেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের গোপন তথ্য ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে ভোটারদের মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল। আর সেই প্রোফাইল অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট প্রাচারণা চালিয়ে ভোটারদেরকে প্রভাবিত করে নির্বাচনে জিততে সাহায্য করা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা এবং মার্কিন নির্বাচনে তাদের ভূমিকা

পুরো ঘটনাটি যথেষ্ট জটিল এবং প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন আপডেট আসছে। কিন্তু সংক্ষেপে ব্যাপারটি হলো, ২০১৪ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাশিয়ান-আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী আলেক্সান্দার কোগান ফেসবুকের জন্য একটি কুইজ ভিত্তিক অ্যাপ তৈরি করেন, যার নাম ছিল ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ (thisisyourdigitallife)। এই অ্যাপের মাধ্যমে তিনি প্রায় ২,৭০,০০০ ফেসবুক ব্যবহারকারী সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। তাদেরকে এবং ফেসবুককে জানানো হয়, এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে নিছকই গবেষণার স্বার্থে।

যারা যারা জড়িত; Source: The Guardian

সে সময় ফেসবুকের মাধ্যমে কোনো ব্যবহারকারী কোনো অ্যাপ ব্যবহার করলে অ্যাপটি তার বন্ধুদের তথ্যও সংগ্রহ করতে পারত, সেই বন্ধুদের অজ্ঞাতসারেই। ফলে কোগান সর্বমোট প্রায় ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হন, তাদের অনুমতি ছাড়াই। গবেষণার কথা বলা হলেও বাস্তবে কোগান সকল তথ্য সংগ্রহ করে রাখেন এবং কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে বিক্রি করে দেন। সে সময়ের ৫ কোটি প্রোফাইল ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এক-তৃতীয়াংশ এবং মোট ভোটারের এক-চতুর্থাংশ।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা হলো একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যারা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে, বিশেষত ফেসবুকের মাধ্যমে ভোটারদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে, তা বিশ্লেষণ করে ভোটারদের প্রোফাইল সংগ্রহ করে এবং সে অনুযায়ী কোনো নির্বাচনী পক্ষকে তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণে সাহায্য করে। প্রতিষ্ঠানটি ভারত শ্রীলঙ্কা, কেনিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে কাজ করেছে বলে অভিযোগ আছে। এমনকি, ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের আসন্ন ২০১৯ সালের নির্বাচন উপলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার ব্যাপারেও প্রাথমিক আলাপ করেছে এই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা!

তবে তাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তারা ফেসবুকের তথ্য ব্যবহার করে ইংল্যান্ডে ব্রেক্সিটের পক্ষে, মার্কিন নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে সিনেটর টেড ক্রুজের পক্ষে এবং পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করেছে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড মেম্বারদের একজন ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী উপদেষ্টা চরম ডানপন্থী নেতা স্টিভ ব্যানন। তার পরামর্শে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেন প্রখ্যাত রিপাবলিকান দাতা, কোটিপতি ব্যবসায়ী রবার্ট মার্সার। রবার্ট মার্সারের মেয়ে রেবেকা মার্সারও প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড মেম্বার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

যারা যারা জড়িত; Source: pressreader.com

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার একজন সাবেক কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার উইলি স্বীকার করেন, কোম্পানিটি কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর অজান্তে সংগ্রহ করা তাদের গোপন তথ্য ব্যবহার করে তৈরি তাদের মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল ব্যবহার করে। এবং তার উপর ভিত্তি করে হাজার হাজার ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং বিজ্ঞাপন তাদের সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করে যে, তারা খুব সহজেই তা দ্বারা প্রভাবিত হতে বাধ্য। আর এভাবেই তারা মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিততে সহায়তা করেন।

উইলির ভাষায়, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে হলে মানুষকে প্রভাবিত করতে হয়, মানুষের সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করতে হয়। তাদের কাছে এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ, যেই যুদ্ধে সব পদ্ধতিই বৈধ। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ছিল এই সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জেতার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রভান্ডার।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে আরো অভিযোগ উঠে আসছে। চ্যানেল ফোরের গোপন ক্যামেরায় ছদ্মবেশী প্রতিবেদকের সামনে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলেক্সান্ডার নিক্সকে বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে তাদের গ্রাহক দলকে জেতানোর জন্য তাদের দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন অনৈতিক এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বর্ণনা দিতে দেখা যায়।

ফেসবুকের দায়

প্রফেসর আলেক্সান্দার কোগান এবং কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ভোটারদের অনুমতি ছাড়াই তাদের গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যবহার করেছে ফেসবুক প্লাটফর্মটিকে ব্যবহার করেই। ফেসবুকও পরোক্ষভাবে তাদেরকে সে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অন্ততপক্ষে এটা বলা যায় যে, ফেসবুক তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

পূর্বে ফেসবুকের বিধি অনুযায়ী, অ্যাপ নির্মাতারা অ্যাপ ব্যবহারকারীর তথ্য ছাড়াও তাদের ফ্রেন্ডদের তথ্যও সংগ্রহ করতে পারত। কিন্তু তখনও এ ধরনের তথ্য নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না। পরবর্তীতে ফেসবুক অ্যাপ নির্মাতাদেরকে বন্ধুদের তথ্য সংগ্রহের অধিকার দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং আগে থেকেই সংগৃহীত তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেয়। কিন্তু আসলেই সেসব তথ্য মুছে ফেলা হয়েছিল কিনা, সেটি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয় ফেসবুক।

