জাপানের টোকিও ভিত্তিক ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় প্রতিষ্ঠান কয়েনচেক রবিবার জানিয়েছে তারা প্রায় ৪২.৫ কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের জাপানি ইয়েন ক্ষতিপূরণ দেবে। দুদিন আগে হ্যাকাররা তাদের থেকে সবচেয়ে বড় ভার্চুয়াল মুদ্রা চুরির করার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিপূরণ দিতে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় তারা তাদের ৯০ শতাংশ ‘এনইএম’ মুদ্রা হারিয়ে ফেলে। এ কারণে তারা গত শুক্রবার বিটকয়েন ব্যতীত অন্য সব ধরনের ক্রিপ্টো-কারেন্সি উত্তোলন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
সময় ও পদ্ধতি নিয়ে এখনও কাজ করে গেলেও এক বিবৃতিতে কয়েনচেক জানায়, এটি প্রায় ২,৬০,০০০ জন ‘এনইএম’ মুদ্রার মালিককে জাপানি ইয়েনে মূল্য পরিশোধ করবে। চুরি যাওয়ার ঘটনাটি বিটকয়েন সহ অন্যান্য ভার্চুয়াল মুদ্রার নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উত্থাপন করে, যদিও বিশ্বজুড়ে ব্যাপকহারে এর চাহিদায় খুব কমই প্রভাব পড়েছে।
জাপানের ‘ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এজেন্সি’ (এফএসএ) এ ব্যাপারে দেশটিতে ভার্চুয়াল মুদ্রা বিনিময় করে এরকম প্রায় ৩০টি ফার্মে নোটিস দিয়েছে। এ ধরনের সাইবার হ্যাকিংয়ের ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে নোটিসে তাদের নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। আর্থিক নিষ্পত্তি আইনের মাধ্যমে কয়েনচেককে প্রশাসনিক শাস্তি প্রদানের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
জাপানে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় অপারেটরদের সরকারিভাবে নিবন্ধনের কাজ শুরু হয় মাত্র ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে। কয়েনচেকের মতো আগে থেকে বিদ্যমান অপারেটরগুলোকে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকাকালীন কাজ করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরে দেওয়া কয়েনচেকের দরখাস্ত এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
গত শুক্রবারের এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েনচেক জানায়, তারা ‘এনইএম’ মুদ্রা অধিক সুরক্ষিত ‘কোল্ড ওয়ালেট’-এ না রেখে ‘হট ওয়ালেট’ এ রেখেছিল। হট ওয়ালেটে রাখার কারণ হিসেবে কইচিরো ওয়াদা প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং সীমিত সংখ্যক কর্মীর কথা উল্লেখ করেন।
২০১৪ সালে টোকিও ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের বিটকয়েন হারানোর পরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ বিটকয়েন সংক্রান্ত বাণিজ্য পরিচালনা করত। সাম্প্রতিককালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ইউবিট গত মাসে বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর দুবার হ্যাকিংয়ের শিকার হয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছিল। গত সপ্তাহে বিশ্বনেতাদের ড্যাভোসের এক বৈঠকে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
ফিচার ইমেজ: The Japan Times