- ইরাকের আদালত ১৬ জন তুর্কি নারীকে জঙ্গি সংগঠন আইএসের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে।
- গতকাল সোমবার ইরাকের বিচার বিভাগীয় মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ সংবাদ দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
- অভিযুক্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবে।
16 Turkish women were found guilty of terrorism and sentenced to death by an Iraqi court on Sunday https://t.co/gnrgmyX1Ng
— CNN (@CNN) February 26, 2018
ইরাকের বিচারক পরিষদের মুখপাত্র, বিচারক আব্দুস সাত্তার বিরাকদার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ফৌজদারি আদালত ১৬ জন তুর্কি নারীর বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠন দায়েশের (আইএস এর আরবি নামের সংক্ষিপ্ত রূপ) সদস্য হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে এবং তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার রায় দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঐ নারীরা স্বীকার করেছে যে, তারা দায়েশের সদস্যদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল এবং তাদেরকে রসদ সরবরাহ অথবা সন্ত্রাসী হামলা করতে সাহায্য করেছিল।
আব্দুস সাত্তার বিরাকদার আরো জানিয়েছেন, ইরাকের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী তুর্কি নারীদের বিরুদ্ধে এই রায় দেওয়া হয়েছে। তবে এই রায় এখনই কার্যকর হবে না। অভিযুক্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে। আগামী এক মাসের মধ্যে তাদেরকে আপিল করতে হবে।
অভিযুক্ত নারীদের বয়স ২০-৫০ বছরের মধ্যে। গত রবিবার তাদেরকে কালো বোরকা পরিয়ে বাগদাদের কেন্দ্রীয় ফৌজদারি আদালতে হাজির করা হয়। তাদের চারজনের সাথে তাদের সন্তান ছিল। এদের অন্তত একজন আইএসের পক্ষ হয়ে ইরাকী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কথাও স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
এর আগে গত সপ্তাহে একই রকম অভিযোগে আরেক তুর্কি নারীকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল ইরাকের আদালত। সে সময় একইসাথে বিভিন্ন দেশী ১০ জন নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। আইএসে যোগ দেওয়ার অভিযোগে গত মাসে এক জার্মান নারীকে এবং এর আগে গত বছর এক রাশিয়ান নারীকেও মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল।
A court in Iraq has sentenced 16 Turkish women to death for their ties to ‘Islamic State.’
They have 1 month to appeal.
The women, some of whom were accompanied by children, say they entered the country to be with their husbands.https://t.co/8XucNZ537X pic.twitter.com/riBoCHqlqg
— dwnews (@dwnews) February 26, 2018
তবে আইএসের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবাইকেই মৃত্যুদন্ড দেওয়া হচ্ছে না। ইরাক সরকার সম্প্রতি চারজন রাশিয়ান নারী এবং ২৭ জন শিশুকে রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছে। গত বৃহস্পতিবার ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়ে বলে, তারা আইএসের ধোঁকায় পড়ে ইরাকে এসেছিল।
২০১৪ সাল থেকে হাজার হাজার বিদেশী নাগরিক ইরাক এবং সিরিয়াতে গিয়ে আইএস সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে। তাদের অনেকের সাথে তাদের স্ত্রীরাও ছিল। আবার অনেক নারী পরে ইরাক এবং সিরিয়াতে গিয়ে আইএস সদস্যদেরকে বিয়ে করে সংগঠনটিতে যোগ দিয়েছে। গত বছরের আগস্ট মাসে ইরাকের তেল আফার শহরে আইএসের পতন ঘটলে এরকম অন্তত ১,৩০০ নারী ও শিশু কুর্দি পেশমার্গা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। পরবর্তীতে সেই সংখ্যা ১,৭০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইরাক আনুষ্ঠানিকভাবে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেয়, যদিও এখনও পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকায় আইএসের অস্তিত্ব রয়ে গেছে। আইএসের পরাজয়ের পর থেকে সংগঠনটির গ্রেপ্তার এবং বন্দী হওয়া সদস্যদের অনেককে বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে বন্দী হওয়া নারী এবং শিশুদের বিচার নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছে ইরাক। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিচারিক প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছে, শুধুমাত্র সীমান্ত পাড়ি দেওয়া অথবা আইএস সদস্যদের বিয়ে করার কারণে এ ধরনের শাস্তি অতিরিক্ত কঠোর হয়ে যাচ্ছে।
ফিচার ইমেজ- AFP