- রাশিয়াতে একটি গির্জায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৫ জন নিহত এবং আরো ৫ জন আহত হয়েছে।
- হামলাকারী গির্জায় প্রবেশ করতে না পারায় হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে।
- হামলাকারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
- হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গী সংগঠন আইএস। তারা কথিত হামলাকারীর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।
Initial reports suggested all five victims were women. https://t.co/uf5ej5wy3G
— Globalnews.ca (@globalnews) February 18, 2018
রাশিয়ার দক্ষিণে অবস্থিত উত্তর ককেশাসের দাগেস্তান প্রদেশে গুলিবর্ষণের ঘটনায় পাঁচজন নিহত এবং আরো পাঁচজন আহত হয়েছে। গতকাল রবিবার দাগেস্তান প্রদেশের রাজধানী কিজলিয়ার শহরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই নারী, যারা গির্জা থেকে প্রার্থনা সেরে বেরিয়ে আসছিল। আহতদের মধ্যে দুজন পুলিশও আছে। অন্যদিকে হামলাকারী পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বর্ণনাানুযায়ী, প্রার্থনাকারীরা যখন বিকেল বেলার প্রার্থনা সেরে বেরিয়ে আসছিল, তখন শিকারী রাইফেল হাতে এক যুবক তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে। সৌভাগ্যবশত তাদের অধিকাংশই গির্জার ভেতরে গিয়ে আড়াল নিয়ে গির্জার দরজা বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়। ফলে হামলাকারীর হাত থেকে বেঁচে যায় অনেক প্রাণ। কিন্তু তার আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই চার নারী নিহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় আরেক নারী।
Кизляр. Еще одно видео pic.twitter.com/QE4w46Z9Nm
— Эль Мюрид (@K25_SPb) February 18, 2018
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরবিডি ডেইলি (RBD Daily) ফাদার পাভেল নামে গির্জার এক যাজকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রার্থনা শেষে সবাই যখন বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন দাড়িওয়ালা এক যুবক গির্জার দিকে ছুটে আসে এবং ‘আল্লাহু আকবার’ শ্লোগান দিতে দিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে। তার হাতে একটি শিকারী রাইফেল এবং একটি ছুরি ছিল। পুলিশ হামলাকারীর পরিচয় হিসেবে জানিয়েছে, সে ২২ বছর বয়সী স্থানীয় এক যুবক, যার বিরুদ্ধে পূর্বে কোনো অপরাধের অভিযোগ ছিল না।
ঘটনার পরপরই জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট তথা আইএস এর দায় স্বীকার করেছে। আইএস প্রথমে আ’মাক বার্তা সংস্থার মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে ঘটনার দায় স্বীকার করে এবং হামলাকারীকে “খিলাফতের সৈন্য” বলে উল্লেখ করে। বিবৃতিতে তারা হামলাকারীর যুদ্ধকালীন নাম (Nom De Guerre) খালিল আল-দাগেস্তানী বলে জানায়।
ISIS has claimed that a “soldier” of the caliphate was behind a deadly attack on a church in the Dagestan region of Russia https://t.co/I7ho1h9NBg
— The New York Times (@nytimes) February 18, 2018
দায় স্বীকারের কিছুক্ষণ পরেই আইএস সমর্থিত টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো থেকে হামলাকারীর একটি কথিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে মুখোশ পরা এক যুবককে আইএসের তথাকথিত খলিফা আবু বকর আল-বাগদাদীকে “আমীরুল মু’মেনীন” হিসেবে উল্লেখ করে তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে দেখা যায়। ভিডিওতে তার পাশে হামলার সময় ব্যবহৃত রাইফেল এবং ছুরির অনুরূপ একটি রাইফেল এবং ছুরি দেখা যায়। তবে মুখ ঢাকা থাকার কারণে হামলাকারী এবং ভিডিওর ব্যক্তি একই কিনা, তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০,০০০ মানুষের বাসস্থান কিজলিয়ার শহরটি অবস্থিত রাশিয়ার উত্তর ককেশাসের দাগেস্তান প্রদেশে, যার জনসংখ্যার অধিকাংশই মুসলমান। চেচনিয়ার সীমান্তবর্তী এই এলাকাটি রাশিয়ার অন্যতম দরিদ্র এবং অস্থিতিশীল এলাকা। নব্বইয়ের দশকে চেচনিয়া সংকটের সময় থেকেই এলাকাটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। এলাকাটি থেকে অনেক যুবক ইরাক এবং সিরিয়াতে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল বলে অভিযোগ আছে।
2750 Muslim terrorists from Isis, who had fought in Syria, are in Dagestan,
Chechenia, Ingushetia, Kabardina Balkaria, and other parts of the Russia and I expect bloody attacks throughout Russia.— Vahan Hakobian (@EU_PRIME) February 18, 2018
২০১৫ সালে সর্বপ্রথম আইএস এই অঞ্চলে তাদের ‘ককেশাস প্রদেশ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিল। এর আগেও তারা একাধিকবার পুলিশের উপর ছোটখাট হামলা চালিয়েছিল। তবে খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা এবারই প্রথম। সম্প্রতি ইরাক এবং সিরিয়াতে আইএসের পরাজয়ের পর বিপুল সংখ্যক রাশিয়ান আইএস সদস্য এসব এলাকায় ফিরে এসেছে বলে সন্দেহ করা হয়।
ফিচার ইমেজ- Sputnik/ Magomed Aliev