জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবুবকর আল বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদ নতুন নয়। এর আগেও অন্তত পাঁচবার তার মৃত্যুর গুজব শোনা গিয়েছিল। কিন্তু গত দু’মাস ধরে মিডিয়াতে তার মৃত্যুর সংবাদ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে প্রচারিত হচ্ছে। কিছু কিছু সংগঠন শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করলেও এখন আবার শোনা যাচ্ছে, বাগদাদী বেঁচে আছেন। কিন্তু সত্য আসলে কোনটা?
রাশিয়ার দাবি
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়া সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। শুরু থেকেই তারা তুরস্কগামী আইএসের কয়েকশ তেলবাহী ট্রাক ধ্বংস করে আইএসের অর্থনীতির উপর বড় ধরনের আঘাত করা সহ তাদের অনেক সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে আইএসবিরোধী যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু এর আগে তারা কখনও সরকারিভাবে আইএস প্রধান বাগদাদীকে হত্যার দাবি করেনি।
গত ১৬ই জুন, প্রথমবারের মতো রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করে, বাগদাদী সম্ভবত তাদের বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, মে মাসের ২৮ তারিখে ইসলামিক স্টেটের রাজধানী, সিরিয়ার রাক্কা শহরের দক্ষিণে আইএসের মিলিটারি কাউন্সিলের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলাকালে ঐ হামলা চালানো হয়। এতে আইএসের ৩০ জন মাঝারি পর্যায়ের নেতা ছাড়াও প্রায় ৩০০ সৈন্য উপস্থিত ছিল।
ড্রোন ফুটেজের মাধ্যমে পূর্ব থেকে ঐ মিটিং সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পর একাধিক এসইউ-২৪ এবং এসইউ-২৫ বিমান থেকে এই হামলা চালানো হয় বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে রাশিয়া বাগদাদীর মৃত্যু সম্পূর্ণ নিশ্চিত করতে পারেনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য যাচাই-বাছাই করে তারা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে, বাগদাদী আসলেই মারা গিয়েছে কি না।
রাশিয়ার দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ
বাগদাদীকে হত্যার পর একমাস পেরিয়ে গেলেও রাশিয়া তাদের দাবির পক্ষে নতুন কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। ফলে এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। মার্কিন সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, এতদিন আগে সংঘটিত এরকম বড় আকারের একটি মিটিংয়ে হামলা হলে এবং এতে এতো মানুষ মারা গেলে সে ব্যাপারে অন্য কেউ জানবে না, এটা বেশ রহস্যজনক।
সিএনএন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে প্রথম থেকেই সন্দিহান ছিলেন। কারণ এই পরিস্থিতিতে বাগদাদী এতো বেশি মানুষের সাথে প্রকাশ্যে মিটিং করার কথা না। তারপরেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্ত করে দেখেছিল যে, এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায় কি না। কিন্তু তারা এর পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি। আইএস বিরোধী যুদ্ধে মার্কিন শীর্ষ কমান্ডার লেঃ জেনারেল স্টিফেন টাউনসেন্ড বলেন, “সত্যি কথা বলতে, আমাদের এ ব্যাপারে কোনো ধারনাই নেই। তবে আমরা আশা করি, সে মারা গেছে।”
রাশিয়া নিজেও ইতোমধ্যে তাদের দাবি থেকে সরে আসে। গত ১৭ই জুলাই, সোমবার, রাশিয়ান সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের জানান, বাগদাদী আসলেই মারা গেছে কি না, এ ব্যাপারে তারা এখন আর নিশ্চিত না। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এখন যেসব তথ্য আসছে, সেগুলো পরস্পর সাংঘর্ষিক।
সাংবাদিক এবং গবেষকরাও রাক্কাতে বাগদাদীর উপস্থিতির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কারণ বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী আইএস আগে থেকেই জানতো যে, শীঘ্রই রাক্কাতে বিমান হামলা শুরু হবে। তাই তারা আরও কয়েক মাস আগেই তাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদেরকে রাক্কা থেকে সিরিয়ার ইরাক সীমান্তবর্তী শহর দীর আজ্জুরে সরিয়ে নিয়েছিল।
সুমারিয়া টিভি চ্যানেলের দাবি
রাশিয়ার দাবির দুই সপ্তাহ পর, গত ১লা জুলাই, ইরাকের সুমারিয়া টিভি চ্যানেল দাবি করে, আইএসের এক শীর্ষ নেতা বাগদাদীর মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে এবং শাস্তি হিসেবে আইএস তাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। ইতালিয়ান সাংবাদিক ড্যানিয়েল রেইনারি জানান, সুমারিয়া টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, জুনের ৩০ তারিখে বাগদাদীর ঘনিষ্ঠ এক আইএস নেতা, আবু কুতাইবা, ইরাকের তাল’আফারর শহরে এক খুতবার সময় প্রথম বাগদাদীর মৃত্যুর কথা ইঙ্গিত করে।
