কয়েকদিন আগে শেষ হয়ে গেল বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর জোট জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলন বিভিন্ন কারণে আলোচনার বিষয় হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে হাজির হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎ আলোচনার কেন্দ্রে ছিল এবারে। তাদেরকে নিয়ে অনেক ট্রলও হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ঘটেছে কিছু মজার ঘটনাও। সব ছাপিয়ে এই সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের অঙ্গীকারও কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সব মিলিয়ে এবারের সম্মেলনে যা ঘটেছিল সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
জি-২০ কী?
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে বলার আগে এটি সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। অনেকেই মনে করতে পারেন, এটি বিশ্বের ২০টি দেশের সংগঠন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এটি বিশ্বের ১৯টি দেশ ও একটি আঞ্চলিক সংগঠনের ফোরাম যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘Group of 20′। সেখান থেকেই G-20 নামকরণ করা হয়েছে। সেই আঞ্চলিক সংগঠনটির নাম হচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। যদিও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য এমন রাষ্ট্রও পৃথকভাবে জি-২০ এর সদস্য। এই জোটের রাষ্ট্রগুলো বিশ্ব জিডিপি’র প্রায় ৮০ শতাংশের মালিক। বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয় মানুষ এই দেশগুলোতে বসবাস করে।
১৯৯৯ সালে জি-৭ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এই আন্তর্জাতিক ফোরাম। বৈশ্বিক বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ, অভিবাসনসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করতে প্রতি বছর রাষ্ট্রপ্রধানরা এভাবে মিলিত হন। এছাড়া অর্থমন্ত্রীদের ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদেরও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জি-২০ এর সদস্য দেশ
১. আর্জেন্টিনা, ২. অস্ট্রেলিয়া, ৩. ব্রাজিল, ৪.কানাডা, ৫. চীন, ৬. ফ্রান্স, ৭. জার্মানি, ৮. ভারত, ৯. ইন্দোনেশিয়া, ১০. ইতালি, ১১. জাপান, ১২. মেক্সিকো, ১৩. রাশিয়া, ১৪. দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৫. সৌদি আরব, ১৬. দক্ষিণ কোরিয়া, ১৭. তুরস্ক, ১৮. যুক্তরাজ্য, ১৯. যুক্তরাষ্ট্র ও ২০. ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইউরোপিয়ান কাউন্সিল দ্বারা প্রতিনিধিত্ব)।
কীভাবে জি-২০ এর যাত্রা শুরু হলো?
১৯৯৯ সালে জার্মানির বার্লিনে ইইউ ও ১৯টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এবং অর্থমন্ত্রীদের একটি সম্মেলনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে জি-২০।
২০০৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে আলোচনার জন্য রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদেরকে সম্মেলনে যোগ দিতে আহবান করেন। সেই বছর ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরা যোগ দেন। এরপর থেকে প্রতি বছর একবার করে তারা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনা করেন।
২০০৮ সালের পর থেকে বছরে একবার করে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও তার আগে প্রতি বছর অর্থমন্ত্রীর ও গভর্নররা দু’বার করে সভা করতেন।
২০১৭ সালের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিলেন যারা
১৯টি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধির এবারের সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ সম্মেলনে যোগ দেননি। তার পরিবর্তে ইব্রাহিম আব্দুল আজিজ আল আসাফ যোগ দিয়েছিলেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি ও অর্থমন্ত্রীরা ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এবার অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা।
এছাড়া নরওয়ে, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, আফ্রিকান ইউনিয়ন, এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা ও নিউ পার্টনারশিপ ফর আফ্রিকান ডেভেলপমেন্টও অংশগ্রহণ করে সম্মেলনে।
কোন কোন বিষয় আলোচিত হয়েছে?
এবারের প্রধান প্রধান এজেন্ডার মধ্যে ছিল উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিধিবিধান এবং বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন নীতি, শ্রম বাজার ও কর্মী নীতি, ডিজিটাল প্রযুক্তির বিস্তার, সন্ত্রাসবাদ-বিরোধিতা, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য, অভিবাসন ও শরণার্থী, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমন এবং উত্তর কোরিয়ার মিসাইল পরীক্ষা।
জি-২০ সিদ্ধান্ত কি আইনে পরিণত হয়?
না, জি-২০ ফোরামে যেসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বা যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সেগুলো বাস্তবায়নে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে দেশগুলোর নীতিমালা তৈরিতে এসব সিদ্ধান্তের প্রভাব থাকে।
জি-২০ সম্মেলনের আগে কেন বিক্ষোভ হয়েছিল?
