দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার উত্থানের পেছনে অবদান ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের। সোভিয়েতদের মতোই সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় চলছিল দেশটি। কিন্তু উত্তর কোরিয়া শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর নির্ভর করে বসে থাকেনি। তাদের আরেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনও ছিল সমাজতান্ত্রিক ঘরানার। সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের আগ পর্যন্ত দুই প্রতিবেশীর কাছ থেকেই বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছে উত্তর কোরিয়া।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর তাদের সাথে উত্তর কোরিয়ার বাণিজ্য কিংবা সহযোগিতা পাওয়া অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। তখন চীন ভাবল উত্তর কোরিয়াও সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো আর বেশিদিন টিকবে না। তাই চীন নব্বই দশকে উত্তর কোরিয়ার সাথে বাণিজ্য কমিয়ে দেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া টিকে যায়। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য হওয়ার পর আবার উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ হওয়া শুরু করে। ২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশে পরিণত হয়ে গেলে বহির্বিশ্বের অর্থনৈতিক অবরোধের কবলে পড়লে চীনের আরো কাছাকাছি চলে আসে। উত্তর কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম জং ইল তার শেষ জীবনে প্রতি বছর অন্তত এক বার চীন সফর করেন। ২০১০ সালে উত্তর কোরিয়ার সাথে চীনের যে পরিমাণ বাণিজ্য হয়, তা উত্তর কোরিয়ার সাথে অন্যান্য দেশের বাণিজ্যের সর্বমোট পরিমাণকেও ছাড়িয়ে যায়।
চীনের সাথে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার। বর্তমান সময়েও অর্থনৈতিক অবরোধে জর্জরিত দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র ধরা হয় চীনকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও তাদের সম্পর্ককে এভাবেই উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু বিষয়টা আসলে এরকম নয়। উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে চীনের সাধারণ জনগণ ও সরকারের কর্মকর্তাদের মনোভাব একইরকম। তারা উত্তর কোরিয়াকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে চীনারা প্রায়ই বিরক্তি প্রকাশ করেন।
কিন্তু উত্তর কোরিয়াকে ফেলেও দিতে পারছে না চীন। চীনা পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ মনে করেন, ভবিষ্যতে দুই কোরিয়ার একত্রিত হওয়ার ব্যাপারটা অবশ্যম্ভাবী এবং সেখানে নিয়ন্ত্রণ থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার হাতেই। চীন চায় সম্ভাব্য এই সময়টা যতটা পারা যায় দীর্ঘ করতে। আর তারা সেটা চায় নিজেদের জনগণের স্বার্থের জন্যই। চীনা নীতিনির্ধারকরা সব দিক বিবেচনা করে অস্থিতিশীল বা পতনের দিকে যাওয়া উত্তর কোরিয়ার চেয়ে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন উত্তর কোরিয়াকেই তুলনামূলক ‘কম খারাপ’ বন্ধু হিসেবে দেখেন। এমনকি সেটা সিউলের নিয়ন্ত্রণে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ঘরানার অবিভক্ত কোরিয়ার চেয়েও বেশি কল্যাণকর হিসাবে দেখা হয়।
কোরিয়া উপদ্বীপ নিয়ে চীনের মনোভাব সংক্ষেপে এরকম-
- চীনের জন্য কোরিয়া উপদ্বীপের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখা প্রয়োজন।
- চীন চায় কোরিয়া উপদ্বীপ যতদিন সম্ভব উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভক্ত থাকতে।
- সবশেষে চায় উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ করতে। তবে এর চেয়ে প্রথম দুটি বিষয়কেই তারা বেশি গুরুত্ব দেয়।
চীনের সবচেয়ে বড় ভয় উত্তর কোরিয়ায় বিদ্রোহ বা যুদ্ধাবস্থার মতো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হওয়া। কারণ এতে চীনের অভ্যন্তরে শরণার্থীর স্রোত আসা শুরু হতে পারে, গণবিধ্বংসী অস্ত্রের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে এবং ভূরাজনৈতিক বিভিন্ন অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। চীনে কিংবা চীনের মধ্য দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম চোরাচালান হতে পারে।
চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থার জন্যও উত্তর কোরিয়াতে সাম্যাবস্থা বজায় থাকার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। চীনের একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতি জনগণের সমর্থনের অন্যতম প্রধান কারণ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সফলতা দেখানো। প্রতিবেশী দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে অর্থনৈতিক পণ্যের প্রাপ্যতা কমে যেতে পারে। এতে খোদ চীনেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে।
