মানবসৃষ্ট সবচেয়ে ভারী মৌলের অদ্ভুত ধর্ম জানা যাচ্ছে গবেষণায়

  • পর্যায় সারণির মানব সৃষ্ট সবচেয়ে ভারী মৌল ‘ওগানেসন’ (পারমাণবিক সংখ্যা ১১৮) এর পারমাণবিক ধর্ম সম্পর্কে বেশ কিছু অদ্ভুত তথ্য পাওয়া গেছে একটি গবেষণার মাধ্যমে।
  • তবে গবেষণাটি থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পুরোটাই কম্পিউটার স্যিমুলেশনের মাধ্যমে হওয়ায় এই তথ্য সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত নন গবেষকগণ।
  • গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয় বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘ফিজিক্যাল রিভিউ লেটার্স ‘ এ।

Source : The public

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড এবং নরওয়ের গবেষকদের একটি দল কম্পিউটার স্যিমুলেশনকে কাজে লাগিয়ে সবচেয়ে ভারী মৌল ওগানেসন এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। মৌলটি আবিষ্কৃত হবার পর থেকে এর ধর্ম সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি মৌলটির ক্ষণস্থায়ীত্বের জন্য।

২০০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার গবেষকদের একটি দল ওগানেসন নামে একটি পরমাণু তৈরি করতে সফল হয়েছিলেন, যা পর্যায় সারণির সবচেয়ে ভারী মৌল ছিল। রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ইউরি ওগানেসিয়ানের নামে নামকরণ করা হয় মৌলটির। মৌলটি সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা বেশ কঠিন এবং এতদিন তা সম্ভব হয়নি এর অতি নগণ্য স্থায়িত্বকালের জন্য (প্রায় এক মিলিসেকেন্ডেরও কম)। এই কারণে পারমাণবিক হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে এর মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছিল।

Source : Youtube

একটি উন্নত কম্পিউটার স্যিমুলেশনের মাধ্যমে পূর্বের গবেষণার চেয়ে এবার অনেক তথ্যের ফাঁকা স্থান পূরণ হয়েছে। কিন্তু এই মৌলের ধর্মগুলো প্রত্যাশিত ফলাফলের তুলনায় বেশ অদ্ভুত। পারমাণবিক স্তরে অতি ভারী মৌলগুলোতে হালকা মৌলের তুলনায় বেশ কিছু দিক থেকে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান থাকে।

Source : Phys.org

প্রাপ্ত স্যিমুলেশন থেকে দেখা যায়, ওগানেসন মৌলটি যে গ্রুপে অবস্থিত সে গ্রুপের অন্য মৌলগুলোর সাথে এর ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনের ধর্মের কোনো মিল নেই।

এই গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ফার্মিয়ন লোকালাইজেশন ফাংশনযার মাধ্যমে ইলেকট্রনের কক্ষপথের অবস্থান সম্বন্ধে জানা যায়। কিন্তু এমন স্থির তড়িৎ শক্তি একটি ওগানেসন পরমাণু দ্বারা উৎপন্ন হয়, যা আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতার নিয়মগুলোকে তুুুুলে আনে। সে কথা মাথায় রেখে বিজ্ঞানীরা ইলেকট্রন লোকালাইজেশন ফাংশন  ব্যবহার করে দেখতে পান, এর ইলেকট্রন কক্ষপথগুলো একইরকম, যা অনেকটা ইলেকট্রন গ্যাসের মতো অবস্থার সৃষ্টি করে।

Source : Science Alert

বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, এই গ্যাসটিও হয়তো গ্রুপের বাকি মৌলগুলোর মতো ভিন্ন পারমাণবিক গঠন প্রদর্শন করবে। কিন্তু এটি অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস, যেমন- জেনন বা নিয়ন এর মতো না। আবার এটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের গ্রুপের মধ্যে রাসায়নিকভাবে অধিক সক্রিয় মৌলও হতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর যে নতুন ৪টি মৌলের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়, তার মধ্যে সর্বশেষ মৌলটি ছিল ওগানেসন। মানবসৃষ্ট সবচেয়ে ভারী মৌল এটি। আর প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ভারী মৌল হলো ইউরেনিয়াম (৯২)। গবেষণা প্রবন্ধটি পড়া যাবে এখান থেকে।

ফিচার ইমেজ: DreamsTime

Related Articles

Exit mobile version