নিজেদের আকাশে দেখা যাওয়া রহস্যময় চীনা বেলুন অবশেষে ভূপাতিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সংবাদ সংস্থা এপি-র বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। দক্ষিণ ক্যারোলাইনার তিনটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রেখে বেলুনটি আটলান্টিক মহাসাগরের উপরে যাবার পরই একে ধরাশায়ী করে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের বিলিংস শহরের আকাশে দেখা যায় বিশালাকার এক বেলুন। তারপর থেকে পাঁচ দিন কেটে গেলেও সেই বেলুন নিয়ে জল্পনাকল্পনা চলছেই; মার্কিন সমর বিশারদ থেকে শুরু করে আবহাওয়াবিদ, বিজ্ঞানী আর আমজনতা- সকলেরই চোখ ছিল আকাশে থাকা ঐ সাদা বেলুনে।
দ্রুতই জানা গিয়েছিল যে বেলুনটি চীনের। তাতে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে রব ওঠে চীনা নজরদারির বিরুদ্ধে। জাতীয় নিরাপত্তার ধোঁয়া তুলে সিনেটে বাইডেনকে একহাত নিতে ছাড়েনি রিপাবলিকানরা।
দ্বিতীয় বেলুন
প্রথম বেলুন চিহ্নিত করার পরদিন, অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বেলুন চিহ্নিত করতে সক্ষম হয় পেন্টাগন। বেলুনটির উপর নজর রাখছে পেন্টাগন, এর বেশি কিছু জানাননি পেন্টাগনের মুখপাত্র প্যাট রাইডার।
চীনের দাবি ও আমেরিকান প্রতিক্রিয়া
বাইডেন প্রশাসনও অবশ্য নীরব নেই। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীনে সফর বাতিল করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় সফররত ব্লিনকেন গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, তিনি চীনের একজন উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিকের সাথে কথা বলেছেন এবং চীনের ‘নজরদারি’ বেলুনটি যে আমেরিকান সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে চীনের তরফ থেকে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে। এক রাষ্ট্রীয় বিবৃতিতে বেইজিং বেলুনটিকে আবহাওয়া সংক্রান্ত বেলুন বলে দাবি করে।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ব্যাখ্যা বিশ্বাস করছে না বলেই জানিয়েছে। বিশেষ করে, বেলুনটি মন্টানার সামরিক ঘাঁটির মতো স্পর্শকাতর স্থানের উপর দিয়ে উড়ে যাবার কারণে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়েছে।
বেলুনটি ধ্বংস করা জরুরি ছিল কি?
প্রাথমিকভাবে ফাইটার জেট পাঠিয়ে বেলুনটি ভূপাতিত করার চিন্তাভাবনা করলেও পরবর্তীতে বেলুনের ধ্বংসাবশেষ থেকে জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বিবেচনায় তা করা হয়নি। বেলুনটি নজরদারির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা এমন হট্টগোলের মাঝেই পেন্টাগনও অবশ্য জানিয়েছে যে এটি কোনো হুমকির কারণ নয়। অবশ্য এসব ব্যাখ্যায় বাইডেনের সন্তুষ্ট হবার উপায় নেই। বিরোধী রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য মহল থেকে ভীষণ রকমের চাপের মুখে পড়েই শেষতক বেলুনটি ভূপাতিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।