জি-২০ সম্মেলনের বিরোধিতায় মিছিল-সভা নতুন নয়। যারা বিশ্বায়নের বিরোধিতা করেন, তারা এ বছরও এই সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা মূলত বৈশ্বিক পুঁজিবাদ ব্যবস্থার বিরোধিতা করেছিলেন। বিশ্ব অর্থনীতিতে বৈষম্য ও জলবায়ু পরিবর্তন নীতি নিয়ে জি-২০’র এজেন্ডা প্রতিবাদের অন্যতম কারণ।
বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানায় নি। রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করেছিল ও আগুন দিয়েছিল। রড দিয়ে পুলিশের উপর হামলাও চালানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে আগুন বোমাও নিক্ষেপ করেছিল। বিক্ষোভকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পিপার স্প্রে ওজলকামান ব্যবহার করা হয়েছিল। এতে ১৬০ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছিলেন। পুলিশও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছিল।
এবারের জি-২০ সম্মেলনের অর্জন
১. মুক্ত বাণিজ্য
মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বজায় রাখার ব্যাপারে দৃঢ় মত পোষণ করেছেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা। সব রাষ্ট্র যেন বিশ্বায়ন থেকে সুবিধা লাভ করতে পারে, সেজন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে জোর দিয়েছেন তারা।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অধীনে সুনির্ধারিত নিয়ম-রীতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে সম্মেলনে। শিল্পক্ষেত্রে, বিশেষ করে স্টিল শিল্পে একচেটিয়া ব্যবসা দূরীকরণের বিষয়েও জোর দেয়া হয়েছে। আগামী নভেম্বরের মধ্যে এ সমস্যা সমাধানে একটি রিপোর্ট চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।
২. প্যারিস চুক্তি
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে করা প্যারিস চুক্তি মেনে চলতে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র বাদে সব দেশ একমত হয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা ‘প্রবৃদ্ধির জন্য জি-২০ হামবুর্গ জলবায়ু ও জ্বালানি কর্ম পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে।
৩. আফ্রিকার সাথে অংশীদারিত্ব
টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের জন্য জি-২০ ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার বিষয় একমত হয়েছেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা। আফ্রিকা ইউনিয়নের এজেন্ডা-২০৬৩ এর আলোকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে।
৪. সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই
জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় জি-২০ রাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে আরো সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে একে অন্যকে তথ্য সরবরাহ করবে। সন্ত্রাসদের অর্থায়ন কমাতে ‘ফাইনানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ সক্রিয় করা হবে। জি-২০ সদস্যরা প্রত্যাশা করেন যোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সন্ত্রাসীদের তথ্যগুলো অনলাইন থেকে দ্রুত মুছে দেবে।
৫. ডিজিটালাইজেশন রোডম্যাপ
২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষকে ডিজিটাল বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিকরণের লক্ষ্যে তারা জি-২০ রাষ্ট্রগুলো সহযোগিতা করার বিষয় একমত হয়েছে। ‘#eSkills4Girls’ উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য জার্মানি ৯টি পরিকল্পনা উত্থাপন করেছে।
৬. আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণে আপসহীনতা
আর্থিক বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য ‘হামবুর্গ কর্ম পরিকল্পনা’ গ্রহণ করা হয়েছে। বৈশ্বিক ন্যায্য ট্যাক্স পদ্ধতির বিষয়েও জোর দিয়েছে তারা।
৭. টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে জি-২০ রাষ্ট্রগুলো। তাদের কর্ম পরিকল্পনায়ও এ বিষয় যুক্ত করা হয়েছে যা ‘হামবুর্গ হালনাগাদ’ নামে পরিচিত। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো অর্জনে জি-২০ রাষ্ট্রগুলো কতটা কাজ করছে হালনাগাদে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
৮. মহামারী ও এন্টিমাইক্রোবিয়াল
জি-২০ রাষ্ট্রগুলো একমত হয়েছে যে, মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হতে পারে। এবারই প্রথমবারের মতো জি-২০ স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, বিশ্বব্যাংকের সমন্বয়ে মহামারী প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া এন্টিমাইক্রোবিয়াল (Antimicrobial) প্রতিরোধের বিরুদ্ধে লড়াই করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সম্মেলনে।
৯. উন্নয়নশীল দেশে নারী উদ্যোক্তাদেরকে সহযোগিতা
উন্নয়নশীল দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য একটি বহুপাক্ষিক ফান্ড গঠন করবে জি-২০ রাষ্ট্রগুলো। বিশ্বব্যাংকের আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে এ ফান্ড গঠন করা হবে।
১০. বাস্তুচ্যূতির মূল কারণ নিয়ে আলোচনা
মানুষের বাস্তুচ্যূত হওয়া বা দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার মূল কারণ বের করার উপর জোর দিয়েছে জি-২০। যে দেশ থেকে অভিবাসীরা দেশান্তরী হচ্ছে ও যে দেশগুলো ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে সেসব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় অভিবাসী ও শরণার্থীদের বিষয়ে কাজ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সম্মেলনে।
আর কী কী ঘটেছিল এবারের সম্মেলনে?
সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডিন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পর তারা সিরিয়ায় যুদ্ধ বিরতিতেও সম্মত হয়েছিলেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এ বিষয় জানিয়েছিলেন যে “যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে আরো বাস্তববাদী হচ্ছে।”
ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকও এবারে সম্মেলনের বাইরে আলোচিত বিষয় ছিল। তাদের বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছিল উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা কমিয়ে আনার বিষয়। সেই বৈঠকে জিনপিং দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সফরের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।
জি-২০ এর পরবর্তী সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে?
জি-২০ এর পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে, ২০১৮ সালে। ১৩তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ আয়োজক হতে যাচ্ছে এ সম্মেলনের।
এবারের সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কতটা বাস্তবায়িত হবে এবং পরবর্তী সম্মেলনে তার কতটা মূল্যায়ন হবে, সেটি দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে ২০১৮ সালের সম্মেলন পর্যন্ত। দক্ষিণ আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য সেই সম্মেলনের অপেক্ষায় আছি আমরা।