ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে ট্রলার ডুবে মৃত্যুর সংবাদ প্রায়ই আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু ভূমধ্যসাগর চোখে দেখার অনেক আগে, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে সাহারা পাড়ি দিয়ে লিবিয়া বা আলজেরিয়াতে পৌঁছার পথেই যে প্রতি বছর আরও প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষের করুণ মৃত্যু ঘটে, সেটা আমাদের অজানাই রয়ে যায়। মরুভূমির এই যাত্রা সমুদ্রপথে যাত্রার চেয়েও অনেক বেশি কঠিন। এখানকার মৃত্যুও অনেক বেশি করুণ।
‘বিবিসি আফ্রিকা আই’ এর একটি বিশেষ প্রতিবেদন অবলম্বনে আমাদের এই লেখাটিতে সেরকমই একটি যাত্রার কাহিনী ফুটে উঠেছে। এই কাহিনীটি আবর্তিত হয়েছে আজাটেং নামে ঘানার এক শখের গোয়েন্দার অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে, যিনি মানবপাচারকারী একটি চক্রের উপর গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে নিজেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিলেন। তার কাহিনী নিয়ে আমাদের চার পর্বের এই সিরিজের আজ পড়ুন ২য় পর্ব। সবগুলো পর্ব পড়তে পারবেন এখান থেকে: ১ম পর্ব, ২য় পর্ব, ৩য় পর্ব, ৪র্থ পর্ব।
২০১৭ সালের এপ্রিলের এক সকালে আজাটেং বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। সাথে নেন শুধু কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাকপ্যাক, যার ভেতরে ছিল নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু জামাকাপড়, একটি ডায়েরি এবং একটি কলম। ব্যাগের একপাশের সেলাই বরাবর ব্লেড দিয়ে চিরে একটু গোপন জায়গা করে নেন তিনি। হাত খরচের কিছু টাকা পকেটে নিয়ে বাকি টাকাগুলো লুকিয়ে রাখেন সেখানে। আর চোখে পরে নেন তার মেমোরি কার্ড বসানো গোপন ক্যামেরা সংযুক্ত চশমাটি।
ঘানার রাজধানী আক্রার কিনবু জাংশনে গিয়ে আজাটেং অন্যান্য অভিবাসীদের কাছ থেকে সুলেমানা নামের এক স্মাগলারের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করেন। সুলেমানা তাকে নির্দেশ দেয় সাধারণ একটা বাসে চড়ে মালির রাজধানী বামাকোতে পৌঁছে তার সাথে দেখা করার জন্য। আজাটেং তার চশমা দিয়ে প্রতিটি ফোনালাপ, প্রতিটি ব্যক্তির ছবি, প্রতিটি ঘটনা রেকর্ড করে রাখতে শুরু করেন। সেই সাথে তিনি তার ডায়েরিতেও নোট রাখতে শুরু করেন। কিনবু জাংশন থেকে বাস ছাড়ার পর তিনি লিখেন,
“শনিবার, ১৫ই এপ্রিল – মালির উদ্দেশ্যে যাত্রা। সকাল ৯টা ১৫ মিনিট।”
তিনদিন ধরে চলার পর আজাটেংদের বাস বুরকিনা ফাসো হয়ে মালিতে পৌঁছে। যাত্রাপথে প্রতিটি চেকপয়েন্টে পুলিশ বাস থামিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করে। বামাকোতে পৌঁছার পর আজাটেং সুলেমানার সাথে দেখা করেন। সুলেমানা তার কাছ থেকে ৬০ ইউরো নিয়ে তাকে কিছু কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেয়, যা দিয়ে তিনি পরবর্তী স্টপেজ, মালির গাও শহরে পৌঁছতে পারবেন। গাওতে গিয়ে তাকে দেখা করতে হবে সুলেমানার বস মুসা সাঙ্গারের সাথে।
বামাকো থেকে গাওর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার জন্য আজাটেং উপস্থিত হন বামাকোর বাস স্টেশনে। ডায়েরিতে লেখা তার বর্ণনানুযায়ী, প্রায় এক হাজার মানুষ সেখানে অপেক্ষা করছিল সাহারা পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রার উদ্দেশ্যে। প্রতি পাঁচ মিনিট পরপরই একটা করে বাস সেখান থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল অভিবাসন প্রত্যাশীদেরকে নিয়ে। আজাটেংয়ের ভাষায়, এটা যেন বাস স্টেশন না, বরং কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর!
