লিবিয়াতে জোড়া গাড়িবোমা হামলায় নিহত প্রায় অর্ধশত

লিবিয়াতে পরপর দু’টি গাড়ি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪১ জন নিহত এবং ৮০ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজীর সালমানি নামক এলাকার একটি মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে

মিলিটারি ও পুলিশের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন তারেক আল-খাররাজের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২০ মিনিটে যখন মানুষ স্থানীয় বাইত আল-রেদোয়ান মসজিদ থেকে এশার নামায পড়ে বের হয়ে আসছিল, তখনই প্রথম গাড়িবোমাটি বিস্ফোরিত হয়। আহত ও নিহতদেরকে উদ্ধার করতে যখন নিরাপত্তা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্স এবং আশেপাশের মানুষ এগিয়ে আসে, তখন রাস্তার বিপরীত দিকে থাকা আরেকটি গাড়ি বিস্ফোরিত হয়। দুটি বিস্ফোরণের মধ্যে ১০-১৫ মিনিটের মতো ব্যবধান ছিল। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ছিল প্রথমটির চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। এর আঘাতে সাহায্য করতে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ঘটনাস্থলেই অনেকে নিহত হয়।

স্থানীয় আল-জালা হাসপাতালের বরাতে লিবিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা ৪১ এবং আহতের সংখ্যা অন্তত ৮০। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহত এবং নিহতদের মধ্যে বেসমারিক মানুষের সংখ্যা বেশি হলেও কয়েকজন আছেন লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্য।

নিহতদের মধ্যে একজন লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর অ্যারেস্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের প্রধান, আহমেদ ফিতুরি। আহতদের মধ্যে আছেন কাউন্টার এসপিওনাজ ব্রাঞ্চের প্রধান ব্রিগেডিয়ার আল-মাহদী আল-ফাল্লাহ। এছাড়াও নিহতদের মধ্যে এক মিসরীয় দোকানদারও আছে।

হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি। তবে মসজিদটিতে পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এবং মাদখালি সালাফিরা নিয়মিত নামায পড়তেন বলে তাদেরকে লক্ষ্য করেই হামলা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বেনগাজীতে ইসলামপন্থী জোটের সাথে দীর্ঘ তিন বছর ধরে পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের সেনাবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ চলে এসেছে। সন্ত্রাসবিরোধী এ যুদ্ধে মাদখালি সালাফিরা সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান সহযোগী।

সম্প্রতি একাধিকবার যুদ্ধ সমাপ্তি এবং পূর্ণ বিজয়ের ঘোষণা দেওয়া হলেও ছোটখাট সংঘর্ষ এখনও অব্যাহত আছে। এর আগেও বেনগাজীতে একাধিক গাড়ি বোমা এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছিল। তবে এবারের হামলাটি দীর্ঘদিনের মধ্যে বড় আকারের হামলা, যেখানে বেসমারিক জনগণের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে।

হামলার পরপরই এলাকায় জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং এলাকাবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং বলেছে, বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্য করে সরাসরি অথবা এলোপাথাড়ি হামলা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ এবং তা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য।

ফিচার ইমেজ- Libya Observer

Related Articles

Exit mobile version