গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে বাসিন্দাদের ফোনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভুল বার্তা পাঠানো হয়। এতে প্রদেশটিতে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো আতঙ্ক বিরাজ করে।
স্থানীয় সময় সকাল আটটায় হাওয়াই জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার পক্ষ থেকে পাঠানো এ বার্তায় বলা হয়, “হাওয়াইয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা হতে পারে। অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজুন। এটি কোনো মহড়া নয়।”
কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি কোনো হ্যাকার বা বিদেশী সরকারের কাজ নয়, বরং মানুষের ভুলের কারণেই এটি সংঘটিত হয়েছে। সংস্থাটির মুখপাত্র রিচার্ড রাপোজা জানান, জরুরি কমান্ড পোস্টে শিফট পরিবর্তনের সময় এ ভুল হয়। তিনি বলেন, “কেউ একজন ভুল বোতামে চাপ দিয়েছে।”
সতর্কবার্তাটি প্রচারের কিছুক্ষণের মাঝেই এলাকাবাসীরা আশ্রয়স্থলে জমায়েত হতে শুরু করে। সড়কগুলোয় ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষের ভীড় জমে যায়। কিছু কিছু অঞ্চলে জরুরি সাইরেন বেজে উঠলে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়।
হাওয়াইয়ের গভর্নর ডেভিড ওয়াই ইগে বলেন, “আজ যা ঘটেছে তা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়। এর ফলে আমাদের সম্প্রদায়ের অনেকেই গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কষ্ট ও বিশৃঙ্খলার জন্য আমি দুঃখিত।”
প্রদেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, সংস্থাটি ও গভর্নর উভয়ের পক্ষ থেকেই ফেসবুক ও টুইটারে ভুলের ব্যাপারে নোটিশ প্রদান শুরু হলেও সতর্ক ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে মোবাইলে সংশোধনী বার্তা পাঠাতে দেরি হয়ে যায়। এ কারণে ভুল সতর্কবার্তা সংশোধনে একটি ‘বাতিলকরণ টেমপ্লেট’ তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়। শনিবার রাতেই কোনো সতর্কবার্তা পাঠানোর পূর্বে দুজনের ‘সাইন অফ’ প্রয়োজন, এমন নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমগুলো বিভিন্ন বার্তায় প্লাবিত হতে থাকে। অনেক সাধারণ মানুষের সাথে অভিনেতা জিম ক্যারি, টিভি উপস্থাপিকা সারা ডনচি টুইটারে বার্তা দেন।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন এর মাঝে পারমাণবিক হুমকি বিনিময়ের পর থেকে হাওয়াইয়ে সতর্কবার্তা চলছিল। ডিসেম্বর থেকেই সেখানে প্রতি মাসে সাইরেন দিয়ে বিমান মহড়া চালু করা হয়। প্রায় ৫,৭০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে উত্তর কোরিয়া থেকে হাওয়াইতে ক্ষেপণাস্ত্র পৌঁছুতে আধা ঘন্টার কিছু বেশি সময় প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের মতে, সতর্কবার্তা জারি করার পরে সেখানকার এলাকাবাসী নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ১২ মিনিটের মতো সময় পাবে।
ফিচার ইমেজ: cnn.com