“সিরিয়ায় আসাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।”
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদিল আল-যুবাইর, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক কূটনৈতিক চমক দেখা দিচ্ছে। তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রচেষ্টা, সিরীয় রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদের ওমান ও ইমারাত সফর এবং ইরান ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ঘোষণার পর অঞ্চলটিতে যে নতুন কূটনৈতিক চমক দেখা দিয়েছে, সেটি হচ্ছে সৌদি–সিরীয় সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সম্ভাবনা। ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ সৌদি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আল-ইখবারিয়া’র একটি প্রতিবেদনে এবং সিরীয় সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র কর্তৃক বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’কে প্রদত্ত সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় যে, সৌদি আরব ও সিরিয়া পরস্পরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য আলোচনা করছে, এবং আগামী ঈদুল ফিতরের পর রাষ্ট্র দুটি একে অপরের ভূখণ্ডে পুনরায় তাদের দূতাবাস খুলতে যাচ্ছে।
২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ায় সিরীয় সরকার এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন মিলিট্যান্ট গ্রুপের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সৌদি আরবের নেতৃত্বে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর অধিকাংশ সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় এবং সিরীয় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে সিরীয় মিলিট্যান্টদেরকে বিস্তৃত আর্থিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করতে শুরু করে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব থেকে সিরীয় রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হয় এবং মার্চে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে সৌদি দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হয়। সৌদি আরব সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জায়শ আল-ইসলাম, হারাকাৎ নুর আদ-দিন আজ-জাঙ্কি, ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মিলিট্যান্ট গ্রুপ এবং জায়শ আল-ফাতাহ মিলিট্যান্ট জোটকে (যেটির অন্তর্ভুক্ত ছিল আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাবহাৎ ফাতাহ আল-শাম) বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে। তদুপরি, সিরীয় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সৌদি আরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব, তুরস্ক, জর্দান, ইমারাত, কাতার ও অন্যান্য আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। সর্বোপরি, সৌদি আরব সিরীয় সরকারকে উৎখাত করার জন্য সিরিয়ায় মার্কিন-নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের জোরালো সমর্থক ছিল।
কিন্তু সিরীয় যুদ্ধের ফলাফল সৌদি আরবের আশানুরূপ হয়নি। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই ইরান ও লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সিরীয় সরকারের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নেয় এবং ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া সিরীয় সরকারের পক্ষে একটি ‘সীমিত যুদ্ধে’ অবতীর্ণ হয়। এর ফলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায় এবং সিরীয় সরকার পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়। বর্তমানে সিরিয়ার প্রায় ২৫% ভূখণ্ড যুক্তরাষ্ট্র ও মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস’ (এসডিএফ) মিলিট্যান্ট জোটের নিয়ন্ত্রণাধীন; প্রায় ১০% ভূখণ্ড তুরস্ক, তুর্কি-নিয়ন্ত্রিত ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’ মিলিট্যান্ট জোট ও তুর্কি মিত্র ‘হায়াৎ তাহরির আল-শাম’ মিলিট্যান্ট গ্রুপের কর্তৃত্বাধীন; আর প্রায় ১% ভূখণ্ড ‘ইসলামিক স্টেট’ মিলিট্যান্ট গ্রুপের অধীন। কিন্তু সিরিয়ার বাকি প্রায় ৬৪% ভূখণ্ড (যার মধ্যে রয়েছে আলেপ্পো, দামেস্ক, দারা, হামা, হোমস ও লাতাকিয়ার মতো বড় বড় শহরগুলো) সিরীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন; এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সিরীয় মিলিট্যান্ট গ্রুপগুলো সিরীয় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে, এরকম সম্ভাবনা সীমিত।
