Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ডোনাল্ড ট্রাম্প কি হোয়াইট হাউজে ফিরতে পারবেন?

ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগে অন্য কোনো পাবলিক অফিসে দায়িত্ব পালন করেননি। রেকর্ড আর আলোচনার প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রীতি অবশ্য নতুন কিছু না, প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই আলোচিত-সমালোচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি দুবার অভিশংসিত হয়েছেন, একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে দুবার পপুলার ভোটে হেরেছেন। বর্তমানে একমাত্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ৩০টির মতো অভিযোগ।

তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির টিকেটে লড়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ২০২০ সালে লড়েছিলেন পুননির্বাচনের জন্য। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের বিপক্ষে সফল হলেও, ২০২০ সালে জো বাইডেনের কাছে হারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

টানা তৃতীয়বারের মতো রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার দিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; Image Source: BBC

আমেরিকাতে প্রেসিডেন্টরা সাধারণত দায়িত্ব থেকে অবসরে যাওয়ার পরে নিয়মিত রাজনীতিতে সরব থাকেন না, প্রায় কখনোই সমালোচনা করেন না উত্তরসূরি প্রেসিডেন্টের। ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই প্রচলিত মূল্যবোধগুলোকে পাশ কাটিয়েছেন, এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজয়ের পর ঘটিয়েছেন ক্যাপিটাল হিলে সহিংসতার মতো ঘটনা, প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচনী কাঠামো আর ব্যবস্থা নিয়ে। হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পরেও সরে যাননি নিয়মিত রাজনীতি থেকে, ২০২২ সালের নভেম্বরে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য। টানা তৃতীয়বারের মতো রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার দিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ

ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো রিপাবলিকান পার্টিতে জনপ্রিয়, পার্টির উচ্চপর্যায়ে রয়েছে তার নিজস্ব শক্তিশালী বলয়। সমর্থকদের মধ্যেও তার বিরাট প্রভাব রয়েছে, রয়েছে জনপ্রিয়তা। এসব কিছু তাকে তৃতীয়বারের মতো রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার দিকে যতটা এগিয়ে নিয়ে যায়, ততোটাই পিছিয়ে দিতে পারে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগগুলো।

আদালতে হাজিরা দিতে আসেন ট্রাম্প; Image Source: The Times of Israel.

২০২৩ সালের এপ্রিলের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিউ ইয়র্কের আদালতে হাজির করা হয়, অভিযোগ ছিল ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এক পর্নো তারকাকে মুখ বন্ধ রাখতে অর্থ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্প অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। এর বাইরে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি ন্যাশনাল আর্কাইভে হস্তান্তর না করার, সমর্থকদের ক্যাপিটাল হিলে হামলার জন্য লেলিয়ে দেওয়ার। এসবের যেকোনো একটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে পিছিয়ে পড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান পার্টির প্রাইমারি শুরু হতে এখনো প্রায় আট মাস বাকি।

ট্রাম্পের বয়স

জো বাইডেনের প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশনের জন্য প্রার্থিতা ঘোষণার পর সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তার বয়স নিয়ে, একই আলোচনা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স নিয়েও। ইতোমধ্যেই ৭৭ বছরে পা রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে তিনি হবেন দ্বিতীয় সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন জো বাইডেন।

কিন্তু, জো বাইডেন এত বয়স নিয়েও হোয়াইট হাউজের সামলাতে পারছেন, কারণ বাইডেনের একটি দক্ষ ক্যাবিনেট আর কর্মীবাহিনী আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় হোয়াইট হাউজ পুরোটাই কেটেছে অস্থিতিশীলতায়, নিয়মিত বিরতিতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন হোয়াইট হাউজের অফিশিয়ালসরা। বর্তমানে আরো একাকী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউজে একটি সক্ষম কর্মীবাহিনী নিয়ে আসার মতো প্রমাণ ট্রাম্প এখনও দিতে পারেননি।

Image Source: NBC News.