আবু কুতাইবা বাগদাদীর কথা বলতে গিয়ে মসজিদ ভরা মানুষের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। পরের দিন আইএসের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা কুতাইবাকে গ্রেপ্তার করে, তাল’আফারে নিউজ ব্ল্যাক আউট ঘোষণা করে এবং এই নির্দেশ ভঙ্গকারীর জন্য ৫০ চাবুক শাস্তি ঘোষণা করে। তাল’আফরে আইএসের নেতারা বাগদাদীর মৃত্যুর গুজব অস্বীকার করে এবং শীঘ্রই বাগদাদীর অডিও রিলিজ আসবে বলে ঘোষণা দেয়। তারা আবু কুতাইবাকে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দেয়।
সুমারিয়া টিভির তথ্য অনুযায়ী, ১লা জুলাইয়ে তাল’আফারে জনসমক্ষে আবু কুতাইবাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তারা আরও জানায়, বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদকে কেন্দ্র করে তাল’আফারে আইএসের মধ্যে অভ্যন্তরীন ক্যু সংগঠিত হয়েছে এবং আইএসের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা গণহারে বিদ্রোহীদেরকে গ্রেপ্তার করছে।
সুমারিয়া টিভি চ্যানেলের দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা
সুমারিয়া টিভির ওয়েবসাইট তাদের বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করেনি, কিংবা তারা কিভাবে নিশ্চিত হয়েছে সেটাও জানায় নি। তাছাড়া সুমারিয়া টিভির বিশ্বাসযোগ্য সংবাদদাতা হিসেবে তেমন কোনো পরিচিতি নেই। কয়েক মাস আগে তারা আরও একবার আলোচনায় এসেছিল, যখন তারা রিপোর্ট করেছিল ইরাকের কিরকুক শহরে বন্য শুকরের আঘাতে তিন আইএস সদস্য নিহত হয়েছিল। সেই সংবাদটিও তখন ট্যাবলয়েডগুলো ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যমকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।
২০১৫ সালে এই সুমারিয়া টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ এসেছিল যে, ১৫টি বাংলাদেশী আইএস পরিবার একযোগে ইরাকে প্রবেশ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত অন্য কোনো সূত্র ঐ সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত হওয়ায় এবং বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি থাকায়, আরবি সংবাদ মাধ্যমগুলোতে স্থান পেলেও ট্যাবলয়েড ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সুমারিয়ার এ সংবাদটি গুরুত্ব পায়নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের দাবি
সর্বশেষ গত ১১ জুলাই, মঙ্গলবার, যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করে যে, তাদের কাছে নিশ্চিত তথ্য আছে, আইএস প্রধান আবুবকর আল-বাগদাদী মারা গেছে। তারা এই ঘোষণা দেয় ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদির মসুল যুদ্ধে আইএসের বিরুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই।
সংস্থাটির পরিচালক, রামি আব্দুর রহমান জানান, তারা দীর আজ্জুর শহরে অবস্থিত আইএসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নেতার কাছ থেকে নিশ্চিত হয়েছেন যে, বাগদাদী সিরিয়ার ইরাক সীমান্তবর্তী শহর দীর আজ্জুরেই মারা গেছে। সেখানে সে গত তিন মাস ধরে অবস্থান করছিল। তবে বাগদাদী কবে এবং কীভাবে নিহত হয়েছে, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে পারেন নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা
বাগদাদীর মৃত্যু নিয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, তার মধ্যে এই দাবিটি নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় সবগুলো মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে যে, বাগদাদী নিশ্চিতভাবেই নিহত হয়েছে এবং তার মৃত্যুর সংবাদটি আইএস স্বীকার করেছে।
এর কারণ, তুলনামূলকভাবে নির্ভরযোগ্য এবং নির্ভুল তথ্যের উৎস হিসেবে সিরিয়ান অবজারভেটরির সুপরিচিতি আছে। গত ছয় বছরের সিরিয়া যুদ্ধের ইতিহাসে তারা অধিকাংশ সময়ই সঠিক তথ্য সরবরাহ করেছে। তাছাড়া বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের জন্য সংস্থাটিকে স্বীকার করতে হয়েছে যে, তাদের সাথে আইএসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নেতার পরোক্ষ যোগাযোগ আছে, যেটা তাদেরকে বিতর্কিত করে তোলার সম্ভাবনা আছে। এই ঝুঁকি নিয়েও তারা সংবাদটি প্রকাশ করায় স্বভাবতই এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে বাগদাদীর মৃত্যু কবে এবং কোথায় হয়েছে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য না দিতে না পারায় এবং অন্য কোনো গোয়েন্দা সংস্থা, পর্যবেক্ষক সংস্থা অন্য কোনো আইএস নেতার কাছ থেকে এর সমর্থনে কোনো বক্তব্য না পাওয়ায়। তাছাড়া মিডিয়াতে যেরকম প্রচারিত হয়েছে যে, আইএস বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদ স্বীকার করেছে, সেটিও সত্য নয়। ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, আইএসের বার্তাসংস্থা আ’মাক, যেটি থেকে তারা তাদের নেতাদের মৃত্যু সহ সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ করে, সেখান থেকে এখন পর্যন্ত বাগদাদীর মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