স্থিতিশীলতার পর বেইজিংয়ের নীতিনির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোরিয়া উপদ্বীপকে বিভক্ত অবস্থাতেই রাখা (যদি এভাবে আজীবন না রাখা সম্ভব হয়, অন্তত যত দীর্ঘ সময় পারা যায় বিভক্ত অবস্থা বজায় রাখা)। উত্তর কোরিয়া চীনের সীমান্তে একটা বাফার রাষ্ট্র হিসাবে কাজ করে। কারণ দক্ষিণ কোরিয়াতেই আবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে।
চীন আনুষ্ঠানিকভাবে দুই কোরিয়ার মতো অবিভক্ত কোরিয়ার দর্শনে বিশ্বাস করে না। কারণ অবিভক্ত কোরিয়া দীর্ঘমেয়াদে চীনের স্বার্থ রক্ষা করবে না। অবিভক্ত কোরিয়ায় যে দক্ষিণ কোরিয়াই প্রভাবশালী অবস্থায় থাকবে, আর সেখানে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হবে, এ ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নেই। অবিভক্ত কোরিয়া রাষ্ট্রটিও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য মিত্র রাষ্ট্রতেই পরিণত হবে। চীনের সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র থাকা মোটেও স্বস্তির বিষয় নয়।
কোরিয়া বিভক্ত থাকার কারণে অর্থনৈতিক দিক দিয়েও চীন বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করে। উত্তর কোরিয়ার ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে চীনা কোম্পানিগুলো সেখানকার খনিজ সম্পদ সস্তায় ভোগ করতে পারে। উত্তর কোরিয়ার খনিতে থাকা কয়লা, লোহার আকরিক আর তামার মজুদ হয়তো বৈশ্বিক ব্যবস্থার মাত্রায় খুব বেশি নেই, কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি চাহিদা থাকা চীন সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। গত দুই দশকে বেশ কিছু চীনা কোম্পানি খনিজ সম্পদ উত্তোলনের অধিকার নিয়ে নিয়েছে।
তাছাড়া চীন উত্তর কোরিয়াতে সস্তায় পণ্য পরিবহণ নিয়ে কাজ করতেও আগ্রহী। উত্তর-পূর্ব চীনের তিন প্রদেশে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। যদি কোনো চীনা কোম্পানি এই অঞ্চল থেকে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করতে চায়, তাহলে এক হাজার কিলোমিটার দূরের ড্যানডং কিংবা তালিয়েন বন্দর ব্যবহার করতে হবে। চীন যদি কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে পণ্য পরিবহণের অনুমতি পায়, তাহলে এর পরিবহণ খরচ অনেকটাই কমে যাবে।
তাছাড়া উত্তর কোরিয়ার সস্তা শ্রমবাজারও ব্যবহার করতে পারে চীনা কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে চীনা ছোট উদ্যোক্তারা উত্তর কোরিয়া থেকে আউটসোর্সিং করানোর ব্যাপারে আগ্রহী। কারণ উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের যেখানে মাসে ২০-২৫ মার্কিন ডলারে কাজ হয়ে যায়, সেখানে চীনা শ্রমিকদের একই কাজের জন্য ১০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি বেতন দিতে হয়। অবিভক্ত কোরিয়া থেকে যে তারা সস্তা শ্রমিক পাবে না সেটা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া তখন খনিগুলোতে চীনা কোম্পানিগুলোর প্রবেশের অনুমতি কতটুক থাকবে সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে।
এছাড়া অবিভক্ত কোরিয়ার কারণে চীনের ভূখণ্ড হারানোর ভয়ও আছে। চীনে যে অঞ্চলে জাতিগতভাবে কোরিয়ান সংখ্যালঘুদের বাস, সেই ভূখণ্ডের মালিকানা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায়ই আলোচনা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের একটা বড় অংশ, এমনকি রাজনীতিবিদদেরও একটা অংশ প্রকাশ্যে বলে থাকেন ১৯০৯ সালের শান্তিচুক্তি অনুযায়ী কোরিয়া (তখনকার জাপানের নিয়ন্ত্রণে থাকা) ও চীনের সীমানা নির্ধারণের কথা। তারা উত্তর-পূর্ব চীনের কান্দো (চীনাদের মতে জিন্দাও) অঞ্চলের একটা বড় অংশকে কোরিয়ার অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করেন। বর্তমানে এই অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ চীনা নাগরিক বাস করেন। ২০০৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদ সদস্যরা একটা সংস্থা গঠন করেন শুধুমাত্র কান্দো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ অধিকার নিয়ে প্রচার করার জন্য। আরো উগ্র জাতিয়তাবাদী কোরিয়ানরা মাঞ্চুরিয়ার সিংহভাগ অঞ্চল, এমনকি রাশিয়ার সামুদ্রিক প্রদেশগুলোকেও নিজেদের বলে দাবি করেন।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক উদ্বেগ থাকলেও এটা নিয়ে সবচেয়ে কম দুশ্চিন্তা করে চীন। তবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে যে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না, এমন নয়। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উচ্চাভিলাষের কারণে পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোও পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ করা শুরু করতে পারে। এই অঞ্চলের দক্ষিণ কোরিয়া আর জাপানও যদি পারমাণবিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হয়ে যায়, চীনের জন্য সেটা মোটেও স্বস্তিকর বিষয় হবে না।