ট্রাম্পের আমলনামা

২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন নির্বাচনে দাঁড়ান, তখন তিনি ছিলেন সাদা কাগজের মতো। ভোটাররা নিয়মিত রাজনীতিবিদদের উপর ভরসা হারানোর জায়গা থেকে ভোট দিয়েছিলেন ট্রাম্পকে, অনেকটা পরীক্ষামূলক প্রার্থী হিসেবে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প আর সেই সুবিধাটি পাবেন না, ভোটাররা তার আগের চার বছরকে মূল্যায়ন করেই ভোট দেবেন।

ট্রাম্প শুরুতে অর্থনীতিতে সফলতা দেখালেও, মহামারি তার সফলতার গল্পের সুন্দর সমাপ্তি টানতে দেয়নি। আমেরিকার একমাত্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব ছেড়েছেন চাকরির বাজারে সর্বসাকুল্যে নতুন কোনো চাকরি যোগ না করেই। মহামারি নিয়ন্ত্রণেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প, তার সময়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রায় অনুপস্থিত ছিলো যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় করনীতিতে পরিবর্তন আসে, যেটি তার অন্যতম সাফল্য হিসেবে স্বীকৃত।

ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের প্রেসিডেন্সির পক্ষে সবচেয়ে বড় যুক্তি দেন, তিনি নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াননি; Image Source: CNN

ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের প্রেসিডেন্সির পক্ষে সবচেয়ে বড় যুক্তি দেন, তিনি নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াননি। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য যুদ্ধ নেতিবাচক কিছু না, অস্ত্র আর যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সচল রাখতে যুদ্ধের প্রয়োজন হয়। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের কার্যকারিতার সাক্ষ্য দেয়, ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন নতুন ক্রেতা তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের।

যুক্তরাষ্ট্রের জনমিতি

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ আটটি নির্বাচনের মধ্যে সাতটিতেই পপুলার ভোটে হেরেছে রিপাবলিকানরা, দুবার পপুলার ভোটে হেরেও ইলেকটোরাল কলেজের সৌজন্যে হোয়াইট হাউজে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা। অভিবাসী নাগরিকদের ভোট পাচ্ছে না রিপাবলিকানরা, পাচ্ছে না কৃষ্ণাঙ্গ আর সংখ্যালঘুদের ভোটও।

কিন্তু, জনমিতিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের পক্ষে কাজে লাগাতে পারেন। অভিবাসী নাগরিকেরা শিক্ষার্থী অবস্থায় ভোট দেয় ডেমোক্রেটদের, কারণ তার শিক্ষাঋণ মওকুফ প্রয়োজন। চাকরিতে প্রবেশ করে ভোট দেয় রিপাবলিকানদের, কারণ বেতনের উপর বেশি কর দিতে চায় না অভিবাসী নাগরিকেরা। সন্তান হলে আবার ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ফিরে আসে, কারণ তখন ফ্রি স্কুল আর চিকিৎসা প্রয়োজন। আরেক দফা রিপাবলিকান পার্টি ঘুরে বৃদ্ধ বয়সে আবার ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ফিরে আসেন অভিবাসী নাগরিকেরা, কারণ বৃদ্ধ বয়সে তারা সামাজিক সুরক্ষাবলয়ের সুবিধা চান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে আকর্ষণীয় বক্তা, মধ্যপন্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করার সক্ষমতা তার আছে; Image Source: BBC

ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে আকর্ষণীয় বক্তা, মধ্যপন্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করার সক্ষমতা তার আছে। আর বর্তমানে অভিবাসীদের একটা বড় অংশ ভারতীয়, সেদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে ট্রাম্পের বোঝাপড়া আগে থেকেই ভালো।

This article is written in Bangla, about the presidential campaign of Donald Trump.
All the necessary links are hyperlinked inside.
Feature Image: CNN

Related Articles