সর্বশেষ দাবি- বাগদাদী জীবিত
সিরিয়ান অবজারভেটরির দাবির পর সবাই যখন মোটামুটি মেনে নিয়েছিল যে, বাগদাদী হয়তো আসলেই নিহত হয়েছেন, তখন গত সোমবার, ১৭ই জুলাই, রাক্কাতে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কুর্দি বাহিনী দাবি করে, তারা ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত যে, বাগদাদী বেঁচে আছে। কুর্দি কাউন্টার টেররিজমের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, লাহুর তালাবানী বলেন, তাদের কাছে নিশ্চিত তথ্য আছে যে, বাগদাদী এখনও জীবিত। তিনি আরও বলেন, “ভুলে যাবেন না, বাগদাদী আল-ক্বায়েদার সময় থেকেই ইরাকে যুদ্ধ করে আসছে। সে তখন থেকেই গোয়েন্দা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে আসছে। সে জানে, সে কী করছে।”
প্রায় একই সময়, ইরাকী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ইন্টেলিজেন্স এবং কাউন্টার টেররিজম বাহিনীর মহাপরিচালক আবু আলি বাসরি এক পৃথক বক্তব্যে দাবি করেন, বাগদাদী বেঁচে আছে এবং সিরিয়াতেই আছে। তিনি জানান, তাদের নজরদারি সেলগুলো সম্প্রতি প্রকাশিত বাগদাদীর মৃত্যুর সংবাদের পক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি।
বাগদাদীর জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ আছে?
যদিও বাগদাদীর মৃত্যু এখনও নিশ্চিত না, কিন্তু বাগদাদীর জীবিত থাকারও তেমন কোনো প্রমাণ নেই। আইএসের পক্ষ থেকে তার সর্বশেষ অডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করা হয়েছিল আইএসের অধীনে থাকা সবচেয়ে বড় শহর, ইরাকের মসুলে যৌথবাহিনীর আক্রমণ শুরু হওয়ার পরপরই, ২০১৬ সালের নভেম্বরে। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত তার আর কোনো বক্তব্য আসেনি।
তবে অডিও বক্তব্য না আসার অর্থ এরকম না-ও হতে পারে যে, বাগদাদী জীবিত নেই। বাগদাদী এর আগেও মিডিয়ার সামনে বেশি হাজির হন নি। ২০১৪ সালে তথাকথিত ‘খিলাফত’ ঘোষণার পর তাকে মাত্র একবার ভিডিও দেখা গিয়েছিল- মৌসুলের গ্র্যান্ড নূরি মসজিদে খুতবা দেওয়ার সময়।
বাগদাদীর মৃত্যু সম্পর্কে কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে?
সন্দেহাতীতভাবে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব, যদি আইএস নিজেই তাদের নেতা বাগদাদীর মৃত্যুর কথা স্বীকার করে। কিন্তু বাগদাদী নিহত হলেই যে তারা স্বীকার করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে অফিশিয়ালি স্বীকার না করলেও যদি ভিন্ন ভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে আইএসের একাধিক নেতার কাছ থেকে একই স্থানে, একই সময়ে বাগদাদীর মৃত্যুর তথ্য আসতে থাকে, তাহলেও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
বাগদাদীর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর আমেরিকান, রাশিয়ান অথবা ইরাকী বা সিরিয়ান কুর্দি বাহিনী যদি কোনো গ্রাউন্ড অপারেশন পরিচালনা করে বাগদাদীকে হত্যা করতে পারে, তাহলেও ছবি বা ভিডিও দেখে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। তবে বাগদাদীর নিহত হওয়াটা আইএসের ধ্বংসের পক্ষে কতটুকু সহায়ক হবে, সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসনের মতে, আইএসের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাই নিহত হয়েছে, কিন্তু তারপরেও যুদ্ধক্ষেত্রে সেটার খুব একটা প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাব্রভের মতে, ইতিহাস থেকে দেখা যায় যে, এ ধরনের নেতাদের মৃত্যু সাময়িকভাবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে কিছুটা অস্থিতিশীল করতে পারলেও শীঘ্রই তারা তাদের লড়াইয়ের ক্ষমতা ফিরে পায়।
তবে নিঃসন্দেহে বাগদাদীর মৃত্যু আইএসের নৃশংসতার শিকার হওয়া লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষ এবং আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহতদের আত্মীয়-স্বজনদের মনে কিছুটা হলেও শান্তির পরশ এনে দিবে।