Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

যে ৫টি দেশ থেকে ২০১৮ সালে শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ

পরপর দুটি বিশ্বযুদ্ধের বিশাল প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির পর গত প্রায় সাত দশক ধরে পৃথিবী নতুন কোনো বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মতো বোকামি করেনি, যদিও দেশে দেশে যুদ্ধ এবং ছায়াযুদ্ধ কখনোই বন্ধ ছিল না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পৃথিবী আবার নতুন করে বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে এসে ইরাক-সিরিয়া সহ কয়েকটি এলাকা যদিও কিছুটা শান্ত হয়ে এসেছে, কিন্তু নতুন করে উত্তেজনার দিকে এগিয়ে গেছে সৌদি আরব, ইরান সহ আরো কিছু এলাকা। বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতায় পূর্বের মতো বিশ্বযুদ্ধ যদি না-ও সংঘটিত হয়, তবুও বৃহৎ শক্তিগুলোর পরোক্ষ সহযোগিতায় বড়সড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে বিশ্বের অনেকগুলো রাষ্ট্রই।

ইউনিভার্সিটি অফ কেন্টাকির সহকারী অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং কূটনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট ফারলির মতে, ২০১৮ সালে সবচেয়ে বেশি যুদ্ধের ঝুঁকিতে আছে উত্তর কোরিয়া, চীন, ইউক্রেন, তুরস্ক এবং পারস্য উপসাগর। আন্তর্জাতিক রাজনীতিবিদদের হিসাবের সামান্য গরমিল অথবা অবিবেচক সিদ্ধান্তের ফলে এসব এলাকায় যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হয়ে যেতে পারে। ভাগ্য খারাপ হলে সেসব যুদ্ধ হয়তো গড়াতে পারে বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্তও। চলুন, দেখে নিই, ঠিক কতটুকু ঝুঁকিতে আছে এই দেশগুলো, এবং কেন?

উত্তর কোরিয়া

সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে কিম জং উন; Source: nowtheendbegins.com

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা উঠলেই আমাদের চোখের সামনে যার ছবি ভেসে ওঠে, তিনি হলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। পুরো ২০১৭ সাল জুড়েই উত্তর কোরিয়া সংবাদের শিরোনাম হয়েছে একের পর এক পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা এবং অবরোধ সত্ত্বেও কিম জং উন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা অব্যাহত রেখেছেন।

উত্তর কোরিয়ার এরকম বেপরোয়া কর্মসূচীতে উদ্বিগ্ন হয়ে রাশিয়া এবং চীন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে দেশটির বিরুদ্ধে অবরোধের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু কিম প্রশাসন এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না। উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি বিশ্ব শান্তির প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অননুমেয় পদক্ষেপসমূহ এবং তার প্রশাসনের কূটনৈতিক অনভিজ্ঞতাও। এখন পর্যন্ত ট্রাম্প এবং কিমের যুদ্ধ শুধু টুইটার এবং গণমাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকলেও যেকোনো সময়ই পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

চীন-তাইওয়ান

সামরিক মহড়া পরিদর্শন করছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট; Source: Tyrone Siu/ Reuters

প্রকাশ্যে যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তর কোরিয়ার দ্বন্দ্ব চরমে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের সম্পর্কও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ঐতিহাসিক কারণে চীন তাইওয়ানকে নিজের অংশ হিসেবে দাবি করে এবং নিজের সাথে একীভূত করতে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সহ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর অনেকেই তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন অর্থনীতির গন্ডি ছাড়িয়ে সামরিক দিক থেকেও বিশ্বের উপর নিজের প্রভাব বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। বিশেষ করে পূর্ব এশিয়ায় ক্রমেই মার্কিন প্রভাব হ্রাস পাচ্ছে এবং চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক মাসে চীনের কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা তাইওয়ানের উপর আক্রমণের হুমকিও দিয়েছেন একাধিকবার।

চীনের এই নীরব উত্থানকে সামাল দিতে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সমুদ্রসীমায় যুদ্ধ জাহাজ প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাইওয়ানের কাছে ১,৪০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করার সিদ্ধান্তও মার্কিন সিনেট থেকে অনুমোদিত হয়েছে। যদিও সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম, কিন্তু চীন যদি তাইওয়ানের উপর সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করেই বসে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রও চুপচাপ বসে থাকবে না। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে তাই শুরু হতে পারে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, যাতে এশিয়া এবং ইউরোপের অনেক দেশও জড়িয়ে পড়তে পারে।

ইউক্রেন

ইউক্রেনের সৈন্যরা ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে; Source: AFP

২০১৪ সালে শুরু হওয়া ইউক্রেন সংকট এখনও শেষ হয়নি। ইউক্রেন সরকারের সাথে রাশিয়াপন্থী মিলিশিয়াদের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত মোট ১০টি যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছিল, যার কোনোটিই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বর্তমানে যদিও সেখানে সরাসরি কোনো যুদ্ধ চলছে না, কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে পূর্বের মতোই উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া বর্তমানে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। দেরিতে যোগ দিয়েও সিরিয়া যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করেছে রাশিয়াই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়। একসময়ের যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং ন্যাটোর সদস্য তুরস্ককেও রাশিয়া নিয়ে আসতে পেরেছে নিজ বলয়ে। ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকা রাশিয়ার উত্থানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ন্যাটো রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে সৈন্যের উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে

রাশিয়ার জন্য তাই ইউক্রেন, জর্জিয়া সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের উপর নিজের কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিকল্প নেই। এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই ভেঙে পড়তে পারে বর্তমানের যুদ্ধবিরতি। এছাড়াও ইউক্রেন সরকারের পতন হলে রাশিয়া সেই সুযোগের ব্যবহার করতে গিয়ে সম্পূর্ণ ইউক্রেন দখল করার চেষ্টা করতে পারে। অথবা বিপরীতভাবে ইউক্রেনে অধিকতর ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় আসলেও পরিস্থিতি গড়াতে পারে নতুন যুদ্ধে। আর একবার যুদ্ধ শুরু হলে তাতে জড়িয়ে পড়তে পারে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোও।