আজাটেং বাসে চড়ে বসেন। তিনি ডায়েরিতে সুলেমানাসহ অন্যান্য স্মাগলারদের ফোন নাম্বার এবং অন্যান্য বিবরণ বিস্তারিত আকারে লিপিবদ্ধ করে রাখতে শুরু করেন। ঘণ্টাখানেক চলার পর সুলেমানা তাকে ফোন করে। সে আজাটেংকে জানায়, যাত্রাপথে প্রতি পদে পদেই তার টাকার প্রয়োজন হবে। কাজেই তার সাথে যত টাকাই থাকুক, তাকে প্রস্তুত থাকতে হবে যেন সেই টাকা শেষ হয়ে গেলে দেশে ফোন করে আরো টাকার ব্যবস্থা করতে পারে।
আরো দুইদিন চলার পর বাস এসে পৌঁছে সাহারার প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত মালির গাও শহরে। শহরটির প্রধান বাস স্টেশনে প্রতি ঘণ্টায় আফ্রিকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিবাসীদের স্রোত এসে জমা হতে থাকে। এসব অভিবাসীদের অনেকের কাছেই আজাটেংয়ের মতো শহরের কোনো প্রভাবশালী স্মাগলারের ফোন নাম্বার থাকে। স্মাগলাররা এসব অভিবাসীদেরকে নিজের আস্তানায় কয়েকদিনের জন্য আশ্রয় নেয়। এরপর যথেষ্ট সংখ্যক অভিবাসী একত্রিত হওয়ার পর সাহারা পার করে দেওয়ার জন্য তাদেরকে হস্তান্তর করে তুয়ারেগ ড্রাইভারদের হাতে।
সবার কাছে অবশ্য পরিচিত কোনো স্মাগলারের ফোন নাম্বার বা বাড়ির ঠিকানা থাকে না। তারা সহজেই দালালদের খপ্পরে পড়ে যায়। গাও শহরটি জুড়ে একাধিক বড় বড় মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের আস্তানা। বাস এসে পৌঁছার আগেই তাদের দালালদের মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়, কে বেশি সংখ্যক নতুন শিকার ধরে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে উঠাতে পারবে, এরপর বেশি টাকার বিনিময়ে ঠেলে দিতে পারবে মরুভূমির অনিশ্চিত যাত্রার দিকে।
সুলেমানার পরামর্শ অনুযায়ী আজাটেং মুসা সাঙ্গারের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বের করে সেখানে গিয়ে ওঠেন। ঘেটোর মতো বিশাল সেই বাড়িতে ঘুরে ঘুরে সবার অলক্ষ্যে তিনি ছবি তুলে যেতে থাকেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ডায়েরিতে নোট করে যেতে থাকেন। তিনি বুঝতে পারেন, মুসা সাঙ্গারের সাথে মালির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অবৈধ অর্থের লেনদেন আছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিবাসীদের কাছ থেকে যেসব টাকা আদায় করে, তার ভাগ মুসা সাঙ্গারের কাছেও যায়।
মুসা সাঙ্গারের আস্তানায় থাকার সময় আজাটেং বুঝতে পারেন, সুলেমানা যে বলেছিল রাস্তায় প্রতি পদে পদে টাকা লাগবে, তার প্রকৃত অর্থ কী। খাবার এবং পানির জন্য তো বটেই, গোসল করার জন্যও তাকে সেখানে টাকা পরিশোধ করতে হয়। তিনদিন সেখানে থাকার পর আজাটেংকে জানানো হয়, শীঘ্রই তাদের যাত্রা শুরু হবে। কিন্তু তার জন্য তাকে নগদ পরিশোধ করতে হবে আরও ৪০০ ডলার।
স্মাগলারদের এই আস্তানাগুলোই অভিবাসীদের সর্বশেষ নিরাপদ আশ্রয়। এরপরই শুরু হয় তাদের অনিশ্চিত যাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিতে ছয়দিন সময় লেগে যায়। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফান্ডিংয়ে কিছু কিছু স্থানে স্মাগলারদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের ভয়ে ড্রাইভাররা সোজা পথে না গিয়ে অগ্রসর হয় অনেক ঘুরপথে, দুর্গম রাস্তা দিয়ে। ফলে সাহারা পাড়ি দিতে সময় লেগে যায় আরো অনেক বেশি।