এদিকে চীনের ওপর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অতি-নির্ভরশীলতা নিয়ে উত্তর কোরিয়াও চিন্তিত। উত্তর কোরিয়া স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে সাহায্যকারী দেশগুলোর ওপর যেন নির্ভরশীল হয়ে যেতে না হয়, সে কারণে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো থেকেও সুবিধা নিয়েছে। সোভিয়েত-চীনের শীতল সম্পর্কের সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।
এ কারণে উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ প্রোপাগান্ডামূলক খবরে চীনের প্রতি খুব বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব না দেখা যায়, তবে তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিও তারা এমন মনোভাব দেখিয়েছে। এমনকি উত্তর কোরিয়ানরা চীনের প্রতি বিরূপ মনোভাব ‘বিশ্বস্ত’ বিদেশি পর্যটকদের কাছেও প্রকাশ করে থাকেন। উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের উপর মহল থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়, চীনের প্রতি কেউ যেন খুব বেশি ঘনিষ্ঠ না হয়ে পড়ে। ২০০৭ সালে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রচার করে, দেশটির নিরাপত্তা সংস্থার কাছে নাম প্রকাশ না করা একটা বিদেশি রাষ্ট্রের কয়েকজন গুপ্তচর ধরা পড়েছে। ওই সময় বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে কিছু ইঙ্গিত নির্দেশনা দেয় কথিত গুপ্তচররা চীনের হতে পারে।
পিয়ংইয়ংয়ের অভিজাত শ্রেণিরও চীনকে নিয়ে দুশ্চিন্তার যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ আছে। এটা সত্য চীন চায় কোরিয়া অঞ্চল বিভক্ত থাকুক, আর উত্তর কোরিয়ার আলাদা শাসকদের রাজত্ব থাকুক। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা কিম পরিবারকে ক্ষমতায় রাখতে চায়। চীন চায় তাদের প্রতি অনুগত কোনো শাসক উত্তর কোরিয়াকে পরিচালনা করুক। কারণ এতে উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারণী বিষয়ে তাদের নাক গলানো সম্ভব হবে। চীনের জন্য এটা জরুরি। কিম শাসকরা এটা ভালো করেই জানতেন। এমনকি বর্তমান প্রেসিডেন্ট কিম জং উনও এ রকম ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছেন।
কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তার ঘনিষ্ঠ ছিলেন বোন কিম কিয়ং হুই ও বোন জামাই জ্যাং সং থায়েক। ২০১১ সালে কিম জং উনের অভিষেকের সময় তারা সরকারের খুবই প্রভাবশালী পর্যায়ে ছিলেন। এমনকি তরুণ অনভিজ্ঞ কিম জং উনকে দেশটির শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে তারাই উপদেশ দিয়ে আসছিলেন। জ্যাং সং থায়েক দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু কিম জং উন টের পান তার ফুপা চীনের মদদে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে অভ্যুত্থান ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছেন। এটা টের পেয়ে ২০১৩ সালে প্রকাশ্যে তাকে গ্রেপ্তার করেন এবং মৃত্যুদণ্ড দেন। তার ফুপুকেও আর দেখা যায়নি।
এছাড়া চীনের ম্যাকাওতে থাকা কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং ন্যামকেও চীন চাইছিল ভবিষ্যতে উত্তর কোরিয়ার শাসক হিসাবে বসাতে। কিন্তু কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে আসছিলেন। অবশেষে ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে তাকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে খুন করা হয়।
বেইজিং আর পিয়ংইয়ংয়ের এই অম্লমধুর সম্পর্ক তাই খুব একটা গোপন কিছু নয়। উত্তর কোরিয়াতে আমেরিকা বিরোধী প্রোপাগান্ডা প্রচলিত থাকলেও অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বেশ কয়েকজন আমেরিকান কূটনীতিকদের কাছে উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকরা বিভিন্ন সময়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, তারা চীনের ‘অত্যাচার’ থেকে মুক্তি পেতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মিত্র’ হতেও আপত্তি করবেন না। সেরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে চীনের জন্য উত্তর কোরিয়া একটা গলার কাঁটার মতোই। চীন চাইলে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে উত্তর কোরিয়ার পতন ঘটাতে পারে। কিন্তু সেটাতে আদতে তাদের নিজেদেরকেই অনেক দিক থেকে ক্ষতি করবে।