- মিসরীয় প্রত্নতত্ত্ববিদরা প্রায় ৪,৪০০ বছরের প্রাচীন একটি সমাধি আবিষ্কার করেছেন।
- কায়রোর অদূরে মিসরের বিখ্যাত গিজা মালভূমিতে আবিষ্কৃত এ সমাধিটি হেটপেট নামক এক নারীর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- গত শনিবার মিসরের পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয় এ আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
#Egypt: 4,400 year-old tomb of ancient priestess found near Cairo – @Ruptly
The tomb of a woman named Hetpet, believed to be a priestess in the royal palace at the end of the fifth dynasty, was unearthed close to the Great #Pyramid of Giza near Cairo. pic.twitter.com/781lXHVXb5— Real News Line (@RealNewsLine) February 3, 2018
মিসরের গিজা মালভূমি যদিও এর পিরামিডগুলোর জন্যই বেশি বিখ্যাত, কিন্তু এতে অনেকগুলো বিশাল সমাধিক্ষেত্রও আছে। সম্প্রতি আবিষ্কৃত সমাধিটির অবস্থান গিজার পশ্চিম সমাধিক্ষেত্রে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, এটি হেটপেট নামক এক নারীর সমাধিক্ষেত্র, যিনি মিসরের পঞ্চম রাজবংশের রাজপ্রাসাদে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। সমাধিটি আনুমানিক ৪,৪০০ বছরের পুরানো। অর্থাৎ এটি গিজার বৃহত্তম পিরামিড নির্মাণের পরবর্তী সময়ের সমাধি।
মিসরের পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সমাধিটিতে অত্যন্ত স্বতন্ত্র দেয়ালচিত্র অঙ্কিত আছে এবং সেগুলো খুবই সুরক্ষিত অবস্থায় আছে। কয়েকটি চিত্রে হেটপেটকে শিকার করার এবং মাছ ধরার দৃশ্য অবলোকন করতে দেখা যায়। অন্য কিছু চিত্রে তাকে একটি টেবিলের সামনে বসে শিশুদের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করতে দেখা যায়।
হেটপেট ছাড়াও তৎকালীন মিসরীয় সমাজ ও সংস্কৃতির অনেক দৃশ্যও আছে দেয়াল চিত্রে। কয়েকটি চিত্রে ফল পাড়া, ধাতু গলানো, চামড়া এবং কাগজ প্রস্তুত প্রক্রিয়া এবং সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনার অনুষ্ঠান ফুটে উঠেছে। অন্য দুটি চিত্রে দুটি বানরকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একটি চিত্রে একটি পোষা বানরকে ফল সংগ্রহ করতে এবং অন্যটিতে অর্কেস্ট্রার সামনে নৃত্যরত অস্থায় দেখা যায়।
সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে একটি মঠ আছে, যেখানে পবিত্র হওয়ার জন্য বেসিন এবং ধূপ জ্বালানো ও প্রার্থনা করার জন্য পৃথক স্থান আছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, মঠের ভেতরে হয়তো হেটপেটের একটি মূর্তি ছিল, যা এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সম্ভাবনা আছে, মূর্তিটি পরবর্তীকালে চুরি হয়ে গেছে অথবা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, প্রত্নতত্ত্ববিদদের দলটি গত অক্টোবর মাস থেকে এ স্থানে খননকার্য শুরু করেছিল। দলটির নেতা মোস্তফা আল-ওয়াজিরি, যিনি মন্ত্রণালয়ের পুরাকীর্তি বিষয়ক সর্বোচ্চ কাউন্সিলের মহাসচিব, তিনি জানান, তারা ২৫০-৩০০ ঘন মিটার মাটি অপসারণ করার পর সমাধিটির খোঁজ পেয়েছেন। তিনি মনে করেন, এখনও আরও অনেক কিছু খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তার মতে, মিসরের মাটির উপরে যা দেখা যায় তা এর মোট ধারণ ক্ষমতার ৪০ শতাংশও না।
ধারণা করা হয়, হেটপেট ছিলেন একজন নারী পুরোহিত, যিনি মাতৃত্বের দেবী হ্যাথরের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। প্রাচীন মিসরীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী দেবী হ্যাথর নারীদেরকে গর্ভকালীন সময়ে সুরক্ষা দিতেন। হেটপেট প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে আগে থেকেই একটি পরিচিত নাম। এর আগে ১৯০৯ সালে তার ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য পাওয়া গিয়েছিল, যার অনেকগুলো বার্লিন মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার মমির সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
ফিচার ইমেজ- Egypt Antiquities Ministry