এসব দুর্গম মরুপথে মাঝেমাঝেই অভিবাসীদের ট্রাকগুলো আটকা পড়ে যায়। প্রচণ্ড মরুঝড়ে বালিয়াড়ি নিয়মিত স্থানান্তরিত হতে থাকে, ফলে দক্ষ ড্রাইভাররাও অনেক সময় পথ ভুল করে ফেলে। গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছতে পারলেও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে ড্রাইভাররা অভিবাসীদেরকে নামিয়ে দেয় শহর থেকে কয়েক মাইল দূরেই। বাকি পথ তাদেরকে হেঁটেই পাড়ি দিতে হয়। মৃত্যু এই যাত্রায় খুবই প্রত্যাশিত ঘটনা।
আজাটেং যখন গাও ছেড়ে সাহারার মধ্য দিয়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন তার সঙ্গীদের মধ্যে খুব কমসংখ্যকই সামনের বিপদসংকুল পথ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। বরং দীর্ঘ প্রস্তুতি এবং অপেক্ষা শেষে যাত্রা শুরু হওয়ার আনন্দেই তারা উল্লাস করছিল। যাত্রা শুরুর সাথে সাথেই একজন ব্লুটুথ স্পিকারে একটি গান চালিয়ে দেয়, আর নানান দেশের অভিবাসীরা নানান ভাষায় তার সাথে গলা মিলিয়ে গান গাইতে থাকে। কেউ কেউ পপ গানের সাথে তাল মিলিয়ে নাচতেও শুরু করে।
আজাটেংদের যাত্রা শুরু হয় পুরানো আমলের তিনটি ট্রাকে করে। গাওর প্রভাবশালী স্মাগলার মুসা সাঙ্গারের আস্তানা থেকে প্রথমে তাদেরকে কয়েকটি টয়োটা হাইলাক্স পিকআপে করে একটি ওয়্যারহাউজে জড়ো করা হয়। সেখান থেকে সবাইকে গাদাগাদি করে উঠানো হয় তিনটি ট্রাকের মধ্যে। আজাটেংয়ের স্থান হয় দ্বিতীয় ট্রাকে, আরো ৭৫ জন অভিবাসীর সাথে। যাত্রীদের মধ্যে দুইজন নাইজেরিয়ান মহিলা বাদে বাকি সবাই ছিল পুরুষ। মহিলা দুজনের স্থান হয় ট্রাকের সামনে, ড্রাইভারের পাশের সিটে।
ভীড় সামলে আজাটেং দুই হাঁটু বুকের কাছে ভাঁজ করে ট্রাকের মেঝেতে বসে পড়েন। যাত্রার ফাঁকে ফাঁকে তার শখের গোয়েন্দাগিরি অব্যাহত থাকে। কখনো মোবাইল ফোন দিয়ে, কখনো গোপন চশমা দিয়ে তিনি ছবি তোলা এবং অডিও-ভিডিও রেকর্ড করার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। অন্যরা উল্লাস করতে থাকলেও সামনের অজানা পথের সম্ভাব্য বিপদের কথা চিন্তা করে আজাটেংয়ের পাকস্থলি গুলিয়ে আসতে থাকে।
রাতের বেলা হঠাৎ করেই প্রচণ্ড এক ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রাকগুলো থেমে যায়। আজেটেংয়ের তন্দ্রা লেগে এসেছিল, তিনি লাফিয়ে উঠে বসেন। রাতের অন্ধকার ভেদ করে তাদেরকে ঘিরে ধরে সামরিক পোশাক পরা এবং একে-৪৭ রাইফেল বহনকারী একদল যুবক। চিৎকার করে তাদেরকে ট্রাক থেকে নেমে লাইন ধরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিতে থাকে তারা। আজাটেং বুঝতে পারেন, তারা মালির তুয়ারেগ বিদ্রোহীদের প্রথম চেকপয়েন্টে এসে পড়েছেন।
বিদ্রোহীরা আকাশের দিকে গুলি ছুঁড়ে অভিবাসীদেরকে ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে থাকে। যাদের কাছে যথেষ্ট টাকা ছিল না, তাদেরকে তারা ভিন্ন একটি লাইনে দাঁড় করায় এবং তাদের পকেট ও ব্যাগ সার্চ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এরপর টাকা না থাকার অপরাধে তাদেরকে পেটাতে শুরু করে।
আজাটেংয়ের মাথার একপাশে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করে একজন। তার চশমাটা খুলে মাটিতে পড়ে যায়। তার সামনের সারির এক অভিবাসীকে ধাতব দণ্ড দিয়ে আঘাত করা হয়, ফলে তার মুখ থেকে রক্ত পড়তে থাকে। যাত্রার শুরুতেই এক গাম্বিয়ান লোকের সাথে আজাটেংয়ের বন্ধুত্ব হয়েছিল। সে মার খাওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য ব্যাগ থেকে কুরআন শরিফ বের করে দুই হাতে উঁচু করে ধরে রাখে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয় না।
