- ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের জন্য ‘আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন’ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
- সংকট সমাধানে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের মধ্যস্থতায় ‘বহুপাক্ষিক পদ্ধতি’ অনুসরণ করারও আহ্বান জানান তিনি
- দীর্ঘ নয় বছর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান মাহমুদ আব্বাস।
Palestinian president Mahmoud Abbas and U.S. envoy Nikki Haley traded barbs at the U.N. https://t.co/IfC540vgjg pic.twitter.com/f5ajL3doe0
— Bloomberg (@business) February 20, 2018
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের জন্য ‘আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন’ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক বিরল ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। এটি ছিল ২০০৯ সালের পর জাতিসংঘে দেওয়া মাহমুদ আব্বাসের প্রথম ভাষণ।
মাহমুদ আব্বাস ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা বিশ্বাস করেন যে আলোচনাই হচ্ছে শান্তির দিকে একমাত্র পথ। শান্তি স্থাপনের পথে অন্তরায় হিসেবে ইসরায়েলকে দায়ী করে তিনি বলেন, “ইসরায়েল আইনের উর্ধ্বের একটি রাষ্ট্রের মতো আচরণ করছে। এটি দখলদারিত্বকে অস্থায়ী অবস্থা থেকে স্থায়ী ঔপনিবেশবাদ এবং এক রাষ্ট্রীয় জাতিবৈষম্যে পরিণত করেছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৯৪৮ সাল থেকে জাতিসংঘে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ৮৬টি সিদ্ধান্ত পাস হয়েছে, কিন্তু এগুলোর একটিও কার্যকর হয়নি।
Palestinian President Mahmoud Abbas calls for a “multilateral international mechanism” for the Middle East peace process.
Full @UN Security Council video here: https://t.co/0stkHpLqzA pic.twitter.com/axaEWI7kVe
— CSPAN (@cspan) February 20, 2018
মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিন সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য ‘বহুপাক্ষিক পদ্ধতি’ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অন্যান্য রাষ্ট্রে অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো একক রাষ্ট্রের পক্ষে আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সংকট সমাধান করা সম্ভব না। উল্লেখ্য, পূর্বে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি আলোচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিবেচনা করা হলেও গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে ফিলিস্তিন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা মানতে অস্বীকার করে।
মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণেও যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে শান্তি আলোচনা থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার পরিবর্তে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য সহ অন্যান্য রাষ্ট্রকেও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তার প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক শান্তি পরিষদ কিংবা বহুপাক্ষিক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত না জানালেও তিনি রাশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী মস্কোতে শান্তি আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেছেন।
Palestinian President Mahmoud Abbas rules out the US as a broker for peace with Israel, calling for an international peace conference by mid-2018 with the key goals of full UN membership for the state of Palestine and a timeframe for a two-state solution https://t.co/J7IMua1uMY pic.twitter.com/5x6rN3Ud6o
— TRT World Now (@TRTWorldNow) February 21, 2018
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তার ভাষণে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাবে। বর্তমানে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের মর্যাদা ‘নন মেম্বার, অবজার্ভার স্টেট’ হিসেবে। এর ফলে ফিলিস্তিন সীমিতভাবে জাতিসংঘের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রস্তাবনা উত্থাপন বা তার উপর ভোটদান কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
ফ্রান্স, সুইডেন সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা মাহমুদ আব্বাসের বক্তব্যের প্রশংসা করেন। কিন্তু জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যান্টন মাহমুদ আব্বাসের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মাহমুদ আব্বাসকেই সমস্যার অংশ হিসেবে অভিযুক্ত করেন। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিকি হ্যালি জাতাসংঘের প্রতি তার অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের পেছনে অসমানুপাতিক পরিমাণে অর্থ এবং সময় অপচয় করছে। উল্লেখ্য, অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা এবং উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারও উপস্থিত ছিলেন।
ফিচার ইমেজ- bahumatrik.com