এমতাবস্থায় সৌদি আরব বাস্তববাদী নীতি অনুসরণ করে ধীরে ধীরে সিরীয় সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্য থেকে সরে আসে। ২০১৭ সালের আগস্টে সৌদি আরব সিরীয় মিলিট্যান্ট গ্রুপগুলোকে সরাসরি জানিয়ে দেয় যে, তারা উক্ত গ্রুপগুলোর প্রতি সমর্থন প্রদান বন্ধ করে দেবে। অবশ্য সৌদিরা মার্কিন-নিয়ন্ত্রিত এসডিএফকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিতে থাকে। ২০১৮ সালে রাশিয়া ও ইমারাতের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও সিরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ শুরু হয়। অবশ্য সৌদিরা এক্ষেত্রে ধীরগতিতে অগ্রসর হয়। ২০১৮ সালে ইমারাত ও বাহরাইন সিরিয়ায় তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করে এবং ২০২০ সালে ওমান সিরিয়ায় পুনরায় রাষ্ট্রদূত প্রেরণ করে। কিন্তু সৌদিরা এরকম কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত ছিল। অবশেষে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সৌদি আরব সিরিয়ায় তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিরিয়ার সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পশ্চাতে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
প্রথমত, সামগ্রিকভাবে সিরীয় যুদ্ধে সৌদি আরবের প্রাথমিক লক্ষ্যগুলোর কোনোটিই অর্জিত হয়নি। সিরিয়ার আলাউয়ি-নিয়ন্ত্রিত বাআস সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা, সিরিয়ায় ইরানি ও শিয়া প্রভাব খর্ব করা, সৌদিপন্থী বা সুন্নি-নিয়ন্ত্রিত একটি সরকারকে সিরিয়ার শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা, কিংবা সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে একটি পশ্চিমা আক্রমণাভিযান বাস্তবায়ন করা — এর কোনোটিই রিয়াদের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় সিরিয়ার সঙ্গে স্থায়ীভাবে দ্বান্দ্বিক সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা সৌদি আরবের জন্য লাভজনক নয়।
দ্বিতীয়ত, সিরিয়া ছিল চলমান সৌদি–ইরানি প্রক্সি যুদ্ধের একটি অন্যতম রণক্ষেত্র। ১৯৮০-এর দশকে ইরাকি–ইরানি যুদ্ধের সময় থেকে ইরান ও সিরিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সিরিয়াকে ইরানি প্রভাব বলয়ের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সিরীয় যুদ্ধে সৌদি হস্তক্ষেপের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সিরিয়ার ইরানিপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করা যাতে সিরিয়ায় ইরানি প্রভাব হ্রাস পায়। কিন্তু সিরীয় যুদ্ধের ফলে সিরিয়ায় ইরানি প্রভাব আরো সুদৃঢ় হয়েছে এবং ইরান সিরিয়ার অভ্যন্তরে এমন বেশ কিছু মিলিশিয়া গড়ে তুলেছে, যাদের প্রকৃত আনুগত্য ইরানের প্রতি। তদুপরি, এই যুদ্ধের ফলে সিরীয় সরকারের অভ্যন্তরে ইরানিপন্থী লবি আরো শক্তিশালী হয়েছে।
এমতাবস্থায় সামরিক বলপ্রয়োগ বা প্রক্সি যুদ্ধের মাধ্যমে সিরিয়া থেকে ইরানি প্রভাব অপসারিত করা সৌদি আরবের পক্ষে সম্ভব নয়। সৌদি আরব যদি সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকে, সেক্ষেত্রে সিরিয়ার ওপর ইরানি প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে, সৌদি আরব যদি সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে, সেক্ষেত্রে সিরিয়া পরিপূর্ণভাবে ইরানি ‘স্যাটেলাইটে’ পরিণত হওয়া থেকে বিরত থাকার এবং সৌদি–ইরানি দ্বন্দ্বে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বা অন্ততপক্ষে কম সৌদিবিরোধী অবস্থানে থাকার সুযোগ পাবে। বস্তুত ইতিপূর্বে সৌদি আরব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সৌদি–সিরীয় সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পূর্বশর্ত হিসেবে সিরিয়াকে ইরানি প্রভাব হ্রাস করার প্রস্তাব দিয়েছে। সিরিয়া সেই শর্ত কতটুকু মেনে চলবে, সেটি অবশ্য প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো ও তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে সিরিয়া কর্তৃক প্রদর্শিত আগ্রহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সিরিয়াও পুরোপুরিভাবে কোনো একটি রাষ্ট্রের (ইরানের) স্যাটেলাইট হিসেবে থাকতে ইচ্ছুক নয়।