তুরস্ক

সিরিয়াতে তুরস্কের সেনাবাহিনী; Source: Bulent Kilic/ Getty Images

মাত্র দুই বছর আগেও তুরস্ক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। মধ্যপ্রাচ্য সংকটকে কেন্দ্র করে সে সময় রাশিয়ার সাথে তাদের প্রায়ই বাকযুদ্ধ লেগে থাকতো। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপতিত করার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে থাকে এবং তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহ সংঘটিত হওয়ার পর তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে।

এই মুহূর্তে তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য রাশিয়া এবং ইরানের সাথে একত্রে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া এবং ইরানের মূল লক্ষ্যের সাথে তুরস্কের লক্ষ্যের মিল নেই। নৈতিক দিক থেকে তুরস্কের অবস্থান এখনও বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে। আবার তুরস্ক শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্র, যারা অটোমান সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। অন্যদিকে তারা ন্যাটোর সদস্য, যাদের ভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত। এছাড়াও কুর্দি সংকট তো আছেই!

এরকম জটিল পরিস্থিতিতে তুরস্কের সামান্য একটু ভুল সিদ্ধান্তই মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ভয়াবহ ফলাফল বয়ে আনতে পারে। তাদের যেকোনো নীতিগত পরিবর্তন অথবা ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে সৃষ্টি হতে পারে ধারাবাহিক রিপল ইফেক্ট। নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়া ভুল হিসাব কষে জড়িয়ে পড়তে পারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংঘাতে। জড়িয়ে পড়তে পারে দক্ষিণ ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোও।

পারস্য উপসাগর

সৌদি সেনাবাহিনীর মহড়া; Source: AFP

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগেই আছে। বিশেষ করে আরব বসন্ত শুরু হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে শান্ত এবং স্থিতিশীল থাকা শক্তিশালী আরব রাষ্ট্রগুলোও দীর্ঘমেয়াদী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সিরিয়ার যুদ্ধ রীতিমতো ছোটোখাট বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিয়েছিল। ইরান, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, কাতার, সৌদি আরব সহ বিশ্বের প্রায় সবগুলো সামরিক শক্তিই এখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছিল। ধারণা করা হতো, সিরিয়ার যুদ্ধই হয়ত একসময় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসায় এবং তুরস্কের যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মৈত্রিতা ছিন্ন করে রাশিয়ার শিবিরে যোগদানের ফলে সিরিয়াতে রাশিয়া-ইরান জোট শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং বাশার আল-আসাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত হয়।

বর্তমানে সিরিয়া পরিস্থিতি অনেকটাই বাশার আল আসাদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। জঙ্গি সংগঠন আইএস সেখানে পরাজিত হয়েছে, বিদ্রোহীরাও অনেকটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে। একের পর এক শান্তি আলোচনা চলছে এবং বিদেশী শক্তিগুলো তাদের সেনা উপস্থিতি হ্রাস করে নিচ্ছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো বা যুক্তরাষ্ট্র- কারো কাছ থেকেই আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় ইরাকি কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার দাবিও আপাতত চাপা পড়ে গেছে। দৃশ্যত মনে হচ্ছে, সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধের অবসান হয়ে শান্তি আসন্ন। কিন্তু মার্কিন নিয়ন্ত্রণ হ্রাস পাওয়া মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার বলয় বিস্তার করা নিয়ে ইরানের সাথে সৌদি আরবের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইরানি কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলায়মানি; Source: AP

মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ইরানের সাথে সৌদি আরবের ছায়া যুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সিরিয়াতে সৌদি আরব কয়েকটি সুন্নী বিদ্রোহী গ্রুপকে সমর্থন দিয়েছিল। অন্যদিকে ইরান পূর্ণশক্তি দিয়ে বাশার আল আসাদের পক্ষে লড়াই করেছে। ইরানের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদেরকে সাহায্য করার অভিযোগ আছে, অন্যদিকে সৌদি আরব হুথিদেরকে দমনের নামে পুরো ইয়েমেনেই বিমান হামলা করছে, অবরোধ আরোপ করছে।

ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর উপর চাপ সৃষ্টির জন্য সৌদি আরব লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকেও পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। ফ্রান্স হস্তক্ষেপ না করলে লেবাননও হয়তো নতুন করে গৃহযুদ্ধের মুখ দেখতো। সিরিয়া এবং ইয়েমেন যুদ্ধে কাতার দীর্ঘদিন সৌদি আরবের পক্ষে থাকলেও পরবর্তীতে কাতারের সাথে ইরানের সুসম্পর্ক তৈরি হওয়ায় সৌদি আরব কাতারের উপরও অবরোধ সৃষ্টি করেছিল।

২০১৮ সালে সৌদি আরব এবং ইরানের এই দ্বন্দ্ব আরো বিস্তার লাভ করার সম্ভাবনা আছে। মধ্যপ্রাচ্যের আরো কয়েকটি দেশ এতে জড়িয়ে পড়তে পারে। ইরানকে ইসরায়েল এ অঞ্চলে তাদের প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করে। তাই ইরানকে দমন করার করার জন্য ইসরায়েল হয়তো চাইবে সৌদি আরবের সাথে ইরানের সরাসরি যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিতে। যদি সেরকম যুদ্ধ সরাসরি বেঁধেই যায়, তবে তা শেষ পর্যন্ত গড়াতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে।

ফিচার ইমেজ- LYNE LUCIEN/ THE DAILY BEAST

Related Articles