টানা ১০০ দিন পর পানির নিচ থেকে পৃথিবীর উপরিভাগে, মানববসতিতে ফিরে এলেন ড. জোসেফ ডিটুরি!
বলছিলাম ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ফ্লোরিডার অধ্যাপক ও অবসরপ্রাপ্ত নেভাল অফিসার ডিটুরির কথা। সবাই তাকে ‘ডক্টর ডীপ সি’ নামেই ডেকে অভ্যস্ত। আর ডাকবে না-ই বা কেন! এমনিতে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপরে ডক্টরেট করেছেন এই মানুষটি। পানির নীচে থাকতে কেমন লাগে, সেটাও বুঝতে চেয়েছেন সবসময়। কিন্তু তাই বলে টানা ১০০ দিন পানির তলায় বাস করলে তাকে সমুদ্রপাগল ডক্টর তো বলাই যায়, নাকি?
এই গল্পের শুরুটা অবশ্য ২০২৩ সালের পহেলা মার্চে। স্কুবা ডাইভারদের সাময়িক বিশ্রামের জন্য বানানো ফ্লোরিডা কি লার্গো লেগুনে পানির ৩০ ফিট নিচে অবস্থিত এক লজে প্রবেশ করেন ডিটুরি। এর আগে তার মতো এই একইসাথে দুজন মানুষ অনেকটা সময় কাটান, জায়গা করে নেন গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। ৭৩ দিন টানা সেখানে ছিলেন ব্রুস ক্যান্টেরল ও জেসিকা ফেইন। সেটাও ২০১৪ সালের কথা। তো… হিসেব মতো তাদের রেকর্ড ভাঙতে হলে লজে ৭৪ দিন থাকলেই তো হয়ে যেত। তাই না?
কিন্তু না, পানির নীচে থাকার প্রেমেই যেন পড়ে গিয়েছেন ড. ডিটুরি। ১০০ দিন থাকবেন, ভাবলেন তিনি। আর যে-ই ভাবা সেই কাজ। মেরিন রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সহায়তায় শুরু হয়ে গেল তার সাগরতলে বসবাস। নিশ্চয়ই ভাবছেন, এ আর এমন কী! কয়টা দিন পানির নিচে থাকতে হবে, এটাই তো! না, আপনি যা ভাবছেন তেমনটা মোটেই নয়। পানির তলের এই লজের ভেতরটা মোটেও সাবমেরিনের মতো কিছু না। তাই এখানে থাকাকালীন পুরোটা সময় ডিটুরিকে যেতে হয়েছে নিয়মিত পানির চাপের মধ্য দিয়ে। প্রজেক্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্রজেক্ট নেপচুন ১০০’।
কী করেছেন পানির নিচে ডিটুরি এতদিন ধরে? মুরগি আর মাছের ডিমের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন, ঘুমিয়েছেন, শরীরচর্চা করেছেন, আর সাথে নিয়মিত অনলাইন ক্লাস নিয়েছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের। তেমন কিছু না, শুধু সূর্যটাকে দেখার জন্যেই মন আইঢাই করেছে ডিটুরির এতদিন। তিনি বিশ্বাস করেন- এভাবে পরিকল্পনা করলে খুব সহজেই মানুষ পানির নিচে বাস করতে এবং সমুদ্রের পরিবেশকে সুন্দর রাখতে পারবে। কী ভাবছেন? পানির নিচে এভাবে একটা ঘর বানিয়ে থাকার ইচ্ছে আছে নাকি আপনারও?