আজাটেং মাটি থেকে চশমাটা তুলে আবার চোখে দেন এবং ভয়কে অগ্রাহ্য করে ফ্রেমের গায়ে থাকা ছোট বোতামটা টিপে দেন। রাতের অন্ধকারে তার গোপন ক্যামেরার লো রেজুল্যুশন ভিডিওতে ধরা পড়তে থাকে বিদ্রোহীদের কর্মকাণ্ড। বিদ্রোহীদের একজন বড় একটি প্লাস্টিকের বাটি ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, আর অভিবাসীরা সারি বেঁধে তার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ফেলে যেতে থাকে। টাকা সংগ্রহের পর সবাইকে মাটির উপর বসে অপেক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়।
এমন সময় আজাটেংয়ের চোখ পড়ে তাদের সাথে থাকা সেই দুই নাইজেরিয়ান মহিলার উপর, যারা ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে ছিল। অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় নাইজেরিয়ান মহিলারা যাত্রাপথে অনেক বেশি যৌন হয়রানির শিকার হয়। একটি শক্তিশালী অপরাধী চক্র এই মহিলাদেরকে ইউরোপে হেয়ারড্রেসার বা হাউজ মেইড হিসেবে চাকরির লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে এবং এরপর যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি করে দেয়। পরিবার ছেড়ে একাকী অচেনা পথে পা বাড়ানোর সাথে সাথেই তারা যৌন হয়রানির ঝুঁকিতে পড়ে।
বামাকোতে থাকার সময় আজাটেংয়ের সাথে এই দুই নাইজেরিয়ান মহিলার একবার কথা হয়েছিল। অন্য সবার মতো তারাও তখনো বিপদের প্রকৃত রূপ আঁচ করতে পারেনি। পাচারকারীদের ভ্রান্ত আশ্বাসে তারাও ফাঁদে পা দিয়েছিল। নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে তাদেরকে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। তারা নিজেদের মধ্যে মজা করছিল এবং হাসাহাসি করছিল। কিন্তু তুয়ারেগদের চেকপয়েন্টে পৌঁছার পর থেকে বিপদ টের পেয়ে তারা বসে ছিল মাথা নিচু করে।
আজাটেং দেখতে পান, সাতজন সশস্ত্র বিদ্রোহীর একটি দল মহিলা দুইজনকে টেনে কিছুটা দূরে নিয়ে যায়। এরপর একের পর এক পালা করে তাদেরকে ধর্ষণ করে। নিরস্ত্র অভিবাসীদের থেকে নিজেদেরকে খুব বেশি আড়াল করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করে না মরুভূমির এই নিয়ন্ত্রণহীন রাজ্যে অস্ত্রের জোরে স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব কায়েম করা এই নরপশুরা। প্রাণের ভয়ে অভিবাসীরা প্রতিবাদ না করে মাথা নিচু করে বসে থাকে।
কিছুক্ষণ পর মহিলা দুজনকে ট্রাকের সামনে উঠিয়ে দিয়ে যায় তারা। অন্যদেরকেও ট্রাকে উঠিয়ে ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ট্রাক চলতে থাকে নীরব, নিস্তব্ধ বিশাল মরুর বুক চিরে। ট্রাকের পেছনের অভিবাসীদের মধ্যে নেমে আসে দীর্ঘ নীরবতা। সকালের সেই নাচ, গান, উল্লাস পরিণত হয় সুদূর অতীতে।
দীর্ঘ যাত্রাপথের শুরুতেই এরকম বিপদে সবাই মুষড়ে পড়ে। কে জানে সামনে এরকম আর কয়টি চেকপয়েন্ট আছে? আর কতবার তাদেরকে পড়তে হবে এরকম কিংবা এর চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতিতে? আজাটেংদের দীর্ঘ সেই যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা আমরা জানব এই সিরিজের পরবর্তী পর্বে। আর সবগুলো পর্ব পড়তে পারেন এখান থেকে: ১ম পর্ব, ২য় পর্ব, ৩য় পর্ব, ৪র্থ পর্ব।