আলেক্সান্দার কোগান যে তারপরেও ব্যবহারকারীদের তথ্য ব্যবহার করেছিলেন, সেটা ফেসবুক জানতে পেরেছিল ২০১৫ সালেই। কিন্তু তারপরেও তারা ব্যবহারকারীদের এর ঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করেনি, কিংবা কোগানের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা শুধু ফেসবুক থেকে কোগানের অ্যাপটি মুছে দিয়েছিল এবং কোগানের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চেয়েছিল যে তিনি সকল তথ্য মুছে ফেলবেন। কোগান এবং কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সিইও আলেক্সান্ডার নিক্স দাবি করেছেন, তারা ঐসকল তথ্য মুছে ফেলেছিলেন, কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, তারা তথ্যগুলো এখনও থাকার প্রমাণ পেয়েছে।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া

আইনগতভাবে ফেসবুক কতটুকু দায়ী, তা তদন্তসাপেক্ষ। কিন্তু কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ঘটনার ফাঁস হওয়ার পর থেকে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। টুইটারে #DeleteFacebook হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তারা ফেসবুকের ক্ষতিকর দিকগুলো এবং ফেসবুক পরিত্যাগের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন

বর্তমানে ফেসবুকের মালিকানাধীন জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ হোয়্যাটসঅ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান অ্যাপটন ফেসবুকের কল্যাণেই কোটিপতি হয়েছেন। কিন্তু তিনিও মানুষকে ফেসবুক ডিলিট করার আহ্বান জানিয়েছেন। #DeleteFacebook হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তিনি লেখেন, “ইট’স টাইম”। অর্থাৎ ফেসবুক ত্যাগের এখনই সময়।

সাবেক এনএসএ কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন ফেসবুককে সোশ্যাল মিডিয়ার পরিবর্তে নজরদারির অ্যাপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ফেসবুক যে নজরদারির প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে সামাজিক গণমাধ্যম হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে, সেটা হচ্ছে যুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পরিচিতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হওয়ার পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় প্রতারণা।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকে ফেসবুক আর্থিকভাবেও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। গত দু’দিনে ফেসুকের লোকসান হয়েছে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার। মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণও হ্রাস পেয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া ফেসবুকের শেয়ারের দরও নেমে এসেছে গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে আইনপ্রণেতাদের কমিটির কাছ থেকে ফেসবুকের ভূমিকা তদন্ত করার দাবি উঠেছে। নিউইয়র্ক এবং ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেলরা ফেসবুকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে।

কীভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখবেন?

অনেক সমালোচনা এবং প্রতিবাদ হলেও ফেসবুক হয়তো বন্ধ হবে না, অথবা বিকল্প কোনো সামাজিক গণমাধ্যমও হয়তো সহজে উঠে আসবে না। কিছুটা পরিবর্তিত পদ্ধতিতে ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপ আপনার-আমার বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করে যেতে থাকবে। তবে আপনি একটু সচেতন হলে নিজেকে কিছুটা হলেও নিরাপদ রাখতে পারবেন। নিচের পদ্ধতিগুলো হয়তো আপনার কাজে লাগতে পারে:

  • শুধু ফেসবুক না, মোবাইল ফোনে যেকোনো অ্যাপ ইনস্টল করার সময় ভালো করে পড়ে দেখুন তারা আপনার সম্পর্কে কী কী তথ্য গ্রহণ করার অনুমতি চাইছে। যদি দেখেন প্রয়োজনের অতিরিক্ত তথ্য চাইছে, তাহলে সে অ্যাপ ব্যবহার না করাই ভালো।
  • কিছুদিন পরপর ফেসবুকের সিকিউরিটি সেটিং চেক করুন এবং নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি অনুমতি দিতে চাইছেন না এমন কোনো তথ্য উন্মুক্ত রয়ে গেছে কিনা।
  • ফেসবুক মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এটিকে শুধুমাত্র সে উদ্দেশ্যেই, অর্থাৎ বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগের জন্যই ব্যবহার করুন। এর বাইরে ফেসবুকের অভ্যন্তরে কোনো গেম, কুইজ অথবা অন্য কোনো অ্যাপ ব্যবহার না করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • ব্রাউজার থেকে ফেসবুক ব্যবহার করলে বিভিন্ন অ্যাডব্লকার এক্সটেনশন ব্যবহার করার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় অ্যাড বন্ধ করে রাখুন, যেন সেসব বিজ্ঞাপন দ্বারা আপনাকে প্রভাবিত হতে না হয়।
  • ফেসবুকে কেউ কোনো নিউজ শেয়ার দিলেই সেটাতে ক্লিক করবেন না, বা সেটা বিশ্বাস করবেন না। খুবই স্বল্প খরচে বা একেবারে বিনামূল্য খুব আকর্ষণীয় ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে ভুয়া সংবাদ ছড়ানো সম্ভব। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠিত এবং বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যমের এবং খ্যাতিমান সংবাদিকদের দেওয়া লিংকে ক্লিক করার অভ্যাস তৈরি করুন।
  • যেসব পেজ, ব্যবহারকারী বা সাংবাদিক একাধিক অনির্ভরযোগ্য তথ্য শেয়ার করবে, তাদেরকে ব্লক বা আনফলো করার অভ্যাস তৈরি করুন। বর্তমানে বাংলাদেশেও বেশ কিছু সংবাদ যাচাইমূলক ওয়েবসাইট আছে। যেকোনো সংবাদ সম্পর্কে সন্দেহ হলে সেসব ওয়েবসাইটে গিয়ে নিশ্চিত হয়ে তবেই কেবল শেয়ার করুন।
  • ফেসবুককে সংবাদের উৎস হিসেবে ব্যবহার না করে বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি সংবাদ পড়ার অভ্যাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।

ফিচার ইমেজ- elperiodico

Related Articles