ছোট একটি প্রশ্ন। বলুন তো, মরুভূমিতে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে? উত্তরটা যা-ই হোক না কেন, মোটামুটি নিঃসন্দেহেই বলা চলে, সে তালিকায় প্রথম দশটির মধ্যেও তুষারপাত কিংবা ঝড়ো বৃষ্টি নেই। কিন্তু সে দিন কি আর আছে? গ্লোবাল ওয়ার্মিং ইতোমধ্যে চিরাচরিত সব নিয়মকানুন বদলে দিতে শুরু করেছে। বিশ্বের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি যাচ্ছে বদলে। এবার গ্লোবাল ওয়ার্মিং আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। মরুভূমিতে ঘটে গেছে এমনই এক অস্বাভাবিক ঘটনা যা শুনলে জোরালো একটা ধাক্কা খেতে পারেন যে কেউ।
চল্লিশ বছরে তৃতীয়বারের মতো সাহারায় তুষারপাত হয়েছে গত ১০ই জানুয়ারি। সেদিন সাহারা মরুভূমি উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত আলজেরিয়ার আইন সেফরা শহরের বাসিন্দারা ঘুম থেকে উঠে নিজেদেরকে আবিষ্কার করেন ১৬ ইঞ্ছি পুরো তুষারের চাদরে আবৃত অবস্থায়।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপ থেকে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ নর্দার্ন আফ্রিকার দিকে ঠেলে দেয়ার প্রভাবজনিত কারণে তৈরি হওয়া উচ্চ বায়ুচাপ এ তুষারপাতের মূল কারণ।
আইন সেফরাতে তুষারপাত স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। মরুর দেশে নিশ্চয় তুষারপাত স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না। এ শহরটিতে প্রথমবার বরফ দেখা গিয়েছিল সেই ১৯৭৯ সালে। তারপর ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৩৭ বছর পর আবার তুষারপাত দেখা যায়।
বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের এক বিশিষ্ট অধ্যাপক ও পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সিস্টেম বিজ্ঞান কেন্দ্রের পরিচালক মাইকেল ম্যান এ নিয়ে বলেছেন, “ব্যাপারটা এতই দুর্লভ যে, এক বছর লেগে গেল ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে।”
বিশ্বে এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে এ ঘটনাকে আসলে সেভাবে অস্বাভাবিক বলা যায় না। গত কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৭ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। আর এখন মরু এলাকায় রাতের বেলায় তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ তৎকালীন সময়ে উল্লেখ করে, আফ্রিকার উচ্চ স্থানসমূহে তুষারপাত অসম্ভব নয় বটে, তবে নিঃসন্দেহে অনভিপ্রেত।
ফিচার ইমেজ- Geoff Robinson