তৃতীয়ত, সিরীয় যুদ্ধে সৌদি আরবের কট্টর সিরীয় সরকারবিরোধী অবস্থানের অন্যতম প্রভাবক ছিল সুদৃঢ় সৌদি–মার্কিন মৈত্রী। কিন্তু সৌদি যুবরাজ মুহম্মদ বিন সালমানের রাজনৈতিক উত্থান, বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত পশ্চাৎপসরণ এবং সৌদি মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে ও সৌদি যুবরাজের ব্যাপারে বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রপতি জোসেফ বাইডেনের প্রশাসনের নেতিবাচক মনোভাব – এগুলো সৌদি–মার্কিন সম্পর্কে চিড় ধরিয়েছে। রুশ–সৌদি ও চীনা–সৌদি সম্পর্কের ক্রমোন্নয়ন ও বিস্তৃতি, রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের ব্যক্তিগত সখ্যতা, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি তেলক্ষেত্রের ওপর ইরানি-পরিচালিত ড্রোন আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সৌদি আরবে মোতায়েনকৃত মার্কিন সশস্ত্রবাহিনীর ব্যর্থতা, তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে রুশ–সৌদি সমঝোতা, চলমান রুশ–ইউক্রেনীয় যুদ্ধের প্রতি সৌদি আরবের নিস্পৃহ মনোভাব এবং রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় যোগদানের ক্ষেত্রে রিয়াদের অস্বীকৃতি — এই বিষয়গুলোও সৌদি–মার্কিন সম্পর্কে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
বস্তুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৌদি আরব নিজস্ব জাতীয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকাকে সমীচীন বলে বিবেচনা করছে না। এজন্য রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে তারা সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই প্রক্রিয়ার একটি অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হচ্ছে সৌদি–সিরীয় সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ। সিরিয়া রুশ–মার্কিন প্রক্সি যুদ্ধের একটি অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র। এখন যেহেতু সৌদি আরব রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলছে, সেহেতু সিরিয়ায় সরাসরি রুশ স্বার্থের বিরোধিতা করাকে সৌদি নীতিনির্ধারকরা আর সৌদি স্বার্থের জন্য অনুকূল হিসেবে বিবেচনা করছেন না। এই পরিস্থিতিতে রুশ মধ্যস্থতায় সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাকেই সৌদি আরব নিজস্ব স্বার্থের জন্য লাভজনক হিসেবে বিবেচনা করছে।
চতুর্থত, বিগত কয়েক বছর ধরেই সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে তাদের ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১০ মার্চ চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। উক্ত চুক্তির ফলশ্রুতিতে সৌদি–ইরানি দ্বন্দ্বের মাত্রা প্রশমিত হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক প্রক্সি যুদ্ধক্ষেত্রগুলোয় (সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন প্রভৃতি) উভয় পক্ষের তিক্ত প্রতিযোগিতার তীব্রতা আংশিক হলেও হ্রাস পাবে, এমনটাই ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত। এমতাবস্থায় ইরানি প্রক্সি সিরিয়ার সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণকে সৌদি–ইরানি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণেরই যৌক্তিক সম্প্রসারণ হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে।
সর্বোপরি, বর্তমান সৌদি সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি অর্থনীতির আধুনিকায়ন ও বহুমুখিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একটি উচ্চাভিলাষী সামাজিক-অর্থনৈতিক সংস্কার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সৌদি আরবের পেট্রোলিয়ামনির্ভর অর্থনীতিকে একটি অত্যাধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও টেকসই অর্থনীতিতে রূপান্তরের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সৌদি আরবের প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইতিপূর্বে সামরিক শক্তিপ্রয়োগ ও প্রক্সি যুদ্ধের মাধ্যমে সৌদি আরব অনুরূপ নিরাপত্তা অর্জন করতে পারেনি। এজন্য রিয়াদ কূটনীতির মাধ্যমে উক্ত নিরাপত্তা অর্জন করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংলাপ, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং সর্বশেষ সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা সৌদি সরকারের এই বৃহত্তর লক্ষ্যেরই একেকটি অংশ।
বস্তুত আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব বা শত্রুতা বলে কিছু নেই, এটি কূটনীতির এক ধ্রুব সত্য। মাত্র এক দশকের মধ্যেই সিরিয়ার প্রতি সৌদি আরবের নীতি ১৮০° ঘুরে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার মধ্য দিয়ে এই ধ্রুব সত্যটি আরেকবার প্রমাণিত হলো।