মুশফিকের ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

  • টি-টুয়েন্টিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
  • উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে লিটন দাস এবং তামিম ইকবাল ৭৪ রান যোগ করেন মাত্র ২৯ বলে।
  • মুশফিকুর রহিম ৩৫ বলে ৭২* রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন।
  • শ্রীলঙ্কার হয়ে অর্ধশতক হাঁকান কুশাল মেন্ডিস এবং কুশাল পেরেরা।

দুদিন আগে ভারতের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর শ্রীলঙ্কান এক সাংবাদিক প্রশ্ন তুলেছিলেন, নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ কেন! উত্তরটা তিনি পেয়ে গেছেন আজ। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই বল এবং পাঁচ উইকেট হাতে রেখে টার্গেটে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

টি-টুয়েন্টিতে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে মাত্র চারটি। উপমহাদেশের দলের মধ্যে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তিটা অবশ্য বাংলাদেশ নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। এর আগের রেকর্ডটিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২০০৯ সালে ভারত ২০৭ রান তাড়া করে জিতেছিল।

শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্য অতিক্রম করার জন্য প্রথমে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের পরিবর্তে লিটনকে পাঠানো হয় তামিমের সাথে। সিদ্ধান্তটি যে ভুল ছিলো না, তা প্রমাণ করেছেন লিটন দাস। উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে তামিমের সাথে মাত্র ২৯ বলে ৭৪ রান যোগ করেন তিনি। নুয়ান প্রদীপের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ১৯ বলে দুটি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মারে ৪৩ রান করে জয়ের স্বপ্ন প্রথম লিটন দাসই দেখান।

উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে লিটন দাসের সাথে ৭৪ রান যোগ করেন তামিম ইকবাল; Source: AFP/Getty Images

লিটন ফিরে গেলেও থেমে থাকেনি বাংলাদেশের রানের চাকা। অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম খেলেন ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংস। দলীয় ১০০ রানে তামিম ফিরে গেলে বাংলাদেশের রানের গতি কিছুটা থেমে যায়। সৌম্য সরকারের স্বভাব বিরোধী ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে প্রদীপের বলে।

এরপর বাকি গল্পের নায়ক মুশফিকুর রহিম। তার হাত ধরেই আসে ঐতিহাসিক জয়। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সাথে মাত্র ২০ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথেই রাখেন তিনি। ১১ বলে ২০ রান রিয়াদ ফিরে গেলেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মুশফিকুর রহিম। মাত্র ৩৫ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ক্যারিয়ার সেরা ৭২* রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক।

এর আগে কলোম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের আকাশ পুরোদিন মেঘে ঢাকা ছিলো। দুপুরের দিকে হালকা বৃষ্টি হওয়ার পর ম্যাচ মাঠে গড়াবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় জাগে। শেষপর্যন্ত বৃষ্টি আঘাত না হানলেও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ম্যাচ শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব ঘটে। তবে নির্ধারিত ওভার থেকে কোনো বল কাটা যায়নি।

ভেজা আউটফিল্ড দেখে হয়তো অধিনায়ক রিয়াদ টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। তার সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণ করতে সময় নিলেন না কুশাল মেন্ডিস এবং কুশাল পেরেরারা। উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে কুশাল মেন্ডিস এবং গুনাথিলাকা ২৭ বলে ৫৬ রান যোগ করেন।

এক ওভারে দুই উইকেট শিকার করে শ্রীলঙ্কার রানের গতি থামান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ; Source: AFP/Getty Images

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুশাল মেন্ডিস ও পেরেরা আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ১৪ তম ওভারে অধিনায়ক রিয়াদ নিজেই বল হাতে তুলে নেন। মেন্ডিস-পেরেরার ৮৬ রানের জুটি ভাঙ্গার পাশাপাশি একই ওভারে দানুস্কা শানাকাকেও শূন্য রানে ফেরান। কুশাল মেন্ডিসের ৫৭ রান, কুশাল পেরেরার ৭৪ রান এবং শেষদিকে থারাঙ্গার ১৫ বলে অপরাজিত ৩২ রানের উপর ভর করে ছয় উইকেটে ২১৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান তিনটি এবং রিয়াদ দুটি উইকেট শিকার করেন।

Featured image: Ishara S.Kodikara

Related Articles

Exit mobile version