- মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
- স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবির প্রমাণের ভিত্তিতে এ কথা জানিয়েছে তারা।
সোমবারে প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে আগের প্রতিবেদনগুলোরই প্রতিফলন দেখা যায়। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের গ্রামের যে সকল ভবন অক্ষত ছিল সেগুলোও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সে এলাকায় দ্রুত বাসস্থান ও রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে অন্তত তিনটি সামরিক ঘাঁটি নির্মিত হচ্ছে বলে জানায় সংস্থাটি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্কট মোকাবেলা বিষয়ক পরিচালক তিরানা হাসান এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যাপক পরিমাণে ভূমি দখল দেখতে পাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের সাথে যারা মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে সেসব নিরাপত্তা বাহিনীর জন্যই নতুন ঘাঁটি স্থাপিত হচ্ছে।”
গত ডিসেম্বরের পরে যখন এলাকাটিতে উল্লেখযোগ্য দাঙ্গার খবর প্রকাশিত হয়নি, সেসময়ে আগুনে ধ্বংস হয়নি এরকম অন্তত চারটি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়ছে অথবা এগুলোর ছাদ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একটি রোহিঙ্গা গ্রামের স্যাটেলাইটের চিত্রে সম্প্রতি ভেঙে ফেলা একটি মসজিদের পাশে সীমান্ত পুলিশ পোস্টের জন্য নির্মিত ভবন চোখে পড়ে।
নোবেল পুরস্কার জয়ী অং সান সুচির সরকার ও সেনাবাহিনীর মুখপাত্রদের এ ব্যাপারে মন্তব্য করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। তবে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রত্যাবাসনের পরে রোহিঙ্গাদের জন্য গৃহ নির্মাণের উদ্দেশ্যে গ্রামগুলো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত নভেম্বরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি সমঝোতায় আসে। মিয়ানমার জানায়, ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী শিবির প্রস্তুত, কিন্তু সে প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে আরও বেশি নিরাপত্তা বাহিনী ও রোহিঙ্গা ব্যতীত অন্যান্য সম্প্রদায়ের জনসাধারণের স্থান সংকুলানের জন্য তা পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে রোহিঙ্গাদেরকে সে এলাকায় ফিরতে নিবৃত্ত করা যাবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধনের কারণে প্রচুর রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রাখাইন রাজ্যের প্রায় ৩৫০টি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করার পরে তাদের আবাসস্থলে এখন সামরিক ঘাঁটি নির্মিত হচ্ছে বলে দাবি অ্যামনেস্টির।
ফিচার ইমেজ